সর্বশেষ সংবাদ-
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ভূমিহীন সমিতির কঠোর হুশিয়ারীসাতক্ষীরায় শিশু-যুব ও স্টেকহোল্ডারদের কর্মশালাশ্যামনগরে অস্ত্র-গুলিসহ আটক সুন্দরবনের ত্রাস সাইফুলসাতক্ষীরায় দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিতসাতক্ষীরায় বিএনপি নেতা চিশতি’র মনোনয়নের দাবিতে সড়ক অবরোধগ্রীন কোয়ালিশন সাতক্ষীরা জেলা ইউনিটের কমিটি গঠনগণভোটসহ ৫ দফা দাবিতে সাতক্ষীরা জামায়াতের বিক্ষোভসাতক্ষীরায় প্রকাশ্যে চেতনানাশক স্প্রে করে এক নারীর গহনা ও মোবাইল ছিনতাইসাতক্ষীরায় উপকূলীয় এলাকায় ক্রীড়া উৎসব১২ নভেম্বরকে ‘উপকূল দিবস’ ঘোষণার দাবি

ছাত্রলীগকে ‘সতর্ক’ থাকার নির্দেশ আ.লীগের

নির্বাচনের বছরে যেকোনো ইস্যুকেন্দ্রিক পরিস্থিতি তৈরি করে ক্যাম্পাসকে যাতে কেউ অস্থিতিশীল করতে না পারে, সে জন্য ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। রুদ্ধদ্বার এ বৈঠকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম দলের পক্ষ থেকে এ নির্দেশ দেন বলে ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

বৈঠকটি প্রায় পাঁচ ঘণ্টা চলে। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরিস্থিতি ও আগামী মার্চ মাসে সংগঠনের সম্মেলন নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের বক্তব্য শোনেন এবং দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।

বৈঠক শেষে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেন, ‘আমাদের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা আমরা ছাত্রলীগের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের জানিয়ে দেবো। সব অপকর্মকে প্রতিহত করতে ছাত্রলীগ সব সময় প্রস্তুত। আমরা চাই, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ দেশে কেউ কোনো অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি না করুক। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সব আন্দোলন-সংগ্রাম করার অধিকার আছে। কিন্তু সেই আন্দোলন-সংগ্রাম যদি শিক্ষার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করে, তবে ছাত্রলীগ তা প্রতিহত করবে।’

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেউ যেন অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে, সে বিষয়ে বৈঠকে ছাত্রলীগকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক।

বৈঠকের বিষয়ে ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক দেলওয়ার শাহজাদা জানান, চলতি বছর জাতীয় নির্বাচন। এ নির্বাচন সামনে রেখে অনেকেই বিভিন্নভাবে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাই কোনো সংগঠনের এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করে সরকারকে চাপে রাখার অপচেষ্টা প্রতিহত করার নির্দেশ দিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক।

দপ্তর সম্পাদক দেলওয়ার শাহজাদা আরো বলেন, ২৩ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংঘর্ষের ঘটনার পর অনেকেই এটাকে নিয়ে ভিন্ন ইস্যু তৈরি করছে। কিন্তু ছাত্রলীগ সেখানে না গেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হয়তো ভিন্ন পরিস্থিতিতে পড়তে হতো।

এর একদিন পরে প্রগতিশীল ছাত্রজোট সংবাদ সম্মেলন করে সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও ২৯ জানুয়ারি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সর্বাত্মক ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এসব কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যাতে তারা কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করতে না পারে, সেদিকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ছাত্রলীগের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক।

জরুরি বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ। বৈঠক সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাতক্ষীরা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুলের বার্ষিক বনভোজন অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সুইড খাতিমুন্নেসা হানিফ লস্কর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুলের বার্ষিক বনভোজন তুফান কনভেনশন সেন্টারের লেকভিউ ক্যাফেতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও বনভোজন উদযাপন কমিটির আহবায়ক আলহাজ্ব ডা: আবুল কালাম বাবলার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আসাদুজ্জামান বাবু। বিশেষ অতিথিহিসাবে বক্তব্য দেন জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক দেবাশিস সরদার, সাতক্ষীরা সিটি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ইমদাদুল হক, ধুলিহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: মিজানুর রহমান বাবু,অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হারুণ-অর রশিদ, শহর সমাজ সেবা কর্মকর্তা সহিদুর রহমান, প্রবেশন অফিসার মিজানুর রহমান, আশাশুনি উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা ইমদাদুল হক, অভিভাবক সদস্য মোস্তফা মোস্তাক আহমেদ, ওয়াল্ড ভিশন প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে প্রতিবন্ধী শিশুদের নাচ গান, কবিতা আবৃত্তির মধ্যে দিয়ে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আলোজন করা হয়। পরে তুফান কনভেনশন সেন্টারের লেকভিউ ক্যাফেতে বনভোজনের খাবারের আয়েজন করা হয়। বনভোজন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রীত অতিথি বিদ্যালয় ব্যবস্থা পনা কমিটির সদস্যসহ সকল ছাত্রছাত্রী অংশ গ্রহন করেন।
সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুইড খাতিমুন্নেসা হানিফ লস্কর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও বনভোজন উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
দেবহাটায় এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় ও নবীনবরণ

কে. এম রেজাউল করিম, দেবহাটা ব্যুরো: দেবহাটায় ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় ও ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেবহাটা উপজেলার সদরের নব্য সরকারীকরন ঘোষিত দেবহাটা বিবিএমপি পাইলট হাইস্কুলের আয়োজনে বৃহষ্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় উক্ত বিদায় ও নবীনবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মদন মোহন পালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজ-আল আসাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন দেবহাটা থানার ওসি কাজী কামাল হোসেন। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গৌর চন্দ্র পালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম, সিনিয়র শিক্ষক লুৎফর রহমান, সিনিয়র শিক্ষক গৌর চন্দ্র ঘোষ সহ সকল শিক্ষক/শিক্ষিকামন্ডলী, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে উপজেলার দেবীশহর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দেবহাটা উপজেলা আঃলীগের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মুজিবর রহমান। এছাড়া উপজেলার হাদীপুর আহছানিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সখিপুর আলিম মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কালিগঞ্জের প্রতিবন্ধী স্কুলে প্রীতিভোজ ও মিলনমেলা

কালিগঞ্জ ব্যুরো: প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও কালিগঞ্জের এমজেএফ বিশেষ প্রতিবন্ধী স্কুলে উৎসব মুখর পরিবেশে উদ্যাপিত হয়েছে প্রীতিভোজ ও বার্ষিক মিলনমেলা। এমজেএফ বিশেষ স্কুলের আয়োজনে বৃহস্পতিবার দুপুরে মিলনমেলা প্রীতিভোজ উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতিত্বে করেন প্রতিবন্ধী স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মাঈনউদ্দিন হাসান। এমজেএফ স্কুলের সমন্বয়কারী ও কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক এম হাফিজুর রহমান শিমুলের সঞ্চালনায় মিলনমেলার আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আলহাজ্ব শেখ ওয়াহেদুজ্জামান। এসময় তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের অবহেলার চোখে দেখলে হবে না তারাও এদেশের মূল্যবান সম্পদ। প্রতিবন্ধীদের পাশে থেকে তাদের জন্য কিছু করতে পারাটাই সব চেয়ে বড় পাওয়া। সরকার প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে অনেক কিছু করছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করায় বিশ্ব দরবারে আলোচিত হয়েছেন। আমি নিজেও প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে সামান্য কিছু অবদান রেখেছি। আলোচনা সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এম জে এফ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আজহারুল ইসলাম। এসময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মনোজিৎ কুমার মন্ডল, যমুনা টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি রাজিব আহছান, কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ সাইফুল বারী সফু, সহ-সভাপতি শেখ আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাশ বাচ্চু, নলতা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোজাহার মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসলেম আলী, ল্যাবরেটরী স্কুলের সাবেক অধ্যক্ষ মোমতাজ হোসেন মন্টু, ভাড়াশিমলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল গফুর, সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন। মিলনমেলায় প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষার্থীরা হামদ, নাত ও গান পরিবেশন করেন। বার্ষিক বনভোজন ও মিলনমেলায় স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অবিভাবক, সূধি ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
তীব্র খাদ্য সংকটে ইয়েমেন, প্রতিদিন গড়ে ১৩০ শিশুর মৃত্যু

সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব জোটের সামরিক আগ্রাসন ও অবরোধের কারণে খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে ইয়েমেনে। পাশাপাশি রোগব্যাধিতে এরই মধ্যে দেশটিতে মারা গেছে ৪০ হাজার শিশু। সেইভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, ইয়েমেনে প্রতিদিন গড়ে ১৩০টি শিশু মারা যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে ডাক্তাররা বলছেন, মহামারির আকারে ছড়িয়ে পড়া কলেরা ও ডিপথেরিয়া এবং অপুষ্টির মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় রীতিমতো সংগ্রাম করতে হচ্ছে তাদের। হাসপাতালগুলোতে দ্রুতই ফুরিয়ে যাচ্ছে জীবনরক্ষাকারী ওষুধ।

এদিকে, জরুরি সহায়তা না পেলে ইয়েমেনে এক কোটি ৭০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়তে পারে বলে সম্প্রতি এক সতর্ক বার্তায় জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ইয়েমেনের ২ কোটি ৫৬ লাখ মানুষের মধ্যে ১ কোটি ৯০ লাখ মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা প্রয়োজন। প্রায় ৭০ লাখ মানুষ ‘মারাত্মকভাবে খাদ্য অনিরাপত্তায়’ ভুগছে, অর্থাৎ তাদের জন্য দ্রুত খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। এছাড়া প্রচণ্ড রকমের পুষ্টিহীনতায় ভুগছে ২২ লাখ শিশু।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ডব্লিউএফপি সতর্ক করে বলেছে, দুই বছরের গৃহযুদ্ধের পর সেই দেশটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।

উল্লেখ্য, গত বছর ইয়েমেনের জনগণের জন্য তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সম্মেলনে দাতা দেশগুলো ১.১ বিলিয়ন ডলার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মানুষের ক্লোন তৈরির দ্বারপ্রান্তে বিজ্ঞান!

১৯৯৬ সালে তৈরি হয়েছিল ভেড়ার ক্লোন। জন্ম নিয়েছিল ডলি। ২২ বছর পরে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল বিজ্ঞান। এবার তৈরি হল বাঁদরের ক্লোন। দুই মেয়ে বাঁদরের নাম দেওয়া হয়েছে ঝং ঝং ও হুয়া হুয়া।

এই প্রথম কোনও প্রাইমেট অর্থাৎ দুই হাত-পা ও দু’টি চোখবিশিষ্ট প্রাণীর ক্লোন তৈরি সম্ভব হল। এরপরেই গুঞ্জন, মানুষের ক্লোন তৈরির দিকে অনেকটাই এগিয়ে গেল বিজ্ঞান।

সাংহাইয়ের অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স’র গবেষক মু মিংপু জানিয়েছেন, এই আবিষ্কারের ফলে প্রাইমেট প্রজাতির প্রাণীর ক্লোনিং করা আর অসম্ভব নয়।

ডলি দিয়ে শুরু। ভেড়ার পর থেকে কুকুর, বিড়াল হয়ে একে একে এগিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অবশেষে জন্ম লিন ঝং ঝং ও হুয়া হুয়া। ৭ থেকে ৮ সপ্তাহ বয়স তাদের। সেই মিষ্টি চেহারার খুদে বাঁদরদের চেহারা ভাইরাল হয়েছে।

তবে এই সাফল্যের গায়ে গায়ে যে প্রশ্নটা উঠে এসেছে, তা হল মানুষের ক্লোন কবে তৈরি হবে? তবে বিজ্ঞানী মু মিংপু জানিয়েছেন, মানুষের ক্লোন তৈরি করা কঠিন না হলেও তারা এমন কিছু করতে চান না।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
দক্ষিণ কোরিয়ায় হাসপাতালে ভয়াবহ আগুন, নিহত ৩১

দক্ষিণ কোরিয়ায় মিরিয়াং এলাকার সিজং নামে একটি হাসপাতালে ভয়াবহ আগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া দগ্ধ হয়েছেন আরও ৭৭ জন।

শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টার দিকে লাগা আগুন প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে। দগ্ধদের মধ্যে ১১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদ মাধ্যমগুলো।

নার্সিং এ হাসপাতালে ওই সময় ২০০ রোগী ছিলেন বলে জানা গেছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
খালেদার মামলার রায় ৮ ফেব্রুয়ারি; বিএনপিতে অস্থিরতা

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি। ৯ বছর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ওই মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হলে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান রায়ের দিন ধার্য করেন। খালেদা জিয়া গতকাল আদালতে হাজির ছিলেন। এই মামলায় রায়ের তারিখ নির্ধারণের খবর প্রচার হওয়ায় বিএনপিতে কিছুটা অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। দলের তৃণমূল পর্যন্ত নড়েচড়ে বসেছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে বিএনপির বাইরেও রাজনৈতিক অঙ্গনে এমনকি সাধারণ মানুষের মধ্যেও শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। নির্বাচনের বছরে খালেদা জিয়ার মামলায় রায় হলে তা দেশকে কোন দিকে নিয়ে যাবে সে প্রশ্নও উঠছে।

বিএনপির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা হলে দলটির রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে পারে। এমনকি সরকারবিরোধী আগাম আন্দোলনেও নামতে পারে দলটি। পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নেও বিএনপি নতুন করে চিন্তা করবে। বিএনপি নেতারা অবশ্য জানিয়েছেন, বিষয়টি বিএনপি আইনগতভাবে মোকাবেলা করবে। পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা অর্থাৎ রাজপথের আন্দোলনও যুক্ত হবে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মতে, দেশে নির্বাচনের একটি পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার মুহূর্তে বিএনপি চেয়ারপারসনের সাজা হলে এবং সেটিকে কেন্দ্র করে আন্দোলন শুরু হলে নির্বাচন পেছনে পড়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘জনগণের বড় একটি অংশের সন্দেহ যে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি প্রকৃত অর্থে রাজনীতি থেকে উদ্ভূত এবং পক্ষপাতদুষ্ট। তবে রায়ে এর প্রভাব না আসা দেশের জন্য মঙ্গলজনক এবং আমরা এমন প্রত্যাশাই করি।’ বিকল্প ধারার সভাপতি বি চৌধুরী আরো বলেন, যদি দেশে এমন একটি বিচার হয় যাতে মানুষ আন্দোলিত হয় প্রতিবাদী হয় তাহলে নিশ্চয়ই নির্বাচনের তুলনায় ওই ঘটনায় আন্দোলনে নতুন মাত্রা তৈরি হবে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, এখনই সরকারবিরোধী আন্দোলনে নামার কোনো পরিকল্পনা বিএনপির ছিল না। নির্বাচনকালীন ‘সহায়ক সরকারের’ প্রস্তাব বা রূপরেখা উত্থাপন করে ধাপে ধাপে আন্দোলন তুঙ্গে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল দলটির। পাশাপাশি নির্বাচনে যাওয়ার প্রস্তুতিও বিএনপিতে রয়েছে। দলের বড় একটি অংশের মধ্যে এমন ধারণাও ছিল যে মামলার গতি বাড়ানোর কারণ হলো বিএনপিকে সরকারের চাপে রাখার কৌশল। কিন্তু রায় ঘোষণার দিন ঠিক হওয়ায় তাদের হিসাব পাল্টে গেছে। ঘটনাকে তারা সরকারের ‘রাজনৈতিক কূটচাল’ অর্থাৎ খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার কৌশল বলে মনে করছেন। ফলে আন্দোলন পরিকল্পনা বা রাজনৈতিক কর্মকৌশল নিয়ে বিএনপিকে আগাম ভাবতে হচ্ছে। গত রাতে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সিনিয়র নেতারা এ প্রশ্নে করণীয় নির্ধারণ করতে বৈঠক করেছেন।

সূত্র মতে, মুন্সীগঞ্জে আজ শুক্রবার উইং কমান্ডার হামিদুল্লাহ খানের একটি স্মরণসভায় যোগদানের কথা ছিল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। কিন্তু ওই কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। মায়ের কবর জিয়ারত করতে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি দিনাজপুরে যাওয়ার কর্মসূচি ছিল খালেদা জিয়ার, যা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘পরিস্থিতি কী হবে জানি না। তবে এটুকু বুঝতে পারি যে বিএনপিকে সরকার উসকানি দিয়ে রাজপথে নামাতে চাইছে। তা ছাড়া মামলা নিয়ে যা ঘটছে তাতে মনে হয় না সরকার নির্বাচনের পথে হাঁটছে। মনে হয়, তারা অন্য কোনো পরিস্থিতি বা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায়।’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা মনে করি বিএনপি চেয়ারপারসনের সাজা হবে না। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে থাকা মামলার কোনো মেরিট নেই। তথাপি সাজা হলে জনগণ ঘরে বসে থাকবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আইনগতভাবে মোকাবেলার পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলা করব।’

দলের স্থায়ী কমিটির প্রবীণ সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সাজা হবে না। খালাস হবে। কারণ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষী নেই তো। একজন সাক্ষীও নেই। ৩২ জন সাক্ষীর মধ্যে একজনও তাঁর বিরুদ্ধে বলেনি।’ কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাজা হলে কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আন্দোলন ও নির্বাচন দুটিই করব। তবে দেশ একদলীয় শাসনের দিকে যাচ্ছে, এটুকু বুঝি।’

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয় দণ্ডবিধির ৪০৯ (অর্থ আত্মসাৎ) অথবা ১০৯ (অপরাধে সহযোগিতা) ধারা এবং দুদক আইনের ৫(২) ধারায়। দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় বর্ণিত অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড আর দুদক আইনের ৫(২) ধারায় বর্ণিত অপরাধে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের (২) দফায় উল্লেখ আছে, ‘কোন ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি (ক) কোন উপযুক্ত আদালত তাঁহাকে অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষণা করেন; (খ) তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করিয়া থাকেন; (গ) তিনি কোন বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা কোন বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন এবং (ঘ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে।’

নিম্ন আদালতে খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত হলে উচ্চ আদালতে তাঁর আপিল করার সুযোগ থাকবে। আপিল চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই সাজা কার্যকর হবে না।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গতকাল আদালত রায়ের তারিখ ঘোষণা করায় বিএনপির হাইকমান্ড কিছুটা বিস্মিত হয়েছে। কারণ দলটির হিসাবের বেশ কিছু সময় আগেই ওই তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে মনে করে বিএনপি। ফলে ওই রায়-পরবর্তী করণীয় নিয়ে দলটি এখন নতুন করে কর্মকৌশল ঠিক করবে। মামলার আইনগত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য গত বুধবার রাতে বিএনপির সিনিয়র নেতা ও আইনজীবী নেতাদের বৈঠক হয়েছে। গত রাতেও সিনিয়র নেতাদের বৈঠক হয়েছে। আগামী ৩০ জানুয়ারির বৈঠকে ওই ইস্যুতে আলোচনা করে কর্মকৌশল নির্ধারণ করতে পারে দলটি।

ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি লন্ডনে অবস্থানরত দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও মামলার বিষয়ে নজর রাখছেন বলে জানা গেছে। একটি সূত্রের দাবি, তারেক রহমানের সঙ্গে সমন্বয় করে আন্দোলন কর্মসূচি প্রণয়ন করা হবে।

মামলার রায় নিয়ে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ে আগাম প্রস্তুতি শুরু হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সব সাংগঠনিক সম্পাদককে গতকাল কেন্দ্র থেকে বার্তা পাঠিয়ে ওই রায়ের দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। গতকাল ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় বৈঠক করে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। এদিকে সাংগঠনিক সম্পাদকরাও স্থানীয়ভাবে এ প্রশ্নে করণীয় নিয়ে চিন্তা শুরু করেছেন।

রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, ‘আমি প্রতিদিনই ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সঙ্গে কোর্টে গেছি। মিথ্যা মামলায় তাঁর সাজা হওয়ার কোনো সুযোগই নেই। শুধু তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেই এ সাজানো নাটক। সরকার যদি খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা করেই থাকে, তা দেশের জনগণ কখনোই মেনে নেবে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আইন ও বিচার বিভাগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, সরকার ম্যাডামকে সাজা দেওয়ার পথ বেছে নিলে দেশে যে আন্দোলন হবে, তাতে সরকার আর এক দিনও ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।’

খুলনা বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু জানান, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনা থাকুক আর না থাকুক, খালেদা জিয়ার সাজা হলে আন্দোলন হবে। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হলে সেটি হবে বিএনপিকে নেতৃত্বশূন্য করার একটি আওয়ামী ষড়যন্ত্র। অবশ্যই আমরা এর শক্ত প্রতিবাদ করব। প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম বলেন, ‘যদি জোর করে কোনো কিছু ঘটায় সে ক্ষেত্রে তা আমরা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করব।’ তিনি আরো বলেন, আগামী দিনে একটি নির্বাচন করার জন্য সরকার বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা করবেই। প্রশাসন এবং বিচার বিভাগ সব কিছুকেই ব্যবহার করবে। এটা সাধারণ মানুষও বুঝে, আমরাও বুঝি।’ তিনি বলেন, ‘যেখানে আইনের শাসন থাকে না, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকে না, সেখানে আদালতকে সরকারের অনেক ধরনের ফরমায়েশই মাঝে মাঝে বাধ্য হয়ে পালন করতে হয়। তবে এই আদালতের বাইরেও তো একটা আদালত আছে, জনগণের আদালত।’

বগুড়া জেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক আরাফাতুর রহমান আপেল এবং মৌলভীবাজার ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন উজ্জ্বল বলেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন, খালেদা জিয়া মামলায় খালাস পাবেন। ‘অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়ার চেষ্টা’ হলে সারা দেশে লড়াই হবে।

তারেক রহমানও আসামি : এ মামলার রায় ঘোষিত হলে সেটিই হবে দেশের সাবেক কোনো প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি মামলার প্রথম রায়। খালেদা জিয়ার বড় ছেলে এবং বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও এ মামলার আসামি। অর্থ পাচারের এক মামলায় ২০১৬ সালে তাঁকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তারেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে দুদকের আরেকটি মামলাও একই আদালতে বিচারাধীন। ওই মামলার বিচারকাজও শেষ হওয়ার পর্যায়ে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানির ধার্য দিনে গতকাল আসামি সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামালের পক্ষে দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি করেন তাঁর আইনজীবী আহসান উল্লাহ। শুনানি শেষ হওয়ার পর আদালত রায়ের তারিখ ধার্য করেন।

‘এটি অসার মামলা’ : যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ ঘোষণা করার পর আর কোনো বক্তব্য দেওয়ার রেওয়াজ না থাকলেও খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবদুর রেজাক খান গতকাল বলেন, ‘এটি একটি অসার মামলা। খালেদা জিয়া এই মামলা থেকে খালাস পাবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।’ তিনি দাবি করেন, এটি সাজানো ও হয়রানিমূলক মামলা।

‘ছয় আসামিই সর্বোচ্চ সাজা পাবেন’ : এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, দুদকের বিশেষ পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘আমরা অভিযোগ আদালতে প্রমাণ করেছি। আমাদের বিশ্বাস, ছয় আসামিই সর্বোচ্চ সাজা পাবেন।’ তিনি এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণের এবং শাস্তি দাবির পক্ষে বিভিন্ন আইনগত দিক তুলে ধরেন। এর আগেও যুক্তিতর্ক শুনানিকালে সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

গতকাল আদালতে উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবদুর রেজাক খান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, এ জে মোহাম্মদ আলী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, জিয়াউদ্দিন জিয়া, নুরুজ্জামান তপন প্রমুখ।

সালিমুল হকের আইনজীবী আহাসন উল্লাহ আগে আরেক আসামি ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের পক্ষে ছয়টি ধার্য তারিখে শুনানি করেন। গত ২০ ডিসেম্বর থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০ কার্যদিবস খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন তাঁর আইনজীবীরা। মামলার ছয় আসামির মধ্যে তিনজনের পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি করা হয়। অন্য আসামিরা পলাতক থাকায় তাঁদের পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়নি। তারেক রহমান, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান পলাতক রয়েছেন। মমিনুর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে।

১৯ ডিসেম্বর এই মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানি শুরু হয়। ওই দিন রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের বিশেষ পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল সব আসামির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে উল্লেখ করে সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ করেন। এর আগে খালেদা জিয়া আত্মপক্ষ সমর্থন করতে আট দিনের মতো বক্তব্য দেন আদালতে। তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

আসামি কাজী সালিমুল হক কামালের পক্ষে তাঁর আইনজীবী আহসান উল্লাহ গতকাল আদালতে বলেন, এই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। সাজানো এই মামলায় সাক্ষ্য দিতে বা এই মামলার এজাহার ও চার্জশিটে সাক্ষীরা ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়েছেন। এমনকি জালজালিয়াতি, ঘষামাজার আশ্রয় নিয়ে এই মামলা করা হয়েছে। তিনি আসামি সালিমুল হক কামালের বেকসুর খালাস চান।

এর আগে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করতে গিয়েও তাঁর আইনজীবীরা এই মামলাকে উদ্দেশ্যমূলক, হয়রানিমূলক এবং খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা বলে অভিহিত করেন। এই মামলাটি যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করেই করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তাঁরা। খালেদা জিয়া ও তাঁর আইনজীবীরা দাবি করেন, কোনো টাকাই আত্মসাৎ করা হয়নি। বরং টাকা ব্যাংকে আরো বেড়েছে। মামলাটি ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেন তাঁরা।

দুই কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগ : মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি করেছিল দুদক। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর-রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলায় আরো অভিযোগ করা হয়, বিদেশ থেকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে আসা অনুদানের অর্থ এতিমদের পুনর্বাসনে খরচ না করে তা আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাৎ করেছেন।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারও শেষ হওয়ার পথে : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় আরো একটি মামলা করেছিল দুদক। ওই মামলায় তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়। ওই মামলার অপর আসামিরা হলেন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তাঁর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডাব্লিউটিএর কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ ও আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন শেষ হয়েছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শুনানির দিন ধার্য আছে।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী জিয়াউদ্দিন জিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হলেই রায় ছাড়া বিচারের আর কোনো ধাপ বাকি থাকে না।

আরো মামলা : খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি মামলা, নাইকো দুর্নীতি মামলা ও গ্যাটকো দুর্নীতির মামলায় ঢাকার তিনটি বিশেষ জজ আদালতে অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য বিভিন্ন তারিখ ধার্য রয়েছে। এসব মামলা বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদন সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হওয়ার পর বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় গত বছর। অভিযোগ গঠনের পরই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। এ ছাড়া ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ ও হরতাল চলাকালে বিভিন্ন নাশকতামূলক কার্যক্রম, রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির প্রায় ৩৫টি মামলা রয়েছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest