ভোমরা বন্দরে বাংলাদেশ-ভারত সংযোগ সড়কের উপর কালভার্ট নির্মাণ কাজ বিএসএফের বাঁধার বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ও ভারতের সংযোগ সড়কের উপর নির্মিত কালভার্টের কাজ বিএসএফের বাঁধার মুখে বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে হুমকির মুখে বাংলাদেশী সীমানায় এ কালভার্টটি ভেঙ্গে যে কোন সময় ভোমরা স্থল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্য্যক্রম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য বিজিবির মাধ্যমে বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার বরাবর পত্র পাঠানো হলেও আজও কোন জবাব পাওয়া যায়নি। জেলা প্রশাসক বলছেন, বিষয়টি নিরসনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, আগামী ১০/১২ দিনের মধ্যে আবারও কাজ শুরু করা যাবে।
বন্ধর সংশ্লিষ্ট শ্রমিক, কর্মচারী ও ব্যবসায়ী গন ব্রীজটি দ্রুত পুনঃনির্মান করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েন। অন্যথায় একদিকে যেমন হাজার হাজার শ্রমিক, কর্মচারী বেকার হয়ে পড়বে, তেমনি ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কাস্টমস্ রাজস্ব কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেছেন, আমদানি-রপ্তনির পরিমান অর্ধেকে নেমে এসেছে। যে কারনে রাজস্ব আদায় ব্যাহত হচ্ছে। আগামীতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পুরন নিয়ে উদ্বিগ্ন কাস্টম।
মোঃ মুনহ্জুরুল কবির, নির্বহী প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপদ বিভাগ, মোঃ মুনহ্জুরুল কবির, জানান ভোমরা কানেক্টেট বাইপাস সড়ক সহ ১৭টি কালভার্ট নিমানের কার্যাদেশ গত মার্চ মাসে দেওয়া হয়েছে। আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ রয়েছে। তবে ভোমরা স্থল বন্দরের ওই তিন বেন্টের কালভার্টটি নির্মান করতে দুই মাস লেগে যাবে।
জেলা প্রশাসক, সাতক্ষীরা আবুল কাসেম মোঃ মহিউদ্দীন, জানান ভারতীয় বিএসএফের বাঁধার মুখে কাজটি বন্ধ রয়েছে স্বীকার করে জানান, আগামী ১০/১২ দিনের মধ্যে বিষয়টি নিরসন হয়ে যাবে।

গত ৪মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ২০৯ কোটি টাকা নির্ধারন করা হয়। সেখানে আদায় হয়েছে, ২১৩ কোটি টাকা টাকা। ৪ কোটি টাকা বেশী আদায় হলেও বর্তমানে রাজস্ব আদায় নিয়ে সংশয় বেঁধে দেখা দিয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সিংহাসন ছাড়ছেন সৌদি বাদশাহ!

সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ পদত্যাগ করার পরিকল্পনা করছেন। আগামী সপ্তাহে তিনি পদত্যাগ করে তাঁর ছেলে ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানকে নতুন বাদশাহ ঘোষণা করবেন।
ছেলেকে ক্ষমতা দিয়ে ৮২ বছর বয়সী সালমান আলংকারিকভাবে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং পবিত্র স্থানগুলোর (মক্কা-মদিনা) তত্ত্বাবধায়ক থেকে যাবেন। রাজপরিবারটির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল অনলাইন এ দাবি করেছে।

গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ডেইলি মেইলের ‘এক্সক্লুসিভ’ প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, চলতি মাসের শুরুতে রাজপরিবারের ৪০ জন যুবরাজ ও মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার নির্দেশ দিয়ে ক্ষমতা গ্রহণের চূড়ান্ত পদক্ষেপটি নেন ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমান। আর বাদশাহর দায়িত্ব নিয়েই প্রথমে শত্রুরাষ্ট্র ইরানের মনোনিবেশ করবেন তিনি। শিয়া দেশটিকে শায়েস্তা করতে এরই মধ্যে ইসরায়েলকে জোট বাঁধার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছেন সম্ভাব্য বাদশাহ মুহাম্মদ বিন সালমান, যাঁকে পশ্চিমা গণমাধ্যম সংক্ষেপে ‘এমবিএস’ লিখে থাকে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘যদি নাটকীয় কিছু না ঘটে, তাহলে বাদশাহ সালমান আগামী সপ্তাহে এমবিএসকে সৌদি আরবের বাদশাহ হিসেবে নিয়োগের ঘোষণা দেবেন। আর পদত্যাগের পর বাদশাহ সালমান ইংল্যান্ডের রানির মতো (আলংকারিক রাষ্ট্রপ্রধানের) দায়িত্ব পালন করবেন। তবে তিনি বর্তমান উপাধি ‘পবিত্র স্থানগুলোর জিম্মাদার’ পদে থেকে যাবেন।

৩২ বছর বয়সী মুকুটধারী যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) চলতি মাসের শুরুতে সিংহাসনে বসার পথে চূড়ান্ত পদক্ষেপ হিসেবে ৪০ জন যুবরাজ ও মন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।
তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত চলছে। গ্রেপ্তারের পর তাঁদের রাজধানী রিয়াদের বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেল রিজ কার্লটন হোটেলে রাখা হয়েছে। প্রকাশিত একটি স্থিরচিত্রে দেখা গেছে, ওই হোটেলের মেঝেতে বিছানার চাদরহীন খালি তোশকে ঘুমিয়ে আছেন বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত রাজপরিবারের সদস্যরা।

রাজপরিবারের শীর্ষস্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে ডেইলি মেইল দাবি করেছে, ‘যুবরাজ মুহাম্মদ বাদশাহর দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি মনোযোগ ঘুরিয়ে দেবেন ইরানের দিকে। মধ্যপ্রাচ্যের তেলসাম্রাজ্যে সৌদি আরবের দীর্ঘদিনের শত্রু ইরানকে তিনি শায়েস্তা করতে চান। আশঙ্কা রয়েছে, তিনি ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। ’ মুহাম্মদ এ জন্য ইসরায়েলকে নিজেদের পক্ষভুক্ত করতে চান। তাঁর ইচ্ছা ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সহায়তায় ইরান সমর্থিত লেবাননি মিলিশিয়া হিজবুল্লাহকে ধ্বংস করা।

রাজপরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রটি ডেইলি মেইলকে বলেছে, “এমবিএস মনে করেন, তাঁকে অবশ্যই ইরান ও হিজবুল্লাহর ওপর আঘাত হানতে হবে। আর এমবিএস তাঁর এই পরবর্তী টার্গেটের জন্য রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের পরামর্শও উপেক্ষা করছেন। তাঁর এই চরিত্রের কারণেই কুয়েতের শাসক একবার তাঁকে ‘অদম্য ষাঁড়’ বলেছিলেন। ”

এমবিএস লেবাননে হামলার পরিকল্পনা করছেন। তবে এ জন্য তিনি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সহায়তা নিতে চান। এরই মধ্যে তিনি ইসরায়েলকে কয়েক কোটি ডলারের একটি প্রস্তাব দিয়েছেন, যদি রাজি হয়। কারণ এমবিএস ইসরায়েল ছাড়া লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ করতে রাজি নন। আর তাঁর প্ল্যান বি (দ্বিতীয় পরিকল্পনা) হচ্ছে সিরিয়ায় হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ করা।

গত সপ্তাহে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সৌদি টেলিভিশনে বিবৃতির মাধ্যমে পদত্যাগ করেন। ধারণা করা হচ্ছে, যুবরাজ মুহাম্মদ ডেকে এনে তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করেছেন। সৌদি টেলিভিশনে সাদ আল হারিরি ওই পদত্যাগী ভাষণে বলেছিলেন, তিনি গুপ্তহত্যার আশঙ্কায় রয়েছেন। এ জন্য তিনি ইরান ও হিজবুল্লাহকে অভিযুক্ত করেন। গত ৪ নভেম্বর রাজধানী রিয়াদে একটি ব্যর্থ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়; যদিও ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়েনি।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১২ নভেম্বর ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সৌদি বাদশাহ সালমানের সিংহাসন ত্যাগের গুজব সত্য নয়। সৌদি সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ব্লুমবার্গে একটি চিঠির জবাবে বলেছিলেন, ৮২ বছর বয়সী বাদশাহ সালমান ‘যথাযথ’ শারীরিক স্বাচ্ছন্দ্য উপভোগ করছেন। তিনি বলেন, যারা এ ধরনের কথা বলে তারা রাজকীয় রীতি-নীতি বোঝে না।

অর্থের বিনিময়ে মুক্তি পাচ্ছেন যুবরাজরা : সৌদি সরকারের একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সৌদি কর্তৃপক্ষ দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত যুবরাজ, মন্ত্রী, ব্যবসায়ী ও ধনকুবেরদের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছতে কাজ করছে। সৌদি সরকার তাঁদের কাছে মুক্তির বিনিময়ে সম্পদ ও নগদ অর্থ চেয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে যুবরাজ আলওয়ালিদ বিন তালালও রয়েছেন। তিনি রাজপরিবারের সুপরিচিত ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের একজন।

সূত্র মতে, এরই মধ্যে একজন ব্যবসায়ীর চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে কয়েক লাখ সৌদি রিয়াল উত্তোলন করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও ব্যবসার কয়েক বিলিয়ন রিয়ালের শেয়ারের মালিকানা ছেড়ে দিতে সম্মত হয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে তাত্ক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া সমঝোতা চুক্তির কথাটি প্রকাশও করা হয়নি। এরই মধ্যে সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্নীতির অভিযোগে এ পর্যন্ত ২০৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সিলেট সিক্সার্সের পরাজয়ের ধারা অব্যাহত

এবারের আসরে টানা তিন ম্যাচ জিতে উড়ন্ত সিলেট সিক্সার্সের হঠাৎই যেন ছন্দপতন। সেখান থেকে এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি নাসির-সাব্বিরের দল।
শুক্রবারের ম্যাচে রাজশাহী কিংসের কাছে সিলেট তৃতীয় হারের স্বাদ পেল। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সিলেটের দেয়া ১৪৭ রানের লক্ষ্যটা ৭ উইকেট ও ১৫ বল হাতে রেখে টপকে গেছে রাজশাহী।

টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রাজশাহী কিংসের অধিনায়ক স্যামি। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে মাঠে দারুণভাবে যৌক্তিক প্রমাণ করেছেন রাজশাহীর বোলাররা। আঁটসাঁট বোলিংয়ে সিলেট সিক্সার্সকে ১৪৬ রানেই বেঁধে রাখেন মেহেদী হাসান মিরাজ-জেমস ফ্রাঙ্কলিনরা।

এদিন বাজে ভাবেই শুরুটা হয়েছিল সিলেটের। চোট কাটিয়ে ফেরা আন্দ্রে ফ্লেচারকে ম্যাচের প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেন মোহাম্মদ সামি। এরপর সামিকেই পরে এক ওভারে চার-ছক্কা মারেন উপুল থারাঙ্গা ও দানুশকা গুনাথিলাকা। কিন্তু অসাধারণ এক ডেলিভারিতে থারাঙ্গাকে বোল্ড করে দেন মেহেদি হাসান মিরাজ।

এই ম্যাচে চারে ব্যাট করার সুযোগ পান নুরুল হাসান সোহান। সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান। জীবন পেয়েও আরও একবার ব্যর্থ অধিনায়ক নাসির হোসেন। সিলেটের ভরসা হয়ে এক পাশ আগলে রেখেছিলেন গুনাথিলাকা। নাসিরের মত জীবন পেয়েছিলেন তিনিও। কিন্তু ফেরেন ৩৭ বলে ৪০ রান করে।

১৭ ওভার শেষে সিলেটের রান ছিল ৯২। রান খরায় থাকা সাব্বিরকে ব্যাটিং অর্ডার বদলে নামানো হয় ছয়ে। সেই সাব্বিরই শেষ ৩ ওভারে চালান তাণ্ডব। তাণ্ডবের শুরুটা টিম ব্রেসনানের হাতে। ফরহাদ রেজাকে ওড়ান লং অনের ওপর দিয়ে। ওই ওভারেই দুটি বিশাল ছক্কা, একটি চার মারেন সাব্বির। উনিশতম ওভারে সামিকে টানা দুই চার মারেন ব্রেসনান। শেষ ওভারে কেসরিক উইলিয়ামসকে টানা দুই ছক্কায় ওড়ান সাব্বির। পরের বলে আউট হন ২৫ বলে ৪১ রান করে। ব্রেসনান অপরাজিত থাকেন ১৭ বলে ২৯ করে। শেষ ৩ ওভারে সিলেট তোলে ৫৪ রান।

জয়ের জন্য ১৪৭ রানের লক্ষ্য ব্যাটিং করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই ৬৫ রান তুলে নেয় রাজশাহী কিংস। নবম ওভারে ২২ বলে ২৪ রান করে আউট হন রনি তালুকদার। পরের ওভারে সামিত প্যাটেলকে ফিরিয়ে খেলায় ফিরেছিল সিলেট। তবে উইকেটে বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যান মুমিনুল। জাকিরকে নিয়ে যোগ করেন ৩১ রান। ৩৬ বলে ৪২ রান করে মুমিনুল ফিরলেও বাকি কাজটুকু বেশ দায়িত্বের সঙ্গেই শেষ করেন মুশফিকুর রহিম ও জাকির। মুশফিক ২৫ ও জাকির ৫১ রান করে অপরাজিত থাকেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন বিল গেটসের স্ত্রীও!

মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের স্ত্রী মিলিন্দা গেটসও হয়েছিলেন যৌন হয়রানির শিকার। তার স্বামী বিল গেটসের সঙ্গে এই সেবামূলক কাজ শুরুর আগে তিনি মাইক্রোসফটে কাজ করতেন এবং বিষয়টি শিল্পক্ষেত্রে ব্যাপকভাবেই বিস্তৃত।

একটি সুইডিস সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকতার দিতে গিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন বিল গেটসের স্ত্রী। তিনি বলেন, কাজ করতে গিয়ে যৌন হয়রানির মত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। এই ঘটনা পশ্চিমা ও মার্কিন দুনিয়ায় রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রেই কিন্তু তার মধ্যে একটা প্রযুক্তি ক্ষেত্র। যুক্তরাষ্ট্রে সমান অধিকারের তথ্য ঘাটলে দেখা যাবে ৮৫ শতাংশ নারীই যৌন হয়রানির শিকার এবং আমার ক্ষেত্রেও বিষয়টি অন্যদের থেকে আলাদা নয়।

প্রসঙ্গত, উত্তর প্রদেশে জঞ্জাল সাফাই এবং নারীদের স্বাস্থ্যের জন্য কাজ করতে মিলিন্দা গেটস এবং বিল গেটস যারা এই সপ্তাহে ভারত ভ্রমণে এসেছিলেন। এই কাজের জন্য ফাউন্ডেশন ভারত সরকারের সঙ্গে জড়িত। গেটস ফাউন্ডেশন ভারতে বড় রকমের লগ্নি করলেও, মিলিন্দা গেটস জানিয়েছেন আর্থ-সামাজিক সূচকগুলোর উন্নতির জন্য বেসরকারি লগ্নি কখনও সরকারি বিনিয়োগের বিকল্প হতে পারে না। তিনি পাশপাশি উদ্বিগ্ন বিদেশি ত্রাণ কমে যাওয়ায়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করে তোপের মুখে জনি ডেপ!

জনি ক্রিস্টোফার ডেপ। হলিউডের অ্যাকশন সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা।
একাধারে তিনি একজন পরিচালক, প্রযোজক ও মিউজিসিয়ান। পাইরেটস অব ক্যারিবিয়ানে তার মনোমুগ্ধকর অভিনয় সবাইকে বিমুগ্ধ করেছিল। কিন্তু এবার ৫৪ বছর বয়সে নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করে তোপের মুখে পড়েছেন এ গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড জয়ী।

সম্প্রতি একটি মিউজিক ভিডিওতে নগ্ন হয়ে আবেদনময়ী দুই নারীর সঙ্গে বিছানার দৃশ্যে অভিনয় করেছেন জনি। আর তাই বেশ সমালোচিতও হয়েছেন এই হলিউড তারকা।

জনি অভিনীত ওই মিউজিক ভিডিও এর প্রায় প্রতিটি দৃশ্যই ছিল প্রচণ্ড উত্তেজনাপূর্ণ। এরকম ভিডিওটিতে সম্পূর্ণ পোশাকহীনভাবে জনি ডেপকে দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না অনেকেই। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় রক সঙ্গিতশিল্পী মেরিলিন ম্যানশন এর একটি গানের ভিডিওতে এরকম বেপরোয়া নগ্ন ভিডিওর কারণেই বিতর্কিত হলেন এই হলিউড অভিনেতা।

জানা গেছে, মেরিলিন ম্যানশনের সঙ্গে জনি ডেপের বহু বছরের ঘনিষ্ট বন্ধুত্ব।
তিনি মূলত বন্ধুত্বের খাতিরেই ভিডিওটিতে অন্তর্বাসহীন দুই নারীর সঙ্গে ওই নগ্ন দৃশ্যে অংশ নেন।

নিজের সেই ‘কিল ফর মি’ (Kill4Me) গানটির মিউজিক ভিডিওটি সম্পর্কে মেরিলিন ম্যানশন বলেন, আমি এই ভিডিওটিকে শৈল্পিক ভাবে তুলে ধরারা চেষ্টা করেছি। তবে হ্যাঁ, এভাবে দুই-দুইটি নারীর সামনে এভাবে নগ্ন হতে গিয়ে আমি যেমন ইতস্তবোধ করেছি ঠিক তেমনি আমার বন্ধু জনি ডেপও বেশ লজ্জা পেয়েছিল।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাদাসিধে কথা; স্বপ্ন এবং দুঃস্বপ্ন-ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল

শপিং মলের খোলা জায়গায় একটি সুন্দর বসার জায়গা। সেখানে তের চৌদ্দ বছরের একজন কিশোরকে নিয়ে তার মা বসে আছেন। মায়ের বয়স খুব বেশি নয়, চেহারার মাঝে মার্জিত রুচিশীলতার ছাপ রয়েছে। কিশোরটিরও বুদ্ধিদীপ্ত চেহারা। মা হাসি হাসি মুখে তার ছেলেটিকে বললেন, ‘বাবা, ঐ যে কাপড়ের দোকানটা দেখছিস?’

ছেলে বলল, ‘হ্যাঁ মা, দেখছি।’

‘ওখানে একজন মহিলা কেনাকাটা করছে দেখেছিস?

ছেলে মাথা নাড়ল। বলল, ‘হ্যাঁ মা, দেখছি।’

মা বললেন, ‘মহিলাটা তার ব্যাগ পাশে চেয়ারটার ওপরে রেখেছে’।

ছেলে মাথা নাড়ল। মা তখন বললেন, ‘তুই গিয়ে ঐ ব্যাগটা নিয়ে ছুটে চলে আয়’।

ছেলেটি একটু অবাক হয়ে বলল, ‘মানে ব্যাগটা চুরি করব?’

‘হ্যাঁ, হ্যাঁ চুরি করবি।’

‘তুমি আমার মা, তুমি আমাকে চুরি করতে বলছ?’

মা হাসি হাসি মুখে বলল, ‘তুই এত অবাক হচ্ছিস কেন? সবাই চুরি করে।’

‘যদি ধরা পড়ে যাই?’ সিসি ক্যামেরাতে ছবি উঠে যায়?’

‘ধরা পড়বি কেন? আর সিসি ক্যামেরাতে ছবি উঠলেও কোনো সমস্যা নেই। তোর বয়স কম। তোকে কেউ কিছু বলবে না। পত্রপত্রিকায় ছবি উঠলেও তোর মুখটা ঝাপসা করে রাখবে। কম বয়সী চোরদের চেহারা পত্রিকায় ছাপানোর নিয়ম নেই।’

মায়ের উৎসাহ পেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত চেহারার কিশোরটি কাপড়ের দোকান থেকে মহিলাটির ব্যাগটি চুরি করে নিয়ে এল। ছেলেটি যখন মায়ের কাছে ফিরে এল, মা ছেলেটির মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘বাবা, আজকে তোর চুরিতে হাতেখড়ি হলো।’

ছেলেটি হাসি মুখে বলল, ‘তুমি উৎসাহ দিয়েছ বলে পেরেছি।’

মা বললেন, ‘পরের বার বাসা থেকে বড় চ্যালা কাঠ নিয়ে আসব। তুই পিছন থেকে একজনের মাথায় মারবি। মানুষটা পড়ে গেলে তার হ্যান্ডব্যাগ, মানি ব্যাগ সব তুলে নিয়ে আসবি। পারবি না?’

ছেলেটি উজ্জ্বল চোখে বলল, ‘কেন পারব না মা? তুমি দোয়া করো আমার জন্য।’

মা ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, ‘সব সময় দোয়া করি। একজন মা যদি সন্তানের জন্য দোয়া না করে তাহলে কে করবে?’

আমি জানি, পাঠকদের যারা এ পর্যন্ত পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই খুব বিরক্ত হচ্ছেন। মা-সন্তানকে নিয়ে এরকম জঘন্য একটা কাহিনী তৈরি করেছি বলে অনেকে হয়তো আমাকে শাপ শাপান্ত করছেন।

আমি এবারে পাঠকদের আবার গল্পটা পড়তে বলব, এবারে যেখানে যেখানে ‘ব্যাগ চুরি’র কথা বলা হয়েছে সেখানে ‘প্রশ্ন ফাঁস’কথাটা ঢুকিয়ে দিতে হবে। (চুরি করা অন্যায়, প্রশ্ন ফাঁসও অন্যায়। এ দুইয়ের মাঝে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই)। হঠাৎ করে পাঠকরা আবিস্কার করবেন আমার গল্পে বিন্দুমাত্র অতিরঞ্জণ নেই।

আমাদের দেশের মা-বাবা কিংবা শিক্ষকরা নিজ হাতে তাদের সন্তানদের অন্যায় করার হাতেখড়ি দিচ্ছেন। বড় হয়ে যেন আরও বড় অন্যায় করতে কুণ্ঠিত না হয় তার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পাবার পর যখন এ সব বাবা-মায়ের ছেলেমেয়ে গোল্ডেন ফাইভ পাবে তারা বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে মিষ্টি পাঠাবেন। চুরি করার মতো অন্যায় করা এখন রাষ্ট্রীয়ভাবে মেনে নেওয়া হয়েছে।

জেএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন প্রত্যেক দিন ফাঁস হয়েছে। পত্রপত্রিকায় তার খবর বের হয়েছে। ছবি ছাপা হয়েছে। কিন্তু কোনো পুলিশ র‌্যাব মিলিটারি বিজিবি কাউকে ধরতে যায়নি। কোনো মোবাইল কোর্ট কাউকে বিচার করে শাস্তি দেয়নি। তের চৌদ্দ বছরের ছেলেমেয়েরা ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্ন দেখে নিয়মিত পরীক্ষা দিচ্ছে অথচ একটি রাষ্ট্রের কোনো মাথাব্যথা নেই, সবাই নিরাসক্তভাবে দেখছে এটি কেমন করে হতে পারে?

বেশ কয়েক বছর আগের ঘটনা। নিয়মিত প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে এবং সেটি নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই। পরীক্ষার আগে ছেলেমেয়েরা আমার কাছে ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্ন পাঠায়। পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার পর তারা আমার কাছে আসল প্রশ্নটি পাঠায়, আমি অবাক বিস্ময়ে দেখি হুবহু মিলে যাচ্ছে। আমি এ অকাট্য প্রমাণ দেখিয়ে লেখালেখি করেছি কিন্তু কারাও ভেতরে কোনো চিত্তচাঞ্চল্য নেই। শেষে কোনো উপায় না দেখে আমি ঠিক করলাম। ‘প্রশ্ন ফাঁস মানি না মানব না’লিখে একটা প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ হিসেবে শহীদ মিনারে বসে থাকব।

আমার প্রতি মায়া দেখিয়ে আমার কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব পরিচিত মানুষ এবং বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অল্প কিছু ছেলেমেয়ে আমার সঙ্গে ছিল। (মজার কথা, আমি যে প্ল্যাকার্ডটি নিয়ে বসেছিলাম তার বক্তব্য একটু পরিবর্তন করে আমার একটা ছবি নেটওয়ার্কে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল) পরে শুনেছি আরও কিছু ছেলেমেয়ে শহীদ মিনারে আসতে চেয়েছিল কিন্তু তাদের ভয় দেখানো হয়েছিল বলে তারা সাহস করে আসেনি! টেলিভিশনের অনেক চ্যানেল এসেছিল তারা নিশ্চয়ই অল্পবিস্তর প্রচারও করেছিল।

