বিনোদনের খবর: এফডিসি’র সাজঘরের (মেকআপ রুম) এখন বেহাল দশা। দরজায় নেই হাতল, ছাদ হয়ে গেছে ভঙ্গুর রংচটা, নেই আধুনিক লাইট বা মেকআপ বক্স।
এগুলো নিয়ে অভিযোগ অনেক দিনের। অনেকে ক্ষুব্ধ। শুধু তাই নয়, এফডিসির ওয়াশ রুম নিয়ে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ শিল্পীদের কাছ থেকে পাওয়া যায়।
তবে এবার বিএফডিসির এক কর্মকর্তাকে সামনে পেয়ে বিষয়টি সরাসরি বলেই বসলেন ঢাকাই কিং শাকিব খান।
সোমবার চার নম্বর ফ্লোরে চলছিল ‘ক্যাপ্টেন খান’ ছবির শুটিং। এর ফাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আড্ডা ও আলোচনা করছিলেন শাকিব খান। তখনই এক কর্মকর্তাকে সামনে পেয়ে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এই শীর্ষ নায়ক।
বলেন, ‘এফডিসির কি এখন বাজেট সংকট? গ্রিনরুমের এ অবস্থা থাকে কেন? বিশ্বের অন্য সব জায়গা এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা পিছিয়ে পড়ছি। আপনারা তো চাইলে টলিউড, বলিউডের শুটিং স্পটগুলো ঘুরে আসতে পারেন। তাদের ব্যবস্থাপনা দেখলেও একটা ধারণা জন্মায়।’
এমন সময়ে সেই কর্মকর্তা কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।
শুধু সাজঘরই নয়, ক্যান্টিন নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন শাকিব। বলেন, ‘আমাদের ফ্লোরগুলোতে কোনও ক্যান্টিন নেই। অথচ এখানে লোকজনদের নিয়মিত শুটিং ও খাওয়া-দাওয়া করতে হয়। থাকতে হয়। এই যে ফ্লোর থেকে বের হয়ে এলাম, পাশেই বসে ছেলে-পেলেরা খাচ্ছে। পাশ থেকে আগের পঁচা ভাত-তরকারির গন্ধ ভেসে আসছে। এগুলো দেখারও কেউ নেই। এটা কোনও প্রক্রিয়া?’
শুধু ক্ষোভই নয়, নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেশের ছবির পার্থক্যও তুলে ধরেন এ নায়ক। সম্প্রতি তার ‘ভাইজান এলো রে’ ছবির কথা টেনে বলেন, ‘ যখন কলকাতা থেকে সাফটায় আমার ছবিগুলো আসছে দর্শক হুমড়ি খেয়ে পড়ছে সিনেমা হলে। এই দর্শকই আবার আমি যখন দেশীয় কিছু নির্মাণের ছবি নিয়ে হাজির হই- তখন হলে আসছে না। কেন? সোজা পার্থক্যটি হলো নির্মাণের পরিচ্ছন্নতা, রঙিন ফ্রেম, বিনোদনে ভরপুর কোরিওগ্রাফি, গল্প ও চরিত্রে বর্তমান যুগকে ধারণ করতে পারছে কলকাতার ছবিগুলো। দেশের দর্শক ভালো সিনেমা দেখতে চায়। আমরা তাদের চাহিদা মেটাতে পারছি না। উল্টো বলছি দর্শক হলে আসে না। আমরা যদি এত বিভক্তিতে না গিয়ে নিজেদের কাজের মানটাকে বাড়িয়ে নিতে পারতাম তবে আজকের দিনটা দেখতে হতো না। এখনও সময় আছে, চলচ্চিত্র বাঁচাতে নিজেদের কারিগরি মানের উন্নয়নে মনযোগ দেওয়ার।’
পাশাপাশি কিছু জায়গায় প্রশংসাও করেন দুই বাংলার জনপ্রিয় এ নায়ক, ‘‘আবার যারা টেলিভিশন নির্মাণ থেকে চলচ্চিত্রে আসছেন তারাও কিন্তু সফল হচ্ছেন। কারণ তারা টেকনোলজির সঙ্গে যুগের মেলবন্ধন ঘটাতে পারছেন। ‘আয়নাবাজি’ সুপারহিট, ‘ঢাকা অ্যাটাক’ সুপারহিট হয়েছে সেগুলোর নির্মাণ মান আন্তর্জাতিক লেভেলের ছিলো বলেই। অনেকেই বলেন যে দিনদিন টিভি মিডিয়ার প্রাধান্য বাড়ছে চলচ্চিত্রে। সামনে ওদের হাতেই ইন্ডাস্ট্রির নেতৃত্ব চলে যাবে। হতে পারে। কারণ দিনশেষে দর্শক ভালো ছবি চায়। যারা সেটা নিশ্চিত করতে পারবেন তারাই টিকে থাকবেন, সামনে থাকবেন। তৌকীর ভাই, ফারুকী ভাইয়েরা ভালো ছবি বানান। একটা শ্রেণিকে তারা হলে টানেন। রুচির পরিবর্তন হচ্ছে এখন সবখানে। দিনে দিনে ভিন্ন ভাবনার সিনেমারও দর্শক বাড়ছে।’’
বর্তমানে শাকিব ওয়াজেদ আলী সুমনের ‘ক্যাপ্টেন খান’-এর কাজ করছেন। এটি দৃশ্যধারণ একেবারে শেষ পর্যায়ে আছে। এতে তার বিপরীতে আছেন বুবলী। এছাড়া রাশেদ রাহা পরিচালিত ‘নোলক’-এর কাজও প্রায় শেষ। ছবিটিতে ববি তার সহশিল্পী। অমিতাভ রেজার ‘রিকশা গার্ল’ শাপলা মিডিয়ার ‘একটি প্রেম দরকার মাননীয় সরকার’সহ বেশ কিছু ছবির কাজ শিগগিরই শুরু করবেন তিনি।
সাজঘর নিয়ে ক্ষুব্ধ শাকিব খান
পূর্ববর্তী পোস্ট