সর্বশেষ সংবাদ-
দেবহাটায় জাতীয় প্রাণি সম্পদ সপ্তাহ ও প্রাণি সম্পদ প্রদর্শনীর উদ্বোধনসাতক্ষীরায় জাতীয় দৈনিক রুপালী বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনসাতক্ষীরার মিঠু খানের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করল বিএনপিকালিগঞ্জে পুকুরের পানিতে দুই শিশুর মৃত্যুদেবহাটায় ৪০ জন উপকার ভোগীর মাঝে ছাগল বিতরণদেবহাটার সরকারি কর্মকর্তা-সুধীজনদের সাথে ডিসির মতবিনিময়সাতক্ষীরার ১৮৫টি ভোটকেন্দ্রের স্কুল সংস্কারে বরাদ্দ প্রায় ৬৪ লাখ টাকাসাতক্ষীরা জেলা রোভারের ৪১ তম কোর্স ফর রোভারমেট এর মহাতাঁবু জলসাশ্যামনগরে বুনো শাকের রান্না প্রতিযোগিতাসাতক্ষীরায় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে রাস্তা সংস্কার কার্যক্রমের উদ্বোধন

সাতক্ষীরার মুক্তামণি আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার মুক্তামণি আর নেই (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)।

আজ বুধবার সকালে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে মুক্তামণি না ফেরার দেশে চলে গেছে।

মুক্তামণির নানা ফকির আহমেদ বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়।

২০১৭ সালের জুলাই মাসে বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার মুক্তামণিকে নিয়ে যুগান্তরসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নেন স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তামণির চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব নেন।

মুক্তামণির চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠনসহ সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে ঢামেক কর্তৃপক্ষ।

দীর্ঘ ছয় মাস চিকিৎসার পর হাতের অবস্থা কিছুটা ভালো হলে তাকে এক মাসের জন্য গ্রামের বাড়িতে আসার অনুমতি দেয়া হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
বিএনপি প্রার্থীদের ভোটে চিন্তায় ক্ষমতাসীনরা

ন্যাশনাল ডেস্ক: আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার টানা দুই মেয়াদে গত প্রায় সাড়ে ৯ বছরে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। অন্যদিকে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাজা ভোগ করছেন বিএনপির চেয়ারপারসন। আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারার মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগও আছে দলটির বিরুদ্ধে। তবু স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা বিপুলসংখ্যক ভোট পাচ্ছেন। এ নিয়ে চিন্তিত ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকরা। সর্বশেষ খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীর লক্ষাধিক ভোট প্রাপ্তি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১৬ মে গণভবনে ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের এক বৈঠকে তিনি তাঁর মনোভাব প্রকাশ করেন। বৈঠকে ১৪ দলের নেতারা বিএনপির বিপুল ভোটপ্রাপ্তির কারণ মূল্যায়নের পরামর্শ দেন। ১৪ দলের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

ক্ষমতাসীন জোটের ওই নেতাদের মতে, তৃণমূলে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীর কর্মকাণ্ড সরকারের প্রতি মানুষের অসন্তোষ বাড়িয়ে তুলছে। বিএনপির আমলে শুরু হওয়া দুর্নীতি, লুটপাটের ধারা বন্ধ করতে সরকার তেমন সাফল্য দেখাতে পারেনি। প্রশাসনের সেবার মান নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়াতে হলে এসব ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে হবে।

১৪ দলের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মূলত বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে গত ১৬ মে সন্ধ্যায় গণভবনে ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। রাত সাড়ে ১০টার কিছু পর পর্যন্ত বৈঠক চলে। সমসাময়িক নানা বিষয়েও আলোচনা হয় সেখানে। একপর্যায়ে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সবাইকে একসঙ্গে নির্বাচন করতে হবে সেখানে। স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠীকে পরাজিত করতে হবে। এই দেখেন, দেশের এত উন্নয়ন হলো, এর পরও মানুষ বিএনপিকে ভোট দিয়েছে। ওদের প্রার্থী এক লাখের ওপরে ভোট পেয়েছে। আপনারা শুধু প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে না থেকে যাঁর যাঁর অবস্থান থেকে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচার করেন। আমাদের দলের নেতাকর্মীদের কোনো নেতিবাচক কর্মকাণ্ড থাকলে সেগুলো লিখে রাখেন, আমাদের জানান।’

সূত্র মতে, বৈঠকে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, উন্নয়ন যথেষ্ট হয়েছে। এর পরও কেন বিএনপি এত ভোট পাচ্ছে সেটা মূল্যায়ন করা দরকার। সম্মিলিতভাবে আগামী নির্বাচনে লড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি ১৪ দলের শরিকদের মূল্যায়ন করার তাগিদ দেন। ন্যাপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেন, দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। প্রশাসনের সেবার মান বাড়াতে হবে। প্রশাসনের সেবার মান নিয়ে সাধারণ মানুষের অসন্তুষ্টি আছে।

১৪ দলের একাধিক নেতা গতকাল সোমবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিএনপির বিপুল ভোট পাওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে একধরনের দুশ্চিন্তা রয়েছে। বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তব্যেও বিষয়টি উঠে এসেছে। কিন্তু কিভাবে উত্তরণ করা যায় সে বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বৈঠকে।

জানা যায়, বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান ও পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জেপির মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক অসিত বরণ রায় প্রমুখ।

বিএনপির প্রার্থীরা কেন বিপুল ভোট পাচ্ছেন এবং ভোট বাড়াতে সরকারের করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বিএনপির বিপুল ভোট পাওয়ার বড় দুটি কারণ হলো—সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তৃণমূলে তেমনভাবে প্রচার হয় না। আর আওয়ামী লীগের নিচের স্তরের কর্মীদের নানা নেতিবাচক কাজ মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি করে রেখেছে।’

শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু উন্নয়ন দিয়ে মানুষের চাহিদা পূরণ হয় না। সাধারণ মানুষ কমপক্ষে তিনটি জিনিস চায়। প্রথমত, সুশাসন ও জবাবদিহি। শুধু কেন্দ্রে নয়, যেখান থেকে মানুষ সরকারি সেবা পায় সেখানে একটা সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহি থাকা জরুরি। সরকার বিভিন্ন সেবা অনলাইনকেন্দ্রিক করে পরিস্থিতি উন্নয়নের চেষ্টা করছে। তবে তা এখনো যথেষ্ট নয়। দ্বিতীয়ত, দুর্নীতি দূর করা। বিভিন্ন অফিস-আদালতে দুর্নীতিবাজদের দাপট রয়েছে। এগুলো দূর করতে হবে। তৃতীয়ত, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব দিতে হবে। মানুষে মানুষে অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়ছে। ফলে জনমনে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে।’

বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধবিরোধী পক্ষের সব ভোট বিএনপির ঘরে যাচ্ছে। এ ছাড়া বিএনপির আমলে শুরু হওয়া লুণ্ঠন এখনো উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমেনি। ন্যায়বিচার ও সুশাসনের অভাব আছে। মানুষের মন জয় করার জন্য যে ধরনের কর্মকাণ্ড দরকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তা পারেনি। ফলে জনগণের সন্তুষ্টি সেভাবে আসেনি। আর তৃণমূলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল একটা বড় সমস্যা।’

শিরীন আখতার বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সরকার থাকবে নাকি স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় থাকবে সেই ফয়সালা করার দিকে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এ ছাড়া মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়া, শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ রাখা, মানুষের জন্য অসহনীয় হয় এমন পরিস্থিতি তৈরি করা থেকে বিরত থাকতে হবে।’

দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ‘টানা ক্ষমতায় থাকলে সরকারের প্রতি মানুষের মধ্যে একধরনের নেতিবাচক মনোভাব গড়ে ওঠে। এ কারণে অনেকে বিরোধী পক্ষকে ভোট দেয়। আর বর্তমানে দেশে স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী একটি বড় অবস্থান নিয়ে আছে। এদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার জন্য শাসক দলের জনগণের সঙ্গে যে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলা দরকার তারা তা পারছে না। তৃণমূল পর্যায়ে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দখলদারি এখনো চলছে। বিভিন্ন অপরাধকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। ফলে তারা সরকারের উন্নয়ন ও ইতিবাচক কর্মকাণ্ডকে প্রাধান্য দিচ্ছে না।’

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্রে জানা যায়, ১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে শেখ হাসিনাকে দ্রুত সিদ্ধান্ত দেওয়ার পরামর্শ দেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মাদক ব্যবসার পৃষ্ঠপোষক কিছু পুলিশ আর রাজনীতিক

রাজনৈতিক নেতারা ‘অপবাদ’ বলে উড়িয়ে দেন ‘বদলিতে’ রেহাই পায় পুলিশ ৫ বছরে ৪০০ পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ন্যাশনাল ডেস্ক: রাজনৈতিক দলের স্থানীয় পর্যায়ের কিছু প্রভাবশালী নেতা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যের মদদেই দেশের প্রতিটি এলাকায় মাদকের কারবার চলে। মাদকের আখড়া ও চিহ্নিত মাদক কারবারিদের কাছ থেকে নিয়মিত মোটা অঙ্কের টাকা নেয় এসব সিন্ডিকেট। গোয়েন্দা তথ্য ও গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সারা দেশে দুই শতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি মাদক কারবারে মদদ দিচ্ছেন।

প্রমাণ হাতে না পাওয়ার কারণে গণমাধ্যম এসব প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে না। গোয়েন্দা তালিকায় নাম আছে—এমন বরাতে সংবাদ প্রকাশিত হলেও তাঁরা এসবকে ‘প্রতিপক্ষের অপবাদ’ বলে এড়িয়ে যান। অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধেই মাদক কারবারে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ বেশি। গোয়েন্দা, পুলিশ সদর দপ্তর ও স্থানীয় পর্যায়ের তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে পুলিশের চার শতাধিক কর্মকর্তা ও সদস্যের বিরুদ্ধে মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিভাগীয় তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয় না। বদলি ছাড়া তেমন কোনো ‘শাস্তির’ মুখোমুখি হতে হয়নি অভিযুক্তদের।

গত ৪ মে বিশেষ অভিযান শুরুর পর থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৩৮ জন নিহত হয়েছে। গত সোমবার দিবাগত রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত অভিযানে মারা গেছে ১১ জন।

রাজশাহীর পুঠিয়ায় নিহত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী মণ্ডল ছিলেন উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি।

গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘মাদকের কোনো চুনোপুঁটিদের ধরা হচ্ছে না। চুনোপুঁটিদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকে না। এ যাবৎ দুই হাজারের বেশি মাদক ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিচার করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ সংসদ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ, র‌্যাব, সাংবাদিক—যাঁরাই মাদকের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন, তাঁদের ছাড় নয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘সংসদ সদস্য বদির বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তথ্য-প্রমাণ নাই।’

ঢাকায় কারবার চলে শেল্টারে

শীর্ষ ইয়াবার ডিলার ইশতিয়াকের আমিনবাজারের বাড়িতে ধরতে গত বছরের ২১ নভেম্বর অভিযান চালালেও তাকে ধরতে পারেনি মাদকদ্রব্য নিরয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। সেই অভিযানে অংশ নেওয়া এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইশতিয়াকের বাড়িতে যেসব কাগজপত্র পেয়েছি তা দেখে অবাক হয়ে যাই। বড় রাজনৈতিক দলের শীর্ষপর্যায়ের নেতা এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে তার যোগাযোগ। ইশতিয়াক তাঁদের কাছে গোয়েন্দা সংস্থা ও ডিএনসি তাকে হয়রানি করছে বলে অভিযোগও করে।

রূপনগরের ঝিলপাড় বস্তিতে কারবারি নজরুল ইসলাম নজুকে সহায়তা করার অভিযোগ আছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর রজ্জব হোসেনের বিরুদ্ধে। তবে তিনি দাবি করেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে এই ‘অপবাদ’ দিচ্ছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নজুর আস্তানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হলেও তাকে ধরতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

সূত্র জানায়, রামপুরায় আগে মাদক বাণিজ্যের হোতা ছিলেন কয়েক বছর ধরে নিখোঁজ ছাত্রলীগ নেতা তপু। এখন মদদ দিচ্ছেন থানা যুবলীগ নেতা তানিম। মেরুল বাড্ডার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জয়নাল নিয়ন্ত্রণ করছেন একটি বড় সিন্ডিকেট।

মাদক কারবারিদের একটি তালিকায় নয়াপল্টনের ইফতেখার জামান জয়ের নাম আছে, যাকে স্থানীয় এক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মদদ দিচ্ছেন বলেও উল্লেখ করা হয়। লালবাগের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোশাররফ হোসেনের ছোট ভাই মহসীন আজাদ এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি বলে তালিকাভুক্ত হয়েছেন।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, গুলশানের ৪৩ নম্বর রোডসহ কয়েকটি এলাকায় অনুমোদনহীন বার চলছে এক মন্ত্রীর ছেলের নামে। সেখানে মদের পাশাপাশি ইয়াবা সেবনও চলে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ইয়াবা তৈরির অভিযোগও ওঠে। খিলগাঁওয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদ বাবু, সবুজবাগের রিপন বড়ুয়া এবং ধানমণ্ডি থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাজিমউদ্দিন বাবুর নাম কারবারি হিসেবে গোয়েন্দা তালিকায় আছে। কামরাঙ্গীর চরে ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রক নসু। তার ভগ্নিপতি কামরাঙ্গীর চরের ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহসম্পাদক সোনা মিয়া। ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মামুনের ভাই নাদিম ইয়াবা ও হেরোইন কারবারি হিসেবে পরিচিত।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দেশের ৪৪ প্রতিষ্ঠানে ৪৬৯ জন মাদক কারবারির মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক ১৪ নেতার নাম আছে। লেদার টেকনোলজি কলেজকেন্দ্রিক কারবারে হাজারীবাগ থানা যুবলীগ সদস্য রাইসুল ইসলাম রবিনের নাম আছে সে তালিকায়। ধানমণ্ডির ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিকেন্দ্রিক হোতা হিসেবে ধানমণ্ডি থানার ছাত্রলীগের সভাপতি হাওলাদার সুজাউদ্দিন তুহিনের নামও তালিকায় উঠে এসেছে। কালের কণ্ঠ’র অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রাজধানীতে মাদক কারবার করছে একটি চক্র, যারা স্থানীয়ভাবে পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত।

