যে মুরগির দাম ২ লাখ টাকা! (ভিডিও)

আমরা বিভিন্ন ধরনের মুরগি দেখে থাকি। কিন্তু এমন এক ধরনের মুরগি আছে গায়ের পালক কালো। চামড়া কালো। ঠোঁট, নখ, ঝুঁটি, মুখ, জিভ, এমনকি শরীরের ভিতরের মাংস, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এমনকি হাড় পার্যন্ত কালো! কালো আর কালো? শুধু কালো কিসিমের এই মুরগিটিই বিশ্বের সবচেয়ে দামি হিসেবে পরিচিত।

একেবারে ভিন্ন জাতের ওই মুরগিরর নাম ‘জেট ব্ল্যাক’ আয়্যাম কেমানি চিকেন। এই জাতটির আদি ঠিকানা ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের কেমানি নামক এলাকা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার ব্রিডার পল ব্রাডশো এই কালো মুরগি বিক্রি শুরু করেছেন ২০১৩ সাল থেকে। সে সময়ই একেকটি মুরগির দাম হেঁকেছেন ২৫০০ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় কমের পক্ষে ২ লাখ টাকা। ব্রিডার এই কালো মুরগির নাম রেখেছেন ‘ল্যাম্বরগিনি পোল্ট্রি’।

বিজ্ঞানীরা বলছেন কালো টিস্যুর প্রাবল্যের এই জেনেটিক পরিস্থিতির ‘ফাইব্রেমেলানোসিস’ নামে পরিচিত। এই জাতটির সঙ্গে চীনের সিল্কি জাতের কালো মুগির মিল রয়েছে।

সংগ্রহকারীদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষনীয় ও লোভনীয় এই জাতের মোরগের ওজন হয় ২ থেকে আড়াই কেজি। মুরগির ওজন হয় দেড় দু কেজি। মুরগি দেয় বাদামি রঙের ডিম। পালস ডট এনজি

https://www.youtube.com/watch?v=VDQwlyJ8jTs&feature=youtu.be

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে -এমপি রুহুল হক

তোষিকে কাইফু/তরিকুল ইসলাম লাভলু : মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশকে একটি সুখি-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে সাতক্ষীরা-৩ সংসদ সদস্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী আলহাজ্জ অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বদ্ধ হয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করি। দেশ সেবায় আত্মনিয়োগ করি। এটাই হোক ২০১৭ সালের বিজয় দিবসে আমাদের অঙ্গীকার।
৪৬ তম মহান বিজয় দিবসের আনন্দকে নতুন প্রজন্মের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে ছড়িয়ে জাঁকজমকপূর্ণভাবে সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা আহছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজ মাঠে নলতা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের আয়োজন বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ৮টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত, পর্যায়ক্রমে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, রোভার স্কাউটস দলের কসরত প্রদর্শিত হয়েছে।
নলতা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আনিছুজ্জামান খোকনে’র সভাপতিত্বে এবং সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম’র সার্বিক তত্বাবধানে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ডা. রুহুল হক এমপি বলেন- দীর্ঘ ৪৬ বছর আমরা ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উদযাপন করছি। যারা ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করেছিল তারা এখনও এদিবসটি পালনে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তবে মনে রাখবেন ষড়যন্ত্রকারীরা যত ষড়যন্ত্রই করুক না কেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা প্রতিহত করা হচ্ছে এবং হবে। কোনো কিছুই এদেশের উন্নয়নকে বাঁধাগ্রস্থ করতে পারবে না। বাঙালী জাতির আনন্দের দিন ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। পাক হানাদার বাহিনীর সাথে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের এদিনে গ্রাম-বাংলার লক্ষ লক্ষ জনতা প্রাণের মাতৃভূমি বাংলাদেশকে শত্রুমুক্ত করে বিজয় উল্লাসে ফেটে পড়ে।
২০২১ সালের মধ্যো বাংলাদেশকে একটি ক্ষুদামুক্ত,দারিদ্রমুক্ত,শান্তিুপূর্ণ মধ্য আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ নিয়ে আওয়ামীলীগ সরকার কাজ করছে-এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করতে সক্ষম হবেন। আপনাদের আমাদের মত গ্রাম-বাংলার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের আর্থিক সহযোগিতায় এদেশের নিজস্ব অর্থায়নে কাঙ্খিত পদ্মা সেতু মাত্র খুব দ্রুত সম্পন্ন হবে। যার মূল সেতুর নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের মাধ্যমে জানুয়ারি মাসের শুরুতেই কোটি কোটি বই বিনামূল্যে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, যোগাযোগসহ সার্বিক দিক দিয়ে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মহান বিজয় দিবস বাঙ্গলির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে আনন্দ ও গৌরবের দিন। লক্ষ শহীদের আত্মহুতি ও দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র সংগ্রামের ফলে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা, আমরা পেয়েছি আমাদেও প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশের ইতিহাসে মুক্তিযোদ্ধাদের অপরিসীম ত্যাগ ও বীরত্বগাথা চিরদিন স্বর্ণক্ষরে লেখা থাকবে।
কালিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জি.এম সাইফুল ইসলাম ও কালিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসের সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন- নলতা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আলজাজ্ব মোঃ আবুল হোসেন পাড়, সম্ভুজিৎ মন্ডল, নলতা আহছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ তোফায়েল আহমেদ, সাতক্ষীরা জেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দীন খোকন, কালিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আনোয়ারুল কবির লিটুসহ ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক, উপজেলা এবং নলতা, ভাড়াশিমলা, তারালী ও চ্যাম্পাফুল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, শ্রমিকলীগ, মুক্তিযোদ্ধা, নলতা আহছানিয়া মিশন রেসিডেন্সিয়াল কলেজ, নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নলতা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, কাশিবাটী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নলতা আহ্ছানিয়া দারুল উলুম ফজিল মাদ্রাসা, ইন্দ্রনগর হুসাইনাবাদ ফাজিল মাদ্রাসা, কাজলা গরীবুল্লাহ বিশ্বাস দাখিল মাদ্রাসা,পূর্বনলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাঘুরালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আহছানউল্লা জুনিয়র হাইস্কুল, আল-হেরা প্রি-ক্যাডেট মাদ্রাসা, আহ্ছানিয়া দরবেশ আলী ক্যাডেট স্কুল, আহ্ছানিয়া দরবেশ আলী মন্নুজান মেমোরিয়াল প্রি-ক্যাডেট স্কুল, কে বি মোবারক আলী প্রি-ক্যাডেট স্কুল, এম জে এফ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়সহ এত্র এলাকার সকল ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে তিনি ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৭ টায় কালিগঞ্জ সোহরাওয়ার্দী মাঠে অবস্থিত স্মৃতিসৌধে ফুলের তোড়া দিয়ে শহিদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
বিজয় দিবসের অভিবাদন মঞ্চে না ডাকায় সদর এমপি রবির অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ

মাহফিজুল ইসলাম আককাজ : সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন আয়োজিত সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও অভিবাদন মঞ্চে সাতক্ষীরা-০২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবিসহ সাতক্ষীরা-০১ আসনের এমপি এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ ও সংরক্ষিত আসনের সাংসদ মিসেস রিফাত আমিনকে আমন্ত্রণ না করায় মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি ক্ষোভ প্রকাশ করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
পরে তিনি সাতক্ষীরা শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে শহিদ আব্দুর রাজ্জাকের মাজার জিয়ারত করেন এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। মহান বিজয় দিবসে বাংলাদেশের সকল জেলায় যে নিয়ম আছে তার ব্যতিক্রম সাতক্ষীরা জেলায়। এখানে সালাম নেওয়ার যোগ্য যারা তাদেরকে কৌশলগতভাবে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সম্মানিত এমপি এবং বয়োজ্যোষ্ঠদের অসম্মান করা হয়েছে। এটা ন্যাক্কারজনক।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী ছায়েদুল হক আর নেই

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক আর নেই (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। আজ সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মোহাম্মদ ছায়েদুল হক বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় আগস্ট থেকে হাসপাতালটিতে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ১৩ ডিসেম্বর থেকে তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। মন্ত্রী প্রোস্টেট গ্লান্ডের সংক্রমণে ভুগছিলেন।

মৃত্যুকালে ছায়েদুল হক স্ত্রী ও পুত্রসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন এবং গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মোহাম্মদ ছায়েদুল হক ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার নিয়ে মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত সে দায়িত্বপালন করেন। এর আগে তিনি খাদ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৯৪২ সালের ৪ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে জন্ম নেওয়া ছায়েদুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসন থেকে মোট পাঁচবার এমপি নির্বাচিত হন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কালিগঞ্জে সড়ক দূর্ঘটনায় সাইকেল চালকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক : ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক সাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। জনতা ঘাতক ট্রাকটি আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
নিহতের নাম আকবর আলী গাজী (৬০)। তিনি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের মৃত সামাতুল্লাহ গাজীর ছেলে।
মৃতের স্বজনরা জানান, আকবর আলী গাজী শনিবার সকালে বাই সাইকেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে উজিরপুর বাজারে যাচ্ছিলেন। সকাল আটটার দিকে পথিমধ্যে তেঁতুলিয়া বাজারে পৌঁছালে কালিগঞ্জ থেকে আশাশুনিগামী একটি পণ্যবাহি ট্রাক তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পালিয়ে যাওয়ার সময় রাজাপুর নামক স্থান তেকে জনতা ঘাতক ট্রাকটি আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক আব্দুল মোমিন জানান, নিহতরে লাশ উদ্ধার ও ঘাতক ট্রাকটি আটক করে থানায় আনা হয়েছে। লাশের ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।#

১৬.১২.১৭

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাতক্ষীরায় নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস পালন

মাহফিজুল ইসলাম আককাজ : সাতক্ষীরায় যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস ২০১৭। শনিবার সকালে সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে বিজয় দিবস উদ্যাপন কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে এবং শান্তির প্রতিক পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিসের উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ। এসময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা ০১ আসনের সংসদ সদস্য এড. মুুস্তফা লুৎফুল্লাহ, সংরক্ষিত আসনের মহিলা সংসদ সদস্য মিসেস রিফাত আমিন, জেলা পুলিশ সুপার মো.সাজ্জাদুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ.এন.এম মঈনুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক)মো.আব্দুল হান্নান, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বিশ^াস সুদেব কুমার, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. তওহীদুর রহমান, সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুল খালেক, এন.এস.আই সাতক্ষীরা উপ-পরিচালক আনিসুজ্জামান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবু, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নূর হোসেন সজল, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম আনিছুর রহমান, জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভানেত্রী জেলা প্রশাসক পত্মী মিসেস সেলিনা আফরোজ, সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস.এম আব্দুল্লাহ আল-মামুন, আব্দুল করিম বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন খান লিপি, জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর রশিদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দীক, সদর উপজেলা কমান্ডার মো. হাসানুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম ছায়েদুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম, সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেবাশিস সরদার, সাতক্ষীরা নবারুণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আমিনুর রহমান উল্লাস, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আবু জাফর মো. আসিফ ইকবাল, জেলা স্কাউটসের সম্পাদক এম ঈদুজ্জামান ইদ্রিস, জেলা শিল্পকলা একাডেমী’র সদস্য সচিব শেখ মুসফিকুর রহমান মিল্টন, পৌর কাউন্সিলর শেখ শফিক উদ- দৌলা সাগরসহ সরকারি- বেসরকারি অফিস আদালতের প্রতিনিধিগণ। দিবসটি উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর শনিবার প্রত্যুষে সাতক্ষীরা শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে ৩১ বার তোপধনির মাধ্যমে কর্মসূচির শুভ সূচনা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি-বেসরকারি স্বায়ত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট ও গুরুত্বপূর্ণ ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৮.১৫ মিনিটে সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক কর্র্তৃক অনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের রুহের মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করা হয়। পুলিশ, বিএনসিসি, ব্য্টালিয়ান আনসার, কারারক্ষি, রোভার স্কাউট, বয়স্কাউট ও গালর্স গাইড ও শহরের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সমন্বয়ে কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা প্রদর্শণী, সকাল ১০টায় এবং স্টেডিয়াম ভবনে রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। ১০-১৫ মিনিটে শহিদ আব্দুর রাজ্জাকের মাজার জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন, সাড়ে ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে মহান বিজয় দিবস-২০১৭ উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সন্তানদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা, বেলা সাড়ে ১১টায় পৌর দীঘিতে সাঁতার ও হাঁস ধরা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। জোহর নামাজের পর দেশের অব্যাহত সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মসজিদ, মন্দির গীর্জা ও প্যাগোডাসহ বিভিন্ন উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা, হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানাসহ শিশুকেন্দ্রে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হয়, বিকালে সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে প্রদর্শনী ভলিবল প্রতিযোগিতা ও কাবাডী প্রতিযোগিতা, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মহিলাদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোচনা ও ক্রীড়ানুষ্ঠান, সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন একাদশ ও পৌরসভা একাদশের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে, সৌখিন ফুটবল প্রতিযোগিতা। টেনিস মাঠে অনুষ্ঠিত হয় বিজয় দিবস টেনিস প্রতিযোগিতা, মুক্তিযযুদ্ধ ভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শনী, আলোকসজ্জা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভা ,পুরষ্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আজ মহান বিজয় দিবস

আজ মহান বিজয় দিবস

কর্তৃক Daily Satkhira

ডেস্ক রিপোর্ট : আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে এক অনন্য গৌরবের দিন। দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধে লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙ্গার এমন অনন্য ইতিহাস আর কোনো জাতির নেই।
ঢাকায় ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে এ দিনেই হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর সেনা-শিরোমণি জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন, অস্ত্র সমর্পণ করে তার অনুগত সেনারা। পৃথিবীর ইতিহাসে কোন দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম প্রকাশ্য আত্মসমর্পণের ঘটনাও এটি।
পরাজয় মানতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। যাত্রা শুরু হয় মুক্ত-স্বাধীন লাল-সবুজ পতাকার বাংলাদেশের। কাল প্রবাহে কেটে গেছে ৪৬ বছর।
১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে পূর্ব আকাশে যে সূর্যটি উদিত হয়েছিল তা ছিল বাংলাদেশের। বাঙালি জাতির বিজয়ের সূর্য। বঙ্গবন্ধুর ঘোষণায় ২৬ মার্চ থেকেই বাংলাদেশ স্বাধীন আর যুদ্ধের ডাক। এ ভূখ-কে শ্বাপদ-সংকুল করে তুলেছিল যে হানাদার পাকিস্তানিরা, তাদের বিতারিত করতেই মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে জাতি।
১৬ ডিসেম্বরের বিজয়ে সেই যুদ্ধে চিরশত্রুকে পরাজিত করার গৌরব। হাজার বছরের শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তি। পদ্মা-মেঘনা-ব্রম্মপুত্র-যমুনাবাহিত বাংলা ব-দ্বীপের ৪ হাজার বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবের-অহঙ্কারের দিন আমাদের বিজয় দিবস।
অন্ধকার থেকে আলোর পথের সফল অভিযাত্রী, এ ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের মুক্তিকামী মানুষ, সেদিন প্রমাণ করেছিল, পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্তির চেতনা, প্রবল দেশপ্রেম আর সাহসের কাছে পরাক্রমশালী কোনো সশস্ত্রবাহিনীই কিছু নয়।
আর এমন অর্জনের পেছনের ইতিহাস মোটেই সুখকর ছিল না। শান্তিপ্রিয় ও নিরীহ মানুষের এই জনপদ কখনো মুঘল, কখনো পাঠান, আবার কখনো ছিল ব্রিটিশ শাসনের অধীন। ১৯৪৭-এ ব্রিটিশের কবলমুক্ত হয়েও, ধর্মভিত্তিক পাকিস্তানের শাসক শ্রেণীর শোষণ নিপীড়নের শিকার হয় বাঙালি। শুরু হয় দীর্ঘ সংগ্রাম।
প্রথমে ভাষার দাবিতে, তারপর স্বাধিকার, ধীরে ধীরে স্বাধীনতার আন্দোলন ও সবশেষ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে চূড়ান্ত মুক্তি সংগ্রামে এক সাগর রক্ত ঢেলে দেয় বীর বাঙালি। একাত্তরে দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। বাঙালির কাছে নত হয় পাকিস্তানিরা।
বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মত রাস্তায় নেমে আসে মানুষ। এক আওয়াজ.’জয় বাংলা’। সবার মাঝে বিজয়ের হাসি আর আনন্দাশ্রু। জনস্রোত ছুটছে এক গন্তব্যেÑ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে। যেখান থেকেই নয় মাস আগে জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব উচ্চারণ করেছিলেন মুক্তির জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার সেই অঙ্গীকার।
রক্ত দিয়ে কেনা সেই মুক্তি, সেই স্বাধীনতা, পল্লবিত হলো রেসকোর্স ময়দানে। আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করলেন পাকিস্তানি জেনারেল নিয়াজি। দেশময় ছড়িয়ে পড়লো বিজয়ের আনন্দ। আর এ বিজয়ই সারা বিশ্বে অনন্য।
সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে মুক্তিপাগল বাঙালির স্পৃহা একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণতা পায়, তা অবিনশ্বর রাখার দায়িত্বও লাল -সবুজের দেশের প্রতিটি নাগরিকের। এর সঙ্গে মিশে আছে মাতৃভূমির মুক্তি, দেশের জন্ম-ইতিহাস। সে চেতনাতেই উজ্জীবিত হতে হবে বারবার।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
৪৬ বছরে সাফল্যের স্বর্ণশিখরে বাংলাদেশ

একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধে গৌরবদীপ্ত বিজয় অর্জিত হয়। কেড়ে আনা হয় লাল-সবুজের পতাকা, একটা মানচিত্র। ৫৫ হাজার বর্গমাইলের যে ভূখণ্ড স্বাধীন করা হয়, তা ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত বেহাল দশার এক বাংলাদেশ। মাঠ-ঘাট ছিল ফসলশূন্য, বিরানভূমি। ছিল ভাঙাচোরা কল-কারখানা, বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিপর্যস্ত অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, জনশূন্য শহর-গ্রাম আর ঘরে ঘরে অনাহারক্লিষ্ট মানুষের শীর্ণ মুখ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে পা রেখেই বলেছিলেন, ‘এবার সোনার বাংলা গড়ে তোলার নতুন বিপ্লবের সূচনা করতে হবে। ’ কিন্তু দেশ গড়ার বিপ্লব ছিল প্রায় অসাধ্য ব্যাপার। একাত্তরে সদ্য স্বাধীন যে ভূখণ্ডকে পশ্চিমারা তলাবিহীন ঝুড়ি বলে টিপ্পনী কাটত, সেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের আশ্চর্য প্রদীপ। চার লেন মহাসড়ক, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, এলএনজি টার্মিনাল, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, পরিকল্পিত বহুমুখী বৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলাসহ উন্নয়নের বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে দেশজুড়ে। পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরুর পর থেকেই একের পর এক মেগা প্রকল্প নিয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে দেশ। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জন গোটা দেশবাসীর জন্য গর্ব আর অহঙ্কারের পুঁজি এনে দেয়।

এ দেশেই আছেন ক্রিকেটের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। রয়েছেন এভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহীম, ওয়াসফিয়া নাজরীন, নিশাত মজুমদার, এম এ মুহিতরা। এভাবেই সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, পৌঁছে যাচ্ছে সাফল্যের স্বর্ণশিখরে।এশিয়ার নতুন বাঘ বাংলাদেশ : বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু বলেছেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন উড়ন্ত সূচনায় রয়েছে। শিগগিরই দেশটি এশিয়ার নতুন বাঘ হিসেবে আবির্ভূত হবে। ’ দেশে রাজনৈতিক শান্তি বিদ্যমান থাকার পাশাপাশি জনপ্রশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবহন খাত ভিত গড়েছে উন্নয়নের। সমস্যা ছিল বিনিয়োগে। সেখানেও বইছে সুবাতাস। মাথাপিছু জাতীয় আয় বেড়ে ১,৩১৬ ডলার থেকে ১,৪৬৬ ডলারে উন্নীত হয়েছে। উন্নতির রকম দেখে চমকে গেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও। বিশ্বের প্রভাবশালী সাময়িকী ইকোনমিস্ট বলেছে, ‘কী করে উন্নয়নের মডেলে পরিণত হওয়া যায় তা দেখিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। ’ এখন সারা বিশ্বই সমীহ করছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের এই বিপুল সম্ভাবনার নেপথ্যে রয়েছে সাধারণ মানুষ। চাষাবাদের জমি দিন দিন কমলেও ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানির মতো বাড়তি ফসল উৎপাদন করছেন এ দেশের কৃষকরা। বিভিন্ন খাতে নিয়োজিত বিপুল শ্রমশক্তি তাদের শ্রমে-ঘামে বিনির্মাণ করছে বিস্ময়কর উত্থানের পটভূমি। প্রিয়জনদের ফেলে রেখে প্রবাসের নির্বাসনে শ্রম বিক্রি করে দেশে উন্নয়নের স্বপ্ন বুনছেন কোটি বাংলাদেশি। সামাজিক উন্নয়নে ভারতকেও পেছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। বিদেশি বিনিয়োগের গতি সম্পর্কে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এফডিআই বাড়ার মূল কারণ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ। প্রায় আড়াই বছর ধরে হরতাল-অবরোধ নেই। বিদ্যুৎ সরবরাহেরও উন্নতি হয়েছে। রাস্তা-ঘাটসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর আধুনিকায়ন হয়েছে। দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও অনেক ভালো। এসব কারণে দেশের মেগা প্রকল্পগুলোও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহী করে তুলেছে।

চারদিকে সুখবরের ছড়াছড়ি : চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, খুলনাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সাগরের বুক চিরে জেগে উঠছে নতুন নতুন ভূখণ্ড। এর পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার। ১৪৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সন্দ্বীপের তিন পাশেই গড়ে ওঠা নতুন ভূমির পরিমাণ মূল সন্দ্বীপের প্রায় দ্বিগুণ। আবার নিঝুম দ্বীপ ছাড়াও চরকবিরা, চরআলীম, সাগরিয়া, উচখালী, নিউ ডালচর, কেরিং চরের আশপাশে আরও প্রায় ৫০ হাজার একরের জেগে ওঠা নতুন ভূমি স্থায়িত্ব পেতে চলেছে। নতুন এ ভূমি খুলে দিচ্ছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। আমদানিনির্ভর বাংলাদেশ ক্রমেই রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। রপ্তানি ক্ষেত্রেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। প্রচলিত পণ্যের পাশাপাশি অপ্রচলিত পণ্যও রপ্তানি হচ্ছে দেদার। চা, চামড়া, সিরামিক থেকে শুরু করে মাছ, শুঁটকি, সবজি, পেয়ারা, চাল, টুপি, নকশিকাঁথা, বাঁশ ও বেতশিল্পের তৈরি পণ্য, মৃিশল্প রপ্তানি হচ্ছে বিভিন্ন দেশে। কয়েক বছর ধরে দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পও বিপ্লব ঘটিয়ে চলেছে। খুলনার শিপইয়ার্ডে যুদ্ধজাহাজ পর্যন্ত নির্মাণ হচ্ছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান প্রাইস ওয়াটারহাউস কুপারসের (পিডব্লিউসি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৫০ সাল পর্যন্ত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে শীর্ষ তিনটি দেশের একটি হবে বাংলাদেশ। শুধু তা-ই নয়, এ সময়ে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ভিত্তিতে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৩তম বড় অর্থনীতির দেশ। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, চীন ও জাপান বাংলাদেশকে দেখছে ভবিষ্যতের বড় বিনিয়োগের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে।

নীরব বিপ্লব কৃষিতে : স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের যত অর্জন আছে, এর মধ্যে কৃষিতে অর্জন উল্লেখ করার মতো। একদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে দিনদিনই কমছে আবাদযোগ্য জমি। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরী প্রকৃতিতেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ। সবজি উৎপাদনে তৃতীয় আর চাল ও মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে। ধান, গম ও ভুট্টা উৎপাদনে বিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে ক্রমেই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। ফসলের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে দেশের বিজ্ঞানীদের সফলতাও বাড়ছে। বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) বেশ কয়েকটি জাত ছাড়াও পাটের জীবনরহস্য উন্মোচন করেছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) বিজ্ঞানীরা মোট ১৩টি প্রতিকূল পরিবেশসহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন।

গড়ে উঠছে বৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল : অর্থনৈতিক অঞ্চল সমুদ্র উপকূলীয় ফেনীর সোনাগাজী ও চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের চরাঞ্চলে গড়ে উঠছে সম্ভাবনার আরেক বাংলাদেশ। সেখানে চলছে দেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজ। প্রায় ৩৫ হাজার একর আয়তনের এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১০ লাখেরও বেশি লোকের কর্মস্থানের সুযোগ হবে।

ক্ষুদ্র ও হালকা শিল্পে নজিরবিহীন বিপ্লব : সারা দেশেই নাগরিক চোখের আড়ালে ঘটে চলেছে এক অভাবনীয় বিপ্লব। দেশীয় প্রযুক্তির ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ উদ্ভাবন, উৎপাদন ও বাজারজাতে বদলে গেছে দৃশ্যপট। কদিন আগেও অতিপ্রয়োজনীয় যেসব যন্ত্রপাতি-মেশিনারিজ শতভাগ আমদানিনির্ভর ছিল, আজ দেশের চাহিদা মিটিয়ে সেসব রীতিমতো রপ্তানি করা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রস্তুতকৃত মেশিনারিজ এখন চীন-ভারতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিশ্ববাজারে ঠাঁই করে নিচ্ছে। ব্যক্তিপর্যায়ের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের নিজ নিজ প্রচেষ্টায় অভাবনীয় এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ক্ষুদ্র ও হালকা শিল্পে ব্যতিক্রমী সাফল্যের মাধ্যমে কয়েক যুগ ধরেই দৃষ্টান্ত হয়ে আছে জিঞ্জিরা। এখানকার ঝুপড়ি বস্তির অজস্র কারখানায় খুদে ইঞ্জিনিয়ারদের তৈরি করা হাজারো পণ্যসামগ্রীর কদর রয়েছে সর্বত্র। দেশ-বিদেশে ‘মেইড ইন জিঞ্জিরা’ হিসেবে এর ব্যাপক পরিচিতিও আছে। রাজধানীর বুড়িগঙ্গা নদীর তীরঘেঁষা জিঞ্জিরা-শুভাঢ্যা জুড়ে দুই হাজারের বেশি ক্ষুদ্র ও হালকা শিল্প কারখানায় চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। সেখানে ১২ লাখ কারিগর-শ্রমিকের উদয়াস্ত পরিশ্রমে গড়ে উঠছে সাফল্যের অনন্য দৃষ্টান্ত।

‘ধোলাইখাল ব্র্যান্ড’ : ইঞ্জিন-যন্ত্রাংশ, গাড়ির ছোট পার্টসসহ প্রায় ২০০ ধরনের মেশিনারিজ উৎপাদন ও বাজারজাতের বিরাট সম্ভাবনার খাত হয়ে উঠেছে ‘ধোলাইখাল ব্র্যান্ড’। এ শিল্পের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত পাঁচ লক্ষাধিক লোকের জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে এর মাধ্যমে। ধোলাইখাল ব্র্যান্ডের কারিগররা বাইসাইকেল থেকে শুরু করে সব ধরনের গাড়ি, ট্রাক্টর, ক্রেইন, রি-রোলিং মিল, এমনকি ট্রেনের বগিসহ যাবতীয় যন্ত্রাংশ অনায়াসে প্রস্তুত করছেন। বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাহাবুবুল আলম বলেন, দেশের এ হালকা প্রকৌশল শিল্পে প্রায় তিন হাজার ৮০০ রকমের যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ তৈরি হচ্ছে, যার মধ্যে ১৩৭টি আইটেম বিশ্বের ১৭টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

বিশাল সাফল্যের আউটসোর্সিং : ইন্টারনেটভিত্তিক অনলাইন আউটসোর্সিং বিশ্বব্যাপী শিক্ষিত তরুণ সমাজের কাছে জনপ্রিয় পেশা। বিশাল সম্ভাবনা নিয়ে এ খাতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে পাঁচ লাখের বেশি বাংলাদেশি আউটসোর্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত। আয় হচ্ছে প্রায় ৩০ কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আউটসোর্সিং থেকে বাংলাদেশের আয় প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এ খাত থেকে আয় হয় ৭ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। আর ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা বেড়ে ৯ কোটি ৪৯ লাখ ডলার হয়েছে। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে আউটসোর্সিং থেকে আয় বেড়েছে ২ কোটি ১০ লাখ ডলার। আয় বাড়ার এ হার ২৮ শতাংশের ওপরে। আউটসোর্সিংয়ের পাশাপাশি কম্পিউটার সেবা থেকেও আয় বাড়ছে।

স্বপ্নের দুয়ার খুলেছে ওষুধশিল্প : ওষুধশিল্প সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের স্বপ্নের স্বর্ণদুয়ার খুলে দিয়েছে। ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতের ক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোক্তারা রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়ে চলেছেন। রপ্তানি আয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে এ শিল্প। এ খাতের প্রবৃদ্ধি বিস্ময়কর। এক সময়ের আমদানিকারক বাংলাদেশ এখন ওষুধের রপ্তানিকারক দেশের গৌরবে গৌরবান্বিত। দেশের উৎপাদিত ওষুধ অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে বিশ্বের ১৩৩টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

বিশ্বনেতৃত্বে বাংলাদেশ : দারিদ্র্য, অশিক্ষা, অপুষ্টিকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ এখন শুধু এগিয়েই যাচ্ছে না, আন্তর্জাতিক নানা ক্ষেত্রে নেতৃত্বও দিচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্যদের সংগঠন ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সভাপতি নির্বাচিত হন সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি। ১২৫ বছরের বনেদি এ সংগঠনটি বিশ্বের সংসদীয় রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র হিসেবেই পরিচিত। একইভাবে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর এমপিদের সংগঠন কমনওয়েলথ পার্লামেন্টরি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। ১৯৭৩ সালে কমনওয়েলথে যোগদানকারী বাংলাদেশ এবারই প্রথম নেতৃত্ব দেওয়ার কর্তৃত্ব পেয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের ৪৭ সদস্যের মর্যাদাপূর্ণ মানবাধিকার কাউন্সিল নির্বাচনেও উত্তীর্ণ হয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়া অঞ্চলের প্রতিনিধি হিসেবে অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়াকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে ২০১৫-২০১৭ মেয়াদে নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল স্যাটেলাইট অর্গানাইজেশনের (আইএমএসও) মহাপরিচালক পদে নির্বাচিত হন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী ক্যাপ্টেন মঈন উদ্দিন আহমেদ। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও রোমানিয়ার প্রার্থীদের পরাজিত করে নির্বাচিত হন তিনি।

বিশ্বশান্তি রক্ষায় জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বরাবরের মতো নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর হয়ে বিশ্বব্যাপী শান্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বাংলাদেশ। বেলজিয়ামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইসমত জাহান ‘নারীর বিরুদ্ধে বৈষম্য বিলুপ্ত কমিটি’র (সিডো) সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া এশিয়া-প্যাসিফিক ইনস্টিটিউট ফর ব্রডকাস্টিং ডেভেলপমেন্টের (এআইবিডি) নির্বাচনে দুই বছরের জন্য সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ। রাসায়নিক অস্ত্রনিরোধী বিশ্ব সংস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনেরও নেতৃত্ব লাভ করেছে এ দেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ওপিসিডব্লিউসিতে স্থায়ী প্রতিনিধি শেখ মোহাম্মদ বেলাল ৪১ সদস্যের এই নির্বাহী পরিষদে ‘সর্বসম্মতভাবে’ নির্বাচিত হন।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest