নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ দীর্ঘ ১১ মাস নিখোঁজ মালয়েশিয়া প্রবাসী সন্তানের সন্ধানের দাবিতে ও আদম ব্যবসায়ী চিহ্নিত প্রতারক সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার মধু শেখের দেশ ত্যাগে বাধাসহ তাকে গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিকালে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন, পাটকেলঘাটা থানার খোর্দ্দ গ্রামের কওছার আলী খানের স্ত্রী ও সন্তান হারানো মা সুফিয়া বেগম।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমরা অতিদরিদ্র পরিবারের হওয়ায় একটু স্বচ্ছলতার ফেরাতে আমার বড় পুত্র হযরত আলী খানকে বিগত ১০ বছর পূর্বে মালয়েশিয়া পাঠায়। এরপর থেকে সে নিয়মিত কাজ করে বাড়িতে টাকা পাঠাতো। আমার পুত্র অতিপরিশ্রমি হওয়ার কারণে গত ৪ বছর পূর্বে মালয়েশিয়া প্রবাসী আদম ব্যবসায়ী চিহ্নিত প্রতারক পাটকেলঘাটার কাশিপুর গ্রামের আব্দুল হাই শেখের পুত্র মুধ শেখ @ শেখ রাজ্জাক তাকে তার কাছে ডেকে নেয়। তার সাথে কিছুদিন কাজ করার সুবাদে খুটি নাটি বিষয়ে আমার পুত্রের সাথে মধু শেখের বিরোধ হয়। এরই জেল ধরে মধু আমার পুত্রকে মারপিট করে বাংলাদেশ টাকা প্রায় ১০ হাজার টাকা তার চিকিৎসার জন্য খরচ করেছে বলে আমাকে মোবাইলে জানায়। পরবর্তীতে বিষয়টি মিমাংসা হয়ে যায় বলে মধু আমাকে ফোন করে জানান। কিন্তু এরপরও আমার পুত্র পূর্বের মত আমার সাথে যোগাযোগ করত না। মাঝে মধ্যে গোপনে মোবাইলে করে বলতো, মা মধু শেখ ও তার সহযোগী লিপটন বিশ^াস আমার উপর ব্যাপক নির্যাতন চালাচ্ছে। তারা আমার যে কোন ধরনের ক্ষতি করতে পারে। যদি আমার কোন ক্ষতি হয় তাহলে মধু শেখ ও লিপটনকে ধরবে। গত বছর ১২ রমজানের পর থেকে দীর্ঘ প্রায় ১১ মাস আমার পুত্রের আর কোন সন্ধান পাচ্ছি না। মধুকে ফোন করলে সে বলে, তোমার ছেলে এখন ৬২ তলার উপরে রয়েছে, এখন কিভাবে কথা বলাবো। পরে বলে আমাকে ৬০ হাজার টাকা দাও আমি এই কুরবানি ঈদে হযরতকে সাথে নিয়ে বাড়ি আসবো। কিন্তু কুরবানি ঈদে মধু বাড়ি আসলেও আমার ছেলেকে সাথে আনেনি। তখন আমি মধুর বাড়ি গিয়ে তার পায়ে ধরে বলি বাবা আমার ছেলে কৈ। তখন মধু বলে, আমি তাকে জেলে পাঠিয়েছি। এরপরই মধু শেখ কাশিপুর এলাকার শফি ও মধুর মাধ্যমে আমাকে জানায়, ছেলের সন্ধান করে কোন লাভ হবে না। ৫লক্ষ টাকা দিচ্ছি এতে বিষয়টি মিমাংসা করে নাও। এতে আমি কান্নাকাটি করলে মধু আমরা যাতে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করি সে জন্য মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে স্থানীয় মস্তান তরিকুল ও তার বাহিনীকে ভাড়া করে তাদের মাধ্যমে আমাদেরকে খুন জখমের হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি একজন অসহায় বৃদ্ধা মাতা। আমার ছেলে যদি বেঁচে থাকবে বা জেল খানায় থাকবে তা হলে কেন মধু ৫লক্ষ টাকায় মিমাংসার প্রস্তাব দিচ্ছে বা মস্তান ভাড়া করে আমাদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন ? আমার বড় পুত্রের অর্থে আমাদের গোটা পরিবার চলে। অথচ সে দীর্ঘদিন নিখোঁজ। তার কোন সন্ধান পাচ্ছি না। তার সন্ধান না পেয়ে গত ২৭.৭.২০১৯ তারিখে আমি পাটকেলঘাটা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু প্রায় ২০ দিন অতিবাহিত হলেও এবিষয়ে থানার পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আমি আশংকা করছি ওই মধু ও তার সহযোগী লিপটন আমার পুত্রকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে। এখন সে আবারও গোপনে মালয়েশিয়া যাওয়ার পায়তারা চালাচ্ছে।
তিনি এসময় তার সন্তান ফেরতের দাবিতে এবং মধুর দেশ ত্যাগে বাধাসহ তার গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় সুফিয়া বেগমের পরিবারের সকল সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।##
১৭.০৮.১৯