অনেক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর করা ইয়াবার গডফাদারদের তালিকায় সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি ও তাঁর পাঁচ ভাইসহ কক্সবাজারের ৩৫ জনপ্রতিনিধির নাম আছে। বদির পিএস মং মং সেন, ভাগ্নে সাহেদুর রহমান নিপু, বেয়াই আকতার কামাল (মেম্বার) ও শাহেদ কামাল, মামা হায়দার আলী ও মামাতো ভাই কামরুল ইসলাম রাসেলের নাম আছে সেসব তালিকায়। টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমেদ এবং তাঁর চার ছেলে শাহজাহান, ইলিয়াস, দিদারুল আলম ও মোস্তাক আহমদ ইয়াবা কারবারে জড়িত বলে অভিযোগ। টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহজাহান, সাবরাং ইউনিয়নের নাজিরপাড়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার এনামুল হক, সাবরাং ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নূর হোসেন, লেঙ্গুর বিলের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার শামসুল আলম, নয়াপাড়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মোহাম্মদুর রহমান, সাবরাং ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মোয়াজ্জেম হোসেন দানু, বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজ উদ্দিন, হ্নীলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জামাল হোসেন, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুল হুদা, হ্নীলা লেদার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ আলী, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার রাকিব আহমেদ, টেকনাফ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একরামুল হক, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নুর বশর নুরসাদ কারবারের নিয়ন্ত্রক।

কক্সবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর ছেলে রাশেদ ও মাহবুব মোরশেদের নাম আছে ইয়াবা কারবারিদের তালিকায়। তালিকাভুক্ত কারবারি সৈয়দ হোসেন সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেনের ভাই।

ফেনীর বিএনপি নেতা আজাদ হোসেন, বিএনপির সাবেক (সংরক্ষিত আসন) এমপি রেহানা আক্তার রানুর ভাইয়ের ছেলে ইসমাইল হোসেন, জেলা যুবলীগ নেতা জিয়াউল আলম মিস্টার, আওয়ামী লীগ নেতা কমিশনার গিটার, ধর্মপুর ইউপি আওয়ামী লীগ নেতা সোহাগ, ফুলগাজী থানা বিএনপি নেতা আবদুর রউফ ও তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাদক কারবারে জড়িত থাকার তথ্য রয়েছে গোয়ন্দাদের কাছে।

উত্তরে ক্ষমতাধরদের প্রশ্রয়

পঞ্চগড়ের অমরখানা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নূরুজ্জামান, বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিলন, তেঁতুলিয়ার ভজনপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মোস্তফা কামাল পাশা, সাইদুর রহমান বাবলু, শ্রমিক দল নেতা মুক্তারুল ইসলাম মুকুসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গোয়েন্দারা মাদকে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ তুলেছেন। জেলার ১৮ পুলিশ সদস্যদের নামও দেখা যায় গোয়েন্দা তালিকায়, যাঁদের এরই মধ্যে বদলি করা হয়েছে। কুড়িগ্রামে মদদদাতা রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি জাকির হোসেন, একই উপজেলার যুবলীগ সভাপতি হারুন-অর রশিদ, রাজীবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূর আলম ওরফে শফিউল আলম, চিলমারীর রমনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুর-ই-এলাহী তুহিন, রাজীবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল আলম বাদল, ফুলবাড়ী দাসিয়ারছড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম সেরা ও দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বিএসসি। জেলার ৯ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও আছে সহায়তার অভিযোগ।

গাইবান্ধার পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে আছে গাইবান্ধা-৪ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, পৌর মেয়র শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির মিলন, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন বিহারী, বাদিয়াখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আতোয়ার রহমান, কূপতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুর রাজ্জাক, দরবস্ত ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ফারুক হোসেনসহ ২৭ জনপ্রতিনিধির নাম। একই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ১৩ পুলিশ সদস্যকেও সহযোগী উল্লেখ করা হয়েছে। অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি ২০ জন মাদক কারবারিকে মাদকবিরোধী শপথ পড়িয়েছেন।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে কারবারিদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে গোমস্তাপুর উপজেলার বাইরুল ইসলাম, ভোলাহাট উপজেলার মোজাম্মেল হক চুনু, নাচোল উপজেলার আবদুল কাদের এবং শিবগঞ্জ উপজেলার সরওয়ার জাহান সেরফানের নাম থাকলেও তাদের রাজনৈতিক পরিচয় নেই। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তারা সরকারদলীয় নেতাকর্মী। এ ছাড়া চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাদকের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে।

‘রক্ষক ভক্ষক হওয়ার’ অসংখ্য নজির

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, বছরে গড়ে এক শ পুলিশের বিরুদ্ধে মাদকে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়। গত বছরের প্রথম ছয় মাসেই মাদকে জড়িত থাকার অভিযোগ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটের ২৩ জন। কক্সবাজারে মাদক কারবারে সহায়তা করার অভিযোগ ওঠে টেকনাফ ও উখিয়া থানার ১৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের নাম আসার পর টেকনাফ থানার এসআই আলমগীর, এসআই সরোজ আচার্য, সামিউর রহমান, পিএসআই সাইদুল, এএসআই আযহার ও কনস্টেবল বারী, আমিরুল এবং থানার ওসি জহিরুল ইসলাম, এসআই রাজেশ বড়ুয়া, দিদার মিয়া, প্রবোদ দাশ, এএসআই হাসানকে বদলি করা হয়। গত ৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জের বন্দরের রূপালী এলাকার বাসা থেকে পুলিশের এএসআই আলম সরোয়ার্দী রুবেলকে ৪৯ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে জেলা ডিবি পুলিশ। আদালতে তাঁর দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আরো পুলিশের জড়িত থাকার তথ্য মিলে।

ডিএনসি সূত্র জানায়, গত এক বছরে পুলিশের ৭২ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ, যাদের কয়েকজন মাদকে জড়িত ছিল। পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সহেলী ফেরদৌস বলেন, ‘মাদকে জড়িত থাকলে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের চেয়ে তাদের শাস্তি বেশি। কারণ অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বরখাস্ত করে তদন্ত শুরু হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভাগীয় শাস্তির পাশাপাশি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।’

সূত্র: ২৩ মে, ২০১৮ কালের কণ্ঠ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
টার্গেট টপ টেন; সারাদেশে মাদকবিরোধী ক্রাশ প্রোগ্রাম

জেলাওয়ারি শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর তালিকা এখন অপারেশন টিমের হাতে, আছে বহুল আলোচিত বদির নামও

ন্যাশনাল ডেস্ক: চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে এবার যুক্ত হচ্ছে ‘টপ টেন লিস্ট’। জেলাভিত্তিক শীর্ষ গডফাদারদের এ তালিকা ধরে এরই মধ্যে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স ক্রাশপ্রোগ্রাম’ শুরু হয়েছে। যেখানে দেশজুড়ে ৬৫০ বিগ শটের নাম উঠে এসেছে। গ্রেফতার অভিযানে এরই মধ্যে কয়েকজন ক্রসফায়ারে মারাও গেছে।

বলা হচ্ছে, এরা শুধু মাদক ব্যবসায়ী নয়, এদের অনেকের কাছে বিপুল সংখ্যক অবৈধ অস্ত্রও আছে, যার প্রমাণ মিলছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময়। গ্রেফতার অভিযানের সময় এরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে উল্টো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে রীতিমতো বন্দুকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ছে। সূত্র নিশ্চিত করেছে, সমূলে বিনাশ না হওয়া পর্যন্ত সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে এবারের উচ্চমাত্রার অভিযান অব্যাহত থাকবে। এক্ষেত্রে কারও কোনো রাজনৈতিক বিশেষ পরিচিতিও বিবেচনায় নেয়া হবে না।

সূত্র জানায়, মাদক সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান পরিচালনার বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠক থেকে ক্রাশপ্রোগ্রাম নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বলা হয়, জঙ্গিবিরোধী অভিযানে যে মাত্রার অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে, এক্ষেত্রেও সেটিই করা হবে। কেননা জঙ্গিবাদ আর মাদক সমাজে একইভাবে ক্ষতি করছে। এজন্য র‌্যাবকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়।

টপ টেন লিস্ট : জেলাওয়ারি শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের নাম-ঠিকানা সংবলিত ৭১ পৃষ্ঠার গোপনীয় তালিকার পূর্ণাঙ্গ একটি কপি গণমাধ্যমের হাতে এসেছে। তালিকায় স্থান পেয়েছে প্রতিটি জেলার শীর্ষ ১০ মাদক ব্যবসায়ীর নাম।

এছাড়া চট্টগ্রাম ও ঢাকার মতো বড় এলাকাকে শহর ও জেলা- এ দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এরপর শহর (মেট্রো) থেকে ১০ জন এবং জেলা থেকে ১০ জনের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তালিকায় মাদক ব্যবসায়ীদের স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানা, মামলার সংখ্যা, ব্যবসার ধরন এবং কারও কারও ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মুঠোফোনসহ জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরও উল্লেখ করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলার শীর্ষ ১০ মাদক ব্যবসায়ীর তালিকার প্রথমেই যার নাম আছে, তিনি হলেন আলোচিত সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি। তার সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি ইয়াবা ব্যবসার অন্যতম নিয়ন্ত্রক। ব্যবসায় সরাসরি জড়িত হন না তিনি। তবে তার ইচ্ছার বাইরে বা অজান্তে এ ব্যবসা প্রায় অসম্ভব।

তালিকার ২ নম্বরে আছেন কক্সবাজারের শিল্পপতি হিসেবে পরিচিত হাজী সাইফুল করিমের নাম। তার স্থায়ী ঠিকানা শীলবুনিয়াপাড়া, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড। তবে তিনি বর্তমানে চট্টগ্রামে বসবাস করেন। চট্টগ্রামেই তার গার্মেন্ট, আমদানি-রফতানি, কার্গো ও জাহাজের ব্যবসা রয়েছে।

চট্টগ্রাম শহর থেকে তালিকাভুক্ত ১০ জনের মধ্যে এক ও দুই নম্বরে আছেন যথাক্রমে মঞ্জুর আলম ওরফে মঞ্জু সওদাগর ওরফে কানা মঞ্জু ও রেজাউল করিম ওরফে ডাইল করিমের নাম।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মঞ্জুর আলম চট্টগ্রাম শহরের একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। তিনি দেশের অন্যতম প্রধান ইয়াবা চোরাকারবারি। তার বাবার নাম হাজী আবদুল করিম। গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়া থানার রূপকানিয়ায়। চট্টগ্রামের রিয়াজ উদ্দীন বাজারে ফলের গলিতে তার ইয়াবার পাইকারি মোকাম রয়েছে।

র‌্যাব জানায়, ব্যক্তিগত পাজেরো গাড়িতে পাচারের সময় প্রায় ৮ লাখ ইয়াবাসহ র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়ে মঞ্জু বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দি। চট্টগ্রাম শহরেই তার অন্তত ৫টি বহুতল বাণিজ্যিক ভবন, মার্কেট ও ৩টি বাড়ি রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদক মামলার সংখ্যা প্রায় ১৫টি। তালিকার ২ নম্বরে থাকা রেজাউল করিমও ইয়াবার বড় মাপের পাইকারি বিক্রেতা ও গডফাদার। তার বাবার নাম মৃত জানে আলম। হালিশহরের ছোট পুল দফাদার বাড়ি এলাকায় তিনি বসবাস করেন। তার বিরুদ্ধে ১২টি মামলা রয়েছে। রেজাউল কমির চট্টগ্রাম শহরের অন্যতম ধনাঢ্য ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।

চট্টগ্রাম জেলার শীর্ষ ১০ মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে এক নম্বরে থাকা মমতাজ ওরফে ফারুক এরই মধ্যে র‌্যাবের সঙ্গে ক্রসফায়ারে মারা পড়েছেন। তিনি বরিশাল কলোনির মাদক সম্রাট বলে পরিচিত ছিলেন।

সূত্র জানায়, ফারুক ক্রসফায়ারে মারা যাওয়ার পরদিনই বরিশাল কলোনির আরেক গডফাদার ইউসুফ ভারতে পালিয়ে যান। তবে ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ায় তিনি গত মাসে কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন সেখানকার কারাগারে বন্দি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক নম্বরে আছেন রতন মিয়া। বাবার নাম মৃত বাদল মিয়া। আশুগঞ্জ থানার শরীয়তনগর চারতলা এলাকায় বসবাস করেন তিনি। জেলার অন্যতম ধনাঢ্য ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত রতন মিয়াকে স্থানীয়রা একজন হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী হিসেবেই চেনেন। রেলগেট এলাকায় তার ধানসিঁড়ি নামের একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে।

দেশের অন্যতম প্রধান মাদকপ্রবণ এলাকা কুমিল্লার এক নম্বর মাদক ব্যবসায়ী হলেন গঙ্গানগর মহল্লার মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে আবুল হোসেন। তিনি মূলত গাঁজা ব্যবসায়ী। তার নামে ৪টি মাদক মামলা আছে। সালদানদী রেলস্টেশনের পাশে তার বাড়ি। রেল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক পৌঁছে দেন। তিনি থাকেন কুমিল্লার ভারতীয় সীমান্তে নো ম্যানস ল্যান্ডের কাছাকাছি। গ্রেফতার করতে গেলেই তিনি ভারতে চলে যান।

তালিকার দু’নম্বরে আছে হূমায়ন মেম্বারের নাম। তার বাবা মৃত শরাফত আলী। বুড়িচং থানার চড়ানল এলাকায় তার বাড়ি। তার বিরুদ্ধে ৫টি মামলা রয়েছে। নিজস্ব বেতনভুক্ত কর্মচারীদের মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন জায়গায় হোম সার্ভিসে মাদক ব্যবসা করেন।

লক্ষ্মীপুরের শীর্ষ ১০ মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে প্রথমে আছেন রিপন হোসেন ওরফে রিংকু। বাবা বাদশা মিয়া। গ্রাম- টুমচর, সদর থানা। দ্বিতীয় নামটি হল স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার ইব্রাহিম মজুমদারের। তার বাবা মৃত মিছির আলী। রামগঞ্জ থানার সোনাপুর বাঘরদিয়া হবিসভা এলাকায় তার বাড়ি।

নোয়াখালীর এক নম্বর মাদক ব্যবসায়ীর নাম রফিকুল হাসান ওরফে রুশো। তার বাবা নুর মোহাম্মদ। সদর থানার হরিনারায়ণপুর (জহুরুল হক মিয়ার গ্যারেজ) গ্রামে তার বাড়ি। পরের অবস্থানে আছে সোনাইমুড়ি উপজেলার ভানুয়াই এলাকার হাসানের নাম।

শেরপুর জেলার মাদক ব্যবসায়ীর তালিকায় এক নম্বরে থাকা মাহবুব আলম বলেন, ষড়যন্ত্র করে তার নাম তালিকায় ঢোকানো হয়েছে। তিনি বলেন, আমি একসময় নেশার জগতে জড়িয়ে গিয়েছিলাম। এখন ভালো হয়ে গেছি। তারপরও আমাকে বারবার জেলে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কতবার জেলে গেছেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বেশি না ১০/১৫ বার।’

গোপালগঞ্জের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী টুটুল হোসেন খানের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন ভালো হয়ে গেছি। ব্যবসা করতে গিয়ে একটা মার্ডার কেসও খাইলাম। পাঁচবার জেল খেটে জীবনটাই শেষ।’

ফেনীর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে তালিকাভুক্ত সরোয়ার হোসেন মুঠোফোনে জানান, তিনি ফেনী পৌর যুবলীগের ৫নং ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন। রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ের কারণে তাকে মাদক ব্যবসায়ী বানানো হয়েছে।’ অতীতে কখনও মাদক ব্যবসা করেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা অনেক আগের কথা। এখন সব ছেড়ে দিয়েছি।’

চাঁদপুরের দুই শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হলেন যথাক্রমে বিষ্ণুদী মাদ্রাসা রোডের নবী হোসেন মিজির ছেলে সবুজ মিজি ও পশ্চিম মদনা এলাকার আবু জমাদারের ছেলে কবির জমাদার।

ফেনী শীর্ষ ১০ মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে এক নম্বরে আছেন মির্জাবাড়ি, ধলিয়া এলাকার রসুল আহমদ বলী। তার বাবার নাম আবুল হোসেন। আলিয়া এলাকায় তিনি ইয়াবা, ফেনসিডিল ও গাঁজার আস্তানা গড়ে তুলেছেন। তালিকার দ্বিতীয় নম্বরে আছেন বিরিঞ্চি এলাকার সৈয়দ ড্রাইভারের ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে সবুজ। তিনি ফেনী সদরের লেমুয়া এলাকায় মাদক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। মাদক ব্যবসার পাশাপাশি তিনি হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে সূত্র।

রাজধানী ঢাকার অন্যতম প্রধান মাদক বিপণন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত জেনেভা ক্যাম্পের মাদক গডফাদার ইসতিয়াক ওরফে কামরুল হাসান আছেন শীর্ষ ১০ তালিকার এক নম্বরে। অনুসন্ধানে তার তিনটি ঠিকানা পাওয়া যায়। প্রথম ঠিকানাটি জেনেভা ক্যাম্পের বি-ব্লকের ১৬২ নম্বর বাসা। দ্বিতীয় ঠিকানা সভারের মাদ্রাসা রোডের জাদুরচর ঈশিকা ভবন। তার তৃতীয় ঠিকানা হচ্ছে আশুলিয়া ব্যারন বাসস্ট্যান্ড এলাকার ১০/এ নম্বর প্লটের ৬ তলা বাড়ি।

সূত্র জানায়, ইসতিয়াক দেশে থাকেন কম। বছরের বেশিরভাগ সময় তিনি মালয়েশিয়ায় থাকেন। সেখানে তিনি সেকেন্ড হোম করেছেন। মালয়েশিয়ায় তার একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। জেনেভা ক্যাম্পের প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে ইসতিয়াক পরিচিত। তালিকার ২ নম্বরে আছেন মোস্ট ওয়ানটেড মাদক ব্যবসায়ী নাদিম ওরফে পশ্চিম। তিনিও মূলত জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দা। তার বাবা মৃত আনোয়ার হোসেন। জেনেভা ক্যাম্পের বি-ব্লকের ১৬৯ নম্বর বাসায় থাকেন তিনি। মোহাম্মদপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। কিছুদিন আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এক যৌথ অভিযানে গ্রেফতার হন তিনি। কিন্তু ৩ মাসের বেশি তাকে জেলখানায় আটকে রাখা যায়নি।

ঢাকা জেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে তালিকার এক নম্বরে আছেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পশ্চিম আগানগর এলাকার মৃত রমজান মিয়ার ছেলে মামুন। তিনি মূলত ইয়াবা ও ফেনসিডিলের পাইকারি বিক্রেতা। পুরো কেরানীগঞ্জেই তার নেটওয়ার্ক রয়েছে। তালিকার দুই নম্বরে আছেন ধামরাই বাউখণ্ড এলাকার আবদুল বাসেতের ছেলে আবুল হোসেন ওরফে আজিজ মিয়া। তিনি ইয়াবার সঙ্গে হেরোইনের পাইকারি ডিলার।

গাজীপুরের শীর্ষ দু’জন মাদক ব্যবসায়ী হলেন যথাক্রমে বাচ্চু, বাবা আশ্রাফ আলী। অপরজন হলেন আব্বাস উদ্দীনের ছেলে স্বপন। দু’জনেই থাকেন টঙ্গী থানার হাজীর মাজার বস্তি এলাকায়। তারা দু’জন মাদক বিক্রির পাশাপাশি গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকার মাদক স্পট নিয়ন্ত্রণ করেন।

কিশোরগঞ্জের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে তালিকাভুক্ত ১০ জনের মধ্যে প্রথমে আছে খায়রুনন্নেসা ওরফে খায়রুনী নামের এক নারীর নাম। তার স্বামীর নাম মানিক মিয়া। কিশোরগঞ্জ সদরের যশোদল ও কলাপাড়ায় তিনি ব্যবসা করেন। এ নারী মূলত কিশোরগঞ্জের শীর্ষ ইয়াবা সম্রাঙ্গী হিসেবে পরিচিত। তালিকার দ্বিতীয় নম্বরে মাদক গডফাদার হিসেবে ভৈরব কালিকা প্রসাদ গ্রামের হাছেন আলী মৃধার ছেলে মামুনের নাম আছে।

মাদারীপুরে শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন সদর থানার পানিছত্রা গ্রামের মৃত খোকা ফকিরের ছেলে সায়মন ফকির। তিনি ইয়াবা বিক্রির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া আমিরাবাদ গ্রামের মৃত কালা চাঁদ দাসের ছেলে রজত দাসও ইয়াবা পাইকারি বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত। গোপালগঞ্জের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে এক নম্বরে আছেন টুটুল হোসেন খান। তার বাবার নাম আবদুল মালেক খান। ঠিকানা লায়েকের মোড় মিয়াপাড়ার ২৫২ নম্বর হোল্ডিং। দু’নম্বরে আছেন লাকি বেগম। তার স্বামীর নাম সিরাজুল ইসলাম। পূর্ব মিয়ারপাড়ার ২৬১ নম্বর হোল্ডিংয়ে তিনি থাকেন। তারা দু’জনেই ইয়াবার পাইকারি বিক্রেতা।

শরীয়তপুরের শীর্ষ দুই মাদক ব্যবসায়ী হলেন নড়িয়া থানার আনাখন্ড গ্রামের ইসমাইল কাজীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন কাজী ও ডামুড্যা থানার কুতুবপুর গ্রামের সজীব পেদা। তাদের মধ্যে গিয়াস উদ্দীনের ব্যবসা ইয়াবা এবং সজীব পেদা গাঁজা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

নরসিংদীর সবচেয়ে বড় মাদক ব্যবসায়ীর নাম ইলিয়াস মিয়া ওরফে ডাকু ইলিয়াস। তার বাবার নাম হাজী ফজলুর রহমান। বাড়ি দাসপাড়া এলাকায়। তালিকায় এর পরের অবস্থানে মাধবদী খালপাড়ের বাসিন্দা কুখ্যাত ফেনসিডিল ব্যবসায়ী নাসিরের নাম। তার বাবা মৃত নওয়াব আলী।

নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী বজলুর রহমান ওরফে বজলু মেম্বার রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় থাকেন। তার বাড়ি রূপগঞ্জের চনপাড়া এলাকায়। বন্দর থানার মদনপুর গোকুল দাসেরবাগ এলাকার কবীর মোবাইল ফোনে ইয়াবার কারবার চালাচ্ছেন দীর্ঘদিন।

ফরিদপুরের শীর্ষ ইয়াবা ও ফেনসিডিলের কারবারির নাম ফাইসুর ওরফে পাভেল। কমলাপুর কলেজ গেট কুঠিবাড়ি এলাকায় থাকেন তিনি। তার বাবার নাম মৃত এমদাদ হোসেন। সদর থানার গুহলক্ষ্মীপুর বস্তির সামর্থ্য বেগমের নাম রয়েছে তালিকার দ্বিতীয় নম্বরে।

রাজবাড়ি জেলার এক নম্বর মাদক ব্যবসায়ী হলেন আনিচুর রহমান সেলিম ওরফে চাচা সেলিম। তার বাবার নাম নরুল হোসেন খান। সদর থানার পূর্ব সজ্জনকান্দা (সেগুনবাগান) এলাকায় বাস করেন তিনি।

এছাড়া নবগ্রামের (পিচরিয়া) মৃত রিফাত আলী মণ্ডলের ছেলে জাহাঙ্গীর মণ্ডল আছেন তালিকার দ্বিতীয় নম্বরে। টাঙ্গাইলের ইয়াবা ডন হিসেবে পরিচিত মোস্তফা কামাল জেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। মুন্সীগঞ্জের পাইকারি ইয়াবা ব্যবসায়ী আরিফ আছেন তালিকার এক নম্বরে। দ্বিতীয় নম্বরে আছেন মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে মোফাজ্জল হোসেন।

মানিকগঞ্জের শীর্ষ ১০ মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে এক নম্বরে আছে সিঙ্গাইরের গোবিন্দল গ্রামের মৃত সাইজুদ্দিনের ছেলে তালুক মিয়া। তার পরেই আছে সুইচগেট বান্দটিয়া গ্রামের বাবুল ব্যাপারির ছেলে সোহেল। ময়মনসিংহ জেলায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীর তালিকায় এক নম্বরে নাম আছে পুরাতন রেলকলোনি কেওয়াটখালী এলাকার সৈয়দ আলী। তার পরেই আছে আদর্শ কলোনি বাগানবাড়ির রুনু বেগম। এর মধ্যে সৈয়দ আলীর গাঁজা ব্যবসা দীর্ঘদিনের।

পাহাড়ি জনপদ রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতেও ইয়াবার ভয়ংকর আগ্রাসন ছড়িয়ে পড়েছে। রাঙ্গামাটির শীর্ষ ১০ মাদক ব্যবসায়ীর তালিকার এক নম্বরে আছেন মঞ্জুয়ারা বেগম। তার স্বামী আবদুল আজিজ। কোতোয়ালি থানার কামিলাছড়ি ফরেস্ট কলোনিতে তিনি বসবাস করেন। খাগড়াছড়ির এক নম্বর মাদক ব্যবসায়ী সাজু মিয়া। ইয়াবা ও হেরোইনের পাইকারি ডিলার তিনি। সদর থানার মোহাম্মদপুর কলেজ গেট এলাকায় থাকেন তিনি।

সূত্র: ২৩ মে ২০১৮, যুগান্তর

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানে জড়িত ১০৪ সেনা সদস্যের যাবজ্জীবন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগানের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে অভ্যুত্থান চেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১০৪ সাবেক সেনা সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত।

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে মঙ্গলবার এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

এরদোগানের বিরুদ্ধে ওই অভ্যুত্থানে জড়িত ২০৮ সাবেক সেনা সদস্যকে ইজমিরের একটি আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।

২০৮ জনের মধ্যে ১০৪ সাবেক সেনা সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অপর ৫২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৫ জুলাইয়ের ওই ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে কমপক্ষে ২৬০ জন নিহত এবং আরো ২ হাজার ২শ মানুষ আহত হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
বিএনপিকে আবারো ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ বললো কানাডার আদালত

ন্যাশনাল ডেস্ক: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’কে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে আগের দেয়া এক রায় বহাল রেখেছেন কানাডার ফেডারেল কোর্ট। দেশটিতে বিএনপির এক কর্মী ২০১৫ সালে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছিলেন। এ বিষয়ে শুনানি শেষে বিএনপিকে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও সরকার উৎখাতের চেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার পর তার সেই আবেদন বাতিল করে দেয়া হয়।

পরে আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন বিএনপির ওই কর্মী। রিভিউ আবেদনের শুনানি গত ৪ মে অন্টারিওর ফেডারেল আদালতে অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিয়ে ‘বিএনপিকে সন্ত্রাসী’ সংগঠন হিসেবে আদালতের দেয়া আগের রায় বহাল রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সোমবার কানাডার ফেডারেল কোর্টের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়।

কানাডায় বিএনপির যে কর্মী ২০১৫ সালে আশ্রয় প্রার্থীর আবেদন করেছিলেন তার নাম মো. মোস্তফা কামাল (৩১)। সেই সময় কানাডার সরকার অাদালতকে জানায়, মোস্তফা কামাল বিএনপির কর্মী হিসেবে কানাডায় আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। কিন্তু তার এ রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তার আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন বাতিল করে দেয়া হয়।
আদালত জানান, তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়ার যৌক্তিক কোনো কারণ পাওয়া যায়নি। এটা বিশ্বাস করার মতো যথেষ্ট ভিত্তি আছে যে, মো. মোস্তফা কামাল এমন একটি সংগঠনের সদস্য যে সংগঠনটি দেশে সন্ত্রাসবাদ এবং বাংলাদেশ সরকারকে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে উৎখাতের শক্তিগুলোকে উসকানি দেয়ার সঙ্গে জড়িত।

পরে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিএনপির এই কর্মী ফেডারেল কোর্টে তার আবেদন বাতিলের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন। তবে তার এই রিভিউ আবেদনও বাতিল করে দিয়ে ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন কানাডার ফেডারেল কোর্ট।

কানাডার আদালত দেশটির জননিরাপত্তা ও জরুরি প্রস্তুতিবিষয়ক মন্ত্রীর সরবরাহ করা তথ্যের ভিত্তিতে ওই রায় বহাল রেখেছেন। মন্ত্রী বলেছেন, এটা বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে যে আবেদনকারী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির একজন সদস্য।
তিনি বলেন, বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাত তৎপরতা অথবা উৎখাতে প্ররোচনা দেয়ার সঙ্গে জড়িত। যা কানাডার অভিবাসন ও শরণার্থী সুরক্ষা অাইনের এসসি-২০০১ এর সি-২৭ ধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কানাডিয়ান বর্ডার সিকিউরিটি অ্যাজেন্সির (সিবিএসএ) এক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তিনি এ দাবি করেন।

বিএনপির ওই কর্মীর রিভিউ আবেদনের পর ফেডারেল কোর্ট দেশটির জননিরাপত্তা ও জরুরি প্রস্তুতিবিষয়ক মন্ত্রীর দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য নির্দেশ দেন। কানাডার অভিবাসন ও শরণার্থী বোর্ডের অভিবাসন বিভাগ এবিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের পর আদালতে তুলে ধরে। পরে সিবিএসএ’র প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই ও পুনর্বিবেচনা করে আগের দেয়া রায় যৌক্তিক বলে জানান ফেডারেল কোর্ট।

ফেডারেল কোর্ট আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন নাকচ করে দেয়ার পর ভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন মোস্তফা কামাল। তিনি এবার বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদলের কর্মী হিসেবে আশ্রয় প্রার্থনা পাওয়ার আবেদন করেন এবং এ আবেদনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। আদালতের কাছে বিএনপির এই কর্মী বলেন, বিএনপি এবং যুবদল সম্পূর্ণ পৃথক দুটি রাজনৈতিক দল। তখন তার এই আবেদনের জন্য নতুন করে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপনের নির্দেশ দেন আদালত।
এ সময় কুমিল্লার বেশ কয়েকজন স্থানীয় যুবদল নেতার বক্তব্য রেকর্ড করে তা আদালতের কাছে উপস্থান করেন কামাল। ২০০৫-০৬ সালে তিনি যুবদলের কুমিল্লা জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক ছিলেন বলে দাবি করেন।

মোস্তফা কামালের এই দাবির পর আইডি তখন বাংলাদেশি এক মার্কিন অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়। তার দেয়া তথ্য আদালতের কাছে তুলে ধরে আইডি। বাংলাদেশি ওই অধ্যাপক বলেন, বিএনপি থেকে পৃথক একটি সংগঠন যুবদল। তবে বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো ও নেতৃত্বের আদলে সংগঠনটির পৃথক নির্বাহী কমিটি রয়েছে। তবে দুটি সংগঠনের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে।

পড়াশোনা শেষ হলে ছাত্রদল থেকে কর্মীরা যুবদলে যোগ দেন। পরে সেখান থেকে বিএনপিতে। বিএনপির নির্বাহী কমিটির পদমর্যাদা এবং দায়-দায়িত্বের অনুরূপ রয়েছে যুবদলের নির্বাহী কমিটিতে। পরে শুনানিতে যুবদলকে বিএনপির অঙ্গসংগঠন নয় বলে মোস্তফা যে দাবি করেছিলেন; সেই দাবির পক্ষে কোনো ধরনের প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
তিন ফরম্যাটে তিন কোচ আসছে টাইগারদের!

স্পোর্টস ডেস্ক: অনেকেরই ধারণা ছিল এবং অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছিলো মঙ্গলবার দুপুরে বিসিবি সভাপতি ও বোর্ডের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকেই বুঝি বাংলাদেশের নতুন বিদেশি হেড ও ব্যাটিং কোচ চূড়ান্ত হয়ে যাবে। এবং বিকেলে প্রচার মাধ্যমের কাছে নতুন কোচের নাম ঘোষণা করতে পারেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন।

শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। কোচ চূড়ান্তই যেখানে হয়নি, সেখানে নাম ঘোষণার তাই প্রশ্নই আসে না। মঙ্গলবারতো নয়ই আগামী দু’একদিন কিংবা এক সপ্তাহর মধ্যেও কোচ ঠিক হবে না। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের আশা, আগামী ১৫ জুনের মধ্যে কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

তবে সেটাই শেষ কথা নয়। ১৫ জুনের ভিতর কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হবার আশাই বিসিবি বিগ বসের শেষ সংলাপ নয়। তার আগে আরও কিছু হিসেব নিকেশ আছে। সেটাই আসল কথা। ওপরের ডেড লাইন বেঁধে দেয়া দেখে ভেবেন না ১৫ জুনের মধ্যে কোচ নিয়োগ হয়ে যাবে। নতুন বিদেশি হেড ও ব্যাটিং কোচ সুর সুর করে চলে আসবেন।

বিষয়টি মোটেই তেমন নয়। যার ওপর কোচ নিয়োগ এবং জাতীয় দল ব্যবস্থাপনার সমুদয় দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, সেই গ্যারি কারস্টেনতো চান তিন ফরম্যাটে তিন কোচ। বিসিবি তাতে হ্যা না করলেও না করেনি। বরং বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও অন্য শীর্ষ কর্তাদের কথা বার্ত শুনে এবং শরীরি অভিব্যক্তি দেখে মনে হয়, টেস্ট আর সীমিত ওভারের ফরম্যাটের জন্য মানে লাল ও সাদা বলের জন্য আলাদা কোচ নিয়োগের সম্ভাবনাও আছে বেশ।

এর বাইরে আরও একটি সম্ভাবনার খবরও আছে। তাহলো একজন হেড কোচের অধীনে টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি টোয়েন্টি তিন ফরম্যাটে ও ব্যাটিং-বোলিংয়ের জন্য পৃথক পৃথক কনসালটেন্ট নিয়োগের প্রস্তাবও এসেছে কারস্টেনের পক্ষ থেকে। আপাতত সেগুলোই আসল খবর। তবে এর কোনটাই চূড়ান্ত নয়।

মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল অবধী ধানমন্ডির বেক্সিমকো অফিসে বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন এবং বোর্ডের নীত নির্ধারক মহলের অন্যতম শীর্ষ কর্তা মাহবুব আনাম, জালাল ইউনুস, আকরাম খান, ইসমাইল হায়দার মল্লিক এবং সিইও নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজনের সঙ্গে গ্যারি কারস্টেনের একান্ত আলাপে এসব কথাই উঠে এসেছে।

যার কোনটাই চূড়ান্ত নয়। এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সবই প্রায় আলোচনা ও পর্যালোচনার মধ্যে আছে। এরপর কারস্টেন আবার আসবেন। তার মধ্যেই সব চূড়ান্ত করে ফেলা হবে। এরকম অবস্থায় রাতেই চলে যাচ্ছেন কারস্টেন।

পাঠকদের আগেই জানা, ভারতে আইপিএল চলাকালীন টেস্ট এবং টি টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে একান্তে কথা বলে রেখেছেন কারস্টেন।

এরপর গত দু’দিনে জাতীয় দলের আরও তিনজন সিনিয়র ক্রিকেটার মাশরাফি, মুশফিক ও তামিমসহ জাতীয় দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রায় সবার সঙ্গেই কথা হয়েছে তার। বাকি কেবল অস্থায়ী হেড কোচ কোর্টনি ওয়ালশ। তার সঙ্গেও আজ কথা হয়ে যাবে।

বিসিবি মিডিয়া কমিটি পরিচালক জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, ‘সবার সঙ্গে মোটামুটি কথা হলেও হেড কোচ ওয়ালশের সঙ্গে কথা হয়নি কারস্টেনের। সেটা আজ হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে হয়ে যাবে। ওয়ালশ আজ ঢাকা আসছেন। প্রায় কাছাকছি সময় ফিরে যাবেন গ্যারি কারস্টেন। দুজনার মধ্যে এয়ারপাের্ট লাউঞ্জে কথা বার্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুজনই জানেন, তাদের মধ্যে বিমান বন্দরেই একটা ছোট খাট অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়ে যাবে।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ক্রসফায়ারে ভীত নই : বদি

ন্যাশনাল ডেস্ক: কক্সবাজার-৪ (টেকনাফ-উখিয়া) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি, যার বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে একটি অনলাইন সংবাদপত্রকে মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ থাকলেও কেউ প্রমাণ করতে পারবে না যে, আমি ইয়াবা বা অন্য কোনো মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কিছু মিডিয়াও ইয়াবা ব্যবসা করছে। সাংবাদিকরাও ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আমি যখন মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেই, তখনই মিডিয়ারা সিন্ডিকেট করে আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এ কারণে সংসদে আমি চ্যালেঞ্জ করে বক্তব্য দিয়েছি।’

‘ইয়াবা ব্যবসা এবং মানবপাচার করে শত শত কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন আপনি’- এমন অভিযোগের বিপরীতে বদি বলেন, ‘আমার এত টাকা কোথায়? টেকনাফে এসে দেখে যান। একটি শীর্ষ দৈনিকের এমন মনগড়া রিপোর্টের কারণে দুদক আমার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। সে মামলায় আমি জেল খেটেছি।’

মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিচারাধীন কোনো বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না।’

আপনার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগ আছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও তা বলেছেন- এর জবাবে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ আপনার বিরুদ্ধেও করতে পারি। কিন্তু প্রমাণ তো লাগবে। আমার নির্বাচনী এলাকায় এসে খোঁজ নিন। মানুষ কী বলে, শুনুন।’

টেকনাফ-উখিয়া দিয়েই ইয়াবার বড় চালান আসে। এটিই আপনার নির্বাচনী এলাকা? এর জবাবে বদি বলেন, ‘বরিশাল বা গুলশানে যেসব ইয়াবার চালান ধরা পড়েছে, সেগুলো তো চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে আসা। ইয়াবা আকারে ছোট। বিভিন্ন রুট দিয়েই আসে। টেকনাফ বর্ডার অরক্ষিত। আমি কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার জন্য সংসদে বক্তব্য দিয়েছি।’

সরকারের মাদকবিরোধী চলমান অভিযানকে কীভাবে দেখছেন? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘অভিযান ভালো। যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যুব সমাজকে বাঁচানোর জন্য এই ধরনের অভিযান আরও আগে করা উচিত ছিল।’

অভিযানে তৃণমূলপর্যায়ের ব্যবসায়ীরা মরছেন। অধরা মাদকের গডফাদাররা? এ প্রসঙ্গে বদি বলেন, ‘শুরু হয়েছে মাত্র। শেষ না দেখে মন্তব্য করা ঠিক নয়। শুরু দেখেই যদি বিএনপির মতো সমালোচনা করেন, তাহলে বিতর্ক তৈরি হয়।’

অভিযান নিয়ে আপনার মধ্যে কোনো আতঙ্ক কাজ করছে কি না- ‘মাদকবিরোধী চলমান অভিযানে গ্রেফতার বা ক্রসফায়ার আতঙ্কে আমি ভীত নই। আমি কোনো অবস্থাতেই ভয় পাই না। কেন ক্রসফায়ারের ভয় থাকবে আমার মধ্যে? কেন গ্রেফতার হবো? আমি কি এসবের সঙ্গে জড়িত? ইয়াবা ব্যবসায়ীরা গুটিয়ে নিচ্ছে নিজেদের। কিন্তু পালাতে পারবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন। পালানোর কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা ইয়াবা ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা আয় করেছে। অথচ অভিযোগের তালিকায় তাদের কোনো নাম নেই। মিডিয়া যাদের নাম বলছে তাদের বিরুদ্ধেই অভিযান হচ্ছে। জামায়াত-বিএনপির ইয়াবা ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা প্রশাসনকে দিয়ে ম্যানেজ করছে’- জবাবে বলেন বদি।

আপনারা জামায়াত-বিএনপির ব্যবসায়ীদের মোকাবেলা করছেন না কেন- এর জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি অনেক আগে থেকেই তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছি। অভিযান শুরুর পর তারা এখন এলাকা ছাড়া।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest