কলারোয়া ডেস্ক: প্রতিদিন কলারোয়া সীমান্তের ধুড়পাচার ঘাট দিয়ে বিনা পাসপোর্টে শতশত যাত্রী অবাধে ভারতে যাতায়াত করছে। ফলে সরকার প্রতি বছর পাসর্পোট ফি ও ভ্রমণ কর বাবদ কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
সীমান্তের একাধিক নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে, কলারোয়া সীমান্ত পার হলে সরাসরি কলকাতার বাস পাওয়া যায়। আবার কলারোয়া সীমান্ত থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৬৫ কিলোমিটার। আর সীমান্ত নদী সোনাইয়ের দু’পাশে জনবসতি থাকায় পোষাক পরিবর্তন করার পরে কে স্থানীয় আর কারা ভারতে যাওয়ার অপেক্ষায় নদী পাড়ে রয়েছে তা বোঝা দূরহ। এছাড়া ঘন জনবসতি ও ঝোপ জঙ্গলে লুকানোর সুযোগ রয়েছে। নদীতে রয়েছে শতাধিক নৌকা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে চুক্তির মাধ্যমে নির্দেশনা মোতাবেক নৌকাগুলো বিনা পাসর্পোটের যাত্রী পারাপারের কাজ করে থাকে। ফলে কলারোয়া সীমান্ত পথে অপেক্ষাকৃত নিরাপদে ভারতে যাতায়াত করা যায়। তাই দেশের বিভিন্ন এলাকার বিশেষ করে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর, নড়াইল, মাগুরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলার লোকজন এই রুটে ভারতে যাতায়াত করে। শিশু, কিশোর, কিশোরী, যুবক, যুবতী, বৃদ্ধ, বৃদ্ধারা এই ঘাট দিয়ে যাতায়াত করে। এজন্য কলারোয়া সীমান্তে অন্ততঃ ৮টি ভারতে যাওয়ার ঘাট চালু রয়েছে। এই ঘাটগলো হচ্ছে, কেড়াগাছি সীমান্তে চারাবাড়ি ঘাট, কেড়াগাছি রথখোলা ঘাট, গাড়াখালী ঘাট, দক্ষিণ ভাদিয়ালী ইউছোপের ঘাট, উত্তর ভাদিয়ালী আনারুল ও রাজ্জাকের ঘাট, হিজলদী ঘাট, সুলতানপুর ঘাট, চান্দুড়িয়া ঘাট। সীমান্তের এই ঘাটগুলো দিয়ে ভারতে যাওয়ার জন্য মাথাপিছু ৫’শ টাকা নেওয়া হচ্ছে। সীমান্তের ঘাট মালিকরা এই টাকার বিনিময়ে অসাধু সীমান্ত রক্ষীদের হাত করে নৌকাযোগে নিরাপদে ভারতে পৌছে দেয় এবং ভারতীয়দের নিরাপদে দেশের অভ্যন্তরে বাস রুট সংলগ্ন ঘাটে পৌছে দেয়। আর কোন কারণে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ হলে বিনা পাসর্পোটের লোকজন আশ্রায়ে রাখা ও থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। এছাড়া দেশের অভ্যান্তর ভাগ থেকে বাসযোগে আসা লোকজন নিরাপদ স্থানে রাখা ও সীমান্তে পৌছে দেওয়ার জন্য ঢাকা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বাগআঁচড়ায়, কাজিরহাট ঠাকুরবাড়ি, কলারোয়া বাজাওে থানা মোড়ে ঘাট রয়েছে। অভ্যান্তর ভাগের ঘাটে মাথাপিছু ২’শ টাকা হারে আদায় করা হয়। কলারোয়া থেকে মটর সাইকেল, ইঞ্জিনভ্যান বা নসিমন এবং থ্রিহুইলার যোগে বিনা পাসর্পোটের যাত্রীদের কাকডাঙ্গা সীমান্ত ফাড়ির ৫০ গজ সামনের রাস্তা এবং মাদ্রা সীমান্ত ফাড়ির গেটের ৫/৭ হাত দূরের পাকা সড়কে সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আবার একই সড়কে বিনা পাসর্পোটের যাত্রীদের সীমান্ত থেকে নিয়ে বাস রুটে পৌছে দেওয়া হচ্ছে। কখনো সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ হলে গ্রামগঞ্জের ভিতর দিয়ে ভিন্ন রাস্তায় সীমান্তে নিয়ে যাওয়া বা আসা হয়। এভাবে অবৈধ পথে প্রবেশ করা লোকজন প্রায়শঃ ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের হাতে ধরা পড়ার পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের বিজিবি’র হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু চোরাই পথে সরকারি কর ফাঁকি দিয়ে দু’দেশের মধ্যে বিনা পাসর্পোটে যাতায়াত রোধে কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।
পূর্ববর্তী পোস্ট