দুরন্ত বোলিংয়ে সাকিবদের জয়

খুব বেশি বড় লক্ষ্য দেয়নি সাকিবদের দল। তারপরেও সাকিবদের হয়ে বিরতিতে কথা বলছিলেন বোলিং কোচ মুত্তিয়া মুরালিধরন। বোলারদের ওপর আস্থা রেখেছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত সেই বোলারদের দুরন্ত বোলিংয়েই ১৩ রানে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবকে হারিয়েছে সাকিবদের সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।

শুরুতে ভিন্ন কিছুর সুবাস ছড়াচ্ছিল পাঞ্জাব। ক্রিস গেইল ও লোকেশ রাহুল খেলছিলেন হাতখুলেই। দলীয় ৫৫ রানে রশিদ খান এনে দেন ব্রেক থ্রু। রাহুল ৩২ রানে বিদায় নিলে গেইলও থিতু হতে পারেননি। ব্যক্তিগত ২৩ রানে ফিরতি ক্যাচ দেন থাম্পিকে। সেই শুরু। পাঞ্জাবের হয়ে এরপর দাঁড়াতে পারেননি কেউ। ব্যাট হাতে ভূমিকা রাখার পর বল হাতেও ধারাবাহিক ছিলেন সাকিব। ফেরান অ্যারন ফিঞ্চ ও আগারওয়ালকে।

রশিদ খান ছিলেন আরও সফল। ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে নেন ৩টি উইকেট। ৩ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ২টি নেন সাকিব। বাকি দুটি নেন থাম্পি ও সন্দিপ শর্মা। সানরাইজার্সের বোলিংয়ে ১৯.২ ওভারে ১১৯ রানে অলআউট হয় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব।

আইপিএলে এখন পর্যন্ত খুব বেশি বড় ইনিংস খেলতে পারেননি সাকিব। আগে তার সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ২৭; প্রতিপক্ষ কলকাতা। বৃহস্পতিবার কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষেও চেষ্টা করেছিলেন পুরোপুরি খোলস ছাড়াতে। পারেননি শেষ পর্যন্ত। ২৮ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে ফিরে গেছেন সাজঘরে। মনীশ পান্ডের সঙ্গে তার ৫২ রানের জুটিতে শুরুতে পাঞ্জাবকে ১৩৩ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় হায়দরাবাদ।

টস হেরে ব্যাট করতে নামা সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ব্যাটিং আজকে ছিল ছন্নছাড়া। মাত্র ২৭ রানে একে একে ফিরে যান কেন উইলিয়ামসন, শিখর ধাওয়ান ও ঋদ্ধিমান সাহা। সাকিব যখন ক্রিজে নামলেন তখন চাপেই ছিল হায়দরাবাদ। সঙ্গে ছিলেন মনীশ পান্ডে।

সাকিব হয়তো ষষ্ঠ ওভারে স্রানের বলে ফিরে যেতেন তালুবন্দি হয়ে। ৫.২ ওভারে থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিয়েছিলেন। সাকিব আউট হয়ে গেছেন ভেবে হায়দরাবাদ ভক্তদের গ্যালারি হয়ে গিয়েছিল স্তব্ধ। অবশ্য পান্ডের আবেদনে স্বস্তি ফিরে আসে হায়দরাবাদ শিবিরে। রিপ্লেতে দেখা গেলো নো বল করেছিলেন স্রান! দ্বিতীয় জীবন পেয়ে এরপর ইনিংস মেরামতে নেমে পড়েন সাকিব ও স্রান।

কিছুক্ষণ ভূমিকা রেখে সাকিব ব্যক্তিগত ২৮ রানে ফিরে যান সাজঘরে। ২৯ বলের ইনিংসে ছিল ৩টি চার। মুজিব উর রহমানের বলে ডিপ মিড উইকেটে আগারওয়ালকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাকিব।

সঙ্গী পান্ডে হাফসেঞ্চুরি করেই দলকে পাইয়ে দিয়েছেন ১৩২ রানের সংগ্রহ। শেষ ওভারে পান্ডে ফিরে গেছেন ৫৪ রানের ইনিংস খেলে। ৫১ বলের ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ১টি ছয়। শেষ দিকে ইউসুফ পাঠান ২১ রানের ইনিংস খেলে পুঁজি বাড়ান।

প্রতিপক্ষের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে পাঞ্জাবের বিপক্ষে ১৩২ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় হায়দরাবাদ। পাঞ্জাবের পক্ষে ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ৫টি উইকেটই নেন অঙ্কিত রাজপুত। ম্যাচসেরাও হন তিনি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কলারোয়ায় তুচ্ছ ঘটনায় দিনমুজুরের হাতে দিনমজুর খুন

নিজস্ব প্রতিনিধি : কলারোয়ায় তুচ্ছ ঘটনায় দিনমুজুরের হাতে দিনমজুর খুন হয়েছে।
২৬ এপ্রিল বৃহষ্পতিবার বিকেলে উপজেলার খোর্দ্দবাঁটরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মেহেদী হাসান (২১) খোর্দ্দবাটরা গ্রামের ভ্যান চালক কেরামত আলীর পুত্র।
জানা যায়- বৃহষ্পতিবার সকালে মেহেদি হাসান তার প্রতিবেশী একই গ্রামের আব্দুল গফ্ফার গাজীর ছেলে জাহিদ হাসানের সাথে মাঠে ধান কাটার কাজে যায়। মাঠে কাজ কম-বেশী করা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তুমুল বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে তারা। পরে মেহেদী মাঠ থেকে বাড়িতে ফিরে আসে। সন্ধ্যার একটু আগে মেহেদী বাড়ি থেকে স্থানীয় সরসকাটি বাজারে যাওয়ার পথে শেখ পাড়ার কাছে পৌছালে জাহিদ হাসান বাঁশের লাঠি দিয়ে মেহেদীর মাথার পিছন অংশের ঘাড়ে সজোরে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলে মেহেদী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে কলারোয়া হাসপতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষনা করেন হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার আরএমও শফিকুল ইসলাম।
খবর পেয়ে কলারোয়া থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ ও সরসকাটি পুলিশ ক্যাম্পের এসআই মাজরিহা হোসাইন, জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন আল-মাসুদ দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন।
এ ঘটনায় নিহতের চাচা মাস্টার হাবিবুল ইসলাম বাদি হয়ে জাহিদ হাসান (২৫)কে আসামি করে কলারোয়া থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে- নিহত মেহেদি হাসান ঢাকার একটি গার্মেন্টেসে কাজ করতো। প্রায় ২০দিন আগে সে বাড়িতে আসে। সম্প্রতি ধানা কাটার মৌসুমে মাঠে গিয়ে কামলা (জন) হিসেবে দিনমজুরের কাজ করতো।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আশাশুনির খরিয়াটিতে কষ্ঠিপাথরের থালা উদ্ধার

আশাশুনি ব্যুরো: আশাশুনির খরিয়াটিতে কপোতাক্ষ নদের মাটি খননের সময় একটি কষ্ঠিপাথরের থালা উদ্ধার হয়েছে। তবে উদ্ধার হওয়া প্রায় ৩.৪০০ কেজি ওজনের ও অনুমান ১৩ ইঞ্চি প্রস্থের থালাটি প্রকৃত কষ্টি পাথর কিনা তা পরীক্ষা ছাড়া সঠিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ইউএনও অফিস প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানাগেছে, সোমবার সকালে উপজেলার দরগাহপুর ইউনিয়নের খরিয়াটি উত্তর পাড়ায় মৃত আমিনুদ্দিন খানের পুত্র ইউনুছ আলী সহ শ্রমিকরা কপোতাক্ষ নদের পাড়ে পুকুর খননের সময় হঠাৎ মাটির নিচে পাথরের (প্রতœতত্ত্ব সম্পদ) একটি থালা উদ্ধার হয়। তিনি এটিকে মূল্যবান কষ্ঠিপাথর ভেবে ওই গ্রামের কপোতাক্ষ কৃষি ও বনায়ন সমিতির সভাপতি আওছাফুর রহমানের কাছে হস্তান্তর করেন। ওই দিন ইউনুছ আলী ও আওছাফুর রহমান স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাফ্ফারা তাসনীনের কাছে রাষ্ট্রের এ সম্পদকে হস্তান্তর করলে, থানা হেফাজতে পাঠান। স্থানীয়রা মনে করছেন এটি কোন মন্দিরের দেব-দেবির পূজার্ঘ্য প্রদানের জন্য বা ধনী শ্রেনির অনেকে প্রাচীন আমলে ব্যবহার করতেন। নদী পথে চলার সময় অথবা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে থালাটি সেখানে পড়ে থাকতে পারে। তবে থালাটি থানা পুলিশে হস্তান্তর করায় আশাশুনি থানা পুলিশ ২৬ এপ্রিল ১০৬৯ নং জিডি এন্ট্রি করেছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আশাশুনিতে হত্যা ও ডলার পাচার মামলায় গ্রেপ্তার ৩

আশাশুনি ব্যুরো : আশাশুনিতে দুটি হত্যা ও একটি ডলার পাচার মামলায় ৩ আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। থানা সূত্রে জানাগেছে, বুধবার দিবাগত রাতে এসআই বিশ্বজিৎ অধিকারী ও প্রদীপ কুমার সানা ও এএসআই কামরুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে উপজেলার কোলা গ্রাম থেকে মুনসুর গাজীর পুত্র ০৭(০৪)১৭ নং হত্যা মামলার আসামী মুরশিদ গাজীকে, মাদারবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল খালেক সরদারের পুত্র ০৪(০৯)১৭ নং হত্যা মামলার আসামী রেজাউল করিম(৫৩)কে এবং কূল্যা ইউনিয়নের আইতোলা গ্রামের মৃত নিজামুদ্দিনের পুত্র ২৮(০৮)১৭ নং ডলার পাচার মামলার আসামী মোজাম্মেল হক (৩৩)কে গ্রেপ্তার করেন। গতকাল তাদেরকে কোর্ট হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
দেবহাটা উপজেলা পরিষদে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বভার গ্রহণ

কে.এম রেজাউল করিম, দেবহাটা ব্যুরো ॥ দেবহাটা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুব আলম খোকন উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহন করেছেন। বৃহষ্পতিবার বিকালে তিনি দেবহাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আব্দুল গনির নিকট থেকে এই দায়িত্বভার গ্রহন করেছেন। জানা গেছে, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ উপজেলা- ১ শাখা এর ১৯ এপ্রিল ২০১৮ তারিখের ৪৬.৪৬.০২৭.০০.০০.১৬৯.২০১৪.৬০৩ নং প্রজ্ঞাপন এবং উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন, ২০১১ দ্বারা সংশোধিত এর ধারা ১৩(খ)(২) উপ-ধারা ১ অনুসারে মাহবুব আলম খোকন দায়িত্বভার গ্রহন করেন। যার স্মারক নং- উপকা/দেব/সাত/২০১৮-১৩৫। উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আব্দুল গনিকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
দেবহাটা উপজেলার ৫ শ্রেষ্ঠ জয়িতার সাফল্যের কাহিনি

কে.এম রেজাউল করিম, দেবহাটা ব্যুরো: দেবহাটা উপজেলার ৫ জন শ্রেষ্ঠ জয়িতার সফলতা ও স্বাবলম্বী হওয়ার কাহিনী। সবাই এখন নিজ নিজ কর্মে আর্ত্ম সামাজিকভাবে ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী। জয়িতা অন্বেষনে বাংলাদেশ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় ব্যাপক প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে দেবহাটার ৫টি ইউনিয়ন থেকে ৫ ক্যাটাগরিতে ২৫ জন শ্রেষ্ঠ জয়িতা বাছাই করার পরে উপজেলা কমিটি দেবহাটা উপজেলার ৫ শ্রেষ্ঠ জয়িতা নারীকে বাছাই করে। ইতোমধ্যেই যারা কঠোর পরিশ্রম আর প্রচেষ্টায় নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন। বর্তমানে তারা মর্যাদার সাথে সুখে শান্তিতে পরিবারের সদস্যদের সাথে বসবাস করছেন। কঠোর পরিশ্রম আর প্রচেষ্টায় নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন ঘটানোর কথা জানিয়েছেন জীবন যুদ্ধে জয়ী উপজেলার ৫ শ্রেষ্ঠ জয়িতা নারী।
অর্থনৈতিক ভাবে সফল জয়িতা নারী সাজু পারভীন: উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের সখিপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের কন্যা সাজু পারভীন অর্থনৈতিকভাবে সফল জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন। জন্মের পূর্ব থেকে তার পিতার পরিবারে অভাবের মাত্রা বেশি হওয়ায় ৮ম শ্রেণির পর আর লেখাপড়া করার সুযোগ হয়নি। এরপর তাকে বাল্য বিবাহে আবদ্ধ করা হয়। কিন্তু বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতেও দারিদ্রতা থাকার পরেও সংসার করার জন্য কাউকে কিছু না বলে স্বামীর বাড়িতে সংগ্রাম শুরু করেন। শ্বশুর বাড়ির লোকেদের চাহিদা মত টাকা পয়সা দিতে না পারায় দিনে দিনে নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে সাজুর উপর। এরমধ্যে বছর ঘুরতে না ঘুরতে প্রথম সন্তানের জননী হন সাজু পারভীন। নির্যাতন সহ্য করে সাজু স্বামীর পরিবারে টিকে থাকায় গাত্রদাহ হতে থাকে সে পরিবারের সদস্যদের। ততোদিনে হয়ে গেছেন দ্বিতীয় সন্তানের জননী। নির্যাতনের এক পর্যায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়ে মারার পরিকল্পনা করে তারা। কিন্তু সাজুর বুদ্ধিমত্তাই বেঁচে যায় সে। অসুস্থ অবস্থায় সাজুর বাবা মা তাকে নিয়ে আসে হাসপাতালে। দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে অনেকটা সুস্থ হয় সাজু। বাপের বাড়িতে ফিরে তিনি নিজের ভরণপোষন ও বাচ্চাদের দেখা শোনার জন্য ঋন নিয়ে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। অপরদিকে তার স্বামী গোপনে ২য় বিবাহ করেন। তার সাথে সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এরপর গ্রামে গ্রামে গিয়ে কাপড় বিক্রয় করে সংসার পরিচালনা শুরু করেন। কিছু দিন যেতে না যেতে ব্যবসায় লাভ হওয়ায় একজনকে নিয়োগ করে ভ্যানে করে কাপড়ের ব্যবসা করতে থাকেন সাজু। বর্তমানে তিনি সখিপুর মোড়ে একটি কাপড়ের দোকান দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। বর্তমানে সাজুর কন্যা ৫ম শ্রেণিতে এবং পুত্র ৩য় শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। ব্যবসার পাশাপাশি আনসার ভি.ডি.পি‘র প্রশিক্ষনটিও শেষ করে ফেলেছেন। সাজুর সংসার থেকে অভাব কেটে আলোর মুখ দেখেছে। সাজু নিজের মত অন্যদের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছেন। শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী আফরোজা পারভীন: উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়নের পারুলিয়া গ্রামের তৌফিকুল ইসলামের স্ত্রী আফরোজা পারভীন উপজেলার শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন। তাকে এস.এস.সি পাশের পর পিতা লেখাপড়ার খরচ যোগাতে না পেরে এক বেকার ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেন। স্বামীর সংসারে ছিল খুব অভাব। স্বামী তার ও পরিবারের কোন দায়িত্ব নিতে রাজি ছিল না। তখন তিনি ঠিক করলেন তাকে আরো শিক্ষিত হতে হবে। তাই তো তিনি এলাকার ছেলে-মেয়েদের প্রাইভেট পড়ানোর দায়িত্ব নিলেন। সেই খরচ দিয়ে নিজে আবারো লেখাপড়া শুরু করলেন। কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে এইচ.এস.সি পাশ করে ব্র্যাকের স্বাস্থ্য সেবা প্রকল্পে চাকুরী শুরু করেন। চাকরীর বেতন ভাতা দিয়ে তিনি সংসারের অভাব দুর করে পরিবারে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন জয়িতা আফরোজা।
শ্রেষ্ঠ সফল জননী সুফিয়া ঃ- দেবহাটার রতœগর্ভা মা সুফিয়া খাতুন। তিনি উপজেলার আস্কারপুর গ্রামের রজব আলীর স্ত্রী। তিনি ছিলেন সমাজ সচেতন, শিক্ষানুরাগী এবং আত্মপ্রত্যয়ী। নিজে নিরক্ষর হয়েও শিক্ষার প্রতি ছিলেন অদ্যম অনুরাগী। কোন প্রতিকুলতা তাকে হার মানাতে পারেনি। ২ ছেলে এক মেয়ের গর্বিত জননী তিনি। স্বামী ছিলেন দিনমুজুর। ৩ সন্তান নিয়ে অভাবের সংসারে স্বামী তাকে রেখে ২য় বিবাহ করে। এতে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন। পরিবারের হাল ধরতে এলাকায় প্রাইভেট পড়ানো এবং বাড়িতে হাঁস-মুরগি পালন শুরু করেন সুফিয়া খাতুন। এই উৎস থেকে উৎপাদিত অর্থ দিয়ে ছেলে-মেয়েদের খাতা-কলম কিনে দিতেন। একই বই পর্যায়ক্রমে সবাই পড়ত। তার সন্তানেরা স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করে উচ্চ শিক্ষায় সর্বোচ্চ মেধার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছেন। বড় ছেলে শামিম হোসেন ঢাকার একটি ব্যাংকে অডিট অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। ছোট ছেলে সাতক্ষীরা সড়ক উন্নয়ন দপ্তরের সিনিয়র সার্ভেয়ার এবং মেয়ে রেহেনা আক্তার কালিগঞ্জ উপজেলার মাগুরালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত আছেন।
নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নতুন জীবন শুরু করেছেন নাসিমা ঃ- উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়নের এছাহাক আলী কন্যা নাসিমা খাতুন নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে নতুন উদ্দ্যমে জীবন শুরু করেছেন। নাসিমার পিতা ছিলেন ভূমিহীন দিনমুজুর। ৮ বছর আগে তার বিয়ে হয় এক দিনমুজুর পরিবারে। নাসিমার পিতা বর পক্ষের চাহিদা মত যৌতুক দিতে না পারায় বেড়ে যায় নির্যাতনের মাত্রা। একবছর পরে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সব নির্যাতন সহ্য করতে থাকে। এক পর্যায়ে সন্তান নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে এসে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি মিমাংশার জন্য উভয়পক্ষ কে ডাকে। স্বামী তাকে নিয়ে সংসার করতে রাজি না হয়ে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। এসময় তার পাশে দাঁড়ানোর মত কেউই ছিল না। তার মাও তখন বিধবা জীবন যাপন করছিলেন। তখন তিনি নিজের চেষ্টায় মাকে নিয়ে হাঁস-মুরগী ও গাভী পালন শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে ৫৫টি হাঁস-মুরগী ও ৫টি উন্নত জাতের গরু রয়েছে। পূর্বের তুলনায় সংসারে অনেক উন্নয়ন হয়েছে তার।
সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখা জয়িতা সুফিয়া ঃ- উপজেলার সদর ইউনিয়নের টাউনশ্রীপুর গ্রামের মৃত রিয়াজউদ্দীনের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন। সংগ্রাম করে চলছে যার জীবন। ১৯৮০ সালে বিয়ে হওয়ার পর থেকে সমাজের বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থায় জীবন নির্বাহ করে চলেছেন তিনি। ২০০০ সালে তার স্বামী মারা যায়। দারিদ্রের কারণে মেয়েকে লেখাপড়া করাতে না পারলেও ছেলেকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষে লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে স্বক্ষম হয়েছেন। সংসার পরিচালনা করতে তিনি ব্র্যাকের সহযোগিতায় টাউনশ্রীপুর পল্লী সমাজের সদস্য হিসেবে কাজ শুরু করেন। এক পর্যায়ে সমাজের নানাবিধ কুসংস্কার ও বাঁধা বিপত্তি দূরীকরণের জন্য এলাকায় নারীদের নিয়ে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। ২০১১ সালে তার সংগঠনটির নাম দেওয়া হয় টাউনশ্রীপুর বহুমূখী পল্লী সমাজ ফাউন্ডেশন। ২০১২ সালে সংগঠনটি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত হয়। বর্তমানে সেখানে ৮০জন মহিলা সদস্য রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি থেকে ২০১৬ সালে ৪টি এবং বর্তমান পর্যন্ত মোট ২৩টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছে। রয়েছে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি। এছাড়া চোরাচালান, মাদক, মানব পাচার প্রতিরোধ, জঙ্গী-সন্ত্রাসী কর্মকান্ড থেকে যুব সমাজকে সচেতনতা বৃদ্ধি সহ নানা কর্মসূচি। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসনের সাথে নিবিড়ভাবে সংযুক্ত রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গত ৯ ডিসেম্বর ২০১৭ বেগম রোকেয়া দিবসে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ এই ৫ জয়িতা নারীকে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এবং দেবহাটা উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে সম্মাননা প্রদান করে এই জয়িতাদের। তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় উপহার, ক্রেস্ট, সনদপত্র ফুল এবং খাবার। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে আসা বাকী ২০ জন জয়িতাকেও সম্মাননা প্রদান করা হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
দেবহাটায় জমিজমার বিরোধে মহিলাসহ আহত ২

