শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা। সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) ফেস্টিভ্যালের সমাপনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে অন্যান্যদের সঙ্গে বসে ছিলেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। এমন সময় তাঁর উপর অতর্কিতে হামলা চালায় এক যুবক।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, হঠাৎ মঞ্চের পেছন থেকে ধারালো ছুরি দিয়ে জাফর ইকবালের মাথায় আঘাত করে ওই সন্ত্রাসী। কিন্তু তৎক্ষণাৎ তাকে ধরে ফেলা হয়। পরে গণপিটুনি দিয়ে তাকে পুলিশে সোর্পদ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জহির উদ্দিন আহমেদ জানান, মঞ্চের পেছন থেকে এসে এক যুবক ছুরি মারে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশসহ অন্যরা তাকে আটক করে। কী কারণে অধ্যাপক জাফর ইকবালের উপর হামলা হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এদিকে অধ্যাপক জাফর ইকবালের উপর বর্বরোচিত এ হামলায় ক্ষোভ ও নিন্দার ঝর বইছে সবত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবি নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। অনুষ্ঠানের সময় কোনো একজনের মোবাইল ফোনে তোলা ছবিতে দেখা যায় সোফায় বসে আছেন জাফর ইকবাল। তার চোখ হাতে রাখা কোনো একটি বইয়ে। পেছনে বাম দিকে ফর্সামতো একটি ছেলে হাত বেঁধে দাড়িয়ে আছে। তার গায়ে টি-শার্ট। তার ঠিক ডান পাশে একটু পেছনে দাঁড়িয়ে হামলাকারী। গায়ে কালো রংয়ের টি-শার্ট।
হামলার পর ফেসবুকে ছবিটি চলে আসে। এতে হামলাকারীর পাশের যুবককে কেউ কেউ তার সহযোগী হিসেবে বলছেন। তবে কেউই তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেনি। এদিকে, ঘটনা তদন্তে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল সিলেট যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার উপকমিশনার মুহিবুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, সিলেটে তারা হামলাকারীকে জিজ্ঞাসাবাদসহ পুরো ঘটনা তদন্ত করবে। এছাড়া এর আগে এ ধরণের হুমকি কিংবা উড়োচিঠির বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখবে পুলিশের এ তদন্ত দল।
এর আগে, ২০১৬ সালের ১২ অক্টোবর (বুধবার) জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নামে জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হককে মুঠোফোনের খুদে বার্তায় হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় মুহম্মদ জাফর ইকবাল সিলেট মহানগরের জালালাবাদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর থেকেই তাঁদের বাসভবনে সশস্ত্র পুলিশ পাহারা বসানো হয়। এর আগেও, বেশ কয়েকবার মুহম্মদ জাফর ইকবালকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল বিভিন্ন উগ্রবাদী সংগঠন।