স্পোর্টস ডেস্ক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারীতে বিলম্বিত এবারের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে ফ্রান্সের রাজা প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) এর মুখোমুখি হবে জার্মানির সেরা বায়ার্ন মিউনিখ।
বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটা তখন জানান দেবে বাংলাদেশে ছুঁয়েছে ২৪ আগস্ট, সে সময় মাঠে নামবে এই দুই জায়ান্ট। ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ সম্মাননা জয়ের লক্ষ্যে লড়বে তারা। সনি টেন-২ এবং সনি টেন-২ এইচডি রাত ১টায় এ খেলা দেখাবে।
মেগা ফাইনালের দুই প্রতিপক্ষ শক্তির বিচারে সমানে সমান। করোনাপরবর্তী সিঙ্গেল লেগের নকআউটে জুভেন্তাস, ম্যানচেস্টার সিটি ও আতলেতিকো মাদ্রিদ অঘটনের শিকার। সেদিক থেকে পিএসজি ও বায়ার্ন ব্যতিক্রম। নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়ে উঠে এসেছে শিরোপা নির্ধারণীর মঞ্চে।
বায়ার্ন তাকিয়ে ষষ্ঠ ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দিকে, যা তাদের লিভারপুলের পাশে বসাবে। আর পিএসজির ওপর চ্যাম্পিয়নস লিগে ফ্রেঞ্চদের দীর্ঘদিনের না পাওয়ার আক্ষেপ মেটানোর দায়।
পরিসংখ্যান এগিয়ে রাখছে বায়ার্নকে। টানা ২১ ম্যাচ জয়ী দলটি নিশ্চিতভাবেই টমাস টুখেলের দলকে পেছনে ফেলার সামর্থ্য রাখে। কিন্তু পিএসজি কম যাওয়ার নয়। ৪১তম দল হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠল তারা। আর শিরোপা জিতলে এই সাফল্য পাওয়া ২৩তম দল হবে।
ঘরোয়া লিগে গত আট মৌসুমে সপ্তম ফ্রেঞ্চ লিগ জিতেছে পিএসজি। আর গত ছয় মৌসুমে মোট তিনবার ঘরোয়া ট্রেবল জিতেছে তারা। এবারও ট্রেবল জিতেছে। তবে অগুরুত্বপূর্ণ লিগ কাপ বাদ দিলে চ্যাম্পিয়নস লিগ মিলিয়ে প্রথম ট্রেবল করার পালা পিএসজির।
পিএসজি যদি নতুন শক্তি হয়ে থাকে তবে বায়ার্ন অভিজ্ঞতায় পূর্ণ। এ নিয়ে ১১তম চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে নামছে দলটি। ২০১৩ সালে সর্বশেষ শিরোপা জিতেছে তারা। সেই দলের চারজন এবারও ফাইনালে খেলছেন। শিরোপা নির্ধারণীতে নেমে কীভাবে জিততে হয় তা জানা আছে এই দলটির। টানা ২০ ম্যাচ জিতে আসা বাভারিয়ানরা এই চ্যাম্পিয়নস লিগে বিপক্ষের জালে মোট ৪২টি গোল দিয়েছে।
এছাড়া চ্যাম্পিয়নস লিগ নতুন করে শুরুর পর বায়ার্ন ১৯ বার চ্যাম্পিয়নস লিগ নকআউটে খেলেছে। এর মধ্যে ফাইনালে উঠেছে ৫ বার। ২০০১ ও ২০১৩ সালে দু’বার শিরোপা জেতে তারা।
ফাইনালের আগের দিন সংবাদ সম্মেল বায়ার্ন মিউনিখ কোচ হান্স ফ্লিক বলেছেন, পিএসজির আক্রমণভাগে অনেক মানসম্পন্ন শক্তিশালী খেলোয়াড় আছে। অনেকটা বার্সেলোনার মতো। লিওঁর খেলার ধরন অনেকটা সোজাসুজি লাইনে আক্রমণে ওঠা, তারা গোল বরাবর আক্রমণে ওঠে এবং প্রায়ই প্রতিপক্ষের সীমানায় ফাঁকা জায়গায় ফরোয়ার্ডদের থ্রু পাস দেয়।
তিনি বলেন, তাই ওই পাসিং জায়গাগুলো বন্ধ করে দেওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে, যেন প্রতিপক্ষ ওইসব জায়গায় বল বাড়াতে না পারে। অবশ্যই, পিএসজি শিবিরে অনেক গতিময় ফুটবলার আছে। অবিশ্বাস্য কিছু খেলোয়াড় নিয়ে গড়া উঁচু মানের এক দল। দারুণ রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ হতে যাচ্ছে।
দল নিয়ে প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ওঠা পিএসজির কোচ টমাস টুখেল নিজের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, আমি জার্মান, নিজের ভাষাতেই আমি অনুভূতি প্রকাশ করতে পারব না। ইংরেজিতে তো আরও না। একদম বিমর্ষ থেকে একদম আনন্দের শীর্ষে। তবে আমি ফোকাস ধরে রাখছি, কারণ আমাদের কাজ শেষ হয়নি। আমাদের এখনো একটি ফাইনাল খেলতে হবে যা অবশ্যই আমরা জিততে চাই। আমরা শান্ত থাকার চেষ্টা করছি, আর সব ম্যাচের মতো প্রস্তুতি নিচ্ছি। ম্যাচটা স্পেশাল অবশ্যই কিন্তু আমরা স্পেশাল কিছু করতে চাচ্ছি না।
পরিসংখ্যান বা তর্ক যাই হোক পিএসজি কি পারবে প্রথমবারের মত ইউরোপের রাজা হতে নাকি ষষ্ঠবারের মত ট্রফি যাবে বায়ার্নের কেবিনেটে। উত্তর পেতে আর কিছুক্ষণের অপেক্ষা মাত্র।