নিজস্ব প্রতিবেদক : বিগত সালের হুবহু প্রশ্ন পত্রে এবারও ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হলো। এবিষয়ে অবশ্য উপজেলা পরীক্ষা পরিচালনা ও সমন্বয় কমিটির দায়িত্বে অবহেলা ও অস্বচ্ছতাকেই দোষারোপ করছেন সচেতন মহল।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে সদর উপজেলার ২য় শ্রেণির পরীক্ষার গণিত প্রশ্ন কোন রকম না পাল্টে হুবহু ওই প্রশ্ন পত্রে ২০১৭ সালের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। সেখানে পাল্টানো হয়েছে শুধু মাত্র গত বছরের প্রশ্নে ছিলো প্রশ্নেই উত্তর লিখতে হবে। আর এবছর উত্তর লিখতে হবে আলাদা উত্তরপত্রে।
এদিকে নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষা পরিচালনা কমিটি ৭টি ক্লাস্টার থেকে ৭টি প্রশ্ন নিয়ে মডারেশন করে প্রশ্নপত্র তৈরি করতে হবে। কিন্তু সদর উপজেলা উপজেলা পরীক্ষা পরিচালনা ও সমন্বয় কমিটি সে নিয়ম না মেনে গত বছরের প্রশ্নপত্রের শুধু মাত্র সাল পরিবর্তন করে গত বছরের প্রশ্নেই ১৭ ডিসেম্বর পরীক্ষা নেওয়া হয়। বিষয়টি সচেতন অভিভাবকদের নজরে আসলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। অনেকেই ইতোমধ্যে উক্ত কমিটির সদস্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগও দায়ের করেছেন।
এবিষয়ে জেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ও পরীক্ষা পরিচালন কমিটির সিনিয়র সদস্য সন্দীপ কুমার এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ভুল হয়েছে এটা সঠিক। তবে এতে শিক্ষার্থীদের কোন ক্ষতি হয়নি। কারন গত বছর যে শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলো এবছর সে দেয়নি। কেন এমন ভুল হল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রশ্ন মডারেট করেন শিক্ষকরা। তারা কিভাবে এভুল করলো আমরা তদন্ত করে বিষয়টি দেখবো।

শুরু থেকেই তারা নিবন্ধনের শর্ত ভেঙে লক্ষ লক্ষ টাকার কথিত বৃত্তি বাণিজ্য চালিয়ে আসছিল সাতক্ষীরার হাজার হাজার স্কুল পড়–য়া শিশুদের নিয়ে। নিবন্ধনের শর্তে স্পষ্টতই বলা আছে, সেবা প্রদানের বিনিময়ে এই সংস্থা কোন প্রকার ফিস গ্রহণ করতে পারবে না। অথচ কথিত বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য মাথাপিছু ১৫০ টাকা করে প্রত্যেক শিশু পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে গ্রহণ করে স্টাফ। বিনিময়ে এককালীন ট্যালেন্টপুলে ৬০০ ও সাধারণ গ্রেডে ৪০০ টাকা করে বৃত্তি দেয়। অর্থাৎ মাছের তেলে মাছ ভেজেও বিপুল পরিমাণ উদ্বৃত্ত পরীক্ষা কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্টরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়। উপড়ি হিসেবে থাকে সমাজের বিত্তশালীদের নিকট থেকে গ্রহণ করা অনুদান। আর এই অনৈতিক কার্যক্রমে এদেরকে মদদ দেয় বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন ও সরকারি-বেসরকারি স্কুলের কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত শিক্ষকরা। ৪ দলীয় জোট সরকারের পতনের পর এরাও গিরগিটির মত রং বদলে আওয়ামীলীগ সরকারের বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীদের উপর ভর করতে শুরু করে। তাদেরকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি করা, পরিচালনা কমিটিতে স্থান দিয়ে সম্মানিত করাÑ ইত্যাদির মাধ্যমে তারা নিজেদের রাজনৈতিক পরিচয় ও অনৈতিক কার্যকলাপকে আড়াল করার চেষ্টা করে। সম্প্রতি দেশের একটি শীর্ষ ও প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা যেটিকে সরকারে চোখ ও কান বলা হয় তাদের সাতক্ষীরা অফিসের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। সংস্থাটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১৩ আগস্ট’১৭ তারিখে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে ০৩.০৭৯.০১৬.০৪.০০১২.০২০১৬-৮৪৪(৩) নং স্মারকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়কে স্টাফের সকল কার্যক্রম স্থাগিত করে এর নিবন্ধন বাতিলে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ১৬ নভেম্বর ’১৭ তারিখে ৪১.০০.০০০০.০৩৪.০০১.১৫.১৬-১১৮৮ নং স্মারকে সাতক্ষীরা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়কে স্টাফ এর সকল কার্যক্রম স্থগিত করে তাদের নিবন্ধন বাতিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়। এর সূত্রে সাতক্ষীরা জেলা সমাজসেবা কার্যালয় গত ৭ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে ৪১.০১.৮৭০০.০০০.২৭.০০৬.১২ নং স্মারকে স্টাফ’র চেয়ারম্যান/সেক্রেটারিকে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়।
