নিজস্ব প্রতিনিধি: নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে সাতক্ষীরায় সাধারণ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতার আয়োজনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১মার্চ) বিকাল সাড়ে ৩টায় শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু হয়।
শুরুতে মানববন্ধনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হয়, এরপর একে একে বক্তারা নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার দাবি তোলেন এবং এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
পরে বিক্ষোভ মিছিলটি পার্ক থেকে শুরু হয়ে থানা মোড় হয়ে শহরের পাওয়ার হাউজের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা নানা প্রতিবাদী স্লোগান দেন—”আমার বোনের কান্না, আর না আর না” “তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া” “আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকের ঠাঁই নাই” “আমার মা-বোন আতঙ্কে, ধর্ষক কেন বাহিরে” “ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই”।
বিক্ষোভ ও মানববন্ধনটি দৈনিক মানবজমিন-এর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি এস. এম. বিপ্লব হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে মো. রাহাতুল ইসলাম বাপ্পা’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মো. আতিকুজ্জামান সাহেদ, গাজী আসাদ, মো. তরিকুল ইসলাম অন্তর, গোলাম হোসেন রিফাত, জাহিদুর রহমান বাঁধন, রঞ্জিতা সরকার পূজা, শাখাওয়াত হোসেন বাঁধন, আদিব আদনান, মাহবুবুর রহমান তূর্য, সাকিব প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন সমাজের জন্য এক ভয়াবহ অভিশাপ। ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়। তারা আরও বলেন, যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা না হয়, তাহলে জনগণই এর উপযুক্ত বিচার করবে।
বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে অংশ নেয় বিভিন্ন বয়সের মানুষ। তবে সবচেয়ে আবেগঘন দৃশ্য ছিল সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট ছোট কন্যাশিশুরা, যাদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড— “আমাদের নিরাপত্তা কে দেবে?” এই বার্তা আন্দোলনকারীদের আরও দৃঢ় করে তোলে এবং সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা তৈরির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
সাতক্ষীরার সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিরা এই প্রতিবাদ সমাবেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। তারা ধর্ষণবিরোধী কঠোর আইন প্রণয়ন ও কার্যকর করার দাবি জানান এবং নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য প্রশাসনসহ সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।