তার ফলে কিছুদিনের ভেতরে তদন্ত কমিটি হলো, তারা তদন্ত করলেন, বড় বড় সরকারি কর্মকর্তা আমার বাসাতেও এসে আমার বক্তব্য শুনে গেলেন। সমস্যাটা সমাধানের পথ খুঁজে বের করার জন্য দেশের বড় শিক্ষাবিদদের নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী সচিবালয়ে একটা মিটিং ডাকলেন।

মিটিংয়ের এজেন্ডাতে ‘প্রশ্ন ফাঁস’কথাটি নেই, সামগ্রিকভাবে শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যার কথা বলা হয়েছে। তাই খুবই স্বাভাবিকভাবে দেশের বড় বড় বর্ষীয়ান শিক্ষাবিদরা সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যা নিয়ে আলোচনা শুরু করলেন।

দেশের বড় শিক্ষাবিদরা রিটায়ার করার পর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হয়ে যান তাই কিছুক্ষণের মাঝেই আলোচনা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যার দিকে মোড় নিল। আমি ততক্ষণে বুঝে গিয়েছি প্রশ্ন ফাঁসের ব্যাপারটা চাপা পড়ে গিয়েছে। বড় বড় শিক্ষাবিদ যারা এসেছেন তাদের কাছে এটি প্রশ্ন ফাঁস গুরুত্বপূর্ণ কোনো ইস্যু নয়। আমি ততক্ষণে ঠিক করে নিয়েছি কোনো কথা না বলে বিদায় নেব।

মিটিংয়ের শেষের দিকে শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় নিজে আমাকে কিছু বলতে অনুরোধ করলেন। আমি কিছু বললাম, অন্যরাও কিছু বললেন, আলোচনা শেষ। তখন কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল এতদিন পর আমার আর সেটি মনে নেই, কিন্তু এটুকু সবাই জানে যে সমস্যাটির সমাধান হয়নি। এখনও নিয়মিতভাবে প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্ন দেখে পরীক্ষা দেওয়া অন্যায়। সারা পৃথিবীতে অন্যায় কাজ করা হয় গোপনে, শুধু আমাদের দেশে এটি করা হয় প্রকাশ্যে। কী লজ্জা! কী লজ্জা!

প্রশ্ন ফাঁসের ব্যাপারটি আমাকে যেটুকু আহত করে তার থেকে বেশি আহত করে এ পুরো ব্যাপারটি নিয়ে দেশের বড় বড় মানুষের নির্লিপ্ততা। এ দেশে কত শিক্ষক, শিক্ষক সংগঠন, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, ভাইস চ্যান্সেলর, কোর্ট, হাইকোর্টের বিচারপতি, সাংবাদিক, সম্পাদক, কত পুলিশ, র‌্যাব, মিলিটারি, কত সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, কত বুদ্ধিজীবী, কত রাজনৈতিক নেতা। কিন্তু কেউই জোর গলায় এর প্রতিবাদ করছে না।

একটা জাতির জন্য এটা যে কত বড় একটা বিপর্যয় সেটা কি কেউ ভেবে দেখেছে? এ দেশের একটা শিশু বড় হচ্ছে অন্যায় করতে শেখে! পুলিশ কাউকে ধরতে পারে না, অথচ আমার কাছে স্কুলের শিশুরা নিয়মিত চিঠি লিখে জানায় কে কোন সেন্টারে পরীক্ষা দিচ্ছে সেই সেন্টারের কোন শিক্ষক কীভাবে কোন স্কুলের ছেলেমেয়েদের কাছে প্রশ্ন ফাঁস করে দিচ্ছেন, তার উত্তর বলে দিচ্ছেন।

একটা স্কুলের বাচ্চারা যে অপরাধীদের চেনে এ দেশের পুলিশ মিলিটারি র‌্যাব মিলে সেই অপরাধীদের ধরতে পারে না এটা আমি কেমন করে বিশ্বাস করি? তাই আমাকে মেনে নিতেই হচ্ছে যারা প্রশ্ন ফাঁস করছে তাদের ধরার ব্যাপারে কারও কোনো আগ্রহ নেই।

একেবারে প্রথম দিন থেকে আমি যে কথাটা বলে আসছি এখনও আমি সেই একই কথা বলছি! একটা সমস্যা সমাধান করতে হলে প্রথমে সমস্যাটা বুঝতে হয়। সমস্যাটা বুঝতে পারলেই সমস্যার অর্ধেক সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু সেই সমস্যাটা যদি কেউ বুঝতেই না পারে তাহলে তার সমাধানটা হবে কেমন করে? প্রশ্ন ফাঁসের সমস্যা সমাধানটা হচ্ছে না ঠিক এ কারণে। সেটা এখন পর্যন্ত কেউ সমস্যাটা বোঝার পর্যায়েই যায়নি।

