নিজস্ব প্রতিনিধি : তিনতলা বিশিষ্ট ভবন দাঁড়িয়ে থাকলেও খালি জমি দেখিয়ে বিক্রি হলো সাতক্ষীরার এক সময়ের জনপ্রিয় সিটি ডায়াগনস্টিকের ভবনসহ সম্পত্তি। এতে সরকারের প্রায় ২০লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সাব রেজিষ্ট্রার বলছেন আমরা শুধু কাগজপত্র দেখি। জমির ক্রেতা বলছেন সবই করেছে দলিল লেখক আর দলিল লেখক বলছেন ক্রেতা বিক্রেতার কথায় অনুযায়ী রেজিষ্ট্রি করা হয়েছে। রেজিষ্ট্রি অফিস থেকে মাত্র ১শ গজ দূরত্বের স্থানের সম্পর্কে দলিল লেখক বা সাব রেজিস্ট্রার আসলেই কিছু জানেন না। নাকি জেনে বুঝে করেছেন এটি করেছেন সেটি নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ।
এধরনের অভিযোগে নিবন্ধন অধিদপ্তর ঢাকার মহা-পরির্শক এবং সাতক্ষীরা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কাটিয়া গ্রামে মৃত. গোলাম আকবরের পুত্র মোহাম্মদ মহাসিন।
অভিযোগে জানা গেছে, কাটিয়া মৌজায় ১২ শতক জমির উপর ৩ তলা বিশিষ্ট আনুমানিক ৫৫শ স্কয়ার ফিটের বাণিজ্যিক ভবন স্থাপিত রয়েছে। ভবনটি স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে প্রয়াত গোলাম আকবর কবির নির্মান করেন। কিন্তু গত ১০ ফেব্রæয়ারি মৃত গোলাম আকবরের একপুত্র মোহাম্মাদ মহসীন ও দুই কন্যা আকতারি বেগম, মোস্তারি বেগমকে বাদ দিয়ে আবুল ফজল, আবু সাঈদ, আবুল বাসার, আবু জাফর এবং আব্দুল্লাহের পুত্র আব্দুল্লাহ আল মামুন, আব্দুল আল আসিফ এব তার স্ত্রী আফিফা আব্দুল্লাহ আশাশুনি উপজেলার নূরুজ্জামানের পুত্র বর্তমানে শহরের কাটিয়া গ্রামের ফারুকুজ্জামানের নিকট দলিল লেখক সাইদুর রহমানের মাধ্যমে ১০.১৩ শতক সম্পত্তি বিক্রয় করেন। কিন্তু ১০.১৩ শতক জমির নির্মিত ৩ তলা বিশিষ্ট ভবন থাকলেও দলিলে ৭.১৪ শতক জমির উপর কোন ভবন নেই বা স্থাপনাবিহিন খালি জমি উল্লেখ করা হয়েছে। এতে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার।
অন্যদিকে, দলিল লেখক ও সাব রেজিষ্ট্রারের সহযোগিতায় সরকারি রাজস্ব ফঁাঁকি দিয়ে নিজেদের পকেট ভরতেই প্রতারনা করা হয়েছে বলে মনে করেন সাতক্ষীরা সচেতন মহল। প্রকাশ্যে ভবন থাকলেও দলিলে ফাঁকা জায়গা কেন দেখানো হলে? কিভাবে হলো? এটি নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। অনেকেই মনে করেন আর্থিক সুবিধা পেতেই এ কৌশল করা হয়েছে। এর সাথে সাব-রেজিস্ট্রার, দলিল লেখক এবং ক্রেতা-বিক্রেতার গোপন সম্পৃক্ততা রয়েছে।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে সদর সাব রেজিষ্ট্রার রিপন মুন্সি বলেন, আমরা তো স্থান দেখি না। ক্রেতা-বিক্রেতা এবং দলিল লেখকরা যা বলেন সে অনুযায়ী রেজিষ্ট্রি করে দেই। যদি কোন কৌশলে তারা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে থাকে সেটি প্রমানিত হলে অব্যশই তাদের রাজস্ব পরিশোধ করতে হবে।
ক্রেতা ফারুকুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, দলিল করার বিষয় তো আমরা বুঝিনা। দলিল লেখক যেভাবে বলেছে সেভাবেই করা হয়েছে।
তবে বিক্রেতাদের মধ্যে আবুল বাশারের সাথে যোগাযোগ তিনি অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করেই বলেন একটা ঘটনা ঘটেছে। এটা নিয়ে হয়ত অনেক কিছুই করা যাবে। কিন্তু কিছু না করে একটু ওভার লুক করেন।
দলিল লেখক সাঈদুর রহমান বলেন, আমি তো ঘটনাস্থলে যায়নি। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কথায় লিখে দিয়েছি। তবে যদি সরকার রাজস্ব পেলে অবশ্যই ক্রেতা সেটি পরিশোধ করবে।#