নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার লাবসায় গৃহবধু ধর্ষণ মামলায় এক পঙ্গু ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও হয়রানির প্রতিবাদে এবং সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রকৃৃত ধর্ষককে চিহ্নিত করে শাস্তি প্রদানের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন, মাগুরা (তালতলা) গ্রামের গ্রেপ্তারকৃত পঙ্গু আজিজুল ইলামের স্ত্রী মনজুয়ারা খাতুন।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার স্বামী গত ২০২০ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়ে অসুস্থ্য অবস্থায় রয়েছে। দুর্ঘটনায় স্বামীর ডান পায়ের লেগোমেন্ট শিরা ছিড়ে পা পঙ্গু হয়ে যায়। বর্তমানে কোন কাজ করতে পারে না। যে কারনে সংসার পরিচালনার জন্য তালতলা স্কুলের সামনে একটি চায়ের দোকান পরিচালনা করি। আমি সারাদিন চা বিক্রয় করি আমার স্বামী সারাদিন আমার সামনে চেয়ারে বসে থাকে। রাতে দু’জন একই সাথে দোকানের মধ্যেই থাকি। রাতে বাথরুমে যেতে হলেও আমার সাহায্য ছাড়া স্বামী আজিজুল উঠতে পারে না। এমনকি বাথরুম করতে গেলেও চেয়ারে ছাড়া করতে পারে না। আমার স্বামীর পঙ্গুত্বর বিষয়টি এলাকার সকলেই অবগত আছেন। আমার সেই পঙ্গু স্বামীকে একটি ধর্ষণ মামলায় জড়িয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ধর্ষণ মামলার বাদীর বক্তব্য অনুযায়ী ২৫ নভেম্বর রাত ২টার দিকে বাদী হাসিনা পারভীন রাতে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। সে সময় অজ্ঞাত ব্যক্তি দরজা খুলে তার ঘরে প্রবেশ করে বলে,“আমার সাথে আরো দু জন আছে, তারা বাইরে আছে।চিৎকার করে খুন করবো বলে গলায় ছুরি ধরে।
এরপর গামছা দিয়ে তার হাত খাটের পাশে জালানার সাথে বেধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।” কিন্তু আমার স্বামী যেখানে নিজে হাটা চলা করতে পারে না। সেখানে ওই নারীকে ধর্ষনের জন্য গভীর রাতে একা একা কিভাবে হেটে আমার বাড়ি থেকে অর্ধ কিলোমিটার দুরে গেলেন এটি আমার বুঝে আসে না। পঙ্গু মানুষ কিভাবে ওই নারীর হাত বেধে ধর্ষণ করলেন, একজন সুস্থ্য মানুষের সাথে ধস্তাধস্তি করলে আমার স্বামীর দাঁড়িয়ে থাকার কোন ক্ষমতা নেই। এছাড়া ওই নারীর বয়স ৪৫ বছর।
ধর্ষকের মুখ বাধা থাকায় নাকি তাকে ধর্ষিতা চিনতে পারেননি। তবে মামলার এজাহারে কারো নাম না উল্লেখ করলেও তিনি উল্লেখ করেছেন ধর্ষকের স্বাস্থ্য শরীর নাকি আমার স্বামীর মত। একজনের শরীরের সাথে আরেকজনে মিলা থাকতেই পারে তাই বলে আমার স্বামীই ধর্ষণ করেছে এটি কিভাবে হতে পারে। ২৫ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে আমার স্বামীকে দোকান থেকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এরপর তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। তিনি আরো বলেন, ওই নারীকে কে বা কারা ধর্ষন করেছে এটি আমাদের জানা নেই। তবে যে বা যারা ধর্ষন করেছে আমি তাদের কঠোর শাস্তি চাই। কিন্তু একজন নিরাপরাধ মানুষ যেন মিথ্যা মামলায় হয়রানি না হয়। আমার স্বামী এখনো পর্যন্ত পায়ে এ্যাংলেট না লাগিয়ে চলাচল করতে পারে না। আমার শতভাগ বিশ্বাস সুষ্ঠু তদন্ত হলে আমার স্বামী স্বসম্মানে ওই মিথ্যা মামলার দায় থেকে মুক্তি পাবে। কারন একটি পঙ্গু ব্যক্তির পক্ষে হাত বেধে ধর্ষন করাটা অসাধ্য। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময় তার নিরাপরাধ পঙ্গু স্বামীর মুক্তি ও এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তপূর্বক প্রকৃত ধর্ষকদের খুজে বের করে কঠোর শাস্তি প্রদানের জন্য সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশ্র হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।##