নিজস্ব প্রতিনিধি : উচ্চ আদালতের নির্দেশ উপক্ষো করে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের ছনকা খাল খননের অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া পানি ভর্তি খালের দু’ধার কোন রকমে চেচে ছুলে খননের কাজ করা হচ্ছে।
সরেজমিনে কালিগঞ্জ উপজেলার ছনকা গ্রামে গেলে শীতলপুর গ্রামের আব্দুল ওহাব জানান, ১৯৬৭ সালের ১৮ ফেব্র“য়ারি মুকুন্দপুর মৌজার ৬ দশমিক ২৪ একর জমি চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দলিলমূলে আব্দুল গফফর ও রহমত আলী ভোগদখলে রয়েছেন। ১৯৭৫ ও ১৯৭৬ সালে তিনিসহ প^াঁচজন একই মৌজার সাড়ে সাত একর জমি একই রকম দলিলমূলে ভোগদখলে রয়েছেন। ছনকা গ্রামের শেখ জুলফিকার আলী ওই ১৩.৮০ একর জমির মালিকানা দাবি করে সাতক্ষীরা যুগ্ম জজ আদালতে মামলা করেন। ওই জমি নিয়ে ২০০০ সালের ২৩ মার্চ হাইকোর্ট শেখ জুলফিকারের পক্ষে স্থিতাবস্থা জারির নির্দেশ দেয়। যা আজো অব্যহত রয়েছে।
সরকারিভাবে বন্দোবস্ত নেওয়া জমির মালিকদের অভিযোগ, কোন প্রকার আলোচনা না করেই তাদের জমির উপর দিয়ে খাল খননের নকশা তৈরি করে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে স্থানীয় মথুরেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান গাইন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছেন। বিষয়টি তারা জানতে পেরে চলতি ইতিমধ্যেই তারা সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের খুলনা বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী ও কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন। এরপরও রোববার সকাল থেকে আব্দুল ওহাবের জমির মাছের ঘেরের বেড়িব^াঁধ নষ্ট করে দু’টি এস্কবেটর ম্যাশিন দিয়ে খননের নামে পানিভর্তি খালের দু’ পাড় চে^ঁচে ছুলে খনন দেখানো হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিএডিসির সাতক্ষীরা অফিসের সহকারি প্রকৌশলী হাবিবুল্লাহ সোমবার খনন কাজ বন্ধ রাখতে বললেও উপজেলা পর্যায়ের এক শীর্ষ পর্যায়ের জনপ্রতিনিধির ইঙ্গিতে আবারো খাল খননের নামে আব্দুল ওহাবের ঘের নষ্ট করার কাজ শুরু করা হয়। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে এসকেবটর চালক পাপ্পু কাজ বন্ধ করে দেন। এবং ইউপি সদস্য নূর মোহাম্মদ ওরফে বাচা মোল্লা কৌশলে স্থান ত্যাগ করেন। তবে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা না মেনে কে খাল খনন করাচ্ছেন এমনটি জানতে চাইলে পাপ্পু কোন উত্তর দিতে পারেননি। এ সময় উপস্থিত জমির মালিকানা দাবিদার শেখ জুলফিকার আলী হাইকোর্টেে নির্দেশনা না মেনে খাল খননের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। তবে এ ঠিকাদার শাহীন চাকলাদারের প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন আনু উপস্থিত ছিলেন না। তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। বন্ধ ছিল বিএডিসি সাতক্ষীরা অফিসের সহকারি প্রকৌশলী হাবিবুল্লাহ এর।
জানতে চাইলে মথুরেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান গাইন বলেন, এলাকার উন্নয়নে তিনি কৃষি বিভাগের মাধ্যমে মুকুন্দপুর থেকে ছনকা পর্যন্ত চার কিলোমিটার খাল খননের একটি নকশা তৈরি করে সংশিষ্ট দপ্তওে পাঠিয়েছিলেন। তবে পানিভর্তি খালে চে^ঁচে ছ^ুঁলে যেভাবে খাল খনন করা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না। জমির মালিকদের দাবি ও নিয়ম বহির্ভুতভাবে খাল খনন বন্ধ করার জন্য সোমবার নির্দেশ দেওয়া হলেও মঙ্গলবার খনন কাজ করলে সেটা সম্পূর্ণ বেআইনি।
ঠিকাদারের প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, বন্ধ করে দেওয়ার পরও খাল খনন করাটা ঠিক হয়নি।
বিএডিসির সাতক্ষীরার সহকারি প্রকৌশলী হাবিবুল্লা জানান, সোমবার বন্ধ করে দেওয়ার পরও খাল খনন করা ঠিক হয়নি। তিনি বিষয়টি ঠিকাদার ও উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
সঠিক জবাব দিতে না পারলেও এস্কাবেটর চালক পাপ্পু বলেন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ না পেলে তারা আর ম্যাশিন চালাবেন না।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক রাসেল বলেন, খননে অনিয়ম ও জমির মালিকদের দাবির প্রেক্ষিতে সোমবার খাল কাটা বন্ধ রাখতে বলা হয়। আদেশ অমান্যকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।#
পূর্ববর্তী পোস্ট