বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা এক কোটি পরিবারকে রেশনিং এর আওতায় আনা হবে। চাল, ডাল, তৈল, চিনি ও গমসহ একটি ৪ সদস্যের পরিবারকে কমপক্ষে চারহাজার টাকার পন্য যদি একহাজার টাকায় সরবরাহ করা হয়। তাহলে এক কোটি পরিবার অর্থ্যাৎ ৪ কোটি মানুষ প্রতিমাসে ৭৫০ টাকার আর্থিক সহায়তা হিসাবে ৭৫০¬৪ =৩০০০ হাজার টাকা পরিবার প্রতি। অর্থ্যাৎ বছরে ৩৬০০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা পাবে। এই ক্ষেত্রে কৃষি ভিত্তিক সমবায় সমিতি গড়ে তুললে কৃষি সম্প্রদায় গ্রামে গ্রামে সমবায় সমিতি গড়ে তুলতে পারবে। ক্ষুদ্র চাষিরা গ্রামে গ্রামে সমবায় সমিতি গড়ে তুলতে পারবে। যারা সমবায় সমিতির মাধ্যমে ধান, গম, আখ, ডাল, সরিষা উৎপাদন করতে পারবে। যারা সমবায় সমিতির মাধ্যমে কৃষি ফসল উৎপাদন করবে তাদের কাছ থেকে স্থানীয় সরকারী ক্রেতাদের মাধ্যমে ধান, গম, ডাল, চিনি ও সরিষা ক্রয় করে ভোগ্যপন্য চাল, ডাল, তৈল, চিনি ইত্যাদি রেশনিং এর মাধ্যমে এক কোটি পরিবারের কাছে বিক্রি করা সম্ভব। সমবায় সমিতির কৃষক বিনামূল্যে সার ও কৃষি উপকরণ ভর্তুকী মূল্যে কিনতে পারে। নি¤œ আয়ের মানুষের আর্থনৈতিক ভিত মজবুতের জন্য সমবায় কৃষি খামার ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং ব্যবস্থা হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এছাড়া সবার জন্য পেনশন স্কীম চালু করা প্রয়োজন। প্রত্যেক নাগরিক ১৮ বছর বয়স হলেই পেনশন স্কীমের হিসাবে অন্তর্ভূক্ত হবে এবং প্রতিমাসে ১০০ টাকা পেনশন গ্রহিতার একাউন্টে জমা করবে এবং সরকার পেনশন গ্রহিতার একাউন্টে ১০০ টাকা জমা দিবেন ১৮ বছর থেকে প্রতিমাসে ১০০ টাকা হিসাবে ৬০ বছর পর্যন্ত জমা করবেন এবং ৬১ বছর বয়সের ১ম দিন থেকে যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন পেনশন স্কীম গ্রহিতা মাসে মাসে পেনশন পেতে থাকবেন। এক্ষেত্রে যারা সরকারী চাকরী বা কোম্পানী চাকুরীতে চলে গেলে সরকারী চাকুরী বা কোম্পানীর পেনশনের নীতিমালার অধিভুক্ত হবেন। যে সকল প্রবীন পুরুষ ও মহিলার কোন চাকরী নেই, তারা সবাই ৬০ বছর বয়স থেকে এই সার্বজনীন পেনশন হিসাবে মাসে কমপক্ষে ৪০০০/- চার হাজার টাকা দেওয়া সম্ভব। এছাড়া যারা বেশী পরিমানে পেনশন স্কীমে টাকা জমা রাখবেন। তারা ৬০ বছর পর্যন্ত জমাকৃত টাকার মুনাফাসহ হিসাব করে যে পরিমান টাকা পাওনা হবে তার উপর পেনশন হিসাবে মাসে মাসে টাকা দেওয়া সম্ভব।
দেশের সবার জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য সরকারী চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো আধুনিক ও যুগোপযোগী করা উচিত। বয়স্ক নারী পুরুষের জন্য চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো নিরাপদ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হতে পারে সে ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। কৃষি ভিত্তিক আর্থনীতি ও কৃষি নির্ভর শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে হলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে প্রচুর পরিমানে ফলজ বৃক্ষ রোপন ও কৃষি বিপ্লব ঘটানো সম্ভব। জন কল্যাণ মূলক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হলে, সেই পরিকাঠামো অনুযায়ী রাজনৈতিক সংগঠন ও রাজনীতির চর্চা জরুরী। মানুষ মানুষের জন্য সবাই মিলে বাঁচার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্র ধনীক শ্রেণির যেমন রাষ্ট্রীয় পৃষ্টপোষকতা দিবে, তেমনি গরিব শ্রমজীবী পেশাজীবীদের জন্য নিরাপত্তা মূলক কর্মসূচী গ্রহণ করবে। দেশের অভ্যন্তরে সবশ্রেণি পেশার মানুষ সামাজিক নিরাপত্তা, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায় বিচার পাবে। এই আকাংখাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খা। আমরা অবশ্যই পারব সেই লক্ষ্যে পৌছাতে।
লেখক : অধ্যাপক ইদ্রিস আলী ,শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক – বাংলাদেশ জাসদ