সর্বশেষ সংবাদ-
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে সাতক্ষীরায় এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণভোমরার ইউপি চেয়ারম্যানকে ৪৮ ঘন্টা সময় বেঁধে দিলেন ইউনিয়নবাসীআশাশুনিতে শহীদের স্মরণে দুঃস্থদের মাঝে জামায়াতের খাবার বিতরণদেবহাটায় বিয়ের প্রলোভনে কলেজ শিক্ষার্থীর সাথে অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগে থানায় মামলাস্বৈরাচার ঠেকিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার এনসিপিরসাতক্ষীরায় দ্রুতগামী পিকআপের চাপায় ভ্যান চালকের মৃত্যুকোন সাংবাদিক যেন হয়রানির শিকার না হয়–সাতক্ষীরায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব দীর্ঘদিন কাজ করেও সরকারি স্বীকৃতি মেলেনি বিআরটিএ’র সীল মেকানিকদেররাষ্ট্রপতির ক্ষমার আগে ভুক্তভোগী ও পরিবারের মতামত নেওয়ার প্রস্তাবতালায় ‘পার্টনার ফিল্ড স্কুল কংগ্রেস’ অনুষ্ঠিত

ইয়াবা বেচে টোকাই থেকে শতকোটি টাকার মালিক

নাম তাঁর ইশতিয়াক আহমেদ (৩১)। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পের অবাঙালি (বিহারি) বাসিন্দা।
মোহাম্মদপুর, উত্তরা, সাভারের আমিনবাজার ও আশুলিয়ায় ১০টি বাড়ি আছে তাঁর। রয়েছে শত বিঘা জমি। ঘুরে বেড়ান দামি গাড়িতে। তাঁকে পরিবহন ব্যবসায়ী হিসেবেও জানে অনেকে।

তবে সাভারের হেমায়েতপুর ও আশুলিয়ায় তিনি পরিচিত ‘দানবীর’ কামরুল ইসলাম নামে। ওই এলাকায় কেউ জমি বিক্রি করছে টের পেলেই ছুটে গিয়ে কিনে নেন মোটা দামে। কেউ বিপদে পড়লে সহযোগিতা করেন টাকা দিয়ে। ১০ বছর আগে ছিলেন ফুটপাতের টোকাই। সেই বহুরূপী ইশতিয়াক ওরফে কামরুলই ইয়াবার কারবার করে এখন শতকোটি টাকার মালিক।

কালের কণ্ঠ’র অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইশতিয়াক এখন রাজধানীর শীর্ষ পর্যায়ের ইয়াবা ডিলার। তাঁকে অনেকে বলেন, ‘ইয়াবাসম্রাট’। জেনেভা ক্যাম্পের নাদিম হোসেন ওরফে ‘পঁচিশ’, সেলিম ওরফে চুয়া ওরফে চোরা সেলিম ও ম্যানেজার মোল্লা আরশাদ তাঁর প্রধান সহযোগী। তাদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন ইয়াবার বড় সিন্ডিকেট। রাজধানীজুড়ে, বিশেষ করে মোহাম্মদপুর, গাবতলী, আমিনবাজার, বেড়িবাঁধ, হেমায়েতপুর, আশুলিয়াসহ কয়েকটি এলাকায় ইয়াবা সরবরাহ করেন তিনি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) ও পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, বাড়িতে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়ানোর কারণে ইশতিয়াককে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসনকে টাকা দিয়ে দীর্ঘদিন গ্রেপ্তার না হওয়ায়ই শত কোটি টাকার মালিক বনে গিয়ে ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াতে পারছেন ইশতিয়াক। তাঁর প্রধান সহযোগী পঁচিশকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হলেও মাত্র ১২ দিনের মধ্যে জামিনে ছাড়া পেয়ে যায় সে। অন্য দুই সহযোগী জেনেভা ক্যাম্পে থেকেই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।

ডিএনসির ঢাকা মেট্রো উপ-অঞ্চলের উপপরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা বলেন, ইশতিয়াক ঢাকা শহরের শীর্ষ পর্যায়ের ইয়াবা কারবারি। তাঁর ব্যাপারে তথ্য পাওয়ার পর গ্রেপ্তারের জন্য তিনবার অভিযান চালানো হয়; কিন্তু টের পেয়ে আগেই সটকে পড়েছেন। তবে তাঁকে ধরতে এখনো চেষ্টা চলছে। ইশতিয়াকের সহযোগীরাও পালিয়ে আছে বলে দাবি করেন ডিএনসির উপপরিচালক।

