কালিগঞ্জ প্রতিনিধি : কালিগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার পশ্চিমে বিশাল জলরাশি সাথে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য যেন চারিদিকে খেলা করছে। বাংলাদেশ সীমান্তের কালিন্দী, ইছামতি ও কাঁকশিয়ালী নদীর ত্রি-মোহনায় বসন্তপুর যেন এখন সৌন্দর্য্যের প্রতিকী নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু উৎসব কিংবা দিবস নয় সারা বছরই ভ্রমণ পিপাসু মানুষের ভিড় এখানে লেগেই থাকে। বিশেষ করে পড়ন্ত বিকেলে লোকারণ্য হয়ে যায় নদীর পাড় বসন্তপুর বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা। প্রকৃতি প্রেমিরা নদীর সৌন্দর্যের উপভোগ করতে ছুটে আসে ভ্রমণ পিপাষুরা। কেউ আসে কাছের ব্যক্তিকে নিয়ে, আবার কেউ আসে সৌন্দর্য উপভোগ করতে। সব মিলে জায়গাটা মুখরিত থাকে। প্রকৃতিপ্রেমি মানুষ নদীর সৌন্দর্যে অভিভূত হয়ে বার বার ছুটে আসে এখানে। কালিন্দী নদীর বসন্তপুর রামজননী ভবনের কোলঘেসে গড়ে উঠা বিনোদন ও পিকনিক স্পট কেন্দ্র এক পলক দেখলেই মুখ ফিরাতে পারবেনা। একবার আসলে বার বার আসতে যে কারো ইচ্ছা করবেই। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত এই ভবনের অজানা ইতিহাস জানতে চায় সবাই। দুর-দুরন্ত থেকে যুগল জুটি সময় পেলে ছুটে আসে এখানে। এবছর ১৪ ফেব্রয়ারি বিশ^ ভালবাসা দিবসকে স্বাগত জানাতে সিলেট থেকে একদল পর্যটকরা ছুটে এসেছে বসন্তপুর রামজননী ভবনে। যে কারণে ধীরে ধীরে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে সীমান্ত নদীর পাড় এলাকাটি। শুক্রবার ভালবাসা দিবসের বিকেলে বসন্তপুর নদীর পাড়ে সৌন্দর্য পিপাষুদের ঢল নামে। জায়গায়টি দর্শনার্থীদের ভিড়ে এখন বিনোদন কেন্দ্র ও পিকনিক কর্ণার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। ইতিমধ্যে গত ৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সার্বিক ব্যাবস্থাপনায় দিন ব্যাপি জাগজমকপূর্ণ পিকনিক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই পিকনিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিফাত উদ্দিন, প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দসহ উপজেলা এলাকার বিশিষ্ঠ জনেরা অংশগ্রহন করেন। পিকনিক শেষে আলোচনা সভায় শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল রামজননী ভবনের পরিত্যাক্ত জমিতে পিকনিক স্পট কর্ণার ঘোষনা দেন। সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, বিকেল হলেই প্রকৃতি প্রেমিরা ছুটে আসে এখানে নিরিবিলি সময় কাটাতে। পড়ন্ত বিকেলের সৌন্দর্যে দেখতে নদীর পাড়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেন, কেউ বা আবার মগ্ন থাকেন প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে, আবার কেউ কেউ পরিবার পরিজন নিয়ে নদীর বুকে নৌকা চড়েন। এবছর রাামজননী ভবনসহ আশপাশ এলাকায় ভালবাসা দিবসে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। ভালবাসা দিবসে সিলেট থেকে আসা একজন পর্যটক প্রণয় দাশ জানান, কালিগঞ্জের বসন্তপুর সীমান্ত নদীর পাড়ে আজ প্রথম ঘুরতে এসেছি। নদীর বুকে সূর্যের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। তবে এখানে পার্ক তৈরি হলে আরো বেশী মজা পেতাম।
বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইয়াছিন আরাফাত বলেন, উপজেলার উত্তরশ্রীপুর নানার বাড়ি বেড়াতে এসে নদীর পাড়ে ঘুরতে এলাম। এমন সুন্দর জায়গা আগে কখনো দেখিনি। সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের উচিৎ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত জায়গাটি দর্শনার্থীদের জন্য পার্ক বা বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করা। এখান থেকে সরকার অনেক রাজস্ব আসতে পারে। পরিবার পরিজনদের নিয়ে বেড়াতে এসে আনন্দের অনুভূতি জানান।
বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্সের প্রোগ্রাম অফিসার সুলতা সাহা বলেন, নদীর সৌন্দর্য ও পাশে রামজননী ভবন দেখার জন্য সুযোগ পেয়ে এখানে বেড়াতে এসেছি। খুবই ভাল লাগছে, তবে একটা পার্ক বা বিনোদন কেন্দ্র থাকলে আরো বেশী মজা পেতাম।
বিনোদন পিপাসুদের সেরা ঠিকানা কালিগঞ্জের বসন্তপুর ত্রি-মোহনা!
পূর্ববর্তী পোস্ট