ফিরিঙ্গির চরের সে এবং চন্ডিপুরের তারা

মনিরুজ্জামান ছট্টু
ফিরিঙ্গির চরের সে এবং চন্ডিপুরের তারা

সে আবার সচকিত হয়। কান খাড়া করে। বাতাসের গতিমুখে নাক উঁচু করে ঘ্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করে। না, কোনো মানুষের গন্ধ নয়। সে আবার খালে নামে। সরু খাল। ফিরিঙ্গির চরের এই সরু খালে আইলার আগেও সে কত মাছ পেয়েছে। দু’চারটে পারশে, কি একটা ভেট্কি, না হয় একটা কাইন। যাহোক একটা কিছু। আজ সাতদিন ধরে তার উপোষ চলছে। অথচ ক’দিন আগেও এমন অবস্থা ছিল না। মাদার ও ফিরিঙ্গি নদীর এই মোহনার চরে ঝাঁকে ঝাঁকে মিলত হরিণ। আহা, কতদিন তার পেটে হরিণের মাংস পড়েনি। হরিণের দরকার নেই। খালে যদি দু’চারটে অন্তত কাকড়া মিলত। সে তার থাবা দিয়ে অনবরত খালের কাদা ঘাটতে থাকে। কিচ্ছু পায় না। খাল থেকে উঠে সে আবার জঙ্গলে ঢোকে। অকারণ খানিক হাঁটাহাঁটি করে। ফিরিঙ্গির চরে বাস তার দীর্ঘদিনের। কত দূরের জঙ্গলেও সে গিয়েছে কিন্তু আবার সে ফিরে এসেছে এই ফিরিঙ্গির চরে। এ চরের কেওড়া বন তাকে যেন টানে।

‘মালে’ উঠে সে ঘাড় উঁচু করে যতদূর দৃষ্টি যায় দেখার চেষ্টা করে কোনো শিকারের। দৃষ্টি সীমার মধ্যে কোনোকিছুই তার নজরে আসে না। সে অকারণ তার নখ দিয়ে কিছু মাটি আঁচড়ায় এবং গলা দিয়ে হুন্ক শব্দ করে হাঁটতে থাকে। হাঁটতে হাঁটতে সে মাদার নদীর তীরে এসে দাঁড়ায়। জঙ্গল ছেড়ে এত ফাঁকা জায়গায় সচরাচর সে আসে না। মাঝ নদীতে সে চেনা কিছু জেলে-নৌকা দেখতে পায়। তবে সে সাবধান হয়। জেলে নৌকা থেকে মানুষের উৎসুক দৃষ্টি তার ওপর পড়বার আগেই সে দ্রুত জঙ্গলে প্রবেশ করে। জঙ্গলে ঢুকে সে থামে না। হাঁটতে থাকে। ঘন কেওড়া বনে বিশেষ করে এই ফিরিঙ্গির চরের জঙ্গল এতটাই ঘন যে এখানে কখনই সূর্যের আলো প্রবেশ করে না। সে ছোট ছোট আলো ছায়ায় খানিকটা অলস ভঙ্গিতে হাঁটতে থাকে। খানিকটা পশ্চিমে ঘেঁষে সে সোজা উত্তর দিক বরাবর হাঁটতে থাকে। হঠাৎ তার মাথার উপর দুটো বানর কিচ্ কিচ্ শব্দে ডেকে ওঠে। মট করে একটা ডাল ভাঙার শব্দও তার কানে আসে। সে থমকে দাঁড়ায়। নিজেকে সংকুচিত করে ফেলে। বিপদের গন্ধ পায়। চট করে একটা হেতাল ঝোপের মধ্যে নিজেকে লুকিয়ে ফেলে। বেশ কিছুক্ষণ হেতাল ঝোপের মধ্যে বসে সে আর কোনো বিপদের আলামত বুঝতে না পেরে উঠে দাঁড়ায় এবং আবার হাঁটতে থাকে। হাঁটতে হাঁটতে সে যখন মরাদুলি চরে এসে পৌঁছায় তখন সন্ধ্যা নেমে এসেছে। সাতদিন তার উপোষ চলছে। পেটের ক্ষিদে ছড়িয়ে পড়ে সারা শরীরে। বা দিকের থাবার নীচে বেশ কিছুদিন আগে একটা হেতাল কাঁটা বিঁধেছিল, এতদিন কিছু বুঝতে পারেনি সে। এখন বেশ ব্যথা অনুভব করে। হাঁটতে যেন কষ্ট হয়। শরীরের অন্যসব কষ্ট ছাপিয়ে তীব্র হয় তার জঠর যন্ত্রণা। এখানেও কোনো খাবার মেলে না। শিকারের কোনো সম্ভাবনা সে খুঁজে পায় না। গরাণের ঝোপটা বাঁয়ে রেখে সে আবার উত্তর দিক বরাবর হাঁটতে থাকে। খোবরাখালী নদীর তীরে এসে খানিক বিশ্রাম নেয়। খোবরাখালী অনায়াসেই সাঁতরে পার হয় সে। খোবরাখালী পার হয়ে এসে চুনকুঁড়ি ও মালঞ্চ নদীর মাঝ বরাবর জঙ্গল দিয়ে সে হাঁটতে থাকে। এখানকার জঙ্গল অপেক্ষাকৃত হালকা। মাঝে মাঝে বেশ কিছু জায়গা একেবারেই ফাঁকা। এরকম একটি শুলো বিহীন ফাঁকা জায়গায় অকারণ খানিক গড়াগড়ি খায় সে। তবে সে আবার হাঁটতে থাকে। ক্ষুধার যন্ত্রণা তাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। মালঞ্চ ও কলাগাছি নদীর মোহনাও সে অনায়াসে পার হয়। হাঁটতে হাঁটতে সে কদমতলা ফরেস্ট অফিসের কাছ দিয়ে লোকালয়ের সীমানার মালঞ্চ নদী পার হয়ে মুন্সিগঞ্জ গ্রামে ঢুকে পড়ে। তখন রাত প্রায় শেষ হয়ে আসছে। শেষ রাতের ফিঁকে অন্ধকারে সে ঘেরের পথ ধরে মুন্সিগঞ্জ বাজার পার হয়। পার হয় পানখালী গ্রামও। পানখালী গ্রাম পার হয়ে সে যখন চন্ডিপুর গ্রামে পৌঁছায় তখন সকাল হয়ে গেছে। লোকালয় তার কাছে অচেনা অজানা। এখানে জঙ্গল নেই। নিজেকে লুকানোর জায়গা নেই। তবে হঠাৎ সে খাবারের গন্ধ পায়। তার দৃষ্টিসীমার মধ্যে একটা ছাগল ধরা পড়ে। কি অনায়াস শিকার। কি সহজ শিকার। অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার মুখ দিয়ে খানিক লালা গড়িয়ে পড়ে মাটিতে। ক্ষুধার যন্ত্রণা তাকে বিপদের কথা ভুলিয়ে দেয়। মানুষের গন্ধও তাকে আর সচকিত করে না। সাবধানী করে না। একটা কুঁড়েঘরকে আড়াল করে সে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছাগলটার উপর। কিন্তু ততক্ষণে গ্রামের মানুষ জেগে উঠেছে। ছাগলের চিৎকার আর মানুষের চিৎকারে পুরো গ্রাম জেগে ওঠে নিমিষেই। ছাগলটিকে সে খেতে পারে না। মুখে করে নিয়ে সে পালাতে চায়। কিন্তু পারে না। আট দিনের উপোষী ক্ষুধার্ত হয়েও সে মুখের খাবার ফেলে দিয়ে দৌঁড়াতে থাকে। কিন্তু দৌঁড়ে পালাবে কোথায় সে? এখানে হেতাল ঝোপ নেই। গোল বাগান নেই, আর চির চেনা ফিরিঙ্গির চরের কেওড়া বন নেই। সে দৌড়াতে থাকে। সে দিগি¦দিক ছোটে। দৌড়াতে দৌড়াতে সে আবার জঙ্গলে ফিরতে চায়। কিন্তু সে পথ পায় না। পুরো গ্রাম এখন জেগে উঠেছে। চারদিকে শুধু মানুষ আর মানুষ। লাঠি হাতে মানুষ, সড়কি হাতে মানুষ, বর্শা হাতে মানুষ। শয়ে শয়ে মানুষ, হাজারে হাজারে মানুষ। সে পালাবার পথ খোঁজে, পায় না।

অকস্মাৎ ভিড় থেকে কিছু সাহসী সশস্ত্র মানুষ তার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। সে তখন তার ক্ষুধার কথা ভুলে যায়। ভীত হলেও সাহসী হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে। সবকিছু ভুলে সে কেবল অনুভব করে বেঁচে থাকার তাগিদ। সে খুব দ্রুত একজনকে আঘাত করে। দুই থাবা তার ঘাড়ে তুলে আমূল বিঁধিয়ে দেয় ক্ষুরধার নলি। লোকটি চিৎকার করারও সময় পায় না। রক্তে ভেসে যায় তার সারা দেহ, অকুস্থলের মাটি। তাকে নিয়ে ব্যস্ত কিছু মানুষ। এ সুযোগটি সে হাতছাড়া করে না। মানব প্রাচীর কিছুটা শিথিল দেখেই সে দৌড়ায়। সে কেবল দৌড়ায় আর দৌড়ায়। দৌড়াতে দৌড়াতে যেখানে যেটুকু পালাবার জায়গা পায় সেখানে সে একটু জিরিয়ে নেয়। কখনও কারোর রান্নাঘরে, বসতঘরে কিম্বা গোয়ালঘরে। কিন্তু সেটি বেশিক্ষণের জন্য নয়। উন্মত্ত মানুষের স্রোত কাছে এগিয়ে এলেই আবার সে ছোটে।
দু’জন অতি উৎসাহী বন্দুকধারীও এই জন স্রোতে মিশেছে। আকাশের দিকে বন্দুকের নল উচিয়ে গুড়–ম গুড়–ম করে দুটো ফায়ার করে তাদের সরব উপস্থিতি জানান দেয়। সে কিন্তু এই ‘আগুনে লাঠিকে’ খুব ভয় পায়। এ লাঠির মুখ থেকে আগুন বের হয়। তবে বন্দুকধারীরা কিন্তু এ কম্মটি করবে না। গুলি করার মতো বোকামী তারা করবে না, গণপিটুনি এক জিনিস আর গুলি করে মেরে ফেলা আর এক জিনিস। বাদাবনের ধারে যাদের বাস তারা অন্তত এটুকু বোঝে। কেবল ভয় দেখানোর জন্যই তারা উড়ো ফায়ার করে। তবে যাকে ভয় দেখানোর এই আয়োজন সে কিন্তু সত্যি সত্যি ভয় পায়। ভয়ে সে একটা গোয়ালঘরের মধ্যে যেয়ে আশ্রয় নেয়। আট দিনের উপোষী শরীরটাকে সে আর টানতে পারে না। গোয়াল ঘরের মেঝেতে সামনের দু’পা মেলে দিয়ে বসে পড়ে হাফাতে থাকে। ইতোমধ্যে পুরো গোয়ালঘরটা হাজার হাজার সশস্ত্র মানুষ ঘিরে ফেলে। সে অবশ্য আর পালাবার চেষ্টাও করে না। তবে গোয়ালঘরের গরাণের বেড়ার ফাঁক দিয়ে যখন সে দূরের জঙ্গলের রেখা দেখতে পায় তখন তার আবার পালাবার ইচ্ছা জাগে। ঐ তো মালঞ্চ নদী। নদীটা পার হলেই জঙ্গল। তার প্রিয় বাদাবন। সে আবার ফিরে যেতে পারে তার প্রিয় ফিরিঙ্গির চরে। সেখানে না মিলুক শিকার, না মিলুক কোনো খাবার। সে জানে তার মুখের গ্রাস কারা কেড়ে নিয়েছে। বাদার হরিণ মেরে খেয়েছে তারাই, খালের মাছ ধরে নিয়ে গেছে তারাই, জঙ্গলের বৃক্ষরাজি কেটে উজাড় করেছে তারাই-যারা তাকে এখন বন্দী করে রেখেছে। সে আর পালাবার চেষ্টা করে না। চেষ্টা করে লাভও নেই। গোয়াল ঘরের চারপাশে সশস্ত্র মানব প্রাচীর তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে।
কিছু অতি উৎসাহী সাহসী যুবক উপায়ন্তর না দেখে গোয়ালঘরের চালে উঠে পড়ে।

গোলপাতার চাল ফাঁক করে একটা ফাঁস আস্তে আস্তে নামিয়ে দেয় তার মাথা লক্ষ্য করে। প্রথমবার ব্যর্থ হলেও অসহায়, ক্ষুধার্ত, ক্লান্ত, শ্রান্ত ফিরিঙ্গির চরের প্রতাপশালী সেনাপতির গলায় একসময় ঠিকই আটকে যায় ফাঁসটি। তারপর অতি দ্রুত শত শত ধারালো কুঠোরের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয় তার দেহ। গ্রামময় তখন উল্লাস ধ্বনি। পানখালী, কদমতলা আর চন্ডিপুরের হাজার হাজার মানুষ তখন নিষ্ঠুরতার আনন্দে, মৃত্যুর জান্তব উল্লাসে ফেটে পড়ে। হাজারো মানুষের সেই বিজয়ের উল্লাস আর চিৎকার মালঞ্চের তীর ঘেঁষা বাদাবনে বাঁধা পেয়ে প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসে চন্ডিপুর গ্রামে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
শুভ্র আহমেদ-এর কবিতা

অনেক দিন আগের গল্প

অনেক দিন আগের গল্প
বাতাস প্রথম ভালোবেসেছিল ফড়িংয়ের ডানা
প্রকৃত কারণ সকলের ছিল অজানা
আমি বামন তবু যখন আকাশ ধরতে যাই
পাখির রাজ্যে পাখি খুঁজতে পাখি নয় ফড়িং হারাই
নিছক গল্প, সত্য না কল্প
মহাবিশ্বে এসবের মূল্য অল্প
তাও জানি। তবু ভয় তবু বিস্ময় কথায় কথা বাড়লে
কী এমন ক্ষতি রতিযাত্রায় সে বা আমি হারলে
বামে ভয় কেনোনা বামেই হৃদয়
‘দাস ক্যাপিটাল’ নামে সেখানে আজো রোদ ওঠে ঝড়
হয়
নটে মুড়োলো গল্প ফুরোলো।

 

 

ডাকবাক্স

প্রতিটি বাদাম ভেঙে দু টুকরো করি
এক টুকরো এবং রাখি তোমার জন্য
পার্কের তাপস বেঞ্চগুলোয় প্রফুল্ল বাতাসের
সাম্যবাদ
আর জোছনার অসহ্য লুটোপুটি চাঁদ।
যৌবনের চোখ ব্যঞ্জনায় গভীর আর নরম অনেক
আমার প্রেম এরও চেয়ে বেশি রঙিন
অর্থময়;
অপেক্ষায় অনেক নিঃসঙ্গ রাত করেছি পার
তোমাকেই ভীষণ দরকার আজ রাতে আমার।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাতক্ষীরা প্রাণ সায়র খালের দু’ধারের সৌন্দর্য বর্ধন প্রকল্প উদ্বোধন

মাহফিজুল ইসলাম আককাজ : সাতক্ষীরাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী শহরের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত প্রাণ সায়ের খালের সৌন্দর্য বর্ধনে ৩০ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা ব্যয়ের একটি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও সাতক্ষীরা পৌরসভার যৌথ উদ্যোগে সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রাণ সায়ের খালের সৌন্দর্য বর্ধন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সাতক্ষীরা-০২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি।
সাতক্ষীরা প্রাণ সায়ের খালের সৌন্দর্য বর্ধন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আবুল কাশেশ মো. মহিউদ্দিন, জেলা পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তহমিনা খাতুন।
প্রাথমিকভাবে শহরের পাকাপোল থেকে সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশ^বর্তী ব্রিজ পর্যন্ত শহরের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত প্রাণ সায়র খালের দুই ধারে ৩শ’ ৯৬ মিটার এলাকা জুড়ে সৌন্দর্য বর্ধন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রকল্পটি শেষ হলে শহরের মানুষ সকাল বিকেল একটু প্রশান্তি পাবে এবং এই এলাকায় নান্দনিক পার্কের আদলে গড়ে তোলা হবে। চলতি বছর এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন পৌর কাউন্সিলর সৈয়দ মাহমুদ পাপা, কাজী ফিরোজ হাসান, শফিকুল আলম বাবু, শাহিনুর রহমান শাহিন, মহিলা কাউন্সিলর জ্যোৎন্সা আরা, ফারহা দিবা খান সাথি, অনিমা রাণী মন্ডল, পৌরসভার সচিব সাইফুল ইসলাম বিশ^াস ও সহকারি প্রকৌশলী কামরুল আকতারসহ পৌরসভার কাউন্সিলর ও পৌরসভার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পৌরসভার ০৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ শফিক উদ দৌলা-সাগর।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
শাকিবের ‘ছেঁড়া’ প্যান্ট নিয়ে তোলপাড় ফেসবুক

বাংলাদেশ ফিল্ম ক্লাব আয়োজিত বনভোজনে চিত্রনায়ক শাকিব খানের পরা একটি প্যান্ট নিয়ে তোলপাড় চলছে ফেসবুকে। ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ওই বনভোজনে একটি দলের অধিনায়ক হিসেবে শাকিব ফুটবল খেলেছেন ওই প্যান্টটি পরেই। ৪-১ গোলে জিতে যখন পুরস্কার গ্রহণ করছিলেন তখনও ওই প্যান্টটিই পরনে ছিল তার। কিন্তু প্যান্টটির স্টাইল নিয়ে রঙ্গ-তামাশায় মেতেছে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। সেটিকে ছেঁড়া প্যান্ট বলে আখ্যা দিচ্ছেন তারা। ওই অনুষ্ঠানের শাকিবের ‘ছেঁড়া’ প্যান্টের ছবিও ফেসবুকে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে। অনেকেই এটি নিয়ে লিখছেন ফেসবুকে।

হাবিবুল্লাহ শওকত নামের একজন লিখেছেন, শাকিব খানের ছেঁড়া প্যান্ট নিয়ে এক ভাইকে বলেছিলাম, শাকিবের কোন দোষ নেই। ভুল করে আপু বিশ্বাসের প্যান্ট পরে ফেলেছে।

অনেকগুলো হাসির ইমো দিয়ে আরেকজন লিখেছেন, আজকে অপু বিশ্বাস থাকলে তো এটা সেলাই করে দিতে পারতো।

বিষয়টি নিয়ে ব্যঙ্গ করে আরেকজন লিখেছেন, বল খেলতে গিয়ে, বাবা ভূয়াপুরীর মুরিদ নায়ক শাকিব খানের প্যান্ট ছিঁড়ে যাওয়ায় আমরা দুঃখিত ও লজ্জিত! প্যান্ট বিক্রেতার তিন দিনের ফাঁসি দাবি করছি।

তবে এ নিয়ে অনেকে শাকিব খানের ফ্যাশনের প্রশংসা করছেন। রাসেল নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, শাকিব খানের প্যান্ট নিয়ে এত টানাহ্যাঁচড়া কেন? এরকম প্যান্ট বলিউডের নায়করা পরলে ফ্যাশন আর শাকিব পরলে ক্ষেত?? শাহরুখের সাথে আলিয়া ভাট মাইয়া হইয়াও ছিঁড়া প্যান্ট পরলেও ক্রাশ খাইতে পারে, শাকিব খান পড়লে টোকাই হইয়া গেল… :/ #আবেগথেকেবলছি #আমারমনেরকথা #শাকিবফ্যান

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
তুষারে বিপর্যস্ত ইউরোপে মৃত অর্ধশত

ভারি তুষারপাতে বিপর্যস্ত গোটা ইউরোপ। চলমান এই তুষারপাতে মৃতের সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, চলমান ভারি তুষারপাতে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে পোল্যান্ডে। সেখানে ২১ জন মারা গেছেন। তাঁদের বেশির ভাগই ছিন্নমূল, যাঁরা মূলত রাস্তায় থাকেন।

এ ছাড়া চেক রিপাবলিকে ছয়জন, লিথুয়ানিয়ায় পাঁচজন, ফ্রান্স ও স্লোভাকিয়ায় আটজন, স্পেনে তিনজন, ইতালি, সার্বিয়া, রোমানিয়া ও স্লোভেনিয়ায় আটজন এবং ব্রিটেন ও নেদারল্যান্ডসে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

তা ছাড়া ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছেন অনেকেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্কবার্তা জানিয়েছে, এ ধরনের বিপর্যয় দরিদ্র, গৃহহীন এবং অভিবাসীদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, ‘ঠান্ডাজনিত রোগ-ব্যাধিতে বৃদ্ধ ও শিশু আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। আবার যাঁরা অনেক দিন ধরে রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত কিংবা যাঁদের শারীরিক বা মানসিক নানা সমস্যা রয়েছে, তাঁরাই এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।‘

বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইউরোপের বেশ কয়েকটি বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাতিল করা হয়েছে কয়েকশ ফ্লাইট। যাত্রীদের বিমানবন্দরে না আসার অনুরোধ জানানো হয়েছে। বন্ধ রয়েছে রাস্তা, স্কুলসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

আবহাওয়া বার্তায় জানা যায়, অন্তত শুক্রবার পর্যন্ত এই তুষারপাত অব্যাহত থাকবে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ববির বিজলী আধুনিক সময়ের নির্মাণ

সম্প্রতি সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়েছে চলচ্চিত্র ‘বিজলী’। ছবিটিকে আধুনিক সময়ের নির্মাণ বলে আখ্যা দিয়েছেন সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা। ‘বিজলী’ নায়িকা ববির প্রথম প্রযোজিত চলচ্চিত্র। ছবিটি পরিচালনা করছেন ইফতেখার চৌধুরী। ছবিতে ববির সঙ্গে অভিনয় করেছেন কলকাতার রণবীর।

সেন্সর বোর্ডের সদস্য নাসির উদ্দিন দিলু বলেন, ‘আমরা ছবিটি দেখেছি। সবার কাছেই ছবিটি ভালো লেগেছে। বিশেষ করে ছবিতে যে গ্রাফিকস অ্যানিমেশন করা হয়েছে, তা অনেক ভালো হয়েছে। সব মিলিয়ে ছবিটি আধুনিক সময়ের নির্মাণ মনে হয়েছে।’

দিলু আরো বলেন, ‘ছবির গল্পে ববিকে আমরা সুপার হিরোইন হিসেবে দেখেছি। বিশেষ ক্ষমতার একটি মানুষ, যাকে নিয়ে ছবির গল্প। অনেক দিন ধরেই আমাদের দেশে এ ধরনের গল্প নিয়ে ছবি নির্মাণ হচ্ছে না। এর আগেও এমন গল্প নিয়ে কিছু ছবি নির্মাণ হয়েছি। তখন টেকনোলজি উন্নত ছিল না, অনেকটাই আলিফ-লায়লা কোয়ালিটি ছবি ছিল সেগুলো, কিন্তু এই ছবিতে আমার সবকিছু পরিপূর্ণ মনে হয়েছে।’

ছবিতে ববি ও নবাগত নায়ক রণবীর ছাড়াও অভিনয় করছেন ইলিয়াস কাঞ্চন, আহমেদ রুবেল, শতাব্দী রায় প্রমুখ। সিনেমাটি নির্মিত হচ্ছে ববির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ববস্টার থেকে। ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন ভারতের পেলে ভট্টাচার্য।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সিরিয়ার ঘৌটায় ঢুকে পড়ছে আসাদ বাহিনী

সিরিয়ার ঘৌটায় বেশ কয়েকদিন বিমান হামলার পর এবার সেখানে ঢুকে পড়ছে আসাদ বাহিনী। তাদের সহায়তায় রয়েছে রাশিয়ান ও সিরিয়ার বিমান বাহিনীর বোমাবর্ষণ।

আসাদ বাহিনী সেখানে প্রবেশ করে বেশ গোলকধাধায় পড়ছে। কারণ সেখানে মাটির নিচে সুড়ঙ্গ ঘাঁটি তৈরি করে সেখানে অবস্থান করছে হাজার হাজার বিদ্রোহী। মাকড়সার জালের মতো ঘৌটার অলিগলিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে তাদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক।

শুধু মাটির নিচেই নয়, ট্যাঙ্ক, রকেট, আর্টিলারি থেকে শুরু করে সব ধরনের আধুনিক অস্ত্র রয়েছে বিদ্রোহীদের হাতে। দামেস্ক শহরের কাছে হারাস্তাসহ অন্যান্য শহরে এদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।

আসাদ বিরোধীদের মধ্যে বিভিন্ন গ্রুপ রয়েছে। তবে সবাই আসাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। ২০১৩ সাল থেকেই ঘৌটা বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। এটিই সর্বশেষ এলাকা, যেটি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

রাশিয়ার যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা সত্ত্বেও বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। দ্বিতীয় দিনে পড়েছে যুদ্ধবিরতি। সকাল ৯টা থেকে রাত ২টা মাত্র পাঁচ ঘণ্টার বিরতির সময় বেঁধে দিয়েছে রাশিয়া।

যুদ্ধবিরতির পরেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি এতটুকুও। বুধবারও চলেছে গোলাগুলি। এখনো ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আটকে রয়েছেন অসংখ্য মানুষ। অব্যাহত বোমা হামলায় গত ১০ দিনে অন্তত ৬০০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে।

বোমা হামলার মধ্যে আটকে পড়াদের জন্য কোনো ত্রাণ সরবরাহও সম্ভব হয়নি। ত্রাণ বোঝাই প্রায় ৪০টি ট্রাক ওই এলাকায় ঢোকার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতির অনুমোদন সত্ত্বেও হামলা বন্ধ না হওয়ায় ট্রাকগুলো ঢুকতে পারছে না।

বুধবার রাতেই পূর্ব ঘৌটার হাউয়েসে আল দাওয়াহরা শহরসহ পূর্বাঞ্চলের ভেতরে অনেকটা অগ্রসর হয়েছে আসাদের সিরিয়ান আরব আর্মির (এসএএ) সেনারা। এই এলাকা থেকে আটকে পড়া সিরীয়দের বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ দিলেও কোনো অধিবাসীই ঘৌটা ছেড়ে বের হয়নি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ডায়াবেটিস আসলে ৫টি ভিন্ন ভিন্ন রোগ!

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ আসলে ৫টি ভিন্ন ভিন্ন রোগের জোট। আর পৃথকভাবে এই প্রতিটি রোগের চিকিৎসা নিয়ে নিরাপদ থাকা সম্ভব।

রক্তে অনিয়ন্ত্রিত গ্লুকোজের মাত্রা সংশ্লিষ্ট এই রোগকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস।

কিন্তু সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডের একদল গবেষক মনে করছেন, তারা ডায়াবেটিসের আরো জটিলতর ছবিটি উন্মোচিত করতে পেরেছেন। আর এ গবেষণার মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসাপদ্ধতি নতুন যুগে প্রবেশ করবে। তবে এই পদ্ধতি ভবিষ্যতে এত দ্রুত কার্যকর হতে যাচ্ছে না।

বিশ্বজুড়ে প্রতি ১১ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। এ রোগ হলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, অন্ধত্ব, কিডনি ফেইলুওর এবং পঙ্গুত্বের ঝুঁকি বাড়ে।

টাইপ ১ ডায়াবেটিস আসলে দেহের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার একটি রোগ। এটা দেহের ইনসুলিন কারখানা বা বেটা-সেলের আক্রমণ করে। ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্যে পর্যাপ্ত ইনসুলিন হরমোন উৎপন্ন হয় না।

আর টাইপ ২ ডায়াবেটিস দেখা দেয় অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কারণে। এতে দেহের চর্বি ইনসুলিন উৎপাদনের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে।

সুইডেনের লান্ড ইউনিভার্সিটি ডায়াবেটিস সেন্টার এবং ইনস্টিটিউট ফর মলিকিউলার মেডিসিন ফিনল্যান্ড এর এই যৌথ গবেষণায় ১৪ হাজার ৭৭৫ জন রোগীর রক্তকে বিষদ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এ গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে দ্য ল্যানসেট ডায়াবেটিস অ্যান্ড এন্ডোক্রাইনোলজি-তে। ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে ৫টি ভিন্ন ভিন্ন রোগ দেখা দেয়। এর সম্পর্কে ধারণা নিন-

ক্লাস্টার ১: তীব্র মাত্রার অটোইমিউন ডায়াবেটিসই আসলে ক্লাসিক্যাল টাইপ ১ ডায়াবেটিস। এটা তরুণ বয়সে মানুষকে আক্রমণ করে। দেহে পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না।

ক্লাস্টার ২: দেহে ইনসুলিনের অভাব তীব্র আকারে দেখা দেয়। এটা অনেকটা টাইপ ১ ডায়াবেটিসের মতোই। স্বাস্থ্যকর ওজন থাকে। কিন্তু ইনসুলিন উৎপন্ন করতে পারে না দেহ।

ক্লাস্টার ৩: অনেকের ওজন বেশি হলেও তাদের দেহ ইনসুলিন উৎপন্ন করে। কিন্তু দেহ তা আর কাজে লাগাতে পারে না।

ক্লাস্টার ৪: স্থূলতার কারণে মধ্যম মাত্রার ডায়াবেটিস। সাধারণ ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হলে এমনটা দেখা দয়।

ক্লাস্টার ৫: বয়স সংশ্লিষ্ট মধ্যম মানের ডায়াবেটিস। বয়সের কারণে অনেকের মধ্যে ডায়াবেটিস সংশ্লিষ্ট লক্ষণ দেখা দেয়।

গবেষক দলের এক সদস্য প্রফেসর লেইফ গ্রুপ বলেন, ডায়াবেটিসের এই গবেষণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে চিকিৎসায় নয়া পদক্ষেপ গ্রহণ সম্ভব হবে। এখানে যে তীব্র অবস্থাগুলো দেখানো হয়েছে তার চিকিৎসাব্যবস্থা বেশ কড়া হতে পারে। আর অন্য দুই মধ্যম মাত্রার অবস্থা স্বাভাবিক চিকিৎসা পেতে পারে। ক্লাস্টার ২-তে যারা অবস্থান করছে তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে এখন মনে করা হয়।

এ গবেষণায় বলা হচ্ছে যে, এ রোগের পেছনে স্থূলতার চেয়ে অনেক বেশি কাজ করে বেটা-সেলের ত্রুটি।

এখানে ক্লাস্টারগুলো বিবেচনা করে রোগিকে আগেভাগেই বিশেষ চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে। যেমন- ক্লাস্টার ২ এর রোগীরা অন্ধত্বের ঝুঁকিতে থাকেন। আর ক্লাস্টার ৩ এর রোগীদের কিডনি রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে।

ব্রিটেনের ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ড. এমিলি বার্নস বলেন, এই গবেষণার মাধ্যমে ডায়াবেটিস বিষয়ে আরো গভীরে প্রবেশ করা সম্ভব। এতে করে রোগীর চিকিৎসাব্যবস্থা আরো সূক্ষ্ম ও ফলপ্রসূ হতে পারে।
সূত্র : বিবিসি

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest