খেলার খবর: আয়ারল্যান্ডকে শুরুতেই ধাক্কা দেন মুজিব উর রহমান। নিজের প্রথম ৩ ওভারই নেন মেডেন। প্রথম স্পেলে (৬ ওভার) ৭ রান দিয়ে শিকার করেন ৩ উইকেট। ১০ ওভার শেষে দেশের হয়ে সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েন। শেষ পর্যন্ত তার ধাক্কা সামলে উঠতে পারেননি আইরিশরা। মুজিবের রেকর্ড বোলিংয়ে দুর্দান্তভাবে প্রথম ওয়ানডে জিতে ৫ ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল আফগানিস্তান।
দুই দলের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বয়েছে রানের জোয়ার। তবে প্রথম ওয়ানডেতে ভিন্ন চিত্র। বৃহস্পতিবার দেরাদুনে মুজিবের স্পিন ঘূর্ণিতে মাত্র ১৬১ রানে অলআউট হয় আয়ারল্যান্ড। লো-স্কোরিং ম্যাচে ৪৯ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙর করে আফগানিস্তান।
টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড। তবে শুরুটা শুভ হয়নি সফরকারীদের। সূচনাতেই তাদের নাড়িয়ে দেন মুজিব। ফিরিয়ে দেন আইরিশ অধিনায়ককে। তার ২০তম বলে আসে প্রথম রান। ৬ ওভারের প্রথম স্পেলে ফিরিয়ে দেন অ্যান্ড্রু বালবার্নি ও অভিষিক্ত জেমস ম্যাককলামকেও।
মুজিবের ঘূর্ণির পাশাপাশি দৌলত জাদরান ও গুলবাদিন নাইবের পেস আগুনে পুড়েছে আয়ারল্যান্ড। নিয়মিত উইকেট হারিয়ে নুইয়ে পড়ে আইরিশরা। দলীয় স্কোর বোর্ডে ৬৯ রান তুলতেই ৬ উইকেট খুইয়ে বসে তারা।
তবে একপ্রান্ত আগলে থাকেন ওপেনার পল স্টার্লিং। সপ্তম উইকেটে জর্জ ডকরেলকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতেই খেই হারান ডকরেল। ব্যক্তিগত ৩৭ রান করে স্পিন জাদুকর রশিদ খানের বলি হন তিনি। এতে ভাঙে ৭৬ রানের লড়াকু জুটি।
একের পর এক সতীর্থ যাওয়া-আসার মিছিলে যোগ দিলেও নিজের অবস্থানে অবিচল ছিলেন স্টার্লিং। একা কাঁধে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তাকেও হার মানতে হয়। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে খেলেন ১৫০ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৮৯ রানের লড়াকু ইনিংস।
১০ ওভারে ৩ মেডেনসহ ১৪ রানে ৩ উইকেট নেন মুজিব। ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের হয়ে ১০ ওভারে সবচেয়ে কম রান দেয়ার রেকর্ড এটি। এর আগে এ রেকর্ড দখলে ছিল মোহাম্মদ নবীর। ২০১৬ সালে মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১০ ওভারে ১৬ রান দিয়ে আফগানদের হয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে কিপ্টে বোলিংয়ে রেকর্ড গড়েন তিনি।
৩ উইকেট নিয়ে আয়ারল্যান্ডকে অল্প রানে আটকে রাখতে ভূমিকা রাখেন দৌলত। এর সুবাদে তৃতীয় আফগান হিসেবে ১০০ ওয়ানডে উইকেট নেয়ার ভাগিদার হয়েছেন তিনি। গুলবাদিন নেন ২ উইকেট।
জবাবে ইনিংসের ভূমিকাটা ভালো লেখে আফগানিস্তান। উদ্বোধনী জুটিতে দলকে ৪৩ রান এনে দেন হজরতউল্লাহ জাজাই ও মোহাম্মদ শাহজাদ। জাজাই ব্যক্তিগত ২৫ রান করে ম্যাককার্থির শিকার হলে ভাঙে এ জুটি। পরে কার্যকরী ইনিংস খেলে দলকে এগিয়ে নেন শাহজাদ। ৫৩ বলে ৬ চারে ৪৩ রান করে রয়েড র্যাংকিংয়ের বলে মুর্তয়াহকে ক্যাচ দেন তিনি।
এতে দলীয় স্কোর দাঁড়ায় ৯০/২। পরক্ষণেই এ পেসারের বলে ব্যক্তিগত ২২ রানে সাজঘরে ফেরেন রহমত শাহ। এর রেশ না কাটতেই সিমি সিংকে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন হাশমতউল্লাহ শাহীদি। স্বল্প পূঁজি নিয়েও খেলা জমিয়ে তোলে আয়ারল্যান্ড।
তবে আইরিশদের দৌড় ছিল সেই পর্যন্তই। পরে ৪৬ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান গুলবাদিন। তিনি ফেরেন ডকরেলের কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে। জয় তখন হাতছোঁয়া দূরত্বে। বাকি কাজটুকু সারেন নাজিবউল্লাহ জাদরান। ২ ছক্কায় জয় নিশ্চিত করেন তিনি। মুজিব রেকর্ড গড়লেও অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচসেরা হয়েছেন গুলবাদিন।