দেবহাটা ব্যুরো ॥ দেবহাটার পল্লীতে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দ্বারা ১ মহিলা সহ ২ জন আহত হয়েছে। আহত ঐ মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, উপজেলা টিকেট সুবর্নাবাদ গ্রামের মৃত ভদ্রেশ^র মন্ডলের ছেলে কানাই মন্ডল ও তার অন্যান্য শরিকদারদের সাথে পাশর্^বর্তী মৃত সুধার মন্ডলের ছেলে কেশব মন্ডল, কেশব মন্ডলের ছেলে শংকর মন্ডল, হ্নদয় মন্ডলের ছেলে মৃনাল মন্ডল, মৃত অর্জুন মন্ডলের ছেলে সূর্যকান্ত মন্ডল, সূর্যকান্তের ভাই ওয়ার্ড সভাপতি হ্নদয় মন্ডল ও মৃত সন্তোষ মন্ডলের ছেলে বাজী মন্ডলের সাথে দীর্ঘ ৪ বছরের বেশী সময় তাদের বাড়ি ও ঘেরের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। বৃহষ্পতিবার দুপুরে কানাই মন্ডল, তার বোন বিভা মন্ডল, ভাই বরুন মন্ডল ও অরুন মন্ডলের স্ত্রী রীনা মন্ডল তাদের জমিতে গেলে কেশব মন্ডল গং তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বিভা, তার ভাই কানাই আহত হয়। প্রতিপক্ষের মারপিটে বিভা মারাত্মক আহত হলে তাকে সখিপুরস্থ দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কানাই মন্ডল জানান, তিনি ঘটনার পরবর্তীতে বৃহষ্পতিবারই নিজে বাদী হয়ে উল্লেখিত ব্যক্তিদের নামে দেবহাটা থানায় একটি সাধারন ডাইরী করেছেন। যার জিডি নং- ১০৯৭, তাং- ২৬-০৪-২০১৮ ইং।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কলারোয়ায় ন্যাশনাল সার্ভিসের প্রশিক্ষণ ক্লাস পরিদর্শনে এমপি লুৎফুল্লাহ

কলারোয়া ডেস্ক : কলারোয়ায় ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির প্রশিক্ষণ ক্লাস আকষ্মিক পরিদর্শন করলেন সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সাংসদ ও জনপ্রশসান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। ২৬ এপ্রিল বৃহষ্পতিবার বিকাল ৪টা ১০মিনিটে তিনি হঠাৎ কলারোয়া জিকেএমকে পাইলট হাইস্কুলের প্রশিক্ষণ ক্লাসে উপস্থিত হন।
এসময় দেখা যায় উপস্থিত প্রশিক্ষাণার্থী অত্যন্ত নগণ্য। সেখানকার ২টি প্রশিক্ষণ (ক্লাস) রুমে ৪ ভাগের ১ ভাগ প্রশিক্ষনার্থী (শিক্ষার্থী) উপস্থিত ছিলেন। ১টি রুমে রিসোর্স পার্সন (প্রশিক্ষক) ছিলেন আর অপরটিতে নাই। তবে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার সাথে তিনি পরে উপস্থিত হন।
এর পরপরই কলারোয়া মডেল হাইস্কুল ভেন্যুর প্রশিক্ষণ স্পটে যান মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি। সেখানে গিয়ে দেখা যায় স্কুলটি তথা প্রশিক্ষণ ক্লাস তালাবদ্ধ। পরে ‘ন্যাশনাল সার্ভিস’ এর কার্যক্রমকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস কক্ষে আয়োজিত মিটিং-এ যোগ দেন তিনি।
মিটিং-এ বিভিন্ন বিষয়ে দিক নির্দেশনা প্রদান করতে গিয়ে এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে জানা গেছে।
সেসময় তিনি বলেন- ‘সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়নে এবং বেকারত্ব দূর করতে সরকারি কর্মসূচি পালনে কোন উদাসীনতা সহ্য করা হবে না। দেশের শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সরকার এতো বড় ও সাহসী উদ্যোগ নিয়েছে সেটা কোন ভাবেই নস্যাৎ করা যাবে না।’
আগামিতে যেন এ ধরণের কোন কোন ঘটনা না ঘটে সেজন্য তিনি কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মনিরা পারভীনের সভাপতিত্বে ওই মিটিংএ সংশ্লিষ্ট অফিসারবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউএনও মনিরা পারভীন বলেন- ‘এই ধরণের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য সজাগ থাকা হবে এবং ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচিকে আরো গতিশীল করা হবে।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest