প্রেসবিজ্ঞপ্তি: সাতক্ষীরায় ভূমিদস্যু বশির অহম্মেদেরে সহযোগিতায় আশাশুনি উপজেলার হাজিপুর গ্রামের মহিদ হাজরাসহ এলাকার ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে জালদলিলের মাধ্যমে সরকারি খাসজমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। রোববার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন উপজেলার হাজীপুর, কাটাখালী, ছয়কনা, বাউচাষ ও বদরতলা গ্রামের নির্য়াতিত অসহায় জনগণ। সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্যে হাজীপুর গ্রামের শ্রী সুবোধ কুমার স্বর্নকার বলেন, ভূমিদস্যু বশির অহম্মেদ ২০০০ সালে জালচক্রের হোতা মহিদ হাজরার সহযোগিতায় আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের কাটাখালী ও হাজীপুর মৌজার সরকারি খাসজমি জাল দলিল তৈরী করে সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করে। ২০০৫ সালে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে ২/৩ দিনের মধ্যে ২/৩’শ বিঘা জমির ৬/৭ টি মাছের ঘের দখল করে নেয়। এসব খাস জমি এলাকার দুঃস্থ গরিব জনগণ সরকারের কাছ থেকে ডিসি আর নিয়ে ১৫/২০ বছর ধরে ভোগ দখল করে আসছিল। প্রতিবাদ করায় উল্টো ডিসিআর গ্রহিতা ২০/২৫ জন নিরীহ লোকের নামে ১০/১২টি মিথ্যে মামলা দিয়ে তাদেরকে এলাকা ছাড়া করে। এরপর থেকে এলাকার বঞ্চিত ভুক্তভোগিরা খাস জমি ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় আজও আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এলাকার হাজী মিলন গাজী ও হাজী আশরাফ গাজীর মালিকানাধীন বড়মুক্তখালী ও ছোটমুক্তখালী ঘেরের মধ্যে থাকা ৪০/৫০ বিঘা সরকারি খাস জমি ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে দখলমুক্ত করে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ডিসিআরের মাধ্যমে এলাকার দুঃস্থদের মাঝে ভাগবন্ট করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি জানতে পেরে উক্ত জালচক্র ও ভুমিদস্যু ২০১৬ সালের অক্টোবর-নভেম্বর মাসের মধ্যে উল্লেখিত দুইজন ঘেরমালিক ও গ্রামবাসীর নামে ৮/১০ টি মিথ্যে মামলা দিয়ে এলাকায় পুলিশ আতংক সৃষ্টি করে রেখেছে। বর্তমানে ভূমিদস্যুরা তাদের লাঠিয়াল ও সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে পূর্বের ন্যায় এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে অবশিষ্ট খাস জমি দখলের পায়তারা শুরু করেছে। এব্যাপারে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। পুলিশ প্রশাসন ও ভূমি অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা তাদের এসব অপরাধে সহযোগিতা করে থাকে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এসব ভূমিদস্যুদের নামে থানায় কোন অভিযোগ দেয়াটা দুঃস্বপ্নের ব্যাপার। অথচ এই ভূমিদস্যু শুধুমাত্র ফোন করে দিলেই কোন প্রকার তদন্ত ছাড়াই জেলার যে কোন থানায় সমাজের সব চেয়ে ভাল মানুষটির নামেও মিথ্যে মামলা রেকড করা হয়। গ্রেফতার হয়ে যেতে হয় কারাগারে। গত নভেম্বর মাসে জেলার বিভিন্ন থানায় ৮/১০ টি মিথ্যে মামলা দিয়েছে তারা। এই ভুমিদস্যু ও জালচক্রটি বিগত ২০০৭ সাল থেকে অদ্যবধি এলাকার নিরীহ মানুষের নামে প্রায় ৩০টির মত মিথ্যে মামলা দায়ের করেছে। এসব অধিকাংশ মামলার কোন নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়াই চার্জশীট দেয়া হয়েছে। তিনি ভূমিদস্যু বশির আহম্মেদ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর হাত থেকে এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষকে রক্ষা ও মিথ্যে মামলার দায় থেকে অব্যহতি দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে জেলা ভূমিহীন সমিতির সভাপতি আবুল খায়ের ও সাধারন সম্পাদক আলী নুর খান বাবুল উপস্থিত ছিলেন।