স্পোর্টস ডেস্ক: ২০১১ সালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজ ১-০ তে হেরেছিল বাংলাদেশ। সেটিই ছিল আইসিসির কোনো সহযোগী দেশের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ হার। আফগানদের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে হার মানে দেশের মাঠে সবচেয়ে বড় লজ্জা। শুধু তাই নয়, আইসিসির ওয়ানডে র্যাঙ্কিংটাও পড়বে হুমকিতে।
২০১৭ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮ নাম্বারে থাকা দল সরাসরি খেলবে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ। বর্তমানে বাংলাদেশ আছে ৭ এ। যদি এই সিরিজ হেরে যায় তাহলে নেমে যেতে পারে ৮ নাম্বারে। এরপরই রয়েছে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ। সেখানে হারলে ৮ নাম্বার থেকেও নেমে যাবে বাংলাদেশ। তাই আফগানদের হারিয়ে জয়ের ধারায় ফেরা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই মাশরাফি বাহিনীর। তবে মাশরাফি এই র্যাঙ্কিং নিয়ে ভেবে মাঠে কোনো চাপ নিতে চাইছেন না। তবে অধিনায়কের লক্ষ্য একটাই। সেটি জয়।
মাশরাফি বলেন, ”এখন খেলার বাইরে অন্য কিছু ভেবে চিন্তা করে চাপ নিতে চাই না। আমাদের লক্ষ্য থাকবে শুধু জয়ের জন্য মাঠে নামা। সে জন্য আমাদের যা যা প্রয়োজন মাঠে তাই করতে হবে।”
অন্যদিকে আফগানরাও জয়ের জন্য মুখিয়ে। কোচ লাল চান রাজপুত, অধিনায়ক আসগর স্তানিকজাই সবার কণ্ঠেই জয়ের প্রত্যয়। রাজপুত বলেন, ”কাল (আজ) আফগানিস্তান সিরিজ জয়ের জন্যই মাঠে নামবে। ছেলেদের বলেছি ইতিবাচক ক্রিকেট খেলতে। ম্যাচটা জিতলে এটা আফগানিস্তানের জন্য বড় ইতিহাস হবে।”
দুপুর আড়াইটায় আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে মাশরাফি বাহিনী। প্রথম ম্যাচে কষ্টার্জিত জয়ের পর দ্বিতীয়টিতে অপেক্ষা ছিল শততম জয়ের। শেষ ম্যাচেও তাই। কিন্তু আজ না জিতলে শুধু সিরিজই হারাবে না, শততম জয়ের অপেক্ষাও বাড়বে। দ্বিতীয় ম্যাচ হারে অন্যতম কারণ ছিল দলের বাজে ব্যাটিং। তামিম, সাকিব, সৌম্য, মাহমুদুল্লাহদের মতো ব্যাটসম্যানরা আউট হয়েছেন বাজে ভাবে। ১০৯ রানে ২ উইকেট থেকে ১০০ রান তুলতে হারায় বাকি ৮ উইকেট।
ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে মাশরাফি বলেন, ”অবশ্য ব্যাটিংটাতে আমাদের সিরিয়াস হতে হবে। যারা সেট হবেন তাদের উচিত ইনিংসটা লম্বা করে আসা বা শেষ করে আসা। দায়িত্ব নিতে হবে সিনিয়র ব্যাটসম্যানদের।”
দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দুই ম্যাচে সর্বোচ্চ ১০০ রান করেছেন তামিম ইকবাল। এরপর মাহমুদুল্লাহ দুই ম্যাচে ৮৭, সাকিব আল হাসান ৬৫ ও মোসাদ্দেক হোসেন এক ম্যাচে ৪৫ রান করেন। কিন্তু দলের তরুণ ব্যাটিং ভরসা সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমানের সঙ্গে ব্যর্থ অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহীমও। এই অভিজ্ঞ উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে অবশ্য অভিযোগটা আরো কড়া। দ্বিতীয় ম্যাচে এক স্টাম্পিং ও ক্যাচ মিস করে হাতের নাগালে আসা জয়ের সম্ভাবনাটা গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু মুশফিকের পাশে দাঁড়ালেন অধিনায়ক। জানিয়ে দিলেন মুশফিকের পারফরম্যান্স নিয়ে হতাশও নন।
তিনি বলেন, ”আসলে একক ভাবে মুশফিককে দোষ দিলে হবে না। এমন দুই একটা ঘটনা ঘটতেই পারে খেলাতে। আজ আমরা মুশফিককে দোষ দেবো কাল আমারও এই ভুল হতে পারে। আমি মনে করি মুশফিক পেশাদারিত্বের দিক থেকে আমাদের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে। তার পারফরম্যান্স আপ টু দা মার্ক আছে।”
অন্যদিকে বল হাতে দলের পক্ষে সেরা সাকিব আল হাসান। তার শিকার দুই ম্যাচে ৬ উইকেট। কিন্তু তার সঙ্গে স্পিন আক্রমণে তেমন কোনো সফলতা পাননি স্পেসালিস্ট স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তাই শেষ ম্যাচে হয়তো তাকে নাও দেখা যেতে পারে। সেখানে আসতে পারেন হঠাৎ করে ৮ বছর পর দলে ডাক পাওয়া মোশরারফ হোসেন রুবেল। আর দল থেকে বাদ পড়া রুবেল হোসেনের পরিবর্তে জায়গা পেতে পারেন পেসার শফিউল ইসলাম।
দারুণ ফর্মে থাকা পেসার আল আমিন হোসেনকে দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল শফিউল তার চেয়ে ফিটনেসে এগিয়ে বলে। তাই শেষ ম্যাচে এই পেসারকে খেলানো অনেকটা টিম ম্যানেজম্যান্টের দায়বদ্ধতাই বলা চলে। তবে তিন স্পিনার নিয়ে খেললে শফিউলকে দলে নাও দেখা যেতে পারে।
ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচে জয়ের জন্য প্রথম ম্যাচের মতো উইকেটই চান মাশরাফি। উইকেট নিয়ে তিনি বলেন, ”প্রথম ম্যাচে আমরা যেমন উইকেটে খেলতে চেয়েছিলাম, অলমোস্ট তেমন উইকেটই পেয়েছিলাম। যদিও বড় স্কোর গড়ার সুযোগ থাকলেও আমরা করতে পারিনি। দ্বিতীয় ম্যাচটার উইকেট অনেক স্লো ছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে গিয়ে আবার অতটা ছিল না। তারপরও বোলিং ভালো করেছি আমরা। শেষ ম্যাচের উইকেট এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে ভালো। কালকে (আজ) আশা করি কোনো পরিবর্তন হবে না।”