অনলাইন ডেস্ক: দুবাইয়ে ৮০ লাখ মার্কিন ডলার পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিএনপির নেতা মোসাদ্দেক আলী ফালুসহ ৯ ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন তাদের তলব করে পৃথক নোটিশ পাঠিয়েছেন। নোটিশে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর সকালে এই ৯ ব্যবসায়ীকে দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছে। এর আগে গত ১৪ আগস্ট মোসাদ্দেক আলী ফালুকে তলব করা হয়েছিল। তখন তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠানের কোম্পানি সচিবের মাধ্যমে দুদকের কাছে সময়ের আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক তাকে সময় প্রদান করে। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন করে তাকে তলব করা হলো বলে দুদক সূত্র জানিয়েছে।
আগামী ৫ সেপ্টম্বর যাদের তলব করা হয়েছে, তারা হলেন- মোসাদ্দেক আলী ফালু, আরএকে পেইন্টসের পরিচালক শায়লিন জামান আকবর ও কামার উজ্জামান, রোজা প্রোপার্টিজের পরিচালক আশফাক উদ্দিন আহমেদ, আরএকে কনজ্যুমার প্রোডাক্টসের পরিচালক মো. আমীর হোসাইন ও এম এ মালেক, আরএকে পাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক মো. মাকসুদুল ইসলাম, আরএকে সিরামিকসের স্বতন্ত্র পরিচালক ফাহিমুল হক এবং স্টার সিরামিকসের পরিচালক প্রতিমা সরকার।
দুদক সূত্র জানায়, বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক আলী ফালুসহ অন্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, তথ্য গোপন ও জালিয়াতিপূর্বক অবৈধ উপায়ে দুবাইয়ে ৮০ লাখ মার্কিন ডলার পাচারের অভিযোগ রয়েছে। তারা বিদেশে অফশোর কোম্পানি খুলে মানিলন্ডারিং ও হুন্ডির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করেছেন। এ বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর গত ৩ আগস্ট এ অভিযোগে বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক আলী ফালু ও জিজ্ঞাসাবাদকৃত ব্যবসায়ীসহ নয়জনকে বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ইমিগ্রেশনে চিঠি পাঠায় দুদক।
ওই চিঠিতে বলা হয়, ওই নয়জনের বিরুদ্ধে আট মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের প্রায় ৬৫ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮২ টাকা হিসাবে) দুবাইয়ে পাচার করে অফশোর কোম্পানি খুলে বিনিয়োগ, দুবাইয়ে আরও শত কোটি টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। দুদকের অনুসন্ধানেও এর প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
দুদক বিশ্বস্ত সূত্রে জেনেছে, এ সব ব্যক্তি দেশ ছেড়ে অন্য দেশে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই তাঁরা যাতে দেশ ছেড়ে অন্য দেশে চলে যেতে না পারেন, সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয় দুদকের পক্ষ থেকে।
এ নয়জন হলেন, বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক আলী ফালু, আরএকে পেইন্টস ও আশালয় হাউজিংয়ের পরিচালক এস এ কে একরামুজ্জামান, তাঁর ছেলে এবং আরএকে পেইন্টস ও আরএকে কনজ্যুমার প্রোডাক্টসের পরিচালক কামার উজ জামান, ঝুলপার বাংলাদেশ লিমিটেড ও রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান, আরএকে পাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক মাকসুদুল করিম, আরএকে কনজ্যুমার প্রোডাক্টসের দুই পরিচালক মোহাম্মদ আমির হোসেন ও এম এ মালেক, রোজা প্রোপার্টিজের পরিচালক আশফাক উদ্দিন আহমেদ এবং আরএকে পেইন্টস ও আরএকে ক্যাপিটাল লিমিটেডের পরিচালক শায়লিন জামান আকবর।
দুদক সূত্র আরও জানায়, দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে দুই সদস্যের টিম এই অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান করছেন। টিমের অপর সদস্য হলেন- সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।