নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার কলারোয়ার জয়নগরে কোন ওয়ারেশ না হয়েও
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ইন্ধনে দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় পৈত্রিক সম্পত্তি দখলের চেষ্টা ও জমির ধান কাটতে না দেওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন, উপজেলার জয়নগর গ্রামের মৃত অমূল্য মন্ডলের কন্যা ভুক্তভোগী তরঙ্গ রানী মন্ডল।
তিনি তার লিখিত বক্তবে বলেন, আমার পিতা স্বর্গীয় অমূল্য মন্ডল ১৯৭৫ সালে
মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর আমার মা গীতা রানী একই এলাকার মৃত কাশেম সরদারের বাড়িতে কাজ করতেন। স্বামী না থাকায় কাশেম সরদার জোরপূর্বক আমার
মাকে ব্যবহার করেন।
একপর্যায়ে আমার মায়ের গর্ভে কাশেম সরদারের ঔরষে একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। পরবর্তীতে ওই পুত্র উত্তম মন্ডলের পিতৃ পরিচয় নিয়ে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। আমার মা জীবিত থাকা অবস্থায় কোন দিন
উত্তম নিজেকে অমূল্য মন্ডলের সন্তান হিসেবে পরিচয়ও দিতো না। অথচ আমার মায়ের মৃত্যুর পর পর সম্পদ লোভী উত্তম আমার পিতার ওয়ারেশ দাবি করে আমার
পিতার সম্পদের ভাগ নেওয়ার চেষ্টা করে। এনিয়ে বিভিন্ন দপ্তরের তদন্তে প্রমানিত হয়েছে যে, উত্তম মন্ডল আমার পিতা অমূল্য মন্ডলের সন্তান না।
এমনকি একাধিক দপ্তরে আমার পিতা অমূল্য মন্ডলের একমাত্র ওয়ারেশ হিসেবে
আমাকে অর্থ্যাৎ আমার নামই উঠে এসেছে। কিন্তু দীর্ঘ কয়েক বছর পর এখন উত্তম
মন্ডল জাল জালিয়াতি করে ভোটার আইডি (যার আইডি নং- ৮৬৬২৫৫১৮৭১, জন্ম তারিখ
২২/০৭/১৯৮৯) কার্ডে পিতার নামের স্থলে অমূল্য মন্ডলের নাম সংযুক্ত করেছে।
বিশেষ করে জয়নগর ইউপির প্রয়াত চেয়ারম্যান তপন সাহার স্ত্রী বিশাখা সাহার পক্ষ নিয়ে গত ইউপি নির্বাচনে তার পক্ষে কাজ করে উত্তম মন্ডল। নির্বাচনে বিশাখা তপন সাহা বিজয়ী হওয়ার পর থেকেই উত্তম উক্ত চেয়ারম্যানের ইন্ধনে
ভাড়াটিয়া বাহিনীর লোকজন নিয়ে আমার পৈত্রিক সম্পত্তি যার জে এল নং ১১৪,
খতিয়ান নং ১১২৫,ম দাগ নং ১৪৩, জমির পরিমান ৮২ শতক এর মধ্যে ধান লাগানো ৫৮
শতক সম্পত্তি জবর দখলের ষড়যন্ত্র শুরু করে। এমনকি আমার সন্তানদের লাগানো
ধানও জোরপূর্বক কেটে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ওই পিতৃ পরিচয়হীন উত্তম মন্ডল। কিন্তু অন্ধের মত ইউপি চেয়ারম্যান বিশাখা তপন সাহা উত্তমের এ অনৈতিক দাবির সাথে একমত পোষন করে বার বার পুলিশ পাঠিয়ে আমাদের হয়রানিসহ আমার সন্তানদের পরিশ্রমের ফসল ধান কাটতে না দিয়ে জমিতে ফেলেই নষ্ট করেছে।
এতে আমার দরিদ্র সন্তানরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার, পুলিশ সুপার, কলারোয়া থানার ইনচার্জ ও উপজেলা নির্বাহী
অফিসারকে অবগত করলে তারা সকলেই আমাদেরকে ধান কেটে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
কিন্তু গত ০১/১১/২০২১ তারিখে উক্ত সম্পত্তিতে ধান কাটতে গেলেই চেয়ারম্যান বিশাখা তপন সাহার ইন্ধনে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রশাসনের কোন প্রকার আইনগত অনুমতি ছাড়াই বেআইনিভাবে বাধা সৃষ্টি করেন এবং আমার
সন্তানদের মারপিট করে গুরুতর আহত করেন। সে সময় স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার
করে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এঘটনায় আমরা একটি
মামলাও দায়ের করি। এরপরও উক্ত উত্তম মন্ডলকে অন্ধের মত ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে
চেয়ারম্যান বিশাখা তপন সাহা। চেয়ারম্যানের দাপটে উত্তমসহ স্থানীয় কতিপয়
প্রভাবশালী ব্যক্তি আমার সন্তানদের খুন জখমসহ বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি
প্রদর্শণ করে যাচ্ছেন।
বর্তমানে আমার সন্তানসহ আমার পরিবারের লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময় উক্ত উত্তম মন্ডল ও ইউপি চেয়ারম্যানের কবল থেকে তার পৈত্রিক সম্পত্তির রক্ষার জন্য সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।##