নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় ভুমিদৃশ্যর দখলকৃত সরকারি খাস জমি দখলমুক্ত ও উদ্ধারসহ প্রকৃত ভুমিহীনদের পুনঃ বাসন এবং ৫০ শতাংশ পরিবর্তে ৩ বিঘা খাস জমি বন্টন আইন বাস্তবায়নসহ জগন্নাথপুর গ্রামের শিক্ষক অজয় কুমার সরকারের উপর হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে জেলা ভুমিহীন সমিতির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বিকেলে সাতক্ষীরা নিউমার্কেটের সামনে শহীদ স ম আলাউদ্দীন চত্বরে জেলা ভুমিহীন সমিতির সভাপতি কওছার আলীর সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা ভুমিহীন সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ গাজীর সঞ্চলনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আকবর আলী, জাসদ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, এডভোকেট খগেন্দ্রনাথ ঘোষ, জেলা নদী বন ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সদস্য সচিব মুনসুর আলী, আইনী সহায়তা কেন্দ্র আসক ফাউন্ডেশন সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম হোসেন, দপ্তর সম্পাদক স্বপন পান্ডে, ভুমিহীন সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম রেজাউল করিম রেজা, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার, স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির আহবায়ক আব্দুল্লাহ বিশ্বাস, আহত শিক্ষক অজয় কুমার সরকারের স্ত্রী অনিমা রানী, ভুমিহীন নেত্রী নাজমা আক্তার নদী প্রমূখ।
সরকারি খাস জমি দখলমুক্ত করায় জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদকে অভিনন্দন জানিয়ে সমাবেশে বক্তারা বলেন, জেলার মধ্যে এখনো অনেক সরকারি খাস জমি ভুমিদৃশ্যদের দখলে রয়েছে। সরকারি খাস জমিতে অনেকে ভুমিদৃশ্যরা গড়ে তুলেছে অবৈধ স্থাপনা পাকাঘর ও প্রতিষ্ঠান। শহরের কুখরালী ইকবাল জমাতদার কর্তৃক খাস জমি দখল করে ইটভাটা স্থাপনা গড়ে তুলেছে। খাস জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা পাকাঘর ও প্রতিষ্ঠান গুড়িয়ে দিয়ে খাস জমি দখলমুক্ত করতে হবে।
একইসাথে খাস জমি উদ্ধার করে উচ্ছেদকৃত ভুমিহীনদের মাঝে উদ্ধারকৃত খাস জমি বন্টন করে তাদেরকে পুনঃ বাসন করতে হবে। সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, বিনেরপোতা বিসিক এলাকায় ভুমিদৃশ্যরা খাস জমি দখল করে গড়ে তুলেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সাতক্ষীরার রাফসান গ্রুপ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক বিনেরপোতায় বেতনানদী পাড়ে বেতনানদীর ও এসিল্যান্টের জায়গার জমি অবৈধভাবে দখল করে গড়ে তুলেছেন পাকাঘর ও পাকা প্রাচীন। এ রাফসান গ্রুপ কর্তৃক বিনেরপোতায় বেতনানদী পাড়ে দখলকৃত সরকারি খাস জমি দখলমুক্ত করে ভুমিহীনদের পুনঃ বাসন করার দাবি জানান বক্তারা। বিগত সরকারের আমলে ঘোষিত ভুমিহীন আইন ৫০ শতাংশ বন্টন বাতিল করে ৩ বিঘা করে বন্টন আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। বক্তারা বলেন, গত ১২ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে জগন্নাথপুর গ্রামে ধান কেটে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের ও আলিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অজয় কুমার সরকারকে বেদমমারপিট করে তার দুই পা ভেঙ্গে দিয়েছে তার প্রতিপক্ষ। শিক্ষক অজয় কুমার সরকারের উপর হামলাকারীদের নামে থানায় এজাহার ভুক্ত করে হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ সুপারের কাছে দাবি জানান সমাবেশের বক্তারা।
জেলা নদী বন ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, দখলদৃষন আর নয়,ফিরে দাও নদীর জীবন, দখলদৃষনের সাথে যারাই জড়িত থাক না কেন আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। নদনদী সুরক্ষা জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সক্রিয় ভুমিকা দেখতে চাই ।
তিনি আরো বলেন, জেলায় বিভিন্ন স্থানে ফসলী জমিতে ইটভাটা স্থাপনার কারনে কৃষকরা চাষাবাদ করতে পারে না, ইটভাটায় কয়লার সাথে টায়ার পোড়ানোর কারনে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। অবিলম্বে ফসলী জমিতে স্থাপনা ইটভাটা উচ্ছেদ করার দাবি জানান।