কালিগঞ্জ ডেস্ক : কালিগঞ্জ উপজেলার চিংড়ি ঘেরগুলোতে কথিত ভাইরাসের আগ্রাসনে লোকসানের মুখে চিংড়ি চাষিরা। বাংলাদেশ চিংড়ি চাষের কারণে বিশে^ অর্থনীতিতে বিশেষভাবে এগিয়ে চলা দেশ হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত পেয়েছে। বিশে^র দেশে দেশে লাল সবুজের এই দেশটি বর্তমান সময় অর্থনীতিতে বিশেষভাবে বৈদেশিক বানিজ্যেও বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জনের বিশেষ দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ। বিশ^ বাস্তবতায় বাংলাদেশ যতগুলো ক্ষেত্রে বিশেষভাবে এগিয়ে চলেছে এবং পরিচিত পেয়েছে তার মধ্যে অন্যতম চিংড়ি শিল্প।
ভাল নেই বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান রপ্তানী শিল্প ‘সাদা সোনা’ খ্যাত সাতক্ষীরার চিংড়ির প্রান্তিক উৎপাদকরা। একদিকে চিংড়ি ঘেরগুলোতে ভাইরাস অন্যদিকে অব্যহত মূল্য হ্রাস, তার উপর চাষীদের বাগদা চিংড়ি বিক্রি করতে হচ্ছে বাকিতে।
এদিকে সাতক্ষীরায় চিংড়ি ঘেরগুলোতে কথিত ভাইরাসের আগ্রাসনে লোকসানের মূখে চিংড়ি চাষিরা। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম সাদা সোনা হিসেবে খ্যাত চিংড়ি শিল্পে কথিত ভাইরাসের আগ্রাসনে বিপর্যস্থ, বিপন্ন এবং হুমকির মুখে। দেশের সর্বাধিক চিংড়ি উৎপাদিত জেলা হিসেবে সাতক্ষীরা বিশেষ ভূমিকা পালন করলেও বর্তমান মৌসুম শুরুতেই জেলার চিংড়ি ঘের গুলোতে চিংড়ি মড়ক শুরু হয়। মূহুর্তে নিমিষেই শত শত বিঘা ঘেরের চিংড়ি হলুদাভাবাপন্ন হয়ে মরছে। অন্যান্য বছরগুলোতেও ভাইরাস এর প্রভাব থাকলেও বর্তমান মৌসুমের ন্যায় এমন মড়ক ইতিপূর্বে কখনও দেখা যায়নি বলে জানান চিংড়ি চাষিরা।
সাতক্ষীরার চিংড়ি ঘেরগুলোকে উৎপাদিত চিংড়ির রেণু পোনা অধিকাংশই কক্সবাজার এলাকার হ্যাচারিগুলো হতে আসে। সামপ্রতিক বছরগুলোতে জেলার বিভিন্ন এলাকাতে রেণু পোনা উৎপাদন হ্যাচারি হতেও চিংড়ি চাষিরা রেণু সংগ্রহ করছে। মার্চের শেষ এবং মধ্য এপ্রিল চিংড়ির ভরামৌসুম হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু ভরা মৌসুমে চিংড়ি একেবারেই কম। কালিগঞ্জের আড়ৎ এবং মৎস সেডগুলোতে কাঙ্খিত চিংড়ির দেখা নেই। ইতিপূর্বেকার বছরগুলোতে একমাসের অধিক বয়সী চিংড়ির মড়ক দেখা গেলেও এবারের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। ছোট বড় মাঝারী সব ধরনের চিংড়িতে কথিত ভাইরাসের ছোবল। চিংড়ি চাষী এবং ঘের ব্যবসায়ীদের আশক্সকা রেণু চিংড়ি ভাইরাস বহন করছে আর এ কারণে একটি সময় অতিক্রম হলেই অর্থাৎ ত্রিশ/পয়ত্রিশ দিন বয়সেই মড়ক শুরু হচ্ছে।
ঘেরে খাদ্য ঘাটতি বা পানির সমস্যার বিষয়টি চাষীরা মানতে নারাজ, একাধিক চিংড়ি চাষীদের বক্তব্য জেলার সব এলাকায় এবং অধিকাংশ ঘেরে চিংড়ি মড়কের কারণে মৎস ঘেরে আপাতাত কোন চিংড়ি নেই আবার নতুন করে রেণু দিয়েছি সেগুলো বড় হলেই আমরা আবার আশার আলো দেখতে পাবো। চিংড়ি মড়কের কারণ হিসাবে যদি পানি, মাটি বা খাদ্য ঘাটতির বিষয় থাকতো তাহলে তো সবঘেরের চিংড়ি মড়কের মুখো মুখি হতো না।
মৎস চাষী আবু বাক্কার আরও জানান পূর্বেকার মৌসুম গুলোতে চিংড়িতে ভাইরাস শুরু হলে মূহুর্তে সব ঘেরে চিংড়ি আক্রান্ত হতো না। চাষীরা চিংড়ি ধরার সুযোগ পেতো কিন্তু বর্তমান সময়ে যেমন অনেক ছোট আকৃতির চিংড়িতে মড়ক শুরু হয়েছে আবার নতুন করে রেনু ছেড়েছি সেটার জন্য আমরা আবার নতুন পরিচর্যা করেছি আশা করছি এটা থেকে আমরা আশার আলো দেখছি।
দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ করে বৈদেশিক অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন কারী চিংড়ি। জাতীয় অর্থনিতির পাশাপাশি সাতক্ষীরার অর্থনীতিতেও অনেকাংশে চিংড়ি নির্ভর। এই অপার সম্ভাবনার ক্ষেত্রে চিংড়ির কথিত ভাইরাসের এবং মগকের আগ্রাসন রোধ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদেরকে বিশেষ ধরনের ব্যবস্থাসহ চিংড়ি মড়কের মূল কারণ উদঘাটন করতে হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট