নতুন বছরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আর এই সিরিজটি লঙ্কানদের জন্য বড় এক চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছেন সাকিব-তামিমদের সাবেক কোচ এবং বর্তমানে লঙ্কানদের কোচের দায়িত্ব গ্রহণ করা চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।
সম্প্রতি ভারত সফরে একাবারেই নিজেদের সামর্থ্যের পরিচয় দিতে পারেনি লঙ্কান ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটারদের যথাযথ স্কিল থাকা সত্ত্বেও কিছু বিষয় ঠিকভাবে করতে না পারার কারণেই সাফল্যের মুখ দেখতে পারেনি শ্রীলঙ্কা বলে অভিমত হাথুরুসিংহের।
তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আজকের ম্যাচ সামনে রেখে মাশরাফিদের প্র্যাকটিসে ছিল অন্য আমেজ। কারণ দলটি যে পারফেক্ট, তার প্রমাণও দিয়েছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। যে জিম্বাবুয়ে আজকের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে, সে জিম্বাবুয়েকে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে এক রকম বিধ্বস্ত করেই জিতেছিল ম্যাচ।
যেখানে ছিল না কোনো টেনশন, ভয় বা জড়তা। খেলোয়াড়দের বডি ল্যাঙ্গুয়েজই বলে দিচ্ছিল লঙ্কাকে থোড়াই পাত্তা দিচ্ছে তারা এ ম্যাচে। হবেই না কেন! এ শ্রীলঙ্কাকে গত মার্চে শ্রীলঙ্কার মাটিতে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০। প্রতিটি সিরিজে তাদের হারিয়েছে এবং সিরিজ ড্র করে এসেছে বাংলাদেশ। এবার খেলা নিজের দেশে।
এমনিতেই ইদানীং বিশ্ব ক্রিকেটে একটা কথা চালু রয়েছে- ঘরের মাটিতে কাউকেই ছাড় দেয় না বাংলাদেশ। ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ- কাকে ছাড় দিয়েছে? কোন দলটিকে না হারিয়ে ছেড়েছে? সেই মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুস্তাফিজরাই তো আজ খেলবেন। ফলে জড়তা আসবেই বা না কেন?
আজ ওই কাজগুলো ঠিক রেখে খেললেই তো হলো। বাংলাদেশ আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কী করবে এ নিয়ে অনেক বিশ্লেষণ। কারণ লড়াইটা তো হাতুরাসিংহের বিপক্ষে মাশরাফিদের। ফলে এমন এক ম্যাচের উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে ক্রিকেট পাড়ায়।
তবে লঙ্কান দলেও কিছুটা সমস্যা যাচ্ছে। ২০১৭ সাল খুবই বাজে কেটেছে তাদের। বলা হয় শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে রেকর্ড। তা থেকে উত্তরণের জন্য কোচিং স্টাফে পরিবর্তন। অধিনায়কেও পরিবর্তন এনেছে তারা দলের সাথে। কিন্তু নতুন বছরের সূচনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারতেই হয়েছে।
এ ম্যাচে অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ইনজুরির জন্য বাইরে থাকার কথা। যদি তাই হয় শেষ পর্যন্ত এটাও তাদের জন্য একটা দুঃসংবাদ। যদিও টিম শ্রীলঙ্কার মেসেজ অন্য রকম। পেছনের দুর্বলতা তারা মোটেও মনে রাখতে চায় না। এ ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোই তাদের আসল লক্ষ্য।
এটাও ঠিক একটা দল বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে গেলে, সেখানে অনেক সমস্যা এসে উপনীত হয়। অব্যাহত জয় এসব থেকে মুক্ত রাখতে পারে। হেড কোচ হাতুরাসিংহের সম্ভবত ওই মন্ত্রই থাকবে এ ম্যাচে। দলে বেশ ক’জন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় তাদের। উপল থারাঙ্গা, কুশল পেরেরা, দিনেশ চান্দিমাল, কুশল মেন্ডিস, তিসারা পেরেরা প্রমুখ। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য যথেষ্ট তারাও।
তবে মাশরাফি যেমন বলেছেন, গত বেশ কিছু দিন তো আমরা হাতুরাসিংহের প্লানে খেলেছি। এখন ওগুলোতে নেই। আমাদের প্লানটা আমরাই সাজিয়ে খেলব। মাশরাফি এটাও বলেছেন। এ ব্যাপারে কঠোর সতর্ক থাকবেন তারা।
বাংলাদেশ দলেও দীর্ঘদিন পর ফেরা এনামুল হক বিজয়, মুস্তাফিজ, রুবেল হোসেনরা যাতে ভালো পারফরম্যান্স করে তাই মূল লক্ষ্য। মাশরাফি, সাকিব, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহীম, সাব্বির রহমানরা আজ প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স করবেন এটাই টিম বাংলাদেশের চাওয়া। তবে এটাও ঠিক শ্রীলঙ্কা দলে যেমন হাতুরাসিংহে প্রধান কোচ।
তবে দলের সবার প্রিয় এ ক্রিকেটারের মন্ত্রটাও ক্রিকেটারদের আজ উৎসাহিত করবে জয়ের ব্যাপারে। কারণ খেলা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হলেও মূল টার্গেট কিন্তু হাতুরাসিংহে। হঠাৎ না বলে চাকরি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন।
তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বাজে রেজাল্টের পর। এবং দায়িত্ব নেন এ শ্রীলঙ্কার। সে অনাকাক্সিত মুহূর্তের সব দায় এসে পড়েছিল ক্রিকেটারদের ওপর। মাশরাফি-সাকিবরা কি এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাবেন? হয়তো না। আজ খেলা শুরু হবে দুপুর ১২টায়।