কে এম রেজাউল করিম : অতিমাত্রায় খানা, খন্দকে পরিণত হওয়ায় সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ মহাসড়ক চলাচলের অনুপোযোগি হয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। আর এতে প্রাণহানি লেগেই থাকছে। সাতক্ষীরার দক্ষিণঞ্চালের একমাত্র সড়কটি দিয়ে সাদা সোনা চিংড়ি, কাঁকড়া, আমসহ বিভিন্ন দ্রব্য রপ্তানি করা হয়। প্রতিদিন লাখো মানুষ এই রাস্তাটি দিয়ে সর্বস্থরের মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় কর্ম সম্পাদন করে। শহরগামী সড়কটি অতিমাত্রায় নষ্ট হওয়ায় শিক্ষার্থীদেরও সঠিক সময়ে পৌছাতে বিলম্ব হয়। অন্যদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা, বিভাগীয় শহর বা ঢাকাতে যেতে অনেকটা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বর্তমানে সাধারণ মানুষ এটাই ধরে নিয়েছে যে, তাদেরকে এ ভাঙা চোরা সড়কের মধ্যদিয়ে চলতে হবে। আশা হারিয়ে নিরাশায় পরিণত হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেবহাটা উপজেলার সীমান্ত সাতক্ষীরা সদর আলিপুর শেষ হয়ে পুষ্পকাটি হতে কালিগঞ্জ উপজেলায় বেজরআটি শেষ হয়েছে। আর এই দীর্ঘ প্রায় ২০ কিলোমিটার প্রধান সড়কের বেহালদশা। উপজেলার বহেরা বাজার হতে আশুমার্কেট পর্যন্ত কয়েকশত ছোটবড় গর্ত, পারুলিয়া কদবেলতলা মোড়, ডেলটা পিয়ার আলীর মোড়, নওয়াপাড়র হাদিপুর হতে বেজরআটি মোড় পর্যন্ত সড়কে অতিমাত্রায় বড় বড় গর্তে প্রতিনিয়তই ছোট-বড় ঘটছে দুর্ঘটনা লেগেই আছে। জেলা শহরের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের এই একমাত্র মাধ্যমটি দীর্ঘদিন ধরেই চলাচলের অনুপযোগি হয়ে উঠলেও কখনো চোখ পড়ছে না সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তাদের। তাদের কাছেই যেন জিম্মি এখন জেলা ও দক্ষিণাঞ্চলের লাখো লাখো মানুষ। রৌদ্রে ধুলো-বালিতে জনসাধারণ হাফিয়ে উঠেছে। দীর্ঘ এই মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন থেকেই সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তাদের অযতœ আর আবহেলায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হলেও মেরামতের উদ্যোগ নেই। এতে করে সাতক্ষীরা জনপদের সর্বস্তরের মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হলেও সড়কটি সংস্কারে গৃহীত হয়নি কোন কার্যকর ও যুগোপযোগি ব্যবস্থা। ২০১৬-১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ২০-২৫ টি তাজাপ্রাণ ঝরেগেছে। আর অসংখ্য মানুষ হারিয়েছে স্বাভাবিক জীবন যাত্রার সক্ষমতা। দুর্ঘটনায় কবলিত যাত্রীরা বলছেন, অদক্ষ চালক আর সড়কের বেহালদশায় সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। তাছাড়া বাংলাদেশ যখন এগিয়ে চলেছে ঠিক তখনি সড়কে বেহালদশায় জীবনহানিতে অনেকটা বাধাগ্রস্ত করছে। যদি সঠিক উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয় তাহলে অনেকটা উন্নয়ন পিছিয়ে পড়বে দক্ষিণঞ্চালের। শুক্রবার দেবহাটা উপজেলার ডেলটা মোড় এলাকায় অতিমাত্রায় সড়কে গর্ত থাকায় যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আজগার আলী নামে একজন নিহত ও ৩০জন আহত হয়েছেন। আর এভাবে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় অনেক স্বজন তাদের আপনজন হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন। শুক্রবার ঘটে যাওয়া দুর্ঘটানার প্রত্যক্ষদর্শী কামটা গ্রামের আরিফুল ইসলাম জানান, কালিগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা সাতক্ষীরা জ- ১১০০০৬ বাসটি চাঁদপুরের ডেলটা এলাকায় আসলে সাতক্ষীরা থেকে আসা মালবোঝায় একটি মোটরসাইকেলকে সাইড দিতে যেয়ে সড়কের অসংখ্য গর্তে বাসের চাকা পড়ে নিয়ন্ত্রণ হারায়। তখন বাসটির চালক উপায় না পেয়ে রাস্তার পাশে একটি গাছে মেরে দেন। গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে বাসটি কাঁত হয়ে পড়েন। এতে বাসটির হেলপার পিশে মারা যায় এবং যাত্রীরা আহত হন। পরে আহতদের নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। যাত্রীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দুর্ঘটনা কবলিত এলাকাগুলোতে বিশেষ সংকেত, স্প্রিড ব্রেকারসহ কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দাবি জানিয়েছেন।