কেমন করে যাবে? তাহলে স্বীকার করতে হবে প্রশ্নটা ফাঁস হয়েছে। কেমন করে স্বীকার করবে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে? তাহলে পরীক্ষাটি বাতিল করতে হবে। কাজেই কখনই ঘোষণা দিয়ে স্বীকার করা হয়নি প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। যেহেতু প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে বলা হয়নি তাই যারা প্রশ্ন ফাঁস করেছে তাদের অপরাধী বলার সুযোগ নেই। বরং আমি উল্টোটা হতে দেখেছি, যখন কেউ প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে বলে চিৎকার করেছে তখন তাকেই গুজব ছড়ানোর অভিযোগে শাস্তি দেয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

অথচ খুব সহজে প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ করা সম্ভব। শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা দিতে হবে, ‘যা হওয়ার হয়েছে, এ দেশের মাটিতে ভবিষ্যতে আর কখনও প্রশ্ন ফাঁস হবে না।’কিন্তু আমি অনেকবার অনুরোধ করেও তাদের মুখ থেকে ঘোষণাটি বের করতে পারিনি। অথচ আমি নিশ্চিতভাবে জানি এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। এ দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আগ্রহ আছে, ভালোবাসা আছে এ রকম অসংখ্য মানুষ রয়েছেন, প্রযুক্তিবিদ রয়েছেন, অসংখ্য তরুণ তরুণী আছে যারা সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত।

শুধু তাদের সাহায্য নিতে হবে। যখন দেশে বন্যা হয়, ঘূর্ণিঝড় হয় তখন দেশের সব মানুষ সাহায্য করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। সমস্যাটি বন্যা ঘূর্ণিঝড় থেকেও বড় বিপর্যয়। এর সমাধানে দেশের মানুষ এগিয়ে আসবে না আমি বিশ্বাস করি না।

আমি এ লেখাটি আশার কথা দিয়ে শেষ করতে চাই। আমি আশাবাদী মানুষ, দেখেছি জীবনে আমার কোনো আশাই বিফলে যায়নি।

কয়েক বছর আগের কথা। একটি মেয়ে আমাকে ই-মেইল পাঠিয়েছে। খুবই মন খারাপ করা ই-মেইল। সে লিখেছে তার আশপাশে যত ছেলেমেয়ে আছে তারা সবাই ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্ন দেখে দেখে পরীক্ষা দিয়েছে। এ মেয়েটি কখনও কোন প্রশ্ন দেখেনি কারণ সে পণ করেছে অন্যায় করবে না, ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্ন দেখবে না। কাজেই সবার পরীক্ষা খুব ভালো হচ্ছে, যে প্রশ্নে পরীক্ষা দেবে সেই প্রশ্ন আগে থেকে জানা থাকলে পরীক্ষা ভালো না হয়ে উপায় কী?

মেয়েটি তার ই-মেইলে লিখেছে সবার পরীক্ষা খুবই ভালো হচ্ছে তার পরীক্ষা সে রকম ভালো হয়নি। বিশেষ করে পদার্থবিজ্ঞানের পরীক্ষাটি বেশি খারাপ হয়েছে কারণ প্রশ্নটি বাড়াবাড়ি কঠিন হয়েছে। পরীক্ষার খবর দেওয়ার পর মেয়েটি লিখেছে যেহেতু তার এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল যথেষ্ট ভালো হবে না তাই সম্ভবত সে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ারই সুযোগ পাবে না। যেহেতু কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে না তাই তাকে হয়তো কোনো কলেজে যেনতেনভাবে লেখাপড়া শেষ করে একটি প্রাইমারি স্কুলে মাস্টারি করে বাকি জীবন কাটিয়ে দিতে হবে। তার স্বপ্ন দেখা শেষ।

মেয়েটির ই-মেইলের উত্তরে তাকে আমি সান্ত্বনা দিয়ে কী লিখব বুঝতে পারছিলাম না, কারণ সে যে কথাগুলো লিখেছে সেটি সত্যি। ‘কোনোভাবে অন্যায় করব না’পণ করার কারণে এ দেশে একটি ছেলে বা মেয়ের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসতেই পারে! অনেক চিন্তা করে আমি মেয়েটিকে লিখলাম, প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক হয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দেওয়া নিয়ে তুমি মন খারাপ করো না।

আমিও ঠিক করেছি রিটায়ার করার পর প্রত্যন্ত কোনো গ্রামে একটা প্রাইমারি স্কুল খুঁজে বের করে সেখানে মাস্টারি করে জীবন কাটিয়ে দেব। তুমি আর আমি মিলে একই স্কুলে মাস্টারি করব, সমস্যা কী? আমার এ উত্তরে কাজ হলো, বুঝতে পারলাম সে মহাখুশি! প্রাইমারি স্কুলে মাস্টারি করার জন্য তখন আমরা দু’জনেই মানসিক প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি।

তারপর অনেক দিন কেটে গেছে। হঠাৎ একদিন সেই মেয়েটির আরেকটি ই-মেইল এসেছে। সেখানে সে লিখেছে, ‘স্যার, আমি শেষ পর্যন্ত বেশ কয়েকটা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। মজার কথা কী জানেন, আমি যতগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছি সবগুলোতে চান্স পেয়েছি।

আর আমার পরিচিত বন্ধুবান্ধব যারা ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে অনেক ভালো রেজাল্ট করেছিল তাদের কেউ কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়নি!

