সর্বশেষ সংবাদ-
কারিগরি শিক্ষাকে মর্যাদা প্রদান ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাকে বিএসসি সমমান মর্যাদা ঘোষনার উদ্যোগে বিদ্বেষী কার্যক্রমের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনদেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উদযাপনসাতক্ষীরায় ১২০ লিটার ভেজাল দুধ জব্দ: দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা ও ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদ-সাতক্ষীরায় ৪ টি অস্ত্র, ২৯ রাউন্ড গুলি ও তিনটি ম্যাগাজিন জব্দসাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইস চেয়ারম্যান শামস্ : কোহিনুরকালিগঞ্জ সীমান্ত থেকে ১১টি এয়ারগান,৬ হাজার ৯শ রাউন্ড গুলি জব্দসদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সোহাগের মনোনয়নপত্র বৈধসাতক্ষীরা কম্পিউটার সমিতির পূর্ণাঙ্গ কমিটির সংবর্ধনাবঙ্গমাতা সাংস্কৃতিক জোট সাতক্ষীরা জেলা শাখার নবগঠিত কমিটির পরিচিতি সভাআশাশুনি থেকে জেলি পুশরত চিংড়িসহ নারী শ্রমিক আটক

রোহিঙ্গা সংকট; চীনের বাধায় সর্বসম্মত প্রস্তাব পাস হয়নি

চীনের প্রবল বিরোধিতায় মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের অধিকার সুরক্ষায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হলো না। গতকাল মঙ্গলবার জেনেভায় কাউন্সিলের ২৭তম বিশেষ অধিবেশনে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের আনা প্রস্তাবটি ৩৩-৩ ভোটে পাস হয়েছে। মিয়ানমারের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানবিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা-সংক্রান্ত প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে পাস না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের অনুরোধে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল গতকাল ‘মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠী ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক বিশেষ অধিবেশনটি ডেকেছিল। অধিবেশনে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের বিষয়ে একটি প্রস্তাবের খসড়া দেয়। তাতে সমর্থন জানায় সৌদি আরব।

বিশেষ অধিবেশন ডাকতে হলে ৪৭ সদস্যের কাউন্সিলে ন্যূনতম ১৬টি বা এক-তৃতীয়াংশ দেশের সমর্থন প্রয়োজন হয়। কাউন্সিলের ৩৩টি সদস্যদেশ এবং ৪০টি পর্যবেক্ষক দেশ বিশেষ অধিবেশন ডাকার প্রস্তাবে সমর্থন দেয়। এর আগে ২০০৭ সালের অক্টোবরে কাউন্সিলের পঞ্চম বিশেষ অধিবেশনে মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পর একটি প্রস্তাব পাস হয়েছিল।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের গতকালের অধিবেশনটি ছয় ঘণ্টায় দুই পর্বে বিভক্ত ছিল। জোয়াকুইন আলেক্সান্ডার মাজা মার্তেল্লির সভাপতিত্বে প্রথম পর্বে জাতিসংঘের মানবাধিকার–বিষয়ক হাইকমিশনার জেইদ রাদ আল হুসেইন ছাড়াও ৪৩টি দেশের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও জেনেভায় জাতিসংঘে মিয়ানমারের স্থায়ী প্রতিনিধি তিন লিন। দ্বিতীয় পর্বে ২৯টি দেশের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ অন্তত ১২টি মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তৃতা দেন। বক্তৃতা পর্ব শেষে প্রস্তাবটি নিয়ে সংক্ষেপে সৌদি আরব ও বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা কথা বলেন। এরপর মিয়ানমারের স্থায়ী প্রতিনিধি তিন লিন প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেন, মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সবার জন্য সুরক্ষা অপরিহার্য, সেখানে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তাবটি বাজে দৃষ্টান্ত তৈরি করতে যাচ্ছে। তা ছাড়া প্রস্তাবে যা বলা হয়েছে, তা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে জেনেভায় চীনের স্থায়ী প্রতিনিধি মা ঝাওজু বলেন, দ্বিপক্ষীয় প্রক্রিয়াই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান। এ সমস্যা সমাধানে চীনের দেওয়া তিন ধাপের প্রস্তাবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও স্বাগত জানিয়েছে। দুই দেশ এ নিয়ে ২৩ নভেম্বর চুক্তি সই করায় চীন সন্তুষ্ট। এখন এটির বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রেক্ষাপটে চীন মনে করে, কাউন্সিলে প্রস্তাব সমস্যা সমাধানে সহায়ক হবে না, বরং পুরো প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। তাই চীন প্রস্তাবটি ভোটাভুটিতে দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছে। চীন বিপক্ষে ভোট দেবে।

জেনেভায় ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রাজীব চন্দর বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সহযোগিতা করে আসছে ভারত। দেশ দুটির মধ্যে ২৩ নভেম্বর যে চুক্তি হয়েছে তা যৌক্তিক উপায়ে, আস্থা ও সুপ্রতিবেশীসুলভ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখবে বলে ভারত আশা করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তাবটি সমস্যা সমাধানে সহায়ক হবে না বলে ভোটাভুটি থেকে ভারত বিরত থাকবে।

এরপর ফিলিপাইন প্রস্তাবের বিপক্ষে আর জাপান ও ইকুয়েডর ভোটাভুটি থেকে বিরত থাকার কথা জানায়।

পরে সভাপতি উপস্থিত সদস্যদের ভোটে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। ভোটের ফলাফলে তিনি জানান, প্রস্তাবের পক্ষে ৩৩টি ও বিপক্ষে ৩টি দেশ ভোট দিয়েছে। ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে ৯টি দেশ।

ভোটের ফলাফলের পর জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি শামীম আহসান অধিবেশনে বলেন, মানবিক ও মানবাধিকার সুরক্ষার এমন একটি প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হওয়ায় বাংলাদেশ অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছে। কারণ প্রস্তাবটি নৈর্ব্যক্তিকভাবে নেওয়া হয়েছে, কোনো রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়। খসড়া প্রস্তাবটি নিয়ে সদস্যদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছিল।

সকালে অধিবেশনের উদ্বোধনী পর্বে জাতিসংঘের মানবাধিকার–বিষয়ক হাইকমিশনার জেইদ রাদ আল হুসেইন বলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চরম নৃশংসতার জন্য ‘গণহত্যার’ দায়ে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিচার হতে পারে।

রাখাইন থেকে প্রাণ বাঁচাতে ২৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত ৬ লাখ ২৬ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। গত ২৬ নভেম্বর থেকে ১ হাজার ৬২২ জন রোহিঙ্গার বাংলাদেশে আসার প্রসঙ্গ টেনে জেইদ রাদ আল হুসেইন বলেন, রোহিঙ্গাদের রাখাইনে প্রত্যাবাসনে চুক্তি সইয়ের পরও মিয়ানমারের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়টির লোকজনের বাংলাদেশে আসা থামেনি।

রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন–পীড়নের ওপর প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে জেইদ রাদ আল হুসেইন বলেন, ‘এতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুর অত্যাচারের বর্ণনা দেওয়া আছে। লোকজনকে জোর করে তাদের বাড়ির মধ্যে আটকে রেখে আগুনে পুড়িয়ে মারা, নির্বিচারে হত্যা, পালাতে থাকা নিরস্ত্র লোকজনের ওপর গুলি, নারী ও মেয়ে শিশুদের গণহারে ধর্ষণ এবং বাড়ি, স্কুল, বাজার ও মসজিদ পুড়িয়ে দেওয়া বা ধ্বংস করার কথা এতে রয়েছে। গণহত্যা প্রমাণের জন্য এখানে সম্ভাব্য যেসব উপাদানের কথা উল্লেখ আছে, তা কি আপনারা কেউ উড়িয়ে দিতে পারবেন?’

জেইদ রাদ আল হুসেইন বলেন, রাখাইনে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়মিতভাবে নজরদারি এবং শরণার্থীদের নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাসের পরিবেশ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত তাদের কাউকে দেশে ফেরত পাঠানো উচিত হবে না, এটা দ্ব্যর্থহীনভাবে স্পষ্ট হতে হবে।

তিনি রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংসতাকে বিবেচনায় নিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাতে একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের সুপারিশের অনুরোধ বিবেচনা করার অনুরোধ জানান। প্রস্তাবিত তদন্ত কমিশন জাতিসংঘের বর্তমান সত্যানুসন্ধানী মিশনের সম্পূরক ভূমিকা রাখবে।

জাতিসংঘের নিরপেক্ষ সত্যানুসন্ধানী মিশনের প্রধান মারজুকি দারুসমান মালয়েশিয়া থেকে ভিডিওবার্তায় বলেন, ‘নির্যাতনের প্রমাণ খুঁজতে আমাদের তদন্ত অব্যাহত থাকবে।’

সংঘাতে যৌন সহিংসতার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি প্রমিলা প্যাটেন বলেন, ‘শুধু জাতিসত্তা ও ধর্মের কারণে ঠান্ডা মাথায় একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কীভাবে যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছে, বাংলাদেশ সফরের সময় তার ভয়াবহ বর্ণনা আমাকে শুনতে হয়েছে।’

শাহরিয়ার আলম বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমন্বিতভাবে সমাধানের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিটি সই করা হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান এবং কফি আনান কমিশনের সুপারিশের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান তিনি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
এবার বিশ্ব স্বীকৃতি পাচ্ছে বাংলাদেশের শীতলপাটি

নিজের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, বালা খবর ফাইয়ার। নায়নি? অবশ্য পরক্ষণেই তিনি জানান, একসময় তার গ্রামের প্রায় সব বাড়িতে শীতলপাটি বুনার কাজ হতো। এখন ১২০টি ঘরে অল্পস্বল্প চালু আছে। দুঃখ করে তিনি বলেন, ‘খাম খরি। ফয়সা আয় না। বুজছইননি? কিলা বাঁচতায় তে?

এবার বিশ্বস্বীকৃতি লাভ করছে বাংলাদেশের শীতল পাটি। সিলেট অঞ্চলের ঐতিহ্যগত পাটিকে ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে ইউনেস্কো। জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা আজ বুধবার সকালে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারে। এর আগে গত বছর এই স্বীকৃতি লাভ করে মঙ্গল শোভাযাত্রা।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে আছে ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজের অসংখ্য উপাদান। সংশ্লিষ্ট দেশের আবেদনের প্রেক্ষিতে এসব উপাদান যাচাই-বাছাই ও সুনির্দিষ্ট করে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে তুলে ধরার কাজ করে ইউনেস্কো। আন্তর্জাতিক সংস্থাটির স্বীকৃতি লাভের মধ্য দিয়ে দেশ ওই উপাদানের আঁতুড়ঘর হিসেবে বিশ্ব দরবারে সুপ্রতিষ্ঠি হয়, মর্যাদা লাভ করে। এ সংক্রান্ত সনদে স্বাক্ষর করা সব দেশ প্রতি বছর নিজেদের যে কোন একটি উপাদানের স্বীকৃতি চেয়ে ইউনেস্কোতে আবেদন করতে পারে। এ বছর ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটির স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন করে বাংলাদেশ।

স্বীকৃতিদানের মূল কাজটি করে ইন্টারগবর্নমেন্টাল কমিটি ফর দ্য সেফগার্ডিং অব দ্য ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ। কমিটির দ্বাদশ সম্মেলন এখন চলছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। ১২ সপ্তাহব্যাপী সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে যোগ দিয়েছে ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দল। জাতীয় জাদুঘরের সচিব শওকত নবীর নেতৃত্বে দলে আরও আছেন জাদুঘরের কীপার ড. শিখা নূর মুন্সী, ডেপুটি কীপার আসমা ফেরদৌসী। প্র্যাকটিশনার হিসেবে সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন সিলেটের দুজন প্রসিদ্ধ পাটি শিল্পী শ্রী গীতেশ চন্দ্র দাশ ও শ্রী হরেন্দ্র কুমার দাশ। তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরীর। তিনি জানান, বুধবার আলোচনার টেবিলে ওঠে শীতল পাটি। স্বীকৃতিদানের পক্ষে যুক্তিগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়। কিন্তু ওই দিনের অধিবেশনের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় চূড়ান্ত ঘোষণাটি আসেনি। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে আনন্দের খবরটি পাওয়া যেতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। একই দিন ইমেইলে জাদুঘরের কীপার ড. শিখা নূর মুন্সী জানান, নমিনেশন ফাইলে করা প্রাথমিক আবেদনের যৌক্তিকতা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করে ইউনেস্কোর বিশেষজ্ঞ কমিটি। ছয় দেশের ছয়জন প্রখ্যাত আইসিএইচ বিশেষজ্ঞ দ্বারা গঠিত হয় সাবসিডিয়ারি বডি। বডি এক বছর ধরে বিভিন্ন দেশের মনোনয়ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাদের অভিমত জানায়। ২৪ সদস্যবিশিষ্ট মূল কমিটির বিবেচনার জন্য প্রেরণ করে। ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ ক্যাটাগরির সবকটিতেই শতভাগ নম্বর পেয়েছে শীতলপাটি। এর পর থেকে এটি প্রাথমিক তালিকায় ছিল।

সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরও বিষয়টি সবসময় তদারকি করেন। শীতল পাটির বিশ্ব স্বীকৃতি প্রসঙ্গে জনকণ্ঠকে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সমৃদ্ধ সংস্কৃতির দেশ। গর্ব করার মতো অনেক কিছু আছে আমাদের। বিশ্বদরবারে সেগুলোর কথা তুলে ধরার চেষ্টা করছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে শীতল পাটির স্বীকৃতি চাওয়া হয়। উপাদানটি ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য। তবে ইউনেস্কোর নিয়ম ও শর্তগুলো বুঝে, যথাযথভাবে অনুসরণ করে ফাইল তৈরি করতে হয়। আমরা সেসব বিষয়ে সজাগ ছিলাম। সিরিয়াসলি কাজ করেছি। ফলে আমাদের বক্তব্য ইউনেস্কোর কাছে বোধগম্য হবে বলেই আশা। তিনি বলেন, দেশ অর্থনৈতিকভাবে যেমন এগিয়ে যাচ্ছে, তেমনি এগিয়ে যাচ্ছে সাংস্কৃতিকভাবে। আরও অনেক অর্জনের জন্য সরকার কাজ করছে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, মানবজাতির উল্লেখযোগ্য মনোগত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনে ২০০৩ সালে ইউনেস্কো একটি সমঝোতা চুক্তি অনুমোদন করে। এই সমঝোতা চুক্তির অধীনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মনোগত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০১৬ সাল পর্যন্ত ১৭১টি রাষ্ট্র এই সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। ২০০৯ সালের ১১ জুন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। ২০১২ সাল থেকে সরকারের পক্ষে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় মানবজাতির মনোগত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্বমূলক তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য উপাদান পাঠানো শুরু করে। ইউনেস্কোর প্রথম স্বীকৃতি লাভ করে বাংলাদেশের বাউল সঙ্গীত। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জামদানি বুননশিল্প লাভ করে এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। গত বছর মঙ্গল শোভাযাত্রা একই স্বীকৃতি লাভ করে।

জানা যায়, ইউনেস্কোর স্বীকৃতি লাভের জন্য উপাদানের পক্ষে নির্ভুল নমিনেশন ফাইল প্রস্তুত করা খুব জরুরি। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় জাতীয় জাদুঘরকে ফাইলটি তৈরির দায়িত্ব দেয়। এর জন্য প্রায় এক বছর গবেষণা, আলোকাচিত্র ও ভিডিও চিত্র নির্মাণসহ বেশকিছু কাজ করে জাদুঘর। আনন্দের খবরটি সামনে রেখে তাই জাতীয় জাদুঘর আয়োজন করেছে শীতল পাটি প্রদর্শনীর। নলিনীকান্ত ভট্টশালী মিলনায়তনে সন্ধ্যায় বিশেষ এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্পী চন্দ্রশেখর সাহা। জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি শিল্পী হাশেম খানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। প্রায় ৭০টির মতো শীতল পাটি নিয়ে সাজানো হয়েছে গ্যালারি। যে গাছ থেকে সিলেটের শীতলপাটি তৈরি হয় সেই মুর্তা গাছ এবং পাটি তৈরির নানা উপকরণ প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সিলেট থেকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আনা হয়েছে প্রকৃত শিল্পীদের। তারা চোখের সামনেই পাটি বুনার কাজ করছেন। মৌলভী বাজারের রাজনগরের শিল্পী আরতি রানী ইউনেস্কো বুঝেন না। বুঝেন ‘বিদেশ।’ সেই বিদেশ থেকে তাদের কাজের প্রশংসা করা হচ্ছে জেনে খুব কৌতূহলী হয়ে ওঠেন তিনি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
১৪টি বাড়ির মালিক কন্সটেবল থেকে ইন্সপেক্টর হওয়া এই পুলিশ!

অনলাইন ডেস্ক : পদ পরিদর্শকের, কিন্তু তিনি লেখেন ‘ওসি সোহরাব’! ভুয়া স্থায়ী ঠিকানা দিয়ে পুলিশে তাঁর চাকরি শুরু—কিন্তু সত্যাটি আর উদ্ঘাটিত হয়নি। কোনো ‘আলাদিনের চেরাগ’ হাতে নেই অথচ তাঁর অন্তত চৌদ্দটি বাড়ি, বেশ কয়েকটি মার্কেট।
আর এসব স্থাপনায় তিনি অনায়াসে পদবি লিখছেন ‘ওসি’। সরেজমিনে দেখা যায়, মেয়ের জামাতাকে ওসি ও ছেলেকে এসআই দেখিয়ে বিভিন্ন বাড়ি বা মার্কেটের সামনে সোহরাব রীতিমতো ব্যানার ঝুলিয়ে দিয়েছেন। বাড়ি, মার্কেট, প্লটসহ প্রায় ৩০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি।

মো. সোহরাব মিয়া টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত)। তবে গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে গিয়ে সরেজমিনে অনেক ‘ওসি মার্কেট’ বা ‘ওসি ভিলা’ শুধু নয়, পাওয়া গেছে ‘ওসি রোড’ও। সোহরাব নিজের নামে করেছেন সড়কটি। এ ছাড়া রয়েছে জয়দেবপুর চৌরাস্তার পাশে দুটি বাড়ি, রাজধানীর উত্তরায় ছয় কাঠার একটি প্লট। তবে সোহরাব বলেন, তিনি কোনো ‘দুই নম্বরি’ করেননি। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তরফপুর গ্রামের প্রয়াত হাজি আব্দুল হালিম মিয়ার ছেলে মো. সোহরাব মিয়া।
গ্রামে ভিটেমাটি আর কিছু ফসলি জমি ছাড়া খুব বেশি সম্পদ ছিল না পরিবারের। সোহরাবের ছোট ভাই মো. ফজলুর রহমান বলেন, তাঁর ভাই আশির দশকে নিজ জেলার ঠিকানা গোপন করে ঢাকার ধামরাই উপজেলার মঙ্গলবাড়ী গ্রামের ঠিকানা ব্যবহার করে কোটা সুবিধায় কনস্টেবল পদে চাকরি নিয়েছেন। ফজলুর রহমান বলেন, ‘মঙ্গল গ্রামের ঠিকানায় ছয়জন চাকরি নিয়েছিলেন। এর মধ্যে চারজনই চাকরি ছেড়ে বিদেশে আছেন। আর আমার ভাই সোহরাব এবং গ্রামের আরেকজন এখনো পুলিশে আছে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করেই। ’
সোহরাবের নিজেকে ওসি দাবির ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে গোপালপুর থানার ওসি হাসান আল মামুন বলেন, ‘থানায় একজনই ওসি—সেটা আমি। আর সোহরাব হোসেন হচ্ছেন পরিদর্শক (তদন্ত)। এখন ওসি না হয়ে যদি ওসির পরিচয় দিয়ে থাকে, আমি কী বলব?’ সোহরাবের স্থায়ী ঠিকানা সরকারি নথিতে কী জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘সেটা আমার জানা নেই, পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারাই ভালো বলতে পারবেন। ’ চাকরির মেয়াদ প্রসঙ্গে ওসি বলেন, সোহরাব আর এক বছর পর্যন্ত পুলিশ বিভাগে আছেন। এরপর তিনি অবসরে চলে যাবেন।
সোহরাব হোসেনের ছেলে ঢাকায় গোয়েন্দা পুলিশের একজন সাব ইন্সপেক্টর পদে কর্মরত বলে জানা যায়। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার জন্মের আগেই বাবা চাকরি নিয়েছিলেন। ঢাকার ধামরাইয়ে হয়তো কোনো কারণে ভাড়া ছিলেন; এ কারণেই সেখানের ঠিকানা ব্যবহার করে চাকরি নিয়েছিলেন। ’ সোহরাব হোসেনের মেয়ের জামাই আলমগীর আশরাফ টাঙ্গাইলের কালিহাতী থানার মোগড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক (তদন্ত)। তবে তিনি বলেন, তাঁর নাম কেন শ্বশুরের সম্পত্তির ব্যানারে এর উত্তর তাঁর জানা নেই। ইন্সপেক্টর আশরাফ বলেন, ‘ওখানে আমার এক ছটাক জমিও নেই। ’ জানা যায়, গাজীপুরের কোনাবাড়ী হাউজিং সোসাইটিতে মো. আইয়ুব আলীর ফ্ল্যাটে থাকে সোহরাব হোসেনের পরিবার এবং প্রতি সপ্তাহেই সোহরাব কোনাবাড়ী আসেন সম্পদ দেখভাল করতে।

‘ওসি’ সাম্রাজ্য : গাজীপুর-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশেই কোনাবাড়ী বাজার। সেই বাজারেই সাড়ে ১০ শতাংশ জমির ওপর স্বঘোষিত ‘ওসি মার্কেট’। স্থানীয় মতিউর রহমানের কাছ থেকে জমিটি কিনে সেখানে মার্কেট বানিয়ে ২০টির বেশি দোকান করেছেন সোহরাব। মার্কেটের ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, ‘ওসি সাহেব মার্কেটের মালিক, প্রতি মাসেই তিনি ভাড়া নিয়ে যান। ’ এলাকাবাসীর হিসাবে মার্কেটের এক শতাংশ জমির মূল্য রয়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা। জমির বর্তমান মূল্য তিন কোটি টাকার বেশি। কোনাবাড়ীর আমবাগ পশ্চিমপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, একটি বাড়ির সামনে বিশাল ব্যানার ‘ওসি বাড়ি। দোকান ও বাড়িভাড়া দেওয়া হবে। ’ পাশেই আরেক ব্যানারে তাঁর মেয়ের জামাতা ওসি (তদন্ত) আলমগীর আশরাফ, ছেলে এসআই মামুন পদবি এবং মোবাইল নম্বরসহ বিশাল ব্যানার।

স্থানীয় বাসিন্দা আলিনুর মিয়া বলেন, ‘এইড্যা ওসি সাহেবের বাড়ি, রবি মুচির বাড়ি তিনি কিনে নিয়েছেন। এই পরিবার অনেক ক্ষমতাশালী। ’ বাড়ির পাশের দোকানদার মো. হোসেন আলী বলেন, ‘এখানে ভাড়াটিয়ারা থাকে, ওসি সাহেব মাঝে মাঝে আসেন। ’ আমবাগ ঢালাই ফ্যাক্টরির পাশেই আরেকটি ‘ওসি মার্কেট’ এবং বিশাল টিনশেড বাড়ি। আমবাগ উত্তরপাড়া এলাকায় মুদি দোকানি হারুন মিয়ার দোকান থেকে একটু সামনে যেতেই চোখে পড়ে ঢালাই করা সিমেন্টের খুঁটিতে লেখা ‘ওসি রোড’। সড়ক দিয়ে ভেতরে যেতেই মেহগনি গাছের বাগান। তার পাশে বড় টিনশেড বাড়ি। এখানেও সামনে লেখা ‘ওসি ভিলা’। বারান্দায় বসে থাকা নার্গিস বেগম নিজেকে ভাড়াটিয়া পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘মালিক ওসি সাহেব এখানে থাকেন না। ’ স্থানীয় বাসিন্দারা বলে, এখানে ২৯ শতাংশ জমির মূল্য কোটি টাকার বেশি হবে। মুদি দোকানি হারুন মিয়া বলেন, ‘ওসি সাহেব জমি কিনেছেন আমাদের কাছ থেকে, অর্ধেক জমিতে বাড়ি করেছেন আর অর্ধেক এখন গাছের বাগান আছে। ’ স্থানীয় বাসিন্দারা আরো একটি অভিযোগ করে, এলাকার বেশির ভাগ গ্যাসের লাইন অবৈধভাবে নেওয়া এবং ‘ওসি’র বাড়ির লাইনটিও বৈধ না। সেখান থেকে কোয়ার্টার কিলোমিটার দূরে আমবাগ মধ্যপাড়ার নবাবদীঘি নাদের আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের গেটের সামনে পাওয়া যায় আরেকটি ‘ওসি মার্কেট’ এবং পাশে আরেকটি টিনশেড বাড়িও আছে। সামনে টাইলসের ওপর লেখা ‘ওসি বাড়ি রোড’। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছে, সড়কটি নজরদীঘি সড়ক হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু সোহরাব ‘ওসি রোড’ নামকরণ করেছেন ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে। এখানকার বাড়ি এবং মার্কেটের জমির মূল্য প্রায় চার কোটি টাকা বলে এলাকাবাসীর হিসাব। এ ছাড়া কোনাবাড়ীর নামাপাড়ায় দেওয়ান মার্কেটের পেছনে প্রায় দেড় কোটি টাকার ৭ শতাংশ জমি থাকার কথা জানা যায়। আমবাগ এলাকার সামাদ সুপার মার্কেটের পশ্চিম পাশে মৃত খালেক মিয়ার কাছ থেকে প্রায় ২০ শতাংশ জমি কিনে টিনশেড রুম করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ওসির এই বাড়িটিতেও অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে চালানো হচ্ছে। আর বাাড়ির বর্তমান মূল্য প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা।

বিভিন্ন সূত্রমতে, গাজীপুরের জয়দেবপুর চৌরাস্তার কাছে চান্দনা উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর পাশে রয়েছে তাঁর ‘দারোগা বাড়ি’। ৮ শতাংশ জমির ওপর বাড়িটির দাম হবে প্রায় দুই কোটি টাকা। ময়মনসিংহ মহাসড়কের বর্ষা সিনেমা হলের পাশেও ৫ শতাংশ জমি রয়েছে। এ ছাড়া উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরে রয়েছে পাঁচ কাঠার একটি দুই কোটি টাকা মূল্যের প্লট। আর টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে জয়কালীবাড়ি রোড কৃষি ব্যাংকের পাশে রয়েছে তাঁর বিশাল একটি মার্কেট—যার মূল্য হবে দুই কোটি টাকা প্রায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে সোহরাব অনেক জায়গায় ওসি হিসেবেই পরিচয় দিয়ে থাকেন। শুধু তাই নয়, গাজীপুরে একাধিক বাড়ি এবং জমির মালিক বনে গেছেন তিনি। কিন্তু তাঁর চাকরি মেয়াদ শেষ পর্যায়ে বলে কেউ সে বিষয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না। ’ নিজের এলাকা টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দিয়েছেন মসজিদ ও মাদরাসা। নাম : সোহরাবিয়া হাফেজিয়া মাদরাসা; যদিও তাঁর ভাইয়ের দাবি—সোহরাব এখানেও প্রতারণা করেছেন।

সোহরাব যা যা বললেন : পুলিশ প্রবিধানের ১১২ ধারার (গ) এর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো পুলিশ কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশের (আইজিপি) কিংবা পুলিশ সদর দপ্তরের অনুমতি ছাড়া তাঁর নিজ জেলা ছাড়া কোথাও নিজের বা স্বজনের নামে জমি কিনে বাড়ি করতে পারবে না। অনুমতি নিয়ে সম্পত্তি কিনেছেন কি না জানতে চাইলে সোহরাব মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আপনার সঙ্গে আমি সরাসরি কথা বলতে চাই। সামনা-সামনি বসে চা খাব এবং কথা বলব। ’ নিজ জেলা টাঙ্গাইলের ঠিকানা গোপন করে চাকরি নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলেও তিনি বলেন, ‘ভাইরে আমি আপনার সঙ্গে দেখা করতে চাই। দেখা হলে সবকিছু পরিষ্কার হবে। ’ ওসি পদবি ব্যবহার করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি ওসি তদন্ত হিসেবেই লেখি, গোপালপুর থানায় ওসি তদন্ত হিসেবে আছি। অফিশিয়ালি লিখতে পারেন কি না? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি লিখে থাকি, এটা লিখলে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে? নিজেকে টাঙ্গাইল জেলার সবচেয়ে প্রবীণ পুলিশ কর্মকর্তা দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমি এই জেলায় কিছু কর্মকর্তা বাদে সকলের সিনিয়র ইন্সপেক্টরও। র‍্যাংকেও আমি সিনিয়র। সিনিয়র হিসেবেও দায়িত্ব দিলে ওসি পদ পেতাম। কিন্তু ভিসা টিকিট নইলে কেউ পদোন্নতি পায় না। ’ ভিসা টিকিট কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখেন, এটার অর্থ কী। মেয়ের জামাতা এবং ছেলের নাম পদবি প্রতিটি বাড়ির সামনে ব্যানারে লেখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাদের নাম লিখেছি তাতে দোষের কী?

এত এত বাড়ি ও মার্কেট করার টাকার উৎস প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সোহরাব হোসেন বলেন, ‘আমি কোনো দুই নাম্বারি করি নাই। কেউ প্রমাণ দেখাতে পারলে এই মুহূর্তে চাকরি ছেড়ে দেব। এক জায়গা থেকে অ্যাডভান্স নিয়ে আরেক জায়গায় জমি কিনেছি, আবার আরেক জায়গা থেকে অ্যাডভান্স নিয়ে অন্য জায়গায় জমি কিনেছি। ’ কোথা থেকে অ্যাডভান্স নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ভাই ফোনে কিছু বলতে চাই না। আপনার সঙ্গে একটু দেখা করতে চাই। সব ডকুমেন্ট দেখাব। ’ এত জমির মালিক হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এক হাজার আর দুই হাজার টাকায় প্রতি শতাংশ জমি কিনে কি গুনাহগার কেউ হয়? সেই কম দামের জমি এখন অনেক বেশি দাম হয়েছে। এটা তো তেমন কিছুই নয়। দেখেন, পুলিশ সাংবাদিক ম্যাজিস্ট্রেট ডাক্তার—আমরা তো একই প্লাটফর্মের লোক, সাক্ষাতের পর যদি আমি বুঝাইতে সক্ষম না হই তখন বইলেন। আপনি সদয় হইলে সব কিছুই হবে। ’ পদোন্নতি পেয়েছেন কবে? একাধিকবার জানতে চাইলেও তিনি বলতে চাননি।

টাঙ্গাইল জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল- গোপালপুর) মো. আহাদউজ্জামান মিয়া বলেন, ‘সোহরাব হোসেন গোপালপুর থানার ওসি নন, তিনি পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ওসি না হয়েও ওসি হিসেবে পরিচয় দেওয়া উনার ঠিক হচ্ছে না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।

এদিকে ছোট ভাই মো. ফজলুর রহমানের সঙ্গেও জালিয়াতি করেছেন সোহরাব হোসেন। ছোট ভাইয়ের কেনা ৯ শতাংশ জমি জোর করে দখলে নিয়ে সেখানে সোহরাব হোসেনের নিজ নামেই বানিয়েছেন মসজিদ ও মাদরাসা। ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমার কেনা জমিতে ভাই মসজিদ ও মাদরাসা বানাল। কিন্তু আমাকে কোনো টাকা পয়সা দেয়নি। টাকা চাইলেই দেব-দিচ্ছি করে। ’

অভিযোগ প্রসঙ্গে সোহরাব হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভাইয়ের জমি আমি দখলে নেইনি। আমার পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে ঝামেলা আছে। আর ভাই হয়তো রাগ করে বলেছে। সেটা আমি মিটিয়ে ফেলব। নিজের গ্রামের ঠিকানা গোপন করে মঙ্গল গ্রামের ঠিকানা ব্যবহার করে চাকরি নেওয়া প্রসঙ্গে সোহরাব বলেন, ‘ভাই, আমি আপনার সঙ্গে শুক্রবার দেখা করব, চা-ও খাব। ওই সময় সব কিছু দেখাব। ’

অবৈধ গ্যাস সংযোগ নেওয়া প্রসঙ্গে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘তাঁর বাড়ির গ্যাসের অবৈধ সংযোগ নেওয়ার সময় আমি বাধা দিয়েছিলাম। সিটি করপোরেশনের রাস্তা কেটে লাইন নেওয়ার সময় কাজ বন্ধ করে দিই। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তিনি লাইনটি নিয়েছেন এবং এটা দৃশ্যমান। এলাকার সবাই বিষয়টি জানে। ’

ওসি সোহরাব হোসেনের সঙ্গেই কনস্টেবল হিসেবে চাকরি করেছেন এমন একজন পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত এএসআই বলেন, ‘সোহরাব জয়দেবপুর, কালিয়াকৈর ও রাজধানী ঢাকার আশপাশের থানাগুলোতে সাব-ইন্সপেক্টর পদে চাকরি করতেন। এর আগে তিনি পুলিশ কনস্টেবল পদ দিয়ে পুলিশের চাকরি জীবন শুরু করেন। তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘সারা জীবনে পারলাম না একটি বাড়ির মালিক হতে, আর সে ১৪টি বাড়ি আর মার্কেটের মালিক হয়ে গেছে। ছেলেকেও পুলিশের এসআই পদে চাকরি দিয়েছে। তার টাকার উৎস কি তা দুদক অনুসন্ধান করলেই পেয়ে যাবে। ওসির ১৪টি বাড়ি এবং মার্কেট থাকলেও এখনো থাকে ভাড়া বাড়িতে।’

সূত্র : কালের কণ্ঠ

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আশাশুনিতে মেয়াদ উত্তীর্ণ ও নিম্নমানের ধান বীজ বিক্রয়ের অভিযোগ

আশাশুনি ব্যুরো : আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন বাজারে মেয়াদ উত্তীর্ণ ও নিম্নমানের ধানের বীজ বিক্রয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বীজ কিনে একাধিক কৃষক ভিজানোর পর কোলা না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন।
উপজেলার কাদাকাটি ও বুধহাটা বাজারে ডিলার ও বীজ বিক্রেতারা ব্র্যাক ও বিএডিসির পলি প্যাকে প্যাকেটজাতকৃত ধানের বীজ বিক্রয় করছেন। হাই ব্রিড ও এসএল-৮ এইচ, সুপার হাইব্রিড জাতের এক কেজি করে প্যাকেটের ধান বীজ এখন এলাকার সকল ডিলার ও সার-কীটনাশক বিক্রেতাদের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। এসব দোকানে বিএডিসি সরবরাহকৃত প্যাকেটে উৎপাদন ও মেয়াদ উর্ত্তীর্ণের তারিখ দেখা যায় এক বছর আগে শেষ হয়েগেছে। এই তারিখের উপর কাগজের নতুন করে ছাপানো স্টিকার লাগিয়ে পুরনো প্যাকেটের ধানবীজ বিক্রয় করা হচ্ছে। এই মেয়াদোত্তীর্ণ বীজ ধান ক্রয় করে ধান ভিজিয়ে কোলা না হওয়ায় চাষীদের মাথায় হাত উঠে গেছে। কাদাকাটি গ্রামের কৃষক মৃত কেশব মন্ডলের পুত্র শিবপদ, পুলিন মন্ডলের পুত্র শংকর, তারক মন্ডলের পুত্র হরেকৃষ্ণ, খগেন্দ্র রায়ের পুত্র গাংগুলি, আরার গ্রামের মৃত ছবেদ মোড়লের পুত্র আয়ুবসহ এলাকার বহু চাষী জানান, তারা বিএডিসির উক্ত মেয়াদ উত্তীর্ণ বীজ ধান ক্রয় করে ভিজিয়ে কোলা তৈরি করতে পারেননি। আবার কেউ কেউ বীজ তলায় ধান ফেলেও ধান গজায়নি। ফলে তাদের হাজার হাজার টাকার ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি সময় নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন। এব্যাপারে ডিলার বিভাস দেবনাথ জানান, তিনি মেয়াদ উত্তীর্ণ ঐ প্যাকেট দুটি রেখে দিয়েছেন এবং ক্রেতাদের দেখাচ্ছেন যেন তারা ঐ বীজধান ক্রয় না করেন। কিন্তু বাজারে কমমূল্যে ঐ ধানবীজ সহ আরো কিছু কমমূল্যের বীজ ধান বিক্রয় করা হচ্ছে। ফলে চাষীরা ঠকছে। এব্যাপারে সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান জানান, বিএডিসি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং তাদের সরবরাহকৃত বীজ সকল প্রকার পরীক্ষা নীরিক্ষার পর বাজারজাত করা হয়। সেখানে মেয়াদোত্তীর্ণ বীজ সরবরাহ করার সুযোগ নেই। কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্টিকার লাগানো ধানবীজের প্যাকেট সংগ্রহ করেছি, পরীক্ষা নীরিক্ষার পর বলতে পারবো কৃষকদের ত্রুটি না বীজের ত্রুটি। বিএডিসি ডিডি লিয়াকত আলি ও এডি আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা বললে তারা জানান, তাদের গত বছরে অব্যবহৃত ৫০ সহ¯্রাধিক প্যাকেট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে স্টিকার লাগিয়ে বীজধান বাজারজাত করা হয়েছে। এগুলো মেয়াদ উত্তীর্ণ নয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আজ দেবহাটা পাক হানাদারমুক্ত দিবস

কেএম রেজাউল করিম/আরাফাত হোসেন লিটন : আজ ৬ই ডিসেম্বর সাতক্ষীরার দেবহাটা হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে সম্পূর্র্ণরূপে পাক হানাদার মুক্ত হয় গোটা দেবহাটা। দীর্ঘ দিনের যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে অবশেষে এই দিনেই দেবহাটা ছেড়ে পিছু হটে যায় পাক সেনারা।
বিশ্ব মানচিত্রে তখনও লালসবুজের পতাকা খচিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেনি কিন্তু সাতক্ষীরার বীর জনতা, মুক্তিপাগল বীর মুক্তিযোদ্ধারা বর্বর পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যদেরকে সাতক্ষীরার পবিত্র মাটি হতে বিতাড়িত করে বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠে। সাতক্ষীরার বিভিন্ন মফস্বল এলাকাগুলো হতে একে একে পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা বিতাড়িত হতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ের কারনে অত্যাচারী পাক বাহিনী শ্যামনগর, কালিগঞ্জ, আশাশুনী এবং দেবহাটা হতে বিতাড়িত হতে থাকে। ধীরে ধীরে পরাজিত হয়ে, জীবন হানী, অস্ত্র হারিয়ে জেলাশহরে পৌছাতে থাকে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সেদিন সাতক্ষীরার শত সহ¯্র মুক্তিযোদ্ধা দেশ স্বাধীন করার দৃপ্ত সপথে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পাক বাহিনী আস্তে আস্তে পালিয়ে যাওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠে।
স্বাধীনতা সংগ্রামের তৎকালীন ৯নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার প্রয়াত ক্যাপ্টেন শাহাজান মাষ্টারের নের্তৃত্বে সম্মূখ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো দেবহাটার মুক্তিকামী মানুষ। একের পর এক যুদ্ধে পরাস্থ হয়ে সেদিন দেবহাটা ছাড়তে বাধ্য হয় পাক বাহিনী ও তাদের দোষররা। সাতক্ষীরা কোর্ট চত্বরের ট্রেজারীর ৪শত রাইফেল লুট করে তৎকালীন সময়ে আব্দুল গফুর, এম এল এ আয়ুব হোসেন ও ক্যাপ্টেন শাহাজান মাষ্টার জীবন বাজি রেখে পরবর্তীতে ৯ নং সেক্টর গঠন করে। একাত্তরের নভেম্বর মাসের শেষ ও ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের প্রতিটি দিন অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে ক্রমেই পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পিছু হটতে থাকে। যাওয়ার সময় তারা মানুষের ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে এবং পারুলিয়া, কুলিয়া, বিনেরপোতা ব্রীজ গ্রেনেড দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে যায়। পাক হানাদার বাহিনী দেবহাটার মাটি ছেড়ে যাওয়ার সময় মাটিতে পুতে রাখা এপি মাইন অপসারনকালে দেবহাটার কোঁড়া গ্রামের অব্দুল ওহাবের দেহটি মাইনের বিষ্ফরনে ছিন্ন বিছিন্ন হয়ে যায়। সেদিন এই বীর শহিদের ছিন্ন দেহটির প্রতি মাষ্টার শাহাজানের নেতৃত্বাধীন সকল মুক্তিযোদ্ধারা তাদের হাতিয়ার উচিয়ে শেষ সম্মান জানিয়েছিল। অবশেষে তার দেহটি ভারতের টাকী সাজারু বাগানে সমাহিত করা হয়। সর্বশেষে পাক সেনাদের সুরক্ষিত পুষ্পকাটি ইটের ভাটা ঘাঁটি পতনের জয়লাভের মধ্য দিয়ে ৬ই ডিসেম্বর সমগ্র দেবহাটা থানা এলাকা স্বাধীন হয়ে সম্পূর্ণ হানাদার মুক্ত হয়। তখন মুক্তিযোদ্ধা জনতা উল্লাসে ফেটে পড়ে। মূহুর্মুহু জয় বাংলা শ্লোগানে তাৎক্ষণিকভাবে বিজয়ের উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেবহাটা জুড়ে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
শ্যামনগর সোনামুগারি পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন

শ্যামনগর প্রতিনিধি : মঙ্গলবার বিকালে শ্যামনগর উপজেলার সোনামুগারি গ্রামে পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য এস, এম জগলুল হায়দার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পল্লী বিদ্যুৎ কালিগঞ্জ সার্কেলের জিএম তুষার কন্তি মন্ডল। এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি জগলুল হায়দার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা আগামী ২১ সালের ভিতরে বাংলাদেশের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ জালানোর প্রতি¯্রুতি আর আমার প্রচেষ্টায় আগামী ১৮ সালের ভিতরে শ্যামনগর উপজেলার প্রত্যেক ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়া হবে। উপজেলা শহরের মাত্র ডেড় কিলোমিটার ব্যবধানে বিদ্যুৎ না থাকার ক্ষোভ আর বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার আনান্দে গ্রামবাসী আনান্দ প্রকাশ ও জারি গানের আনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সত্তর দশকের প্রেমে পরীমণি

শিরোনাম দেখে অনেকের মনে হতে পারে পরীমণি হয়তো সত্তর দশকের কোনো রি-মেক ছবিতে অভিনয় করতে যাচ্ছেন। কিংবা সেই দশকের কোনো নায়কের প্রেমে পড়েছেন। আসলে তা কিন্তু নয়। তিনি প্রেমে পড়েছেন, তাও কিনা সত্তর দশকের একটি গাড়ির। তাই তো সেই গাড়িটিকে নিজের করে নিলেন হালের আলোচিত এই নায়িকা।

বাংলা সিনেমার সৌখিন একজন নায়িকার নাম পরীমণি। এমনকি সেটা বড় পর্দার বাইরেও। এবার তার সৌখিনতার পরিচয় পাওয়া গেল একটু ভিন্নভাবে। ‘প্রিমিও’ গাড়ি থাকার পরও নীল রঙের আরেকটি গাড়ি কিনলেন পরী। তবে এটি নতুন কোনো মডেলের নয়। গাড়িটি সত্তর দশকের মিতসুবিসি লাঞ্চার।
এ কারণেই অনেকে বলছেন হালের আলোচিত নায়িকা পরীমণি ফিরে গেছেন এবং প্রেমে পড়েছেন সত্তর দশকের।

সোমবার পরীমণি তার এই নতুন গাড়িটি বুঝে নেন। এরপরই ফেসবুকে আপলোড করেন নতুন গাড়ির ছবি।

এ প্রসঙ্গে পরীমণি বলেন, যাতায়াতের জন্য আমার আরেকটি গাড়ি রয়েছে। এই গাড়িটি আমি শো-পিস হিসেবে রেখে দেওয়ার জন্য কিনেছি। তবে গাড়িটির ইঞ্জিন সচল রাখতে মাঝেমধ্যে চালু করতে হবে। আমার মনে হয়, ঢাকায় খুব কম মানুষের কাছে এই মডেলের গাড়িটি রয়েছে।

এদিকে, আগামী ১৫ ডিসেম্বর মুক্তি পেতে যাচ্ছে পরীমণি অভিনীত ছবি ‘অন্তরজ্বালা’। মালেক আফসারি পরিচালিত এই সিনেমায় তার বিপরীতে দেখা যাবে জায়েদ খানকে। এতে আরো অভিনয় করেছেন- নবাগত জয় চৌধুরী, মৌমিতা মৌ, মিজু আহমেদ, সাঙ্কু পাঞ্জা, রেহেনা জলি ও বড়দা মিঠু।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
জায়েদ-পরীর ‘পোস্টার লাগাব’ (ভিডিও)

পরীমণি ও জায়েদ খান অভিনীত ‘অন্তরজ্বালা’ বড় পর্দায় উঠবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর। মুক্তির আগেই নানা আলোচনা ও সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে ছবিটি। এছাড়া দিন দিন চলচ্চিত্রপ্রেমীদের প্রত্যাশাও বাড়ছে একে ঘিরে। এ বছর বেশ কয়েকটি ছবি সাফল্যের শীর্ষ বিন্দু ছুঁয়েছে। আর কথায় আছে, শেষ ভালো যার সব ভালো তার। তাই বছরের শেষে ফিল্মপাড়ার লোকজনও মুখিয়ে আছেন এ ছবিটির দিকে।

সম্প্রতি এই ছবির একটি গান ইউটিউবে মুক্তি পায়। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘পোস্টার লাগাব’ শিরোনামে আরও একটি গান মুক্তি পেয়েছে। গানটিতে বেশ চঞ্চল ও প্রাণোচ্ছ্বল লাগছে জায়েদ-পরীকে। অন্তরজ্বালা ছবিটি নিয়ে তাদের প্রত্যাশাও অনেক। তারাও অপেক্ষার প্রহর গুনছেন কখন মুক্তি পাবে এটি।
কারণ এতে জায়েদ এবং পরী- দু’জনই উজাড় করে অভিনয় করেছেন বলে জানিয়েছেন তারা।

এদিকে, মুক্তির আগেই রেকর্ডসংখ্যক হল বুকিংয়ের খবরে আলোচনায় উঠে এসেছে অন্তরজ্বালা। ছবিটি ১৭৫টি হলে মুক্তি দেওয়ার আশা ব্যক্ত করেছেন পরিচালক নিজেই। মালেক আফসারী জানান, এই হল সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

বেশ কয়েকটি ছবিতে ইতিমধ্যে জুটিবদ্ধ হয়েছেন জায়েদ-পরী। এই ছবিটি তাদের রসায়নের ‘এসিড টেস্ট’ বলে মনে করছেন কেউ কেউ। অপেক্ষা করছেন দর্শকরা এ জুটিকে কীভাবে গ্রহণ করেন। এখন দেখার পালা সত্যি সত্যি তারা অভিনয় দিয়ে দর্শকহৃদয়ে কতটা আগুন জ্বালাতে পারেন?

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest