খেলার খবর: পেন্ডুলামের মত দুলেছে ম্যাচটার ভাগ্য। পাকিস্তান যখন ব্যাটিংয়ে ছিল তখন মনে হচ্ছিল এবার ঘুরে দাঁড়াবে দলটি। ৩৪৮ রান করা হয়েছে। সিরিজের ম্যাচ না এটা; রীতিমত বিশ্বকাপ। তো একটু নিশ্চিত তো থাকা যায়!
এবার জয় নিশ্চিতই করল পাকিস্তান। ৩৪৮ রানের পেছনে তাঁড়া করতে গিয়ে ৩৩৪ রানেই থেমে গেছে ইংল্যান্ডের ইনিংস। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ ১৪ রানে জিতে নিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের ৮ উইকেটে ৩৪৮ রানের জবাবে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রান করে মরগানের দল।
রুট, বাটলার যেভাবে এগোচ্ছিলেন এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল আবারো তরী ডুববে পাকিস্তানের। গত মাসেই তো ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজের এক ম্যাচে ৩৫৮, অন্য ম্যাচে ৩৪০ করেও জয় পায়নি পাকিস্তান। প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বিশ্বকাপের মঞ্চই বেছে নিলেন সরফরাজ!সরফরাজের মাথায় নিশ্চয়ই ঘুরছিল ইংল্যান্ডকে জিততে হলে রেকর্ড করতে হবে। আর মোহাম্মদ আমিরের মত একটি অস্ত্র ছিল তাঁর। তবে ওই রেকর্ডের ভয়ে গুটিয়ে যায়নি ইংল্যান্ড। বরং ব্যাটিংয়ে নেমে কড়ায় গণ্ডায় জবাব দিচ্ছিলেন রুটরা। রুট নিজে সেঞ্চুরি করেছেন। চলতি বিশ্বকাপের প্রথম শতক এটি। ১০৪ বলে ১০৭ রান করে থামেন জো রুট। শাদাব খান তাঁকে ফেরান। তবে থেমে ছিলেন না জস বাটলার। তিনিও তুলে নিয়েছেন শতক। ৭৫ বলে সেঞ্চুরি করেই আউট হয়ে যান তিনি। বিশ্বকাপে বাটলারের এটা প্রথম শতক। আর বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কোনো ব্যাটসম্যানের দ্রুততম শতক। কিন্তু আমিরের বলে ওয়াহাব রিয়াজের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।শেষদিকে ওয়াহাব রিয়াজ করেন দুর্দান্ত বল। তিনটি উইকেট নিয়ে মূলত তিনিই ভেঙে দিয়েছেন মরগানদের শেষ ভরসা। কেন তাঁকে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ দলে প্রয়োজন ছিল তা মনে করিয়ে দিলেন তিনি।বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাত্র ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান; সেটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয় পাকিস্তান। দুই দল মুখোমুখি হওয়া মানেই রানের বন্যা।পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয়টা পেলে বিশ্বরেকর্ড করত ইংল্যান্ড। বলা যায় নিজেদের সম্মান পুনরুদ্ধার করতে পারত। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আয়ারল্যান্ডের। ২০১১ সালে ইংল্যান্ডের দেওয়া ৩২৮ রান তাড়া করে জয় পায় আয়ারল্যান্ড। তিন উইকেটে ৩২৯ করে আয়ারল্যান্ড।বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করলেন হাফিজরা। ওপেনার ইমাম-উল-হক ও ফখর জামান উড়ন্ত সূচনা এনে দেন। প্রথম ১০ ওভারে কোনো উইকেটই পড়েনি পাকিস্তানের। প্রথম ১০ ওভারে ইমাম করেন ৩০ ও ফখর করেন ৩২ রান।ওপেনার ইমাম ৪৪ রানে এবং ফখর জামান ৩৬ রানে বিদায় নেন। পরে বাবর আজম ও মোহাম্মদ হাফিজ দলের হাল ধরেন। বাবর আজম ৬৬ বলে ৬৩ রান করে মঈন আলীর বলে আউট হন। এক প্রান্ত ধরে দলের স্কোর এগিয়ে নেন মোহাম্মদ হাফিজ। ৬২ বলে ৮৪ রান করেন তিনি। তাঁর ওই ইনিংসে ছিল ৮টি চার ও দুইটি ছক্কার মার। এছাড়া অধিনায়ক সরফরাজও ৫৫ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলেছেন।বোলারদের মধ্যে মঈন আলী ছাড়া কেউই তেমন সমীহ জাগানো বল করেননি। ৩৫ ওভারের মধ্যে পাকিস্তানের তিনটি উইকেটই পড়ে; যার সবগুলোই নিয়েছেন মঈন আলী। তবে শেষদিকে উইকেট পড়তে থাকে পাকিস্তানের। পেসার ওকস তিনটি উইকেট লাভ করেন।
ইংল্যান্ড একাদশ : জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, এউইন মরগান (অধিনায়ক), বেন স্টোকস, জস বাটলার (উইকেটরক্ষক), মঈন আলি, ক্রিস ওয়াকস, মার্ক উড, আদিল রশীদ, জফরা আর্চার।
পাকিস্তান একাদশ : ইমাম-উল-হক, ফখর জামান, বাবর আজম, শোয়েব মালিক, মোহাম্মদ হাফিজ, সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), আসিফ আলী, শাহাব খান, মোহাম্মদ আমির, হাসান আলী, ওয়াহাব রিয়াজ।