সম্প্রতি একাধিক সায়েন্স ম্যাগাজিনে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে ব্রেন এবং শরীরের ক্লান্তি এবং স্ট্রেস দূর করতে ঠিক মতো ঘুম হওয়াটা জরুরি। ঠিকমত ঘুম না হলে নানারকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এক সময় গিয়ে আয়ু কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে দৈনন্দিন জীনযাত্রাও মারাত্মক ব্যাহত হয়।
ব্রেনকে অ্যাকটিভ রাখতে পুরুষ-মহিলা, উভয়েরই একই সময় ঘুমের প্রয়োজন। কিন্তু আরেক দলের একেবারে অন্য মত ছিল। শেষমেষ প্রমাণ হল, মহিলাদের ব্রেনের গঠন এমন যে তাদের পুরুষদের তুলনায় কম করে ২০ মিনিট বেশি ঘুমতে হবে। সেটা যদি না হয় তাহলেই মারাত্মক বিপদ হতে পারে।
মেয়েদের দৈনিক কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত? গবেষণা বলছে ২৬-৬৪ বছর বয়সি মেয়েদের দিনে কম করে ৭-৯ ঘন্টা ঘুমতেই হবে। আর ১৮-২৬ বছর বয়সি মেয়েদের ৯-১০ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। কেন পুরুষদের থেকে মেয়েদের বেশি সময় ঘুমের প্রয়োজন পরে। আসুন জেনে নেয়া যাক কি সেই কারন-
১। গবেষকদের মতে সারাদিন মেয়েরা যে পরিমান মেন্টাল এনার্জি খরচ করেন, পুরুষরা সেই পরিমাণ করে না। তাই মানসিক ক্লান্তিটা মেয়েদের বেশি হয়। সেই কারণেই তো মহিলাদের বেশি সময় রেস্টের প্রয়োজন পরে। আর যে সব মহিলারা উচ্চপদে চাকরি করেন তাদের তো আরও বেশি সময় ঘুমতে হবে। কারণ এমন মহিলাদের অনেক দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আর তার জন্য ব্রেন পাওয়ার ভাল হওয়াটা খুব জরুরি।
২। অ্যাডোলোসেন্ট পিরিয়ডে সময় মেয়েদের শরীরের ভিতর এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যার ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হরমোনাল চেঞ্জের কারণেও মেয়েদের ঘুমের সময় কমে যায়। তাই তো মহিলাদের বেশি বেশি করে ঘুমানোর প্রয়োজন পরে।
৩। মেয়েদের এক সঙ্গে অনেক কাজ করতে হয়। ফলে মাল্টি টাস্কিং-এর কারণে শরীর এবং ব্রেনের উপর মারাত্মক চাপ পরে। এই চাপ কমাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের প্রয়োজন। ব্রেনের গঠনের দিক থেকেও মহিলা এবং পুরুষদের মস্তিষ্কে কিছুটা পার্থক্য দেখা যায়। আর সে কারণে ঘুমের সময়ের মধ্যেও কম-বেশি হওয়াটা নির্ভর করে।
৪। গবেষণায় দেখা গেছে মহিলাদের মধ্যে বেশিরভাগেই পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রিম এবং মানসিক অবসাদের মতো রোগের শিকার হয়ে থাকে। এই দুই রোগের কারণেও ঘুমের মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মহিলাদের বেশি সময় ঘুমের প্রয়োজন পরে।
৫। গর্ভাবস্থায় মেয়েদের সবথেকে বেশি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে থাকে। এই সময় মায়েদের শরীরের ভিতর এমন হরমোনাল পরিবর্তন ঘটে যে ঘুম আসতেই চায় না। এই সময় মায়েদের পায়ে ক্র্যাম্প ধরার মতো সমস্যা হয়ে থাকে। সেই কারণেও ঠিক মতো ঘুম হতে চায় না। তাই একটু বেশি সময় ঘুমের দড়কার পরে।
৬। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে মহিলারা দৈনিক ৭ ঘন্টার কম সময় ঘুমোন, তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হার্টের স্বাস্থ্যেরও অবনতি ঘটে থাকে। তাই কোনও ভাবেই ৭ ঘন্টার কম সময় ঘুমোনো যাবে না।