দেবহাটা ব্যুরো : দেবহাটায় পুলিশী সহায়তায় মানষিক ভারসাম্যহীন আমিনুল খুঁজে পেল তার পরিবারকে। দীর্ঘ ১৪ মাস পরে মানষিক ভারসাম্যহীন আমিনুল তার পরিবারকে খুঁজে পেয়ে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। দেবহাটা থানার ওসির কক্ষে এই উপস্থিত সকলে এসময় পুলিশের এধরনের মানবিক কাজের প্রশংসা করেন। দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহার প্রচেষ্টায় প্রায় ১৪ মাস আগে হারিয়ে যাওয়া আমিনুলকে শনিবার সকাল ১০ টার দিকে দেবহাটা থানার ওসির অফিস রুমে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আমিনুল সিলেটের ওসমানিনগর থানার মোবারকপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। সিলেটের ওসমানিনগর থানার মোবারকপুর থেকে আমিনুল ১৪ মাস আগে হারিয়ে যায়। আমিনুলের বাবা নুরুল ইসলাম জানান, আমিনুল ছিলো মেধাবী শিক্ষার্থী। সিলেটের একটি মাদ্রাসা থেকে আলিম পাশ করে আমিনুল। কিন্তু পারিবারিক অস্বচ্ছলতা ও বিভিন্ন মানসিক চিন্তায় আমিনুলের বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর লক্ষন দেখা দিতে থাকে। বিগত প্রায় ১৪ মাস আগে বাড়ী থেকে বেরিয়ে পড়ে আমিনুল। সেখান থেকেই সে হারিয়ে যায়। অনেক খুজেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিলো না। এই ১৪ মাস ধরে সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জেলায় ঘুরে সপ্তাহ খানেক আগেই পাগলপ্রায় বেশে দেবহাটাতে পৌঁছায় আমিনুল। সেসময় থেকেই সে অবস্থান করছিলো সখিপুর মোড় ও আশপাশের এলাকায়। মানুষের দেয়া খাবার খেয়ে রাস্তার পাশে কিংবা অন্যের দোকানের সামনে পড়ে থাকতো। গত বৃহষ্পতিবার আমিনুলের সন্ধান চেয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মী নাজমুল হোসেন ফেসবুকে একটি পোষ্ট দিলে বিষয়টি নজরে আসে পুলিশের। তাৎক্ষনিকভাবে দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহার নির্দেশে আমিনুলকে থানা হেফাজতে নেয় পুলিশ। একপর্যায়ে ফেসবুক মারফত জানা যায় আমিনুলের বাড়ীর ঠিকানা। এরপর থেকে আমিনুলকে তার পরিবারের কাছে ফেরত পাঠাতে দফায় দফায় ওসমানিনগর থানায় যোগাযোগ করেন দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা। ওসমানিনগর থানা থেকে হারানো ছেলের খবর দিয়ে পুলিশ পাঠিয়ে খবর দেয়া হয় আমিনুলের বাড়ীতে। কিন্তু হতদরিদ্র হওয়ায় আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারনে ছেলেকে ফেরত নিতে দেবহাটা থানায় আসতেও বিপাকে পড়ে আমিনুলের বাবা। একপর্যায়ে দেবহাটা উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের সাথে আলোচনা করে আমিনুল ও তার বাবার যাতায়াতের খরচের ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি আমিনুলের পাশে দাড়ায় দেবহাটার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মৃত্তিকা মানবিক ইউনিট। শনিবার সকাল ১০ টায় আনুষ্ঠানিকভাবে আমিনুলকে তার বাবা নুরুল ইসলামের হাতে তুলে দেন দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অধীর কুমার গাইনসহ পুলিশ কর্মকর্তারা। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অধীর কুমার গাইন এসময় তাদের যাতায়াত খরচ বাবদ তিন হাজার টাকা দেন। এছাড়া আমিনুল ও তার বাবাকে ঈদের নতুন জামা কাপড় ও কিছু আর্থিক সহায়তা দেন মৃত্তিকা মানবিক ইউনিট। বহুদিন পর হারানো ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দে ভরে ওঠে আমিনুলের পিতা নুরুল ইসলামের বুক। পাশাপাশি বাবাকে ফিরে পেয়ে হাসি ফোটে আমিনুলের মুখে।
পূর্ববর্তী পোস্ট