আমার সঙ্গে সেই মেয়েটির প্রাইমারি স্কুলে মাস্টারি করার পরিকল্পনাটা সম্ভবত আপাতত স্থগিত হয়ে আছে। কিন্তু আমি খুব খুশি হয়েছি দুই কারণে। প্রথমত ফাঁস হয়ে যাওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে পরীক্ষার ফলাফল হয়ত ভালো করা যায় কিন্তু তাতে জীবনের কোনো লাভ হয় না সেটি খুব ভালোভাবে প্রমাণিত হলো। দ্বিতীয়ত অন্যায় না করে মাথা উঁচু করে থাকার মাঝে বিশাল একটা মর্যাদার ব্যাপার আছে সেটিও সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো সম্ভব হলো।

আমি আশা করে আছি আমাদের দেশের সব ছেলেমেয়ে এরকমভাবে মাথা উঁচু করে থাকবে এবং এই ছেলেমেয়েদের উঁচু করে থাকা মাথাকে ভূলুণ্ঠিত করার জন্য যেন কোনো কোচিং সেন্টার, কোনো শিক্ষক কিংবা কোনো দায়িত্বহীন অভিভাবক তাদের ধারে-কাছে আসতে না পারে।

যদি এইটুকু আমরা নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে দেশকে নিয়ে স্বপ্ন দেখব যেমন করে? আমরা তো দুঃস্বপ্ন দেখতে চাই না, স্বপ্ন দেখতে চাই।

কথাসাহিত্যিক; অধ্যাপক, শাবিপ্রবি

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
জীবনানন্দের ‘লাবণ্য’ জয়া

কবি জীবনানন্দ দাশের স্ত্রী লাবণ্য দাশের চরিত্রে অভিনয় করছেন জয়া আহসান। ছবির নাম ‘ঝড়া পালক’। বর্তমানে ছবিটির শুটিং নিয়ে ব্যস্ত আছেন বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন জয়া।

কলকাতার আহিরীটোলায় ছবিটির শুটিং হচ্ছে। কবি জীবনানন্দ দাশের জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করছেন সায়ন্তন চট্টোপাধ্যায়।

ছবিতে আরো অভিনয় করছেন কলকাতার অভিনেতা ব্রাত্য বসু ও রাহুল। ছবিটিতে জীবনানন্দ দাশের দুটি বয়সের চরিত্রে তাঁরা অভিনয় করছেন। এ ছাড়া অভিনয় করছেন চান্দ্রেয়ী ঘোষ, দেবশঙ্কর হালদার প্রমুখ।

কলকাতার এক গণমাধ্যমে পরিচালক সায়ন্তন চট্টোপাধ্যায় জানান, ব্রাত্য বসুর সঙ্গে জীবনানন্দ দাশের অসম্ভব মিল রয়েছে। পাশাপাশি দুজনের ছবি রাখলে তাঁর এমনটিই মনে হয়।

অন্যদিকে, লাবণ্য দাশের চরিত্রে বাংলাদেশের জয়া আহসানকে উপযুক্ত মনে করেছেন তিনি।

ছবিটির বেশিরভাগ শুটিং কলকাতার বিভিন্ন লোকেশনে হবে। তবে বাংলাদেশে জীবনানন্দ দাশের বাড়ি বরিশালেও কিছু দৃশ্যের শুটিং হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানান পরিচালক সায়ন্তন চট্টোপাধ্যায়।

‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী’ নামে আরো একটি ছবিতে সম্প্রতি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন জয়া। ছবিটি কলকাতার জনপ্রিয় পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালনা করবেন। ছবির শুটিং বাংলাদেশের গাজীপুরে হওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশে গত সেপ্টেম্বরে সর্বশেষ জয়া আহসানের ‘খাঁচা’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল। প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের ‘খাঁচা’ গল্প অবলম্বনে ছবিটি নির্মাণ করেছিলেন আকরাম খান। ছবিতে জয়ার ‘সরোজিনী’ চরিত্রটি সর্বমহলে প্রশংসিত হয়।

জয়া আহসান বাংলাদেশের ‘চোরাবালি’, ‘গেরিলা’ ও ‘জিরো ডিগ্রী’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
প্রকাশ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অপহরণ, ভিসির বাসভবন ঘেরাও

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হলের সামনে থেকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ওই ছাত্রীর সহপাঠীরা উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে আন্দোলন শুরু করেন। ওই ছাত্রীর সন্ধান দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দুই ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ‘শোভা কোথায় জানা নাই, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আট ঘণ্টা চলে গেল, শোভা কোথায় ফিরিয়ে দাও’- বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ ছাড়া তাঁরা ‘ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নাই’, ‘প্রশাসন চুপ কেন’