সর্বশেষ সংবাদ-
দেবহাটায় জাতীয় প্রাণি সম্পদ সপ্তাহ ও প্রাণি সম্পদ প্রদর্শনীর উদ্বোধনসাতক্ষীরায় জাতীয় দৈনিক রুপালী বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনসাতক্ষীরার মিঠু খানের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করল বিএনপিকালিগঞ্জে পুকুরের পানিতে দুই শিশুর মৃত্যুদেবহাটায় ৪০ জন উপকার ভোগীর মাঝে ছাগল বিতরণদেবহাটার সরকারি কর্মকর্তা-সুধীজনদের সাথে ডিসির মতবিনিময়সাতক্ষীরার ১৮৫টি ভোটকেন্দ্রের স্কুল সংস্কারে বরাদ্দ প্রায় ৬৪ লাখ টাকাসাতক্ষীরা জেলা রোভারের ৪১ তম কোর্স ফর রোভারমেট এর মহাতাঁবু জলসাশ্যামনগরে বুনো শাকের রান্না প্রতিযোগিতাসাতক্ষীরায় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে রাস্তা সংস্কার কার্যক্রমের উদ্বোধন

‘অভ্যুত্থান চেষ্টাকালে’ সৌদি ক্রাউন প্রিন্স সালমান নিহত!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সৌদির প্রভাবশালী যুবরাজ ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের বেশ কিছুদিন ধরে জনসম্মুখে অনুপস্থিত ইরানের বেশ কিছু গণমাধ্যমকে বিস্মিত করেছে। তাদের ধারণা, গত মাসে এক অভ্যুত্থান চেষ্টার সময় তিনি নিহত হন। খবর স্পুটনিক নিউজের।

ইরানের গণমাধ্যমগুলোর দাবি, গত ২১ এপ্রিল রিয়াদের রাজপ্রাসাদে এক হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় গোলাগুলিতে সৌদি যুবরাজ সালমান নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আরব রাষ্ট্রের একজন ঊর্ধ্বতন কর্তকর্তার কাছে আসা গোপন প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ইরানের কাইহান পত্রিকা দাবি করছে, সৌদির রাজপ্রাসাদে হামলার সময় যুবরাজ সালমানের শরীরে দু’টি বুলেট আঘাত হানে। তিনি হয়তো মারা গেছেন। কারণ ওই ঘটনার পর যুবরাজকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।

এদিকে, প্রেস টিভি বেশ কিছু বিষয়ের উপর নজর দিয়ে জানিয়েছে, ওই ঘটনার পর থেকে সৌদি কর্তৃপক্ষ যুবরাজ সালমানের কোনো ছবি বা ভিডিও প্রকাশ করেনি। এপ্রিলের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সৌদি সফরে গেলে তখনও যুবরাজ সালমানকে কোনো ছবিতে দেখা যায়নি।

প্রেস টিভির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে যুবরাজ সালমানকে প্রায়ই দেখা যায়। কিন্তু রিয়াদে ওই গোলাগুলির পর গত ২৭ দিন ধরে তাকে আর গণমাধ্যম দেখা যাচ্ছে না। ফলে দীর্ঘ সময় যুবরাজ সালমানের এমন অনুপস্থিতি তার বেঁচে থাকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাতক্ষীরায় ২০৪ বোতল ফেন্সিডিলসহ তিন মাদক ব্যবসায়ী আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরায় ডিবি পুলিশের পৃথক অভিযানে ২’শ চার বোতল ফেন্সিডিলসহ তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে শহরের পলাশপোল ও সদর উপজেলার আলীপুর এলাকা তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হল, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের রবিউল গাজীর ছেলে শরিফুল গাজী (২২), একই উপজেরার দহাকুলা গ্রামের শফিকুর ইসলামের ছেলে জাকির হোসেন (২৩) ও ভাদড়া গ্রামের শামসুর রহমানের ছেলে শাহিন খান (৩০)।
সাতক্ষীরা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ হাশেমী জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার সকালে সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল ও সদর উপজেলার আলীপুর এলাকায় ডিবি পুলিশের দুটি পৃথক টিম অভিযান চালিয়ে উক্ত তিন মাদক ব্যবসায়ীকে ২’শ চার বোতর ফেন্সিডিলসহ হাতে নাতে আটক করে। তিনি আরো জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাতক্ষীরার কামালনগর এলাকা থেকে দুই শিবির কর্মী আটক

আসাদুজ্জামান ঃ নাশকতার মামলায় সাতক্ষীরা শহরের কামালনগর এলাকা থেকে দুই শিবির কর্মীকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুক্রবার সকালে শহরের কামালনগর এলাকা তাদের আটক করা হয়।
আটকশিবির কর্মীরা হল, দেবহাটা উপজেলার মাটিকোমড়া গ্রামের নজির আলী মোড়রের ছেলে লাভলু আক্তার (৩৫) ও আশাশুনি উপজেলার কুড়িকাউনিয়া গ্রামের অমেদ আলীর ছেলে ইউসুফ জামিল (২৫)।
সাতক্ষীরা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক জুলফিকার আলী জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার সকালে সাতক্ষীরা শহরের কামালনগর এলাকা থেকে উক্ত দুই শিবির কর্মীকে আটক করা হয়। তিনি আরো জানান, আটক ওই দুই শিবির কর্মীর বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতার মামলা রয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
নিজেই ট্রাক চালিয়ে ক্রিমিয়া ব্রিজ উদ্বোধন করলেন পুতিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এবার ট্রাক চালালেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। নিজে ট্রাক চালিয়ে ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সংযোগ সেতু উদ্বোধন করেছেন তিনি। বিতর্কিত এই সেতুর মধ্য দিয়ে রাশিয়ার দক্ষিণে ক্রাসনদার অঞ্চলের সঙ্গে ক্রিমিয়ার কেরচ নগরীর সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে। তৈরি হওয়া এই সেতুর মাধ্যমে ক্রিমিয়ার সমুদ্র পথে পরিবহনের ওপর নির্ভরতা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি বুধবার উদ্বোধন করেন পুতিন। পর্তুগালের ‘ভাস্কো দ্য গামা’ ব্রিজকে পিছনে ফেলে এটিই এখন ইউরোপের সবচেয়ে দীর্ঘ সেতু। সেতুটিতে রেলপথও রয়েছে। সেতুটি নির্মাণে ৩ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে।

ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, মেয়াদের ৬ মাস আগেই ব্রিজটি উদ্বোধন করা হল। ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ সেতুর ওপর দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তার কাজ পুরোপুরি হবে। আর সেতুটির রেলপথের কাজ ২০১৯ সালে শেষ হবে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন।

প্রতিবেশী ইউক্রেইন শুরু থেকেই সেতু নির্মাণের সমালোচনা করে আসছে। তাদের দাবি, সেতুর নির্মাণ কাজের কারণে সমুদ্রের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট হয়েছে। এছাড়া সেতুটির কারণে বড় আকৃতির জাহাজ ‘আজভ সি’ হয়ে তাদের বন্দরগুলোতে যেতে পারবে না।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ইউক্রেইনে গৃহযুদ্ধের সময় রাশিয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয়। বর্তমানে রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং সশস্ত্রদল ওই অঞ্চল শাসন করছে। রাশিয়ার সঙ্গে পুনরায় সংযুক্ত হওয়া নিয়ে এক গণভোটে ক্রিমিয়ার বেশিরভাগ মানুষ সংযুক্তির পক্ষে মত দেয়। যদিও ইউক্রেইনের সাংবিধানিক আদালত ওই গণভোট অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে। ইউক্রেইন ও পশ্চিমা দেশগুলো অবৈধভাবে ক্রিমিয়ার দখল নেওয়ার নিন্দা জানিয়ে আসছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আমেরিকা সেতুটি নির্মাণ কাজে জড়িত কোম্পানি ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে মাদক নির্মূলে সাঁড়াশি অভিযান

ন্যাশনাল ডেস্ক: মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হুশিয়ারি ও অভিযান পরিচালনার নির্দেশনার পর সারাদেশে কঠোর অবস্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। দেশজুড়ে চলছে সাড়াশি অভিযান। গত ৪ মে থেকে মাদক নির্মুলে র্যাবের অভিযান শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৭শ’ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। মাদকসহ ৪৯৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযান পরিচালনাকালে র্যাবের সঙ্গে গুলি বিনিময়কালে ৩ জন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

সর্বশেষ গতকাল রাজশাহীর অন্যতম শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আবুল হাসান ওরফে হাসান ঘাটিয়াল র্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে। এসময় অস্ত্র, গুলি, ম্যাগাজিন ও বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করেছে র্যাব। বুধবার দিবাগত রাতে মহানগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
র্যাব-৫ এর উপ-অধিনায়ক মেজর এসএম আশরাফুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে মাদকের চালান আসছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে র্যাবের একটি অপারেশন দল নগরীর পশ্চিম নবগঙ্গা এলাকার পদ্মার ৫ নম্বর বাঁধ অভিযান চালায়। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা বস্তায় করে ভারত থেকে মাদক নিয়ে আসছিল। মাদক ব্যবসায়ীরা র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি চালায়। এ সময় র্যাবও পাল্টা গুলি করে। ৮/১০ মিনিট গুলি বিনিময়ের এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলেও একজনকে ঘটনাস্থলে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিত্সক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর আগে গত মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ থেকে মো. রাজমহল রিকন ও কুষ্টিয়ায় হামিদুল ইসলাম নামক দুই ইয়াবা ব্যবসায়ী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এই দুই ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি, ইয়াবাসহ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।
এদিকে গতকাল ভোরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি ব্লকের তিন নম্বর রোডে র্যাব-১ অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী শহীদুল ইসলাম ও আব্দুল খালেক ওরফে পলাশকে ৫০ হাজার ১২০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে শহীদুল ইসলাম র্যাবকে জানায়, তিনি একজন কাপড় ব্যবসায়ী। ইসলামপুরে তার পাইকারী কাপড়ের দোকান রয়েছে। এছাড়া নিউমার্কেট গাউছিয়াও তার একটি দোকান আছে। তার এই ব্যবসার অন্তরালে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবার ব্যবসা করে আসছিলেন। কাপড়ের ব্যবসার চেয়ে ইয়াবার ব্যবসায় তার লাভ ছিল বেশি। এর আগের রাত্রে র্যাব-২ তেজগাঁও’র নাবিস্কোর মোড়ে অভিযান চালিয়ে টেকনাফের মাদক ব্যবসায়ী মামুনকে ৪৩ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে। মামুন র্যাবকে জানায়, সে প্রায় মাসেই টেকনাফ থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে ঢাকায় আসতো।
গত ৩ মে রাজধানীতে র্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করে অভিযান অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে কোন আপোষ নয়। যেই জড়িত থাকুক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এরপর থেকে ইয়াবাসহ মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যায় র্যাব। শুরু করে সারাদেশে সাড়াশি অভিযান। র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী মাদকের বিরুদ্ধে সারাদেশে সাড়াড়ি অভিযান চলছে। মাদক নির্মুল না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এদিকে গত বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদা, রাজশাহীতে ৩৫তম বিসিএস (পুলিশ) শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের (এএসপি) এক বছর মেয়াদী শিক্ষা সমপানী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মাদকের করাল গ্রাসে আমাদের তরুণ সমাজ আজ বিপদাপন্ন। এই ভয়াল থাবা থেকে আমাদের সমাজকে বাঁচাতে হবে। মাদক সেবনকারী, ব্যবসায়ী, উত্পাদক, সরবরাহকারী সবার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে কার্যকারী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী পুলিশ বাহিনীর প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন।

এ প্রসঙ্গে পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারী জানান, মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান আগেও ছিল। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়ার পুলিশ এখন কঠোর অবস্থানে থেকে সারাদেশে সাড়াশি অভিযান চালাচ্ছে। মাদক নির্মুল না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

জানা গেছে, মাদক সেবনকারীদের মধ্যে তরুণ ও শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি। তেজগাঁওয়ের মাদকসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সকল পেশার মানুষ ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকে আসক্ত। এরমধ্যে ১০ বছর থেকে তার ঊর্ধ্বের শিক্ষার্থীরা বেশি আসক্ত। বর্তমানে মাদকাক্তদের মধ্যে ইয়াবায় আসক্ত ৭০/৭৫ ভাগ। আর ইয়াবায় আসক্তদের মধ্যে ৬০/৬৫ ভাগ শিক্ষার্থী। আসক্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেধাবিরা বেশি। তরুণ সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কঠোর সাড়াশি অভিযানের দাবি উঠেছিল সমাজের সর্ব মহল থেকে। কেউ কেউ দাবি করেন, মাদকের ভয়াবহ থাবা থেকে রক্ষা পেতে হলে ক্রসফায়ার জরুরি। কারণ মাদক ব্যবসায় জড়িতদের কেউ আটকে রাখতে পারে না। গ্রেফতারের পর কোন না কোনভাবে তারা বের হয়ে আসে। তাদের হাত অনেক বড়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে। অবশেষে শুরু হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়াশি অভিযান। আর অভিভাবকসহ সব মহল এ সাড়াশি অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
পর পর দুই বছর বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমেছে: নাসা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গ্রিন হাউজের ক্ষতিকারক প্রভাবে প্রতি বছর বাড়তে থাকে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। আর এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে জলবায়ুর ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলার পাশাপাশি বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা।

তবে নাসার এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি এই দুই বছরে উপর্যুপরি তাপমাত্রা কমেছে। এই সময়ের মধ্যে বিশ্বব্যাপী গড় তাপমাত্রা শূন্য দশমিক ৫৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। গড় তাপমাত্রা কমার ক্ষেত্রে গত এক শতকের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় ঘটনা। তবে আশ্চর্যের বিষয় গড় তাপমাত্রা কমার বিষয়টি গণমাধ্যমে সেইভাবে আলোচনায় আসেনি।

বৈশ্বিক তাপমাত্রার তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করতে গিয়ে নাসার কর্মকর্তা অ্যারন ব্রাউন বিষয়টি দেখে রীতিমতো বিস্মিত হন। বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমার ক্ষেত্রে তিনি এটিকে সবচেয়ে বড় ঘটনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৫ মাসে সব থেকে বেশি তাপমাত্রা কমেছিল। ২০১৭ সালের একই সময়েও তাপমাত্রা কমেছিল। ২০১৭ সালের ঐ পাঁচ মাসে তাপমাত্রা কমার ঘটনাটিকে চতুর্থ সর্বোচ্চ বলে উল্লেখ করেছেন অ্যারন ব্রাউন।

এতদিন বিজ্ঞানীরা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির বিষয়ে নানা সময়ে সতর্ক করে এসেছে। নাসার এই তথ্য তার সম্পূর্ণ বিপরীত কথা বলছে। তবে এই দুই বছরের তাপমাত্রা কমে আসার কারণে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিষয়টিকে মোটেই গুজব হিসেবে দেখতে চান না তারা। তাদের বক্তব্য, গত দুই বছর ধরে তাপমাত্রা বাড়ছে না বলে পুরো শতকের তাপমাত্রাকে প্রতিনিধিত্ব করে না।

এর আগে আমেরিকান আবহাওয়াগত সোসাইটি জার্নালে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বলা হয়েছিল বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধির পেছনে শতকরা ৪৫ ভাগ ভূমিকা কলকারখানা থেকে নির্গত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের। তবে ঐ সময়ে এর বিরোধিতা করে অন্য একটি গবেষণায় বলা হয়েছিল, ২০০০ সালের পর কার্বন-ডাই-অক্সাইডের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণায়নে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো প্রভাব পড়েনি।

এতদিন ধরে প্রায় সব গবেষণাতে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। তাই এই মুহূর্তে হঠাৎ করে নাসার পক্ষ থেকে গত দুই বছরে তাপমাত্রা কমে আসার যে তথ্য দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে মানুষের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে নাসার পক্ষ থেকে এটিও বলা হয়েছে, মাত্র দুই বছরের তাপমাত্রার এই চিত্র পুরো এক শতকের প্রতিনিধিত্ব করে না।-ইনভেস্টরস বিজনেস ডেইলি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মেসি-রোনালদোকে হত্যার হুমকি
স্পোর্টস ডেস্ক: ‘তোমাদের রক্তে লাল হবে মাঠ৷’ কোনো এক স্টেডিয়ামে মেসি ও রোনাল্দোর রক্তাক্ত ছবি দিয়ে তাদের মাথা কাটার হুমকি দিয়েছে আইসিস (ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া)৷
রাশিয়ায় বিশ্বকাপ চলাকালীন সন্ত্রাস চালানোর নানা রকম হুমকি দিচ্ছে জঙ্গি সংগঠনটি৷ সাম্প্রতিক আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের অধিনায়ক মেসি ও পতুগিজ তারকা রোনালদোকে হত্যার হুমকি দিয়েছে সংগঠনটি। একটি পোস্টারে যেমন দেখা যাচ্ছে , মেসি এবং রোনাল্দোকে মাঠে ফেলে খুন করা হচ্ছে৷ আর একটি পোস্টারে বিশ্বকাপের লোগো ছুরি দিয়ে কেটে ফরাসি‌তে লেখা হয়েছে , ‘সবাইকে শেষ করে দাও৷’
আইসিসের দাবি , সম্প্রতি ইউরোপের বিভিন্ন শহরে যেমন একজন জেহাদি আক্রমণ চালিয়েছে , সে রকম ভাবেই আক্রমণ হবে রাশিয়ায়৷ কোথাও প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হুমকি দেয়া হয়েছে৷ একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে- একে -৪৭ হাতে এক সন্ত্রাসবাদী দাঁড়িয়ে ভর্তি গ্যালারির সামনে৷ আবার একটিতে ছুরির আঘাতে ফালাফালা বিশ্বকাপের লোগো৷ পুতিন সরকার অবশ্য নিরাপত্তার সব রকম আশ্বাস দিয়েছে৷ টেলিগ্রামের মাধ্যমে মেসি এবং রোনাল্দোকে হুমকি দেয়া ওই বার্তার হদিস ব্রিটিশ একটি ট্যাবলেয়ড পেয়েছে৷
যা জানা যাচ্ছে , আইসিসের এক শাখা সংগঠন ওই হুমকি দিয়েছে৷ মাস খানেক আগেই বিশ্বকাপে নাশকতা চালানো হবে বলে হুমকি দেয় আইসিস৷ সেই মর্মে একাধিক পোস্টার বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে তারা৷
সিরিয়া এবং ইরাকে জমি হারিয়ে এখন এমনিতেই এখন যথেষ্ট চাপে আইসিস৷ ফলে এখন তারা এখন সুযোগ পেলেই হামলার নীতি নিয়েছে৷ বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে বিস্ফোরণ বা নাশকতা করা গেলে যে তা গোটা বিশ্বের নজরে চলে আসবে, সেটা জানে আইসিস নেতারা৷ যে কারণেই তারা মেসি -রোনাল্দোর মতো তারকাকে বেছে নিচ্ছে হুমকির নিশানা হিসেবে৷
0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ইরাকের নির্বাচনে মুকতাদা সদর ও কমিউনিস্ট জোটের আশ্চর্য জয়

পশ্চিমারা প্রায়ই প্রাচ্যের মানুষের আচরণ ব্যাখ্যা করতে পারে না। ইরাকের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আমেরিকাসহ পশ্চিমাদের ভয় ছিল ইরানপন্থীদের নিয়ে। এখন সমস্যা প্রচণ্ড জাতীয়তাবাদী মুক্তাদা আল সদর ও তাঁর কমিউনিস্ট সঙ্গীরা। কোনো মিডিয়া তাদের জয়ের আভাস পায়নি, কিন্তু জনগণ বেশি ভোট দিয়েছে তাদেরই। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, মুসলমানদের পবিত্র শহর নাজাফে জয়ী হয়েছেন এক কমিউনিস্ট নারী।

এখন আমেরিকানদের চিন্তা কেন মার্কিনপন্থী আল আবাদি সরকার নির্বাচনে হারল? তারা কি ইরাক থেকে আইএসকে খেদায়নি? স্বাধীনতার পক্ষে গণভোটের পর কুর্দি শহরগুলোকে সেনা পাঠিয়ে আটকে ফেলেনি? আর তারা কি আমেরিকান বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ইরাককে মুক্ত করছে না? পশ্চিমা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়ন চালাচ্ছে না?

এসব বুলির উল্টো দিকে মানুষ দেখেছে ইরাককে নিয়ে আমেরিকা ও ইরানের ভাগাভাগির খেলা, দেখেছে দুর্নীতি ও গোষ্ঠীগত বিভক্তি। এ জন্যই কমিউনিস্ট-সদর জোটের ডাকেই মানুষ সাড়া দিয়েছে। এটা শুধু আমেরিকাকেই নয়, ইরানকেও দেওয়া ইরাকিদের জবাব। নির্বাচনের আগে আগে এক ইরানি রাজনীতিবিদ ইরাকে বসে হুঁশিয়ারি দেন, ইরাকে তাঁরা উদারপন্থী ও সেক্যুলারদের শাসন চালাতে দেবেন না। কিন্তু এখন তাদের গুনতে হচ্ছে উদারপন্থী সদর ও কমিউনিস্টদের সায়েরৌন জোটকে। বাংলায় এই জোটের নাম হবে, ‘এগিয়ে চলো’। সদর ইরানের শিয়াধর্মীয় নেতা। ইরাকের শীর্ষ শিয়া আধ্যাত্মিক নেতা আলী আল–সিস্তানির আশীর্বাদ কিন্তু তাঁর দিকেই। ইরাক আগ্রাসনের পর মাহদি আর্মি গঠন করে স্বাধীনতার জন্য লড়েছিলেন; তখন তাঁর বয়স মাত্র ৩০। সদরের উদারতা এখানেই, তিনি সাম্প্রদায়িক ও গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের বিপক্ষে, কেননা তা বিদেশি শক্তির জন্য পথ করে দেয়। তিনি কুর্দিদের সাংবিধানিক অধিকারের পক্ষে। ক্ষমতাসীন মার্কিনপন্থী আল-আবাদি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও বিদেশি আনুগত্যের অভিযোগ তুলে কমিউনিস্টদের সঙ্গে জোট বাঁধেন। সদরপন্থীদের ডাকটা খুবই সরল, কিন্তু আজকের দুনিয়ায় সবচেয়ে সাহসী: আমেরিকা বা ইরান নয়, ইরাক চালাবে ইরাকিরাই। শিয়া হওয়া সত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদার প্রশ্নে ইরানকে ছাড় দিতে নারাজ ৪৫ বছর বয়সী মুকতাদা আল সদর। জাতীয় স্বার্থ ছাড়লে আরো আগেই তিনি ইরাকের শাসক হতে পারতেন।

সায়েরৌন জোট একা ক্ষমতায় যেতে পারবে না। তাকে ক্ষমতাসীন আল-আবাদির জোট কিংবা সাবেক প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকির জোটকে সঙ্গে নিতে হবে। এ ছাড়া বারজানির কুর্দি দলেরও ক্ষমতামুখী জোটে থাকার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু যদি আবাদি আর মালিকি জোট বাঁধেন, তাহলে সদর ও কমিউনিস্টদের বৃহৎ বিরোধী দলের ভূমিকাতেই সন্তুষ্ট হতে হবে। তাতে ইরান খুশি হবে। আর আমেরিকা আপাতত যেকোনোভাবে ইরানকে ঠেকাতে পারলেই খুশি, তাই সদরের মতো পশ্চিমা বিরোধী জাতীয়তাবাদীকে মেনে নিতে তারা রাজিই থাকবে।

সদর জাতীয়তাবাদী বটে, কিন্তু নির্বাচনের আগে ইরানের সঙ্গে সমঝোতার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। ইরান চাইলে ইরানপন্থী জোটের নেতা হাইদি আল-আমিরির সঙ্গেও সদরপন্থীরা সরকার গঠন করতে পারে। ক্ষমতায় যান বা না যান, সদরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে না চললে ইরাকে হয়তো আমরা ইরানপন্থী ও সদরপন্থী শিয়াদের মধ্যে বিরোধ দেখতে পাব। সেটা ইরান বা ইরাক কারও জন্যই ভালো হবে না। তা ছাড়া পরমাণু চুক্তি বাতিলের পরে যেভাবে সিরিয়ায় ইরানি অবস্থানের ওপর ইসরায়েল বোমা হামলা চালাচ্ছে, তাতে ইরানের জন্য সদরের সঙ্গে আপস করে নেওয়াই সবচেয়ে ভালো। ইরাক এ মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইরানি মিত্র। ইরানের উচিত ইরাকের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলিয়ে মৈত্রীর মর্যাদা দেওয়া। এ জন্য ইরাকের ইরানপন্থী শিয়া মিলিশিয়া বাহিনীর প্রতাপ কমাতে হবে।

তবে কমিউনিস্টদের প্রত্যাবর্তন ছিল ইরাকের জাতীয় নির্বাচনের সবচেয়ে বিস্ময়কর ঘটনা। গত শতাব্দীর তিরিশের দশক থেকেই ইরাক-ইরান-সিরিয়া-মিসরের মতো দেশে কমিউনিস্ট আন্দোলন জোরদার হয়। এসব দেশে রাজতান্ত্রিক ও ঔপনিবেশিক শাসন ঘুচিয়ে সাংবিধানিক গণতন্ত্রের জন্য জীবন দেয় অসংখ্য কমিউনিস্ট। তাদের প্রভাবেই অসাম্প্রদায়িক বাথ পার্টির আরব জাতীয়তাবাদ আরবের দেশে দেশে ক্ষমতাসীন হয়। আরব জাতীয়তাবাদের ওই মডেলের দুটি উপাদান ছিল স্পষ্ট: কমিউনিস্ট-বামপন্থী এবং ইসলামমনা দল। এমনকি ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থা পিএলওর মধ্যেও দেশপ্রেমিক বাম-ডানদের সমাবেশ ঘটান ইয়াসির আরাফাত। আরবের ইতিহাস বলে, যখনই সেক্যুলার ও ইসলামপন্থীরা জোট বেঁধেছে, তখনই আরব দেশগুলো মর্যাদা নিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু পরের দিকে বাথ পার্টি শাসিত দেশগুলোয় আমরা এক ব্যক্তির শাসন কায়েম হতে দেখি। অন্যদিকে, সৌদি-মার্কিন আঁতাত মুসলিম দুনিয়ায় কমিউনিস্টবিরোধী প্রচার চালাতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে। এর ফল হয় বাম-মুসলিম দলগুলোর বিরোধ। আজ যে সৌদি মদদে মিসরসহ উপসাগরীয় দেশগুলোয় মুসলিম ব্রাদারহুডের দমন চলছে, সেই মুসলিম ব্রাদারহুডকে দিয়েই সৌদি আরব ষাট-সত্তর দশকে কমিউনিস্টদের ঠেকিয়েছিল। সেভাবে ব্যবহৃত হওয়ার খেসারত ব্রাদারহুড এখন দিচ্ছে সৌদির বন্ধু মিসরীয় জেনারেল সিসির হাতে নির্যাতিত হওয়ার মাধ্যমে।

ইরাকে বাম ও ইসলামি শক্তির এই জোটবদ্ধতা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির পালাবদলের ইঙ্গিত দেয়। এ ঘটনা মনে করিয়ে দেয় এক ভুলে যাওয়া মুসলিম কমিউনিস্ট নেতাকে। তাঁর নাম সুলতান গালিয়েভ। গালিয়েভের জন্ম সাবেক রুশ সাম্রাজ্যের কাজাখ এলাকায় এক মধ্যবিত্ত তাতার পরিবারে, ১৯০০ সালে। গালিয়েভ তরুণ বয়সে বলশেভিক পার্টিতে যোগ দিয়ে কাজাখ অঞ্চলে সশস্ত্র বিপ্লবী লড়াইয়ে শামিল হন। ১৯২০ সাল নাগাদ তিনি গঠন করেন রুশ কমিউনিস্ট পার্টির মুসলমান শাখা: মুসলিম কমিউনিস্ট কংগ্রেস। তাঁর চিন্তা ছিল, প্রাচ্যের মুসলমান দেশগুলো তথা তাজিকিস্তান, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তানসহ সাবেক রুশ সাম্রাজ্যের মুসলমান অঞ্চলে জাতীয়তাবাদী বিপ্লব করে সমাজ প্রগতি সম্পন্ন করবেন। শ্রেণিসংগ্রামের চেয়ে তাঁর আগ্রহ ছিল ওসব অঞ্চলে রুশ ভূস্বামী ও ব্যবসায়ীদের আধিপত্য কমানো তথা জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের দিকে। দূরবর্তী লক্ষ্য ছিল কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে সমগ্র মুসলিম প্রাচ্য তথা আফগানিস্তান-ভারত-আরব অঞ্চলে স্বাধীনতার লড়াইকে বেগবান করা। স্তালিনের নেতৃত্বে বলশেভিক পার্টির জাতিগত সমস্যাবিষয়ক কমিটির সদস্যও ছিলেন তিনি। কিন্তু অচিরেই স্তালিন তাঁর ভেতরে অতিরিক্ত জাতীয়তাবাদ আবিষ্কার করেন। বিশ্বের প্রলেতারিয়েতের চেয়ে সুলতান নিজ অঞ্চলের কৃষক জনতার মুক্তির বিষয়ে বেশি আগ্রহী ছিলেন। যেখানে শিল্পায়ন হয়নি, সেখানে প্রলেতারিয়েতের নেতৃত্বে শ্রেণিসংগ্রামের তত্ত্বকে তাঁর বাস্তববাদী মনে তো হয়ইনি, বরং মনে হয়েছে নতুন করে রুশ আধিপত্য কায়েমের কৌশল। তিনি বাহিনী গঠন করে তাঁর কাজ চালিয়ে যেতে থাকলে পরাক্রমশালী সোভিয়েত শাসক স্তালিন তাঁকে গ্রেপ্তার করেন, আবার ছাড়েন। ছাড়া পেয়ে সুলতান কাজ চালিয়ে যেতে থাকলে তাঁকে শ্রমশিবিরে পাঠানো হয়। ১৯৩০ সালের পর তাঁর আর কোনো খবর পাওয়া যায় না। পরে সোভিয়েত নেতা কামেনেভ ও বুখারিন গালিয়েভের বিষয়ে অন্যায় করা হয়েছিল বলে স্বীকার করেন।

সুলতান গালিয়েভের জীবন ট্র্যাজিক পরিণতি পেলেও তাঁর এই জাতীয় মুক্তির লাইন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। গালিয়েভ যখন শ্রমশিবিরে, তখন মাও সে তুং চীনে জাতীয় মুক্তির রণনীতি নিয়ে সংগ্রাম চালাচ্ছেন। আরও পরে আমরা দেখি, তাঁর পথানুসারী আফ্রো-এশীয় ব্লকের উত্থান এবং জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন। নির্দিষ্ট সমাজবাস্তবতায় নির্দিষ্ট কৌশল নেওয়ার যে কথা বলেছিলেন গালিয়েভ, ইরাকের কমিউনিস্ট পার্টি সেই লাইনই ধরে রেখেছে এবং সফলতা পাচ্ছে। ধর্ম বিষয়ে পশ্চিমা কমিউনিস্টরা যে ভুল করে থাকে, সেই দায় দুনিয়ার সব কমিউনিস্টের ওপর বর্তায় না। ভারতবর্ষের কমিউনিস্ট আন্দোলনের সূচনাও কিন্তু মুসলিম আলেম ও বুদ্ধিজীবীদের দ্বারাই হয়েছিল। উসমানি ভাইয়েরা, মোহাম্মদ আলী, আলী আকবর থেকে কমরেড মোজাফ্ফর আহমদ পর্যন্ত সেই ধারা বহমান ছিল। তাঁদের নেতা ছিলেন এম এন রায়। সম্প্রদায় চিন্তা না করেই তাঁরা মানুষের মুক্তির আওয়াজই তুলেছিলেন।

ইরাকে শিয়া নেতা সদর এবং কমিউনিস্ট পার্টির এই জোটবদ্ধতা সেই হারানো ধারাকেই মনে করাচ্ছে। ধর্মীয়, সাম্প্রদায়িক ও মতবাদের বিরোধে কিন্তু ক্ষতি হয় বিশ্বাসীর, সম্প্রদায়ের দরিদ্র ও প্রান্তিক নর-নারীর। মতবাদের চেয়ে সাধারণ মানুষের স্বার্থ ও জীবন বড়, ইরাকে সদরপন্থীদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা সেই শিক্ষাটা ফিরিয়ে আনল।

ফারুক ওয়াসিফ: লেখক ও সাংবাদিক।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest