সর্বশেষ সংবাদ-

ট্রান্সপোর্ট শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় ভোমরা বন্দরে শ্রমিক সংগঠনগুলোর কর্মবিরতি

আসাদুজ্জামান: ট্রাক মালিক সমিতির চাঁদাবাজি ও এক ট্রান্সপোর্ট শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দর সিএন্ডএফ কর্মচারী এ্যাসোসিয়েশনসহ সকল কর্মচারী সংগঠন তাদের কার্যক্রম বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করছে। এর ফলে বুধবার সকাল থেকে বন্দরের আমদানী-রপ্তানী কার্যক্রম কার্যত ব্যাহত হচ্ছে।
ভোমরা স্থল বন্দর সিএন্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, ট্রাক মালিক সমিতির বেপরোয়া চাঁদাবজির প্রতিবাদ করায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ট্রান্সপোর্ট শ্রমিক রুস্তম আলীকে বেদম মারধর করেন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামসহ তার লোকজন। এরই প্রতিবাদে ভোমরা স্থল বন্দরের সিএন্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনসহ বন্দরের সকল সংগঠন এক যৌথ সভায় তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তিনি আরো জানান, এর ফলে ভোমরা স্থল বন্দরের আমদানী-রপ্তানী কার্যক্রম কার্যত ব্যাহত হচ্ছে।
ভোমরা স্থল বন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শওকাত হোসেন জানান, ট্রাক মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলামসহ যারাই এই মারধরের ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত এবং ট্রাক মালিক সমিতির বেপরোয়া চাঁদাবাজি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলবে।
ভোমরা স্থল বন্দর শুল্ক স্টেশনের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা বিকাশ বড়–য়া জানান, শ্রমিকদের কর্মবিরতির বিষয়টি আমার জানা নাই। তবে, বন্দরের আমদানী-রপ্তানী কার্যক্রম প্রতিদিনের ন্যায় যথারীতি চলছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কলারোয়া বেত্রবতী হাইস্কুলে আর্সেনিক ও আয়রনমুক্ত পানি প্রকল্প’র উদ্বোধন

কলারোয়া প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কলারোয়া বেত্রবতী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আর্সেনিক ও আয়রনমুক্ত পানি (এআইআরপি) প্রকল্প’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টায় কলারোয়া পৌরসভা ও ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন’র বাস্তবায়নে ওয়াটার এইড, বাংলাদেশের আর্থিক সহযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে এ প্লান্ট’র উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভীন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষক সাংবাদিক রাশেদুল হাসান কামরুল। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলারোয়া পৌরসভার মেয়র গাজী আকতারুল ইসলাম, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন’র প্রকল্প প্রধান কলিমউল্লাহ কলি, কলারোয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ জুলফিকারুজ্জামান জিল্লু, সাংবাদিক এমএ সাজেদ, পৌর কাউন্সিলর লুৎফুন্নেছা লুতু, এসএমসি সদস্য শাহাদাৎ হোসেন, আহ্ছানিয়া মিশন’র কলারোয়া ব্যবস্থাপক বিপ্লব হোসেন।
উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীনসহ অতিথিবৃন্দ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এক সমাবেশে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। প্রধান অতিথি শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস ও শৃংখলা দেখে সন্তোষ্টি প্রকাশ করেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন’র নাজনিন সুলতানা, সহকারী শিক্ষক মাওলানা আব্দুদ দাইয়ান, আবুবকর ছিদ্দীক, মশিউর রহমান, নাছরিন সুলতানা, আনারুল ইসলাম, তজিবুর রহমান, জাকিয়া পারভীন, সাইফুল আলম, সমীর কুমার সরকার, রীনা রাণী পাল, দেবাশীষ সরদার, এসিটি ইসমাইল হোসেন, অফিস সহকারী আমিরুল ইসলাম, ফারুক হোসেন, পানির প্লান্ট’র কেয়ারটেকার আবুল খায়ের প্রমুখ।
উল্লেখ্য, কলারোয়া পৌরসভার আমাদের কলারোয়া প্রকল্প’র উদ্যোগে আর্সেনিক আয়রন দূরীকরণ এ (এআইআরপি) প্লান্টটির মোট নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ১লক্ষ ৫৪ হাজার ৮শ ৩৯ টাকা। যার মধ্যে প্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া হয় ৮ হাজার টাকা

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
৬০ বছরের বৃদ্ধাকে গণধর্ষণের পর হত্যা

গণধর্ষণের পর হত্যা। তাও আবার ৬০ বছরের বৃদ্ধাকে। এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতের সোনারপুরের চকবেড়িয়াতে। বুধবার সকালে একটি বাগান থেকে ওই বৃদ্ধার অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে সোনারপুর থানা পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই বৃদ্ধার বয়স ৬০ বছরের ওপর। মঙ্গলবার থেকেই ওই বৃদ্ধা নিখোঁজ ছিলেন। বুধবার সকালে চকবেড়িয়ার এক বাগানের ঝোপ থেকে ওই বৃদ্ধার বিকৃত দেহ উদ্ধার করা হয়। বৃদ্ধার মুখ ইঁট দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়েছিল। মুখে কাপড় বাঁধা ছিল বলেও জানা গেছে।

স্থানীয়দের দাবি, যে বাগান থেকে মরদেহ উদ্ধার হয়েছে ওখানে প্রায়ই অসামাজিক কাজকর্ম চলে। তবে কী কারণে ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করাও শুরু করে দিয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য স্থানীয় হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
নিয়মিত পপকর্ন খেলে বাড়তে পারে আয়ু

পপকর্ন খেতে আমরা অনেকেই ভালবাসি। আর সেই হাতে গরম পপকর্ন যদি পাওয়া যায় সিনেমা হলের মধ্যে তবে তো আর কথাই নেই। কারণ সিনেমা হলের অন্ধকার ঘরই আমাদের মতো পপকর্ন প্রেমীদের কাছে পপকর্ন খাওয়ার আদর্শ জায়গা।

যদিও আমরা প্রায় প্রত্যেকেই কখনও না কখনও শুনেছি এসব জাঙ্ক ফুড খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক এবং এগুলো নাকি বিভিন্ন ভাবে আমাদের শরীরের যন্ত্রগুলোকে বিকল করে দেয়। কিন্ত তাও সব কথা অমান্য করে আমরা আমাদের মতো পপকর্ন খেয়ে যাই।

এবার আমাদের বার্তা সেইসব পপকর্ন প্রেমীদেরই জন্য, এবার থেকে পপকর্ন যখন খাবেন চেষ্টা করবেন চিজ মেশানো মাইক্রোওয়েভড পপকর্ন না খেয়ে, নর্মাল মসলা ছাড়া পপকর্ন খেতে। এমনকি যারা পপকর্ন খান না তাদেরও বলব, আজ থেকে আপনার খাদ্য তালিকায় অবশ্যই পপকর্ন রাখুন। দেখবেন এই মসলা ছাড়া পপকর্ন আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে ম্যাজিকের মতো কাজ করবে। ভাবছেন কীভাবে?

পপকর্নের মধ্যে আছে ১০০% দানা শস্য, যা আপনার শরীরে ফাইবারের যোগান দেয় আর এই ফাইবার আন্ত্রিক গোলয়োগ দূরে রাখে। এমনকি যারা কোষ্টকাঠিন্য বা গ্যাসট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্যও পপকর্ন অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও পপকর্নের মধ্যে যে ফাইবার থাকে তা আমাদের রক্তের বাড়তি কোলেস্টেরলকে সরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে, যা হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাকে অনেক অংশে কমিয়ে দেয়।

তাছাড়াও পপকর্নের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পলিফেনস নামক অ্যান্টিঅক্সিড্যন্ট থাকে। যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে ক্যান্সারের জীবাণুকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে এবং পপকর্নের মধ্যে থাকা অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলো চুল পড়া, বয়সকালে চামড়ায় ভাজ পড়ার মতো সমস্যাগুলো রুখতে সাহায্য করে।

আর সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো এরমধ্যে কোনও রকম ফ্যাটযুক্ত জিনিস না থাকায় এটি কোনওভাবেই আপনার ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে না বরং আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে পপকর্ন রাখলে সেটা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। তাই আজই চিপস বা অন্যান্য জাঙ্ক ফুড খাওয়া ছাড়ুন আর আপনার খাদ্য তালিকায় পপকর্নের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাবারকে অবশ্যই রাখুন। এতে আপনি সুস্থ এবং ঝরঝরেভাবে বাঁচবেন বহুকাল।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
৬ মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন দিতে হবে : হাইকোর্ট

আগামী ছয় মাসের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ জন শিক্ষার্থীর দায়ের করা রিটের শুনানি শেষে এই আদেশ দেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এর আগে, ২০১২ সালে ডাকসু নির্বাচন চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ জন শিক্ষার্থী রিট দায়ের করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল ডাকসু নির্বাচন দিতে রুল জারি করেন আদালত। সেই রুলের দীর্ঘ শুনানি শেষ হয় গতকাল মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি)। শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য আজ বুধবার দিন ধার্য করেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ডিএনসিসি’র উপনির্বাচন স্থগিত করলেন আদালত

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) উপনির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রিট আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আজ বুধবার এ আদেশ দেন আদালত। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে ডিএনসিসি’র নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন ওয়ার্ড হিসেবে যুক্ত হওয়া ভাটারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ও বেরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম।

আদালতে রিটকারীদের আইনজীবী হিসেবে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান ও আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। তাদের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আহসান হাবিব ভূঁইয়া। অন্যদিকে,  রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।

 রিটে প্রধান নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় সরকার সচিব, উত্তর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়রকে বিবাদী করা হয়েছে। অপর রিটটিতে প্রধান নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন কমিশন সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব ও নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিবকে বিবাদী করা হয়।

রিটে তারা যুক্তি দেখান, গত ৯ জানুয়ারির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৮ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। এখন যিনি প্রার্থী হবেন তিনি কিন্তু জানেন না তিনি ভোটার কিনা। তাছাড়া মনোনয়নপত্রে ৩০০ ভোটারের স্বাক্ষর থাকতে হবে। ভোটার তালিকা প্রকাশ না হলে সেটাও সম্ভব নয়।

আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপনির্বাচন হবে। একই দিনে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নবগঠিত ৩৬টি সাধারণ ও ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদেও ভোটগ্রহণ করা হবে। গত ৯ জানুয়ারি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় আগামী ১৮ জানুয়ারি। আর মনোনয়নপত্র বাছাই ২১ ও ২২ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৯ জানুয়ারি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে উপনির্বাচনের ৫৪টি ওয়ার্ডে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা এক হাজার ৩৪৯, ভোটকক্ষ সাত হাজার ৫১৬টি, মোট ভোটার ২৯ লাখ ৪৮ হাজার ৫১০। আর ডিএনসিসি’র উপনির্বাচনে ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৫ লাখ ৭১ হাজার ৬৮৪।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
যশোর রোডের ভারতীয় অংশে গাছ টিকে আছে আদালতের স্থগিতাদেশে

বাংলাদেশের দিকে যশোর রোডে বহু প্রাচীন গাছ কেটে ফেলে যখন রাস্তা চওড়া করার পরিকল্পনা হচ্ছে আর তা নিয়ে বিরোধীতা করছেন পরিবেশবিদরা, তার বেশ কিছুদিন আগে পশ্চিমবঙ্গের দিকেও ওই রাস্তায় শতাব্দী প্রাচীন গাছগুলি কেটে ফেলে রাস্তা চওড়া করার পরিকল্পনা নিয়েছিল সেখানকার সরকার।

কিন্তু পরিবেশবাদী এবং স্থানীয় মানুষের বিরোধীতায় বিষয়টি এখন আদালতে গড়িয়েছে। গাছ কাটার ওপরে জারি হয়েছে স্থগিতাদেশ।

গাছগুলিকে না কেটেই রাস্তা যশোর রোড চওড়া করা যেতে পারে বলে মত পরিবেশবিদ ও স্থানীয় মানুষের। তারা এই কয়েক হাজার গাছকে ঐতিহ্যশালী তকমা দেওয়ারও দাবী জানিয়েছেন।

দমদম বিমানবন্দরের পরে বারাসাত শহর ছাড়িয়ে কিছুটা এগোলেই যশোর রোডের ওপরে ছাতার মতো বিছিয়ে থাকে কয়েক হাজার প্রাচীনগাছের পাতা – ডালপালা। এই রাস্তা তৈরী হওয়ার পর থেকে একসময়ে গোটা রাস্তাতেই গাছের ছায়া থাকত.. কিন্তু নগরায়নের জন্য আগেই কেটে ফেলা হয়েছে অনেক গাছ।

তবুও পেট্রাপোল স্থল বন্দর অবধি রয়েছে চার হাজার ৩৬টি গাছ, সেগুলিকে মহীরূহ বলাটাই শ্রেয়।

আবার যশোর রোড চওড়া করার দাবীও অনেকদিনের – যাতে বারাসাত থেকে বনগাঁ পর্যন্ত গাড়ির যাতায়াত আর পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহজতর হয়ে ওঠে।

সেই জন্যই পশ্চিমবঙ্গ সরকার পরিকল্পনা করেছিল গাছগুলি কেটে ফেলে চওড়া হবে রাস্তা।

কিন্তু বনগাঁর বাসিন্দা অজয় মজুমদারের মতো কিছু মানুষ বিরোধীতা শুরু করেন। মামলাও দায়ের হয়।

মজুমদার বলছিলেন, “আমরা কখনই রাস্তা চওড়া করার বিরোধী নই। আমরা শুধু বলেছিলাম গাছগুলোকে না কেটে পাশ দিয়ে রাস্তা হোক। বাঁধানো রাস্তা তো মিটার পাঁচেক, কিন্তু তার পাশে আরও প্রায় কুড়ি মিটার মতো জমি রয়েছে। যেভাবে সীমান্তের কাছে ভারতের দিকে শেষ দু কিলোমিটার রাস্তা হয়েছে – মাঝখানে গাছও আছে, আর পাশে রাস্তাও হয়েছে – সেভাবেই পরিকল্পনা করা যায়। সেটা আমরা হাইকোর্টকেও জানিয়েছি।”

পুরো রাস্তা চওড়া করার পরিকল্পনার বদলে প্রথমে যশোর রোডের ওপরে ৫টি উড়ালপুল তৈরীর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার জন্য প্রায় সাড়ে তিনশো গাছ প্রথমেই কাটতে হবে।

ভারতের আইন অনুযায়ী কোনও উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য গাছ যদি একান্ত কাটতেই হয়, তাহলে প্রতিটি গাছের বিকল্প পাঁচটি করে গাছ লাগাতে হবে।

মজুমদার এবং কয়েকটি সংগঠনের করা মামলার ভিত্তিতে হাইকোর্ট খতিয়ে দেখতে বলে, যে গাছ কাটা হলে আইন অনুযায়ী প্রতিটি গাছের জন্য পাঁচটি করে গাছ লাগানোর জায়গা আছে কী না।

তবে মামলাকারী সংগঠনগুলির অন্যতম, এ পি ডি আরের নেতা মানস দাসের কথায়, সেই বৃক্ষরোপনের সেই বিকল্প জায়গা দেখাতে পারে নি সরকার।

“বারাসাত থেকে বনগাঁ পর্যন্ত চারদিন ধরে হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটি রাস্তার সার্ভে করেছিল। তখন সরকার যে বিকল্প গাছ লাগানোর জায়গা দেখিয়েছে, সেগুলো যে উপযুক্ত জায়গা নয়, তা কমিটির রিপোর্টেই আছে,” বলছিলেন মি. দাস।

দাস জানাচ্ছিলেন গাছ না কাটার আবেদন জানানোর সঙ্গেই তাঁরা আদালতের কাছে এই আর্জিও জানিয়েছেন যে দেড়শো বছরেরও প্রাচীন ওই গাছগুলিকে হেরিটেজ বলে ঘোষণা করা হোক।

পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত-ও মনে করেন যশোর রোড শুধু একটা রাস্তা নয় – এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাস আর ঐতিহ্য।

“আগে যখন আমরা পেট্রাপোল সীমান্ত অবধি যেতাম, গোটা রাস্তার ওপরে তাঁবুর মতো হয়ে থাকত গাছগুলো। আসলে গাছের তো ভোটাধিকার নেই, তাই ওগুলো কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা খুব সহজ। কিন্তু কোনও রাজনৈতিক দলই চায় না যে ভোট দেয় যারা – সেই জবরদখলকারীদের সরিয়ে ভোটব্যাঙ্কের ক্ষতি করতে। অথচ রাস্তা চওড়া করার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করাই যেত। যশোর রোড তো নিছক কোনও রাস্তা নয় – এর পেছনে রয়েছে ইতিহাস, ঐতিহ্য। সেটা রক্ষা করতে পারলে পৃথিবীর কাছে একটা উদাহরণ হয়ে উঠত,” বলছিলেন সুভাষ দত্ত।

তবে উত্তর চব্বিশ পরগণার জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলছিলেন ৫টি উড়ালপুলের জন্য যে গাছ কাটা পড়বে, তার বিকল্প বৃক্ষায়ণের জন্য জায়গা তৈরী আছে। যেসব এলাকায় দখলদার হঠাতে হবে, তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা করেছে সরকার।

“আমাদের সরকার উচ্ছেদ করে কোনও উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা করবে না – এটাই নীতি। তাই যাদের দোকানপাট রয়েছে রাস্তার ধারে, তাদের কয়েকটা জায়গায় বাড়ী তৈরী করে দেওয়া হবে। আর বিকল্প হিসাবে যে গাছ লাগানোর কথা, সেই জায়গাও আমাদের তৈরী রয়েছে। কিছু পরিবেশবিদ আর এন জি ও এই কাজে বাধা তৈরী করার চেষ্টা করছে,” বলছিলেন মল্লিক।

মন্ত্রী এটাও জানালেন যে প্রথমে ৫টি উড়ালপুলের পরিকল্পনা তৈরী হলেও এরপরে বারাসাত থেকে পেট্রাপোল পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার রাস্তা গোটাটাই ৪ লেনের রাস্তা হবে – এবং তার জন্য প্রায় চার হাজার গাছ কাটতে হবে। বিবিসি বাংলা

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের চুক্তির বিষয়ে চারটি গভীর সংশয়

বাংলাদেশ আর মিয়ানমারের সরকার রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রত্যাবাসনের জন্য এক চুক্তি করেছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক বিবিসিকে জানিয়েছেন, চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমার প্রতিদিন তিনশ করে প্রতি সপ্তাহে ১৫শ রোহিঙ্গাকে ফেরত নেবে এবং দুই বছরের মধ্যে এই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শেষ করা হবে।

তবে কবে থেকে এই প্রত্যাবাসন শুরু হবে, সেটি এখনও নিশ্চিত নয়।

গত বছর ২৫শে আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক বাহিনীর এক অভিযান শুরুর পর থেকে থেকে এ পর্যন্ত ছয় লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

তাদের কাছে শোনা গেছে হত্যা, ধর্ষণ, ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ভয়াবহ সব বর্ণনা।

জাতিসংঘ একে এথনিক ক্লেনজিং বা জাতিগত নির্মূল অভিযানের একটি দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেছে। মিয়ানমার অবশ্য তা অস্বীকার করেছে।

এর পর ব্যাপক আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এই রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেবার জন্য বাংলাদেশ-মিয়ানমার আলোচনা শুরু হয় নভেম্বর মাসে।

তবে এই চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে প্রধান সংশয় রয়েছে চারটি, বলছেন বিশ্লেষকরা।

চুক্তিতে কী আছে?

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেকে বলেছেন, চুক্তিতে কি আছে তা নিয়ে তারা তেমন কিছুই জানেন না।

বিবিসির সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, দু দেশই একমত হয়েছে যে এই প্রত্যাবাসন হবে স্বেচ্ছামূলক।

মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব উ মিন্ট থু বলেছেন, প্রত্যাবাসন শুরু হবে ২৩শে জানুয়ারি।

পরিস্থিতি কি নিরাপদ?

মানবাধিকার সংস্থা এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গবেষক লরা হাই বলছেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি রোহিঙ্গাদের ফিরে যাবার মতো নিরাপদ নয়।

বিবিসির সংবাদদাতা জোনাথন হেড বলেন, রোহিঙ্গারা বলছে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে, বাড়িঘর পুননির্মাণ হলে এবং নিপীড়ন বন্ধ হলেই তারা মিয়ানমারে ফিরবে। তবে তেমন অবস্থা এখনো তৈরি হয় নি।

ত্রাণ সংস্থাগুলোরও এ নিয়ে গভীর সংশয় রয়েছে।

ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ এবং মানবাধিকার কর্মী রোজেনা এলিন খান বলছেন, উপযুক্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো মানে তাদের মৃত্যুর মুখে আবার ঠেলে দেয়া।

রোহিঙ্গারা কি কখনো নাগরিকত্ব পাবে?

রোহিঙ্গা নেতা সিরাজুল মোস্তফা বলছেন, আমাদের প্রথম চাওয়া হলো নাগরিকত্ব।

এটা কি কখনো হবে?

বৌদ্ধ প্রধান মিয়ানমারের সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয় না, এবং তাদের ২০১৪ সালের জনগণনাতেও অন্তর্ভক্ত করা হয়নি। তাদেরকে আসলে মিয়ানমারের বাসিন্দা বলেই স্বীকার করা হয় না।

তাদের বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী বলে মনে করা হয়। নতুন চুক্তিতেও তাদের নাগরিকত্ব পাবার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

বাংলাদেশও তাদের স্বীকৃতি দিচ্ছে না। শরণার্থী শিবিরে জন্মানো শিশুদের জন্মের সনদপত্র দেয়া হচ্ছে না।

রোহিঙ্গারা কি তাদের জমি ফেরত পাবে?

সিরাজুল মোস্তফার কথা, “তাদেরকে আমাদের জমি ফিরিয়ে দিতে হবে।”

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে কমপক্ষে ৩৫৪টি রোহিঙ্গা গ্রাম পুরো বা আংশিক পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

রোহিঙ্গারা কি এ জমি ফেরত পাবে, বা তারা কি প্রমাণ করতে পারবে যে এ জমি তাদের ছিল?

মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন চুক্তি তাদের আবাসনের কথা আছে, ফেরার পর তাদের নির্মাণাধীন ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হবে।

উ মিন্ট আরো বলেছেন , তারা ‘নতুন গ্রাম’ তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছেন। নতুন গ্রামের কথায় মনে হতে পারে যে রোহিঙ্গাদের পুরোনো জমি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি নেই।

সূত্র: বিবিসি বাংলা।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest