রাতভর উদ্দাম পার্টি। শেষ রাতে ঝড়ের বেগে গাড়ি চালিয়ে বাসায় ফেরার পথে ঘটে দুর্ঘটনা। আর এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান কলকাতার বিখ্যাত মডেল ও টিভি উপস্থাপিকা সোনিকা সিং চৌহান। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়।
গত মাসের শেষ দিকে ঘটে যাওয়া এ দুর্ঘটনার পর এর সাম্ভাব্য কারণ নিয়ে প্রতিবেদনের পর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমগুলো। দুর্ঘটনার বিষয়টি নিয়ে জোর তদন্ত চালিয়েছে পুলিশ।
আর এ তদন্তের জেরে সোনিকার দুর্ঘটনায় মৃত্যু প্রসঙ্গটি নিয়েছে অন্যদিকে মোড়। দুর্ঘটনার সময়ে সঙ্গে থাকা অভিনেতা বিক্রম নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার অনেক চেষ্টা করলেও বিভিন্ন জেরায় উঠছে নতুন নতুন প্রশ্ন।
এর মধ্যে সম্প্রতি এ ঘটনার তদন্তে নিয়োজিত এক পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যে চমকে উঠেছেন অনেকেই। চলতি সপ্তাহে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, দুর্ঘটনার আগের রাতের পার্টিতে মদ তো ছিলই, আরো ছিল নিষিদ্ধ মাদকও। যদিও বক্তব্য দেওয়া ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেনি সংবাদমাধ্যমটি।
এদিকে, পুলিশ কর্মকর্তার এমন মন্তব্যের পর সংবাদমাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছে, দুর্ঘটনার রাতে শুধুই মদ খেয়েছিলেন বিক্রম? নাকি অন্য কোনো মাদকও গ্রহণ করেছিলেন! যদিও এ প্রশ্নের খোলাসা করেননি তদন্তে নিয়েজিত পুলিশ কর্মকর্তা।
গত ২৯ এপ্রিল ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতা নগরীর রাসবিহারি এভিনিউয়ে উল্টে গিয়েছিল বিক্রমের গাড়ি। দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়ির ভেতর থেকে কোনোক্রমে সোনিকা ও বিক্রমকে উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এর কিছুক্ষণ পর বিক্রম ও সোনিকাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় মডেল সোনিকা চৌহানকে। দুর্ঘটনার সময়ে গাড়ির সামনে চালকের বাঁ দিকের আসনে বসেছিলেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেশ গতিতে আসছিল গাড়িটি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে গাড়িটি ফুটপাতে উঠে যায়। তারপর সেটি ডিভাইডারে ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনার তীব্রতা এতটাই ছিল যে গাড়িটির সামনের চাকা দুমড়েমুচড়ে গিয়েছিল।
দুর্ঘটনার পর গাড়ির ভেতরেই আটকে পড়েন বিক্রম ও সোনিকা। শব্দ শুনে ছুটে এসে স্থানীয় জনতা উদ্ধার করেন দুজনকেই। সোনিকা যেদিকে বসেছিলেন, সেদিকেই গাড়িটি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তাঁর মাথাসহ শরীরের অন্যান্য অংশে গুরুতর আঘাত লাগে।
ঘটনার পরপরই পুলিশ জানায়, শহরের একটি দামি হোটেলে রাতের পার্টিতে ছিলেন সোনিকা ও বিক্রম। সেই পার্টিতে তাঁরা মদ্যপান করেছিলেন বলে তথ্য মিলেছে।
মদ্যপান করার পর প্রচণ্ড গতিতে গাড়ি চালানোর কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হয়েছিল তখন। ময়নাতদন্তের পাশাপাশি বিক্রমের রক্ত পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছিল। তবে সেই পরীক্ষার ফল তদন্তের স্বার্থে জানায়নি পুলিশ।