‘ইয়াবাসম্রাট’ ইশতিয়াক : অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ১০ বছরে মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প থেকে আমিনবাজার, হেমায়েতপুর ও আশুলিয়া পর্যন্ত ইয়াবার নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন ইশতিয়াক। প্রথম দিকে তিনি ইয়াবা সংগ্রহ করে জেনেভা ক্যাম্প, জহুরী মহল্লাসহ আশপাশের এলাকায় বিক্রি করতেন। পরে গড়ে তোলেন ইয়াবা সিন্ডিকেট। একপর্যায়ে জড়িত হন পরিবহন ব্যবসায়। এর সূত্র ধরে কক্সবাজার থেকে ট্রাক ও গাড়িতে ইয়াবা আনা শুরু করেন। এখন কক্সবাজার থেকে তাঁর লাখ লাখ পিস ইয়াবার চালান আসে সরাসরি। প্রতি মাসে একাধিকবার বিমানে কক্সবাজার যান তিনি। থাকেন পাঁচতারা হোটেলে। সেখানে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে চালান পাঠান ঢাকায়। সম্প্রতি বিমানযোগে সাত দিনের জন্য ভারতের কলকাতায় যান তিনি। তবে নজর এড়িয়ে চলছেন এই দুর্ধর্ষ ইয়াবা কারবারি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেনেভা ক্যাম্পে ১০টি মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটে ৪০০ মাদক ব্যবসায়ী আছে। আর সেখানকার ইয়াবার মূল নিয়ন্ত্রক ইশতিয়াক। বর্তমানে রাজধানীর অন্যতম শীর্ষ ইয়াবা সরবরাহকারী তিনি। জেনেভা ক্যাম্প ছাড়িয়ে পুরো ঢাকায় ইয়াবা সরবরাহ করেন ইশতিয়াক। তাঁর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় চারটি মাদকসহ হত্যা ও বিভিন্ন অভিযোগে ১৫টি মামলা আছে। একটি মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে আছেন। তিনটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, জেনেভা ক্যাম্পকেন্দ্রিক মাদক বাণিজ্য বন্ধ করতে বড় ধরনের অভিযানে নেমেছে প্রশাসন। তবুও অবাঙালি জনগোষ্ঠীর অসযোগিতার কারণে সেখানে অভিযান সফল হয় না। অভিযান চালাতে গেলে ডিএনসির কর্মকর্তাদের ওপর তারা দুই দফায় হামলাও চালিয়েছে। গত বছরের ১০ নভেম্বর অভিযান চালাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে গুলি ছোড়েন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা। ওই অভিযানে ইশতিয়াক তাঁর সহযোগীদের নিয়ে পালিয়ে গেলেও তাঁর ছোট ভাই মাহবুবকে গ্রেপ্তার করে ডিএনসি। এর আগে গত বছরের ২৪ জুলাইও অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয় ডিএনসি।

টোকাই থেকে শতকোটি টাকার মালিক : সূত্রগুলো জানায়, মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে ইশতিয়াকের জন্ম। বেড়ে উঠেছেন অভাব-অনটনের মধ্যেই। সংসার চালাতে একেক সময় একেক কাজ করতেন। ২০০৭ সালেও রাস্তা থেকে পরিত্যক্ত বোতল কুড়িয়ে এবং তা বিক্রি করে সংসার চালাতেন। কিন্তু ১০ বছরের ব্যবধানে মাদক ব্যবসা করে গড়েছেন শতকোটি টাকার সম্পদ। সাভারের হেমায়েতপুরে বানিয়েছেন একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি। আশুলিয়ায় গাজীরচট বেড়িবাঁধের পাশে এবং ব্যারন এলাকায় দেড় কিলোমিটারের মধ্যে আছে তাঁর নির্মাণাধীন দুটি বাড়ি। আশুলিয়ার একটি একতলা বাড়ি তাঁর রেস্ট হাউস। এখানে মাঝে মধ্যে লোকজন নিয়ে মিটিং করেন। অন্য দুটি বাড়ি একটি ছয়তলা ও অন্যটি সাততলা। ছয়তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলায় তিনি বসবাস করেন, অন্য ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া দেওয়া। মোহাম্মদপুর, সাভার ও উত্তরায় তাঁর আরো ছয়টি বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া সাভার, আশুলিয়া, মোহাম্মদপুর কয়েক একর জমি ও প্লট আছে ইশতিয়াকের।

ছদ্মবেশী ‘দানবীর’ : জানা গেছে, ইশতিয়াক কখন কোথায় থাকেন তা কেউ জানে না। কখনো জেনেভা ক্যাম্পে, আবার কখনো হেমায়েতপুরে থাকেন। তাঁর বাড়ির নিচতলা ও বাইরের অংশে লাগানো রয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সিসি ক্যামেরা। তিনি যেকোনো স্থান থেকে সেখানকার দৃশ্য দেখতে পান। এ কারণে অভিযান চালালেও তাঁকে গ্রেপ্তার করা যায় না বলে দাবি করেন ডিএনসির কর্মকর্তারা। গত ২১ নভেম্বর হেমায়েতপুরের বাড়িতে ডিএনসি অভিযান চালাতে গেলে ইশতিয়াক সটকে পড়েন।

জেনেভা ক্যাম্প ও সাভারে সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাভার ও আশুলিয়ার মানুষ ইশতিয়াককে চারটি বাড়ির মালিক কামরুল ইসলাম নামেই চেনে। নাম পাল্টে নিজেকে আড়াল করার জন্য সেখানে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন তিনি। জমি কিনে অনেকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। গত কোরবানির ঈদে ২২ লাখ টাকার পশু কিনে এলাকায় বিতরণ করেছেন। বিয়ে করেছেন এক বাঙালি তরুণীকে। তাঁর শ্বশুরবাড়ি বরগুনায়।

ভয়ংকর সহযোগীরাও অধরা : সূত্র জানায়, ইশতিয়াকের প্রধান সহযোগী নাদিম হোসেন ওরফে পঁচিশ, সেলিম ওরফে চুয়া ওরফে চোরা সেলিম ও ম্যানেজার মোল্লা আরশাদ। গাঢাকা দিয়ে চললেও তারা সবাই এখন সক্রিয়। ৩১ বছর বয়সী পঁচিশ সবচেয়ে দুর্ধর্ষ। জেনেভো ক্যাম্পে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে ইয়াবা, হেরোইন, গাঁজাসহ মাদক বিক্রি করে সে। ছোটবেলায় জেনেভা ক্যাম্প এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে কাজ করত পঁচিশ। তখন তার দৈনিক বেতন ছিল ২৫ টাকা। হোটেলে কাজ করতে করতে গাঁজা বিক্রিও শুরু করে। কাগজে মোড়ানো এক পুঁটলি গাঁজা বিক্রি করত ২৫ টাকায়। হোটেলের বেতন আর গাঁজার দাম একই হওয়ায় নাদিমকে এলাকাবাসী ডাকতে শুরু করে ‘পঁচিশ’ নামে। এই পঁচিশ এখন কোটিপতি বনে গেছে।

গত ৩ নভেম্বর ডিএনসির সঙ্গে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, এপিবিএন ও এনএসআইয়ের ২০০ সদস্য মিলে জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেন পঁচিশকে। প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হলেও মাত্র ১২ দিন পর ৫ নভেম্বর নিম্ন আদালত থেকে চারটি মামলায় জামিন নিয়ে ছাড়া পায় সে। ক্যাম্পে গিয়ে আবার শুরু করে মাদক কারবার। ১৭ নভেম্বরের পর এই ইয়াবা কারবারি গাঢাকা দিয়ে আছে বলে জানা গেছে।

জেনেভে ক্যাম্পের একাধিক বাসিন্দা জানায়, ইশতিয়াকের সহযোগী দলনেতাদের মধ্যে তিন নারীও রয়েছে। তারা হলো—সাথী, রাজিয়া ও শান্তি। প্রতিটি দলে ১০ থেকে ২০ জন সদস্য আছে।

মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের চেয়ারম্যান শেখ গোলাম জিলানীর বিরুদ্ধেও মাদক কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন জিলানী। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জামিনে ছাড়া পান। জিলানীও ইশতিয়াকের সঙ্গে হেমায়েতপুরে থাকেন।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করে, পুলিশ প্রশাসনকে টাকা দিয়ে অধরা থাকেন ইশতিয়াক ও তাঁর সহযোগী। এ কারণেই জেনেভা ক্যাম্পের মাদক বাণিজ্য বন্ধ হচ্ছে না। আর কারবারিরা এখন শত কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে।

মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামালউদ্দিন মীর বলেন, ‘ইশতিয়াকসহ মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে আমাদের কাছেও অভিযোগ আছে। জেনেভা ক্যাম্পে প্রায়ই অভিযান চালানো হয়। তবে শীর্ষ কারবারিরা চতুর। এরা বড় অভিযানের আগে সটকে পড়ে। জেনেভা ক্যাম্পকে মাদকমুক্ত করার জন্য সচেতনতামূলক কাজও করা হচ্ছে। মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িতদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

খেলাপি ঋণের আবর্তে পড়ে অস্থিরতার তীব্র স্রোতে ঘুরপাক খাচ্ছে ব্যাংক খাত। বাড়তে থাকা খেলাপি ঋণে পর্যুদস্ত হয়ে পড়েছে সরকারি-বেসরকারি একাধিক ব্যাংক। সর্বশেষ ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। অবলোপন করা ঋণের প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার হদিস নেই। আদায় হওয়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই এই ঋণের। একদিকে আদায় করতে না পারায় নতুন ঋণ দিতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ফলে মুনাফায় ধস নেমেছে অধিকাংশ ব্যাংকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় পরিচালকরা নিজেদের মধ্যে ঋণ ভাগাভাগি করায় সেখানেও খেলাপের সংখ্যা বেড়ে গেছে। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে আছে নতুন প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকগুলো। সমঝোতাভিত্তিক বড় অঙ্কের ঋণ বিনিময় করেন শতাধিক পরিচালক। যাদের কয়েকজন বেশি বিতর্কিত। এদের কাছেই পুরো ব্যাংকিং খাত জিম্মি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর (২০১৭) ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ যোগ হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ১১ হাজার ২৩৭ কোটি, দ্বিতীয় প্রান্তিকে (মার্চ-জুন) ৭৩৯ কোটি ও তৃতীয় প্রান্তিকে (জুন-সেপ্টেম্বর) খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা এবং অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে যোগ হয়েছে আরও প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ। বছর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। এর সঙ্গে ঋণ অবলোপন করা ৪৫ হাজার কোটি টাকা যোগ করলে ব্যাংকিং খাতে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। গত অক্টোবরে দেশের ব্যাংক খাতের বিতরণ করা ঋণ বেড়ে হয়েছে ৭ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। গত জুনে ঋণ বিতরণ ছিল ৭ লাখ ৩১ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট ঋণের প্রায় ১১ শতাংশই খেলাপি। এর মধ্যে সরকারি খাতের ছয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। গড়ে সরকারি ব্যাংকগুলোর ২৯ দশমিক ২৫ শতাংশ ঋণই খেলাপি। জুনের তুলনায় এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ দশমিক ৪১ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ হয়েছে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর প্রায় ৮ শতাংশ ঋণই খেলাপি। একই ভাবে কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর প্রায় ২৪ শতাংশ ঋণই খেলাপি। অনিয়ম-জালিয়াতিতে পিছিয়ে নেই বেসরকারি ব্যাংকগুলোও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বেসরকারি খাতের প্রায় সব ব্যাংকের পরিচালকরা একে অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করে ঋণ দেওয়া-নেওয়া করেন। নতুন-পুরান মিলিয়ে দেশে সরকারি-বেসরকারি ৫৭টি ব্যাংক। এসব ব্যাংক পরিচালকদের হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে। ১৯টি ব্যাংকের পরিচালক নিজের ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন প্রায় ৪০০ কোটি টাকার বেশি। একই ভাবে ৯টি ব্যাংকের পরিচালক গ্যারান্টার বা জিম্মাদার হয়ে ঋণ দিয়েছেন আরও ২৩১ কোটি টাকা।

বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপির চিত্রে দেখা গেছে, এক্সিম ব্যাংক ৪ হাজার ৫৬৯ কোটি, ব্যাংক এশিয়া ৩ হাজার ৯৫৪ কোটি, ঢাকা ব্যাংক ৩ হাজার ৭২২ কোটি, এবি ব্যাংক ৩ হাজার ৫৩৬ কোটি, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ৩ হাজার ২৫৯ কোটি, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ৩ হাজার ১৫৫ কোটি, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ৩ হাজার ৬৬ কোটি, যমুনা ব্যাংক ৩ হাজার ১৬ কোটি, প্রাইম ব্যাংক ২ হাজার ৯৭৬ কোটি, ব্র্যাক ব্যাংক ২ হাজার ৯৩০ কোটি, পূবালী ব্যাংক ২ হাজার ৭৯৭ কোটি, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ২ হাজার ৩৫৭ কোটি, ট্রাস্ট ব্যাংক ২ হাজার ৩০৩ কোটি, এনসিসি ব্যাংক ২ হাজার ১৩৯ কোটি, সাউথইস্ট ব্যাংক ১ হাজার ৯৯০ কোটি, ওয়ান ব্যাংক ১ হাজার ৮২৭ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক ১ হাজার ৭৮৭ কোটি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ১ হাজার ৭৪৫ কোটি, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ১ হাজার ৬৬৭ কোটি ও আইএফআইসি ব্যাংকের ১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা। নতুন কার্যক্রমে আসা এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালককে ঋণ দিয়েছে ৫১৪ কোটি, মধুমতি ব্যাংক ৩৫২ কোটি, মিডল্যান্ড ব্যাংক ৩৪৯ কোটি, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক ৩২৫ কোটি, মেঘনা ব্যাংক ৩০১ কোটি ও ফারমার্স ব্যাংক ১৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে অনিয়ম করে ঋণ দেওয়ার দায়ে এনআরবিসি, ফারমার্স ব্যাংকের পর্ষদ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর খেলাপিদের ঋণের একটি বড় অংশই বর্তমান ও সাবেক ব্যাংক পরিচালক, তাদের স্ত্রী-পুত্র-সন্তান বা নিকটাত্মীয়দের কাছে আটকা পড়ে আছে। এসব ঋণপ্রস্তাব, অনুমোদন ও বিতরণের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, খেলাপি ঋণের পাহাড় পরিমাণ সংকট পর্যুদস্ত করেছে ব্যাংকিং খাত। বিগত কয়েক বছরে সরকারি ব্যাংকে রাজনৈতিক নিয়োগ ও ঋণ বিতরণে অনিয়ম-জালিয়াতি বেড়েছে। বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সদস্যরা যেভাবে ঋণ বিতরণ করেছেন তাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এখন যে পরিবর্তন করা হচ্ছে তাতে সমস্যার সমাধান হবে না। প্রয়োজন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ। না হলে ব্যাংক খাত পুরো অর্থনীতিকে সংকটে ফেলবে। নতুন ব্যাংক কোম্পানি আইন বাস্তবায়ন হলে তাতেও সংকট বৃদ্ধি পাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নল ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো পর্যবেক্ষণ নেই ব্যাংকগুলোর কার্যক্রমে। ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে তারা কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এজন্য খেলাপি ঋণ না কমে কেবল বেড়েই চলেছে। যাচাই-বাছাই ছাড়া যেসব নতুন ঋণ দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোও খেলাপে যোগ হচ্ছে। ঋণ অবলোপনের প্রক্রিয়াটি অনিয়মের অন্যতম কারণ। বিপুল পরিমাণ ঋণ পুনর্গঠন করা হয়েছে। তাও সঠিকভাবে করা হয়নি; যা খুবই উদ্বেগের।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সব সূচকে উল্লম্ফন, তবু জনজীবনে অস্বস্তি

অর্থনীতি ও সামাজিক বিভিন্ন সূচক ঊর্ধ্বমুখী, দেশের অগ্রগতির চিত্রও স্পষ্ট। বড় অবকাঠামো নির্মিত হচ্ছে, আমদানি-রপ্তানি বাড়ছে।
বিদেশি বিনিয়োগও দ্বিগুণ প্রায়। কমছে দারিদ্র্যের হার, বাড়ছে মাথাপিছু আয়। সব শর্ত পূরণ করে আগামী মার্চেই জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (ইউএনসিডিপি) কাছ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রাথমিক সুপারিশ পেতে যাচ্ছে স্বল্পোন্নত বাংলাদেশ। সার্বিক উন্নয়নের নির্দেশক এসব সূচকের অগ্রগতি দেখে মনে হয় বেশ স্বস্তিতেই আছে দেশের মানুষ। কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবনে এসব ইতিবাচক সূচকের দৃশ্যমান প্রভাব তেমন নেই। আয়ের পুরোটা দিয়েও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবার চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হয়েছে তাদের।

বিভিন্ন সূচকে দেশ যতটা এগোচ্ছে, দেশের সাধারণ মানুষ ততটা এগোতে পারছে না। মাথাপিছু আয় বাড়লেও দ্রব্যমূল্য বাড়ছে তার চেয়েও বেশি গতিতে। ফলে বাড়তি আয় দিয়ে বাড়তি কিছু কেনার সামর্থ্য থাকছে না সাধারণের।
বিদায়ী বছরে বাংলাদেশিদের মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬১০ ডলারে। কিন্তু বছরজুড়ে চালের দামের ঊর্ধ্বগতি আর দ্বিতীয়ার্ধে পেঁয়াজের মূল্য দ্বিগুণেরও বেশি হওয়ায় বাড়তি আয়ের স্বাদ পায়নি সাধারণ মানুষ। হাওরে আগাম বন্যা আর বিভিন্ন অঞ্চলে ব্লাস্ট রোগের কারণে গত বোরো মৌসুম থেকেই মোটা চালের দাম বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে তা ৫০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। পরে সরকার চাল আমদানির মাধ্যমে দর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও তা সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার মতো প্রভাব বাজারে ফেলতে পারেনি। ফলে এখন ভরা আমন মৌসুমেও মোটা চালের দাম উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল। সরকারি বিক্রয় সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ডিসেম্বর প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ছিল ৪৫-৪৬ টাকা। এক বছর আগে এটি ছিল ৩৫-৩৮ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে মোটা চালের দাম বেড়েছে ২৩ শতাংশেরও বেশি।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেমের গত সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চালের উচ্চমূল্যের কারণে দারিদ্র্যসীমার ওপরে থাকা পাঁচ লাখ ২০ হাজার মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। এ তথ্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলেও অর্থমন্ত্রী পরদিন মঙ্গলবার স্বীকার করেছেন যে চালের দাম বেড়ে অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। দাম বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষের অনেক কষ্ট হয়েছে। চালের চড়া দামের মধ্যে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে পেঁয়াজের দামও গত কয়েক বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে ১২০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। এখন নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু হওয়ায় এর ঝাঁজ কিছুটা কমলেও চালের দরের ভোগান্তি এখনই কাটছে না বলে মনে করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরাও। তাঁদের আশা, আগামী মৌসুমে ধানের উৎপাদন বাড়লে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।

বিদায়ী বছরের প্রথম থেকেই ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের জন্য আতঙ্ক হয়ে দেখা দেয় নতুন মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আইন বাস্তবায়নের উদ্যোগ। এই আইনের পক্ষে-বিপক্ষে কঠোর অবস্থান নেয় অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ব্যবসায়ীসমাজ। চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দুই পক্ষের অনড় অবস্থানও বাড়ে। প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে বাগিবতণ্ডায়ও জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। ঢাকার ব্যবসায়ীরা ধর্মঘটও পালন করে। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর দুই বছরের জন্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়। সরকারের এ সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে, যার সুফল নিজের অজান্তেই ভোগ করছে ভোক্তারা।

বিদায়ী বছরে ব্যাংকিং খাতে অস্থিরতা মাত্রা ছাড়িয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এই অস্থিরতা নতুন মাত্রা পেয়েছে। বছর শেষে এবি ব্যাংকের পর্ষদেও পরিবর্তন এসেছে। মাত্রাতিরিক্ত ঋণ বিতরণ আর উচ্চ খেলাপি ঋণের কারণে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায়ও পরিবর্তন এসেছে। ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, আগামী বছরও এ খাতে অস্থিরতা থাকতে পারে। আগের বছরের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা রিজার্ভ চুরির বিষয়টিও বিদায়ী বছরে আলোচনায় এসেছে। তবে চুরি হওয়া অর্থ ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রে তেমন সফলতা এখনো আসেনি। এ প্রেক্ষাপটে সরকার ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্র, মেট্রোরেলসহ অবকাঠামো খাতে সরকারের বিপুল বিনিয়োগের কারণে দেশের মোট বিনিয়োগের হার জিডিপির ৩০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। বিদায়ী বছরেই পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হয়েছে, পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্রের মূল অবকাঠামো নির্মাণ শুরুর মধ্য দিয়ে বিশ্ব পরমাণু শক্তিধারী দেশের তালিকায় উঠেছে বাংলাদেশের নাম। মেট্রো রেলের অবকাঠামো নির্মাণও শুরু হয়েছে এ বছরই। তবে অবকাঠামো খাতে সরকারি বিনিয়োগ যতটা বেড়েছে, বেসরকারি বিনিয়োগ সেই তুলনায় বাড়ছে না। অর্থনীতির নিয়মানুসারে, সরকারি বিনিয়োগ এক টাকা বাড়লে বেসরকারি বিনিয়োগ তিন টাকা বাড়ার কথা। আর বেসরকারি বিনিয়োগে গতি না আসায় বেকারত্বের লম্বা লাইনও খাটো হচ্ছে না। এতে জনসংখ্যার বোনাসকালে প্রবেশ করা বাংলাদেশ বিপুল শ্রমশক্তিকে উপযুক্ত ব্যবহার করে উন্নয়নে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাচ্ছে না। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বিদেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব নিবন্ধন বেড়েছে ১০ গুণ। শতভাগ বিদেশি এবং ২০টি যৌথ বিনিয়োগ মিলে প্রস্তাব পাওয়া গেছে মোট ১৮ হাজার ১৩৮ কোটি টাকার। এ সময়ে দেশীয় বিনিয়োগ প্রস্তাব নিবন্ধিত হয়েছে ৫১ হাজার ৬২৮ কোটি টাকার। কয়েক বছর ধরে বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীরা অবকাঠামো সংকট ও ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহারকে বিনিয়োগ না হওয়ার জন্য দায়ী করলেও এ বছর ব্যাংকঋণের সুদের হার ১০ শতাংশের নিচে নেমেছে। অবকাঠামো সংকটও কিছুটা কমেছে। তা সত্ত্বেও বিনিয়োগে গতি না আসার কোনো কারণ দেখছেন না সরকারের নীতিনির্ধারকরা।

তবে আগামী বছর এলএনজি আমদানির মাধ্যমে গ্যাস সংযোগ দেওয়া শুরু হলে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। সম্প্রতি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার বিনিয়োগকারীদের জন্য অবকাঠামো এবং বিদ্যুৎ ও পরিবহন সুবিধা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা এখন চাহিদার চেয়েও বেশি। সরবরাহের ক্ষেত্রে সামান্য কিছু সমস্যা রয়েছে, যা আগামী ছয় মাসের মধ্যেই সমাধান হবে। কেউ বিনিয়োগ করলে সঙ্গে সঙ্গেই বিদ্যুৎ সংযোগ পাবে। তবে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকে। গ্যাসের সংকট মেটাতে সরকার এলএনজি আমদানি করে এ সংযোগ দেবে।

দেশের ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হলেও সরবরাহ লাইনের দুর্বলতার কারণে এখনো মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত হচ্ছে না। আর শিল্পে গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় নতুন বিনিয়োগে গতি আসছে না। এলএনজি আমদানির পর বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া শুরু হলে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে।

বিদায়ী বছর দেশের রপ্তানি পরিস্থিতি ভালো ছিল না। অর্থবছরের প্রথম দিকে নেতিবাচক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ছিল। তবে শেষ সময়ে এসে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে পণ্য রপ্তানি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে এক হাজার ৪৫৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এটি রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় শূন্য দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে শুধু নভেম্বর মাসেই ৩০৫ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে. আগের বছরের নভেম্বরে এটি ছিল ২৮৮ কোটি ডলার। অর্থাৎ, নভেম্বর মাসে রপ্তানি বেড়েছে ৬.২২ শতাংশ।

তৈরি পোশাক খাতের মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, আন্তর্জাতিক ক্রেতারা বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের দাম কমিয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানিতে অধিক সময় লাগায় রপ্তানিতে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, নভেম্বরে তৈরি পোশাক রপ্তানির মৌসুম শুরু হয়েছে। সে জন্য এখন রপ্তানি বাড়ছে। নভেম্বরে পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ শতাংশ। এটি ১২-১৫ শতাংশ হওয়া উচিত ছিল।

রপ্তানি বাদে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম বড় খাত রেমিট্যান্স প্রবাহও বছরজুড়ে সন্তোষজনক ছিল না। বিদায়ী বছরের শেষ সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। তবে বছরের শুরুতে এটি কম ছিল। সর্বশেষ নভেম্বর মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। রেমিট্যান্স বাড়ার কারণে উচ্চ আমদানি ব্যয় সত্ত্বেও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেনি। তবে ডলারের দাম বেড়ে গেছে। সাধারণ মানুষকে এর মূল্য দিতে হচ্ছে। কারণ রপ্তানি ও রেমিট্যান্স থেকে আয় বাড়ার তুলনায় বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্রের জন্য দামি যন্ত্রপাতি আমদানি হচ্ছে। সঙ্গে বাড়ছে চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির পরিমাণও। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা বেড়েছে ৮৮ শতাংশ, ঋণপত্র নিষ্পত্তি বেড়েছে ২০ শতাংশ। এ কারণে তিন হাজার ২০০ কোটি ডলারের বেশি রিজার্ভ থাকলেও ডলারের দর বেড়ে গেছে। গত বছর ডিসেম্বরে যেখানে এক ডলার কিনতে ৭৯ টাকা লাগত, এখন লাগছে ৮৩-৮৪ টাকা। ডলারের এই দর বৃদ্ধির কারণে আমদানি পণ্যের দাম বেড়েছে, যা চূড়ান্তভাবে পরিশোধ করতে হচ্ছে ভোক্তাদেরই। তবে ডলারের দর বাড়ায় রপ্তানিকারক ও রেমিট্যান্স প্রেরণকারীরা বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে।

গত অর্থবছরে (জুলাই ২০১৬ থেকে ৩০ জুন ২০১৭ পর্যন্ত) বাংলাদেশ রেকর্ড হারে জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এবারই প্রথম লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উচ্চহারে জিডিপি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭.২৮ শতাংশ। এর মধ্য দিয়ে ৭ শতাংশ হারে জিডিপি অর্জনকারী বিশ্বের গুটিকয়েক দেশের কাতারে নাম উঠেছে বাংলাদেশের। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭.২ শতাংশ।

বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্থনৈতিক ও সামাজিক সূচকে অগ্রগতি মেনে নিয়ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রথম সুপারিশ করতে যাচ্ছে ইউএনসিডিপি। সংস্থার একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল গত ৯-১২ অক্টোবর বাংলাদেশ সফর করে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার তিনটি শর্তই বাংলাদেশ পূরণ করেছে। এ প্রেক্ষাপটে আগামী মার্চে ইউএনসিডিপির ত্রিবার্ষিক সভায় উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রথম সুপারিশ লাভ করবে বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও বর্তমান মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইউএনসিডিপির প্রতিনিধিদল ফিরে গিয়ে যে প্রতিবেদন দাখিল করেছে, তাতে বলা হয়েছে যে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের তিনটি সূচকের সব কয়টিই বাংলাদেশ অতিক্রম করেছে। এটা বাংলাদেশের জন্য খুবই চমৎকার ব্যাপার। কারণ এর আগে যেসব দেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হয়েছে, তাদের কেউই তিনটি সূচকেই সফলতা অর্জন করতে পারেনি।

সূত্র: কালের কণ্ঠ

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

ভারতে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে চার বাংলাদেশি নারীকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রের থানে ডিস্ট্রিক্ট আদালত ওই চার বাংলাদেশিকে এই সাজা দেন। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককেই ১০ হাজার রুপি করে ব্যক্তিগত জরিমানাও করেছেন আদালতের সহকারি সেশন বিচারক আর.এস. পাতিল (ভোঁসলে)।

ওই চার বাংলাদেশি হলেন জান্নাত নূর ইসলাম শেখ (৩৫), শুখি হারুন মোল্লা (৫৮), মিম ওরফে সীমা সামাথ মাতবর (৩০) এবং মৈনা জুমাত গাজি (৩০)।

জানা যায়, নির্দিষ্ট সূত্রে খবর পেয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির দিকে থানের কাশিমিরা টাউনে দুইটি অভিযান চালিয়ে থানে ডিস্ট্রিক্টের রুরাল থানার পুলিশ এই চার বাংলাদেশিকে আটক করে। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন থানার অ্যান্টি-হিউম্যান ট্রাফিকিং সেলের ইন্সপেক্টর সঞ্জয় বাঙ্গার। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে আটক চার নারীই বাংলাদেশের বাসিন্দা এবং তাদের কারো কাছেই ভারতে প্রবেশের পাসপোর্ট, ভিসা বা কোন বৈধ নথি ছিল না। এরপরই তাদের বিরুদ্ধে ১৪ এ(বি) ফরেনার্স অ্যাক্টে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

মঙ্গলবার সাজা ঘোষণার সময় বিচারক আর.এস. পাতিল (ভোঁসলে) জানান ‘দারিদ্রতা এবং কর্মসংস্থানের জন্যই তারা ভারতে প্রবেশ করেন এবং দৈনিক শ্রমিকের কাজ শুরু করেন। এটা ঠিক যে ওই চার নারী খুবই গরীব এবং ভারতে কোনরকম অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন না। তাই তাদেরকে সাজা দেওয়ার সময় কিছুটা উদারতা দেখানো উচিত।

যদিও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান অভিযুক্তরা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছে। এই ঘটনায় দেশের আইন-শৃঙ্খলা জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই তাদের সাজা ঘোষণার ক্ষেত্রে কোন রকম উদারতা দেখানো উচিত নয় এবং সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা উচিত।

সব শুনে বিচারক অভিযুক্ত চার বাংলাদেশির প্রত্যেককেই দুই বছরের কারাগারের সাজা ঘোষণা করেন। পাশাপাশি সাজার মেয়াদ শেষে ওই চার বাংলাদেশিকে নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়েও কারাগার কর্তৃপক্ষ ও নয়ননগর পুলিশ থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ

ঘন কুয়াশার কারণে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। শুক্রবার রাত ১০টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ।

পাটুরিয়া ফেরিঘাট শাখা বাণিজ্য বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক মহিউদ্দিন রাসেল জানান, সন্ধ্যার পর থেকে ঘন কুয়াশায় ফেরির মার্কিং বাতির আলো অস্পষ্ট হয়ে যায়। এতে করে নৌরুটে দুর্ঘটনা এড়াতে রাত ১০টা থেকে সাময়িকভাবে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত এ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল।

এদিকে, কুয়াশায় ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চল থেকে নদী পার হতে আসা যানবাহন ও যাত্রীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। এর ওপর নদী এলাকায় শীতের তীব্রতা একটু বেশি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
রতনপুরের আছাদের লাশ নুরনগরে উদ্ধার

পলাশ দেবনাথ, নুরনগর থেকে: শ্যামনগর উপজেলার নুরনগরে আছাদুল (২৮) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মিনিটের দিকে নুরনগরের দেওড়া বাড়ি এলাকার কালভার্ট সংলগ্নে তাকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় পথচারীরা তাকে পল্লী চিকিৎসক ডা. আইয়ুব আলীর চেম্বারে নিয়ে গেলে ডা. তাকে মৃত ঘোষণা। সে রতনপুর ইউনিয়নের আড়ংগাছা গ্রামের আব্দুল জব্বারের এক মাত্র পুত্র। এ খবর শ্যামনগর থানা পুলিশ কে জানালে শ্যামনগর থানার ওসি সৈয়দ মান্নান আলী সাথে সাথে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যু কোন রহস্য উন্মোচন হয়নি। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে লাশের ঘাড়ে ও উরুতে গভির ক্ষতের চিহ্ন এবং প্রচুর পরিমানে রক্ত ক্ষরণের আলামত পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে কালিগঞ্জ সার্কেল ওফিসার সহ থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌছিয়েছেন। খবর পেয়ে মৃত আছাদুলের স্বজনরা ছুটে এসে আহাজারী করতে দেখা গেছে। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত শ্যামনগর থানা পুলিশ ও কালিগঞ্জ থানা পুলিশ যৌথভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন এবং শ্যামনগর থানা পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য লাশ থানায় নিয়ে যায়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
বছরের শেষে ‘মাহিয়া’ (ভিডিও)

সম্প্রতি প্রকাশ করা হলো `মাহিয়া’ গানের ভিডিও। শুটিং হয়েছে নেপালে।
কলকাতার গীতিকার প্রসেনের কথায় ও অম্লানের সুরে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন তরুণ প্রজন্মের গায়ক ফাহিম ইসলাম ও তার সঙ্গে কলকাতার গায়িকা মধুবান্তী বাগচী। গাওয়ার পাশাপাশি গানটির মিউজিক মডেল হয়েছেন গায়ক নিজেই।

এ প্রসঙ্গে ফাহিম বলেন, বছরের একেবারে শেষে মাহিয়া হচ্ছে ধামাকা। এটি আমার অনেক প্রিয় একটি গান। গানের সঙ্গে মিল রেখে নেপালের মনোরম লোকেশনে ভিডিও শুটিং করা হয়েছে। এ মাহিয়া দিয়েই বছরের একেবারে শেষ এবং নতুন বছর শুরু হচ্ছে। আশা করি গানটি কারও খারাপ লাগবে না।

ডেডলাইন এন্টারটেইনমেন্ট এর ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পেয়েছে গানটি। হাবিবের কোরিওগ্রাফিতে ভিডিওটি নির্মাণ করেছেন নির্মাতা সৈকত নাসির ও তার টিম।
উল্লেখ্য, এ বছর ডেডলাইন এন্টারটেইনমেন্টর ব্যানারে ‘বাংলা ড্যান্স’ শিরোনামে বিগবাজেটের আরও একটি গান প্রকাশ হয় ফাহিমের। গানটি ইউটিউবের পাশাপাশি ফেসবুকেও পোস্ট করা হয়। গানটি সাড়া জাগায় দর্শকদের মাঝে। সেই গানের সাফল্যের রেশ যেতে না যেতেই মাহিয়া প্রকাশ করলেন এ গায়ক।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
‘ইত্যাদি’ আজ

‘ইত্যাদি’ আজ

কর্তৃক Daily Satkhira

ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এবং পর্যটন সমৃদ্ধ আকর্ষণীয় স্থানগুলোতে গিয়ে ‘ইত্যাদি’ ধারণের ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে প্রকৃতির অনন্য সৃষ্টি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। তাই এবারের অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পর্ব করা হয়েছে সাগরকে ঘিরে। গণমানুষের প্রিয় অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র এ পর্বটি একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচার হবে আজ রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর। অনুষ্ঠানে এবারের পর্বে রয়েছে কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত, দর্শনীয় ও পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থানগুলোর ওপর তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন। সমপ্রতি তিনবার গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস্‌ অর্জনকারী মাগুরার হালিমের ওপর রয়েছে একটি অনুকরণীয় প্রতিবেদন। ১৯৯৫ সালে যাকে প্রথম দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করেছিল ‘ইত্যাদি’।

ঠাকুরগাঁও জেলার এক নিভৃত পল্লীতে গড়ে তোলা একটি ব্যতিক্রমধর্মী জাদুঘর ‘লোকায়ন জীবন বৈচিত্র্য জাদুঘর’-এর ওপর রয়েছে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। এবারের বিদেশি প্রতিবেদনে রয়েছে পবিত্র মদিনা শরীফের একটা ব্যতিক্রমী রাস্তা। ‘ইত্যাদি’তে এবার মূল গান রয়েছে দু’টি।
সেসবের একটি গেয়েছেন কক্সবাজারের সৈকত শিল্পী জাহিদ এবং তার সঙ্গে গেয়েছেন চট্টগ্রামেরই সন্তান জনপ্রিয় শিল্পী রবি চৌধুরী। সঙ্গে ইউকিলিলি বাজিয়েছেন ইমরান। সাগর নিয়ে একটি পুরনো জনপ্রিয় গান ধারণ করা হয় সমুদ্র সৈকতে। গানটিতে অভিনয় করেছেন অভিনয় তারকা তারিন ও মীর সাব্বির। এছাড়াও রয়েছে চট্টগ্রামের শিল্পী মিঠুন চক্র ও ইমতিয়াজ আলী জিমির পরিবেশনায় যন্ত্র সংগীতের লীলামুখর খেলা-সাগর সংলাপ। ঢেউ আর যন্ত্রের তালে ব্যতিক্রমী এই যন্ত্রসংগীতটি দর্শকদের ভিন্ন স্বাদ দেবে। অনুষ্ঠানের দর্শক পর্বে এবার কক্সবাজারকে ঘিরে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে হাজার হাজার দর্শকের মাঝখান থেকে ৬ জন দর্শক নির্বাচন করা হয়। ২য় পর্বে সাগর নিয়ে তিনটি খণ্ড নাট্যাংশে তারা অভিনয় করেন, যা ছিল বেশ উপভোগ্য। নিয়মিত পর্বসহ এবারও রয়েছে বিভিন্ন সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু সরস অথচ তীক্ষ্ন নাট্যাংশ। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। অনুষ্ঠানটি স্পন্সর করেছে যথারীতি কেয়া কস্‌মেটিকস্‌ লিমিটেড।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest