দেশের খবর: রাজধানীতে পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীর ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের সময় দুজনকে গণপিটুনি দিয়ে মতিঝিল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের একজন বংশাল থানার পুলিশ কনস্টেবল আল-মামুন মাহমুদ এবং অন্যজন হলেন জিতু। আহত দু’জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
টাকা ছিনতাইয়ের শিকার ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী আবুল কালাম (২৯) বলেন, রাজধানীর পুরানা পল্টন তিতাস এনার্জি অ্যান্ড মেরিন ইলেকট্রনিকস নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে তার। একজন গ্রাহক বুধবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের মতিঝিল শাখা থেকে ১০ লাখ টাকা তুলে তাকে পেমেন্ট হিসেবে দেন।
তিনি জানান, ওই টাকা নিয়ে আল-আরাফাহ ব্যাংক মতিঝিল শাখায় নিজ হিসাবে জমা দিতে যাচ্ছিলেন। এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে বের হওয়ার পর মামুনের নেতৃত্বে দুই মোটরসাইকেলে চড়ে তিন ব্যক্তি তাকে ঘিরে ধরে।
তারা বলেন, আমরা সিআইডির লোক। তুই অবৈধ টাকা লেনদেন করিস, তোকে আমাদের সঙ্গে থানায় যেতে হবে। এ সময় তাকে হ্যান্ডকাপ পরানোর চেষ্টা করেন। তিনি হ্যান্ডকাপ পরতে রাজি হননি। একপর্যায়ে মামুন ও জিতু নামে দুই যুবক আবু কালামকে মোটরসাইকেলে তোলে। মামুন পুলিশ লেখা (ঢাকা মেট্রো ল ২৪-৩৬৯৯) নম্বর মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিল। তারা আরামবাগের দিকে মোহামেডান ক্লাবের সামনে গেলে আবু কালামের সন্দেহ হয় তারা পুলিশ নয়; ছিনতাইকারী। এ সময় আবু কালাম মোটরসাইকেলের ব্রেকে চাপ দিয়ে সেটি থামায় এবং ছিনতাইকারী বলে চিৎকার শুরু করেন।
তিনি আরও জানান, চিৎকার শুরু করলে মামুনের কাছে থাকা হাতকড়া দিয়ে আবু কালামের মাথায় আঘাত করে; এতে মাথা ফেটে যায়। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে মামুনকে গণপিটুনি দেয়। পরে সে পুলিশ পরিচয় দিলে তাকে মতিঝিল থানার একটি টহল দলের হাতে তুলে দেয়।
আবু কালাম আরও জানান, তার ১০ লাখ টাকা মতিঝিল থানার ওসির কাছে জমা দিয়ে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান। চিকিৎসা শেষে তাকে আবার মতিঝিল থানায় নেওয়া হয়েছে।
আবু কালাম আরও জানান, তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে তাদের তিন যুবকের একজন পালিয়ে গেছে। আর মামুন ও জিতু নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মামলা করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওসি সাহেব যে সিদ্ধান্ত দেবেন তাই করব।
মতিঝিল থানার কর্তব্যরত এসআই হোসেন বলেন, ছিনতাইয়ের অভিযোগে দুজনকে থানাহাজতে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন বংশাল থানার কনস্টেবল বলে শুনেছি। তার পুরো নাম আল-মামুন মাহমুদ।
এ বিষয়ে মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, এ বিষয়ে আমি নই ডিসি মিডিয়া স্যার কথা বলবেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ছিনতাইয়ের সময় তাদের সঙ্গে থাকা মোটরসাইকেলটি (ঢাকা মেট্রো ল-২৪-৩৬৯৯) জব্দ করেছে পুলিশ। এর সামনে পুলিশ লেখা রয়েছে।
পুলিশ কনস্টেবল আল মামুন বংশাল থানায় কর্মরত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির।
তিনি বলেন,আল মামুন গাড়িচালক। সে মোবাইল পেট্রোল গাড়ি চালায়। মঙ্গলবার রাতে সে ডিউটি করে। তাই দিনে তার বিশ্রাম ছিল। দিনে সে কোথায় ছিল, সে আমাকে কিছু জানায়নি। তিনি ঘটনাটি শুনেছেন বলে জানান।
https://www.facebook.com/groups/1583845851850128/wp/510860443058787/