অটিজম নিয়ে দৃঢ়ভাবে কাজ করায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেনকে নির্বাচিত করেছে। শনিবার সকালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিল্লি কার্যালয় এ ঘোষণা দেয়।
বাংলাদেশের অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডার বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির চেয়ারপার্সন সায়মা ওয়াজেদ।
রবিবার (২ এপ্রিল) চলতি বছরের বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উদযাপিত হতে যাচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে অটিজম মোকাবেলার আহ্বান জানিয়ে প্রবন্ধ লিখেছেন সায়মা ওয়াজেদ, যা শুক্রবার প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ইন্টার প্রেস সার্ভিস (আইপিএস)।
বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে আইপিএস ইস্যুকৃত ধারাবাহিক প্রতিবেদনের অংশ হিসেবে প্রকাশিত সেই প্রবন্ধে অটিজম মোকাবেলায় পরিবারগুলোর প্রয়োজন অনুযায়ী জীবনব্যাপী অধিকতর সাশ্রয়ী, টেকসই ও সহায়ক আন্তঃখাত কর্মসূচি প্রণয়নের আহ্বান জানান তিনি।
প্রবন্ধে তিনি বলেন, ‘অটিজম মোকাবেলায় এমন কোন সহজ সমাধান নেই যার মাধ্যমে বিদ্যমান চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে তা বাস্তবায়িত করা যায়। এর পরিবর্তে, পরিবারগুলোর প্রয়োজন অনুযায়ী জীবনব্যাপী অধিকতর সাশ্রয়ী, টেকসই ও সহায়ক আন্তঃখাত কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে।’
তিনি বলেন, উচ্চ মূল্য ও কপিরাইট আইনের কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো অনেক কর্মসূচি একই রকম বিচ্ছিন্নভাবে হয়ে থাকে। যেসব কর্মসূচিগুলোতে চলমান অবকাঠামোর সঙ্গে আন্তঃশৃঙ্খলা সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে সেগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি বিশেষ চ্যালেঞ্জ।
সায়মা বলেন, বিগত পাঁচ বছরে রাজনৈতিক সমর্থন ও জাতীয় শিক্ষার নীতির কারণে বাংলাদেশে অটিজমের ওপর সচেতনতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও তহবিল ও সম্পদের অভাবে তাদেরকে যথাযথ সেবা প্রদান করা এখন সম্ভব হয়নি। তবে আমাদের চলমান অব্যাহত অগ্রগতির ফলে আমরা নিশ্চিতভাবেই আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যাব।
তিনি বলেন, আমাদের অসামান্য এই সাফল্যের পেছনে জনসচেতনতা ও যেসব পরিবারের সদস্যরা প্রতিনিয়ত অটিজমকে মোকাবেলা করছে তাদের কৃতিত্ব রয়েছে। এই সাফল্যের পেছনে এই সব পরিবারের সদস্যদের ত্যাগ রয়েছে। ১৯৯০ এর দশকে সমন্বিত প্রতিবন্ধী নীতির বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই ধরনের পরিবারগুলোর জন্য আমাদের মিশন শুরু হয়। পাশাপাশি জাতীয় ফোরাম ও প্রতিবন্ধী সংগঠন গড়ে তোলা হয়।
সায়মা বলেন, বিশ্বব্যাপী সচেতনতা এবং অটিজম বোঝার ক্ষেত্রে ধারণা বৃদ্ধির ফলে রোগ নির্ণয়ে উন্নতি, চিকিৎসার চাহিদা এবং উদ্ভাবনী পন্থা, বিচ্ছিন্ন এর মধ্যে অনেকগুলো বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার যোগ্য।
সায়মা বলেন, এই এপ্রিলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা-এসইএআরও কে সঙ্গে নিয়ে সূচনা ফাউন্ডেশন ভুটান ও বাংলাদেশ পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যেগে ভুটানে অটিজম বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সংগঠিত করে এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রস্তাব বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত করবে।
তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞ, স্ব-প্রচারণাকারী, পরিচর্যাকারী ও নীতি নির্ধারকরা অটিজম নিয়ে আলোচনার জন্য থিম্পুতে তিন দিনের এক বৈঠকে মিলিত হবেন।
গত পাঁচ বছরের মধ্যে, বাংলাদেশে অটিজম সচেতনতা অত্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য তিনি রাজনৈতিক সমর্থন এবং জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধন্যবাদ জানান।