এম বেলাল হোসাইন/আমির হোসেন খান চৌধুরী: মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে শ্যামনগর সদর উপজেলার দক্ষিণ মাহমুদপুর মোস্তফার ভাটার পাশে গত রবিবার থেকে ১৫ দিনব্যাপী বিজয় ও মেলাযাত্রা পালার আয়োজন করা হয়েছে।
কিন্তু সেখানে যাত্রাপালার নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য ও জমজমাট জুয়ার আসর। আর এ ধরনের অশ্লীলতা আর জুয়ার আসর চালাতেদ সাধারণত যেসব পক্ষকে বিপুল অংকের টাকা দিতে হয় তাও দেয়া হচ্ছে ঠিকমত। আর তাই পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন আর গণমাধ্যমের এক শ্রেণির সুবিধাবাদী নেতারা আর্থিক পরিতৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন আর সবকিছৃ দেখেও না দেখার ভান করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাজার হাজার দর্শক মেতে উঠেছে ১২ থেকে ১৪টি জুয়ার চরকিতে। বসে আছে শতশত জুয়াড়ী খেলছে হাজার হাজার টাকার চরকি খেলা। খেলায় অংশ নিয়েছে স্কুল কলেজের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষেরা। পকেটের হাজার হাজার টাকা খোয়াচ্ছে চরকি খেলে। নিঃস্ব হয়ে রিক্ত মন নিয়ে ফিরে যাচ্ছে অনেকেই। জুয়াড়িরা লাভবান না হলেও লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাভবান হচ্ছে জুয়ার বোর্ডের মালিক ও আয়োজকরা। এরপর রাত ১১টা থেকে চলছে সামাজিক যাত্রাপালা তিনশ, দুইশ টাকা চেয়ার ও জমিনের টিকিটের মূল্য একশ টাকা। প্যান্ডেল এর ভিতরে ঢুকতেই দেখা যায় সামাজিক যাত্রাপালার নামে চলছে অসামাজিক নাচগান। সারারাতব্যাপী চলছে অর্ধনগ্ন মেয়েদের অশ্লীল অসামাজিক নাচ-গানের আসর। হাজার হাজার দর্শক মত্ত হয়ে আছে এই নাচে।
এখানেই ক্ষ্যান্ত নয় দর্শক অর্ধনগ্ন নাচনেওয়ালী মেয়েদের একটু স্পর্শের জন্য উড়িয়ে দিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। ঠিক যেন আগের কালের রাজাদের জলসা ঘরের নাচের অনুষ্ঠানের মত। যে যত বেশী টাকা দিয়ে নর্তকীদের সšু‘ষ্ট করতে পারবে মধুবালা যেন সেই মূহুর্তের জন্য সেই দর্শকেরই। সবধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ চললেও দর্শকদের উদ্দেশ্যে বারবার প্রচার করা হচ্ছে এই অনুষ্ঠানের যাবতীয় ভিডিও ও ছবি ওঠানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এখানে অধিকাংশ দর্শকই স্কুল-কলেজের ছাত্র এবং মধ্য বয়সী পুরুষ। এই অর্ধনগ্ন নাচের টিকিট ও জুয়ার টাকা যোগাতে অনেক ছাত্ররা কাটছে বাবার পকেট, চুরি করছে বাবার সই করা চেক বইয়ের পাতা।আার সেই টাকা উড়িয়ে দিচ্ছে জুয়ার আসরে এবং অর্ধনগ্ন নর্তকীদের নাচ দেখার ও একটু ছোঁয়া পাওয়ার জন্য। এই অশ্লীল নাচগান ও জুয়ার আসরের আয়োজক স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা মোঃ আতিয়ার ও মোশারফ বলেন সবাইকে ম্যানেজ করে এই অনুষ্ঠান পরিচালনা করছি এখানে অসামাজিক তেমন কিছুই হচ্ছেনা।
উল্লেখ্য একটি কুচক্রী মহল উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, স্থানীয় সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতাদের সহায়তা নিয়ে এই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে এই ১৫ দিনেই স্থানীয় যুবসমাজকে ধ্বংসের দুয়ারে নিয়ে যেতে পারে এমনটাই আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
জুয়ার আসর ও মেয়েদের অর্ধনগ্ন নাচ-গানের অনুষ্ঠান থেকে স্কুল-কলেজের ছাত্র ও যুব সমাজকে রক্ষা করার জন্য এবং এই অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ করতে জেলা প্রশাসকের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করছেন সুশীল সমাজ। এব্যাপারে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সেখানে শুধুমাত্র যাত্রাপালার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে সেখানে যদি অশ্লীল নৃত্য চলে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
পূর্ববর্তী পোস্ট