কলারোয়া,প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রদানে ২০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন আল মাসুদ বাবু ও বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শ্রী বিকাশ চন্দ্র বৈদ্য’র বিরুদ্ধে আদালতে মামলা (নং-২৫/১৮) দায়ের হয়েছে। উপজেলার খোর্দ্দ- বাটরা গ্রামের মৃত খোশাল গাজীর ছেলে (প্রধান শিক্ষক পদে প্রার্থী) হাবিবুর রহমান কলারোয়ার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবরণে হাবিবুর রহমান বলেন, ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদটি দীর্ঘদিন শুন্য হওয়ায় গত ৫ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে দৈনিক সমকাল পত্রিকায় উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
সে অনুযায়ী তিনি সহ ১০/১২ জন ব্যক্তি উক্ত পদে চাকুরীর জন্য দরখাস্ত করেন। তিনি আরোও জানান, কিছু দিন পর ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন আল মাসুদ ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শ্রী বিকাশ চন্দ্র বৈদ্য তাকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রদানের কথা বলে ২০ লাখ টাকা ঘুষ দাবী করেন। একই সময় আবুল কাশেম নামে অন্য এক প্রার্থীকে (আবেদনকারী) নিয়োগ দেয়ার কথা বলে তার নিকট ৩০লাখ টাকা ঘুষ দাবী করে।
এই ঘুষের টাকা দিলে নিয়োগ প্রদান করা হবে বলে পরিচালনা কমিটির সভাপতি বাবু ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাদেরকে জানান। মামলার বিবরণে জানা যায়, অন্যদিকে গোপনে কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুকৌশলে আব্দুল আজিজ নামে আরেক আবেদনকারীর নিকট থেকে ২০লাখ টাকা নিয়ে তাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদান নিশ্চিত করেন এবং ২৪ মার্চ শনিবার নিয়োগ বোর্ডের দিন ধার্য করেন। বিষয়টি জানার পর সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করা হয় এবং বিদ্যালয়ে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নিয়োগ দাবী করেন।
কিন্তু জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ব্যবস্থা গ্রহন না করে বিষয়টি নিয়ে তালবাহনা করায় তিনি কলারোয়ার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামসুদ্দিন আল মাসুদ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শ্রী বিকাশ চন্দ্র বৈদ্যসহ ১৮জনকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করেন।এ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘুষের দাবী বা ঘুষ নিয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানি না। সব কিছু জানে সভাপতি চেয়ারম্যান বাবু।
উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান শামছুদ্দীন আল মাসুদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ঘুষ দাবি করার বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ে এ ধরনের কোন ঘটনা তার জানানেই। কিন্তু ২০ লাখ টাকা দিয়ে অন্য শিক্ষক নিযোগ দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে বলেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না , অথচ আবার সভাপতি।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হামিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে জানতে আমাকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে।
তিনি তদন্তের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আশা রাখেন তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে ২৪ তারিখের নিয়োগ বোর্ড না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিদ্যালয়ের সভাপতির সাথে কথা বলার জন্য বলেন। সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি তদন্ত চলছে। এজন্য এখন নিয়োগ আপাতত বন্ধ থাকবে।তিনি আরোও বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ তদন্ত রিপোর্ট দেয়ার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। তবে ২৪ মার্চ শনিবার গঠিত নিয়োগ বোর্ড স্থগিতের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানায়।