বিদেশের খবর : ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় মুসলমানদের ওপর সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর নিরাপত্তার কড়াকড়ি বাড়ানো হয়েছে, মিছিল-জমায়েতে জারি করা হয়েছে বিধিনিষেধ।
বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মুসলমানদের বাড়ি-ঘর, দোকানপাট ও মসজিদে হামলার পাশাপাশি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়িয়েছে হামলাকারীরা। এ পরিস্থিতিতে রাজ্যের দেড়শর বেশি মসজিদে নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা জানিয়েছে ত্রিপুরা পুলিশ।
গত চার দিনে ত্রিপুরায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অন্তত দশটি ঘটনার খবর পাওয়া গেছে জানিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়, সীমান্ত শহর পানিসাগরে মঙ্গলবার রাতে একটি হামলার পর বড় ধরনের জমায়েতের ওপর বিধিনিষধ আরোপ করে কর্তৃপক্ষ।
পানিসাগরের পুলিশ কর্মকর্তা সৌভিক দেকে উদ্ধৃত করে বিবিসি লিখেছে, ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কট্টর ধর্মীয় সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একটি সমাবেশের পর ওই হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে সংগঠনটি বিক্ষোভ করতে চাইলে বাধা দেয় পুলিশ। তার প্রতিবাদে ওই সমাবেশ করা হয় এবং সেখান থেকেই হামলা হয়।
দুর্গাপূজার অষ্টমীতে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার একটি মণ্ডপে ‘কোরআন অবমাননার’ কথিত অভিযোগ তুলে সহিংসতা শুরুর পর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, চাঁদপুর, কক্সবাজার, ফেনী, রংপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
ত্রিপুরার তিনটি দিকে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে এবং পাশের রাজ্য আসামের সঙ্গে একটি করিডোর রয়েছে। ২০১৮ সালের পর থেকে ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপি- ত্রিপুরা শাসন করছে। এ রাজ্যের ৪২ লাখ মানুষের মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা ৯ শতাংশের কম।
গত সপ্তাহে ভারতের জামিয়াত উলামা-ই-হিন্দ এর রাজ্য শাখা অভিযোগ করে, একটি মসজিদ এবং তার পাশে মুসলমান অধ্যুষিত এলাকায় হামলা চালিয়েছে উগ্রবাদীরা।
ত্রিপুরার লেখক বিকাশ চৌধুরী বিবিসিকে বলেছেন, পাশের দেশে ধর্মীয় উত্তেজনার কারণে ত্রিপুরায় মুসলমানদের ওপর এমন প্রতিক্রিয়া তিনি আগে কখনও দেখেননি।