দেবহাটা ব্যুরো : দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া সাপমারা খাল খননে অনিয়ম ও দূর্নীতির সংবাদ বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালসহ কয়েকটি দৈনিকে প্রকাশিত হওয়ার পর টনক নড়েছে প্রশাসনের। সংবাদের জেরে শনিবার পুনরায় মাপজরিপ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও সাইদুর রহমান ও কার্য সহকারী শেখ নুরুল্লাহের উপস্থিতিতে এই মাপজরিপ কাজটি করা হয়। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলাবদ্ধতা নিরসনে এদেশের নদ-নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাওড়সহ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহন করেন। যার ধারাবাহিকতায় আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলার সংযোগ হওয়া সাঁপমারা খাল খননকল্পে গ্রহন করা হয়েছে দুইটি প্রকল্প। গত বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে নদী খনন পর্যায়ে দেবহাটার সাঁপমারা খালটির আশাশুনীর শোভনালী ইউনিয়নের কাটাখালী হতে দেবহাটার পারুলিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত দেবহাটা সদর ইউনিয়নের ভাতশালায় ইছামতি নদীর সংযোগস্থল পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল খননের জন্য দুইটি প্যাকেজে ১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। বরাদ্দ পরবর্তী টেন্ডারের মাধ্যমে খাল খননের দুটি প্যাকেজের কাজ পায় পটুয়াখালীর আবুল কালাম আজাদ ও ঢাকা বিজয় নগরের বশির উদ্দীনের এম কে এন্টারপ্রাইজ নামের দুই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সাঁপমারা খালটির ৯ কিলোমিটারের এ খননকাজে উপরিভাগে গড়ে ৩০ মিটার এবং তলদেশ গড়ে ৯ মিটার হারে খনন করা হবে বলে জানায় পাউবো কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া খালটি খনন কাজ চলাকালে দু পাশের ১৫ ফিট করে জায়গা রেখে খালের খননকৃত মাটি ফেলতে হবে বলে জানা গেছে। সরকারীভাবে সাঁপমারা খাল খননের প্যাকেজ দুটির একটির কাজ আগামি জুন ও অপরটি আগামি ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্টানগুলো টাকা থাকলে ঘর, না থাকলে বুলড্রোজার এমন কাজ শুরু করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। খালের গতিপথ পরিবর্তন করে প্রভাবশালীদের বাঁচাতে অসহায়দের ভোগ দখলীয় জমিতে খাল খনন করার অভিযোগও ওঠে। অন্যদিকে কাজ শেষ হওয়ার আগেই পাড়ের মাটি ধ্বসে আবার পুনরায় ভরাট হচ্ছে খাল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে খাল পুনঃখননের নামে চলছে অনিয়ম আর লুটপাট। কিন্তু এখনও রয়ে গেছে প্রভাবশালী প্রতিপত্তিদের ভবনসহ বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যা বর্তমানে দৃশ্যমান। পারুলিয়া ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তিরা জানান, পার্শ্ববর্তী এলাকার রবিন বিশ্বাস, জনতা ফার্মেসীর শর্তাধীকারী দেবু বিশ্বাস, শুশিল বিশ্বাস, নুর হোসেন, অনিল, পাগল বাবু, মুনছুর ওরফে কাঠ মুনছুরের জায়গা রক্ষা করতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। অথচ খালের অন্যান্য অংশের দিকে একটু লক্ষ করলে দেখা যাবে গরীব অসহায় পরিবারগুলোর বসত বাড়ি কিভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র এসও সাইদুর রহমান জানান, ম্যাপ অনুযায়ী মেপে কাজ করা হচ্ছে। মুনছুর ওরফে কাঠ মুনছুরের জায়গা অর্ধেক ওয়াপদার ও অর্ধেক রোডস এন্ড হাইওয়ের। মুনসুরকে তার কাঠ ঘরটি নিজে ভেঙ্গে নেয়ার জন্য মৌখিকভাবে শনিবার পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। তিনি না ভেঙ্গে নিলে রবিবার ভেঙ্গে দেয়া হবে বলে এসও জানান। এছাড়া বাকী ভবনগুলো যাতে সঠিকভাবে মাপজরিপ করে উদ্ধার করা হয় সে দাবীও জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
পূর্ববর্তী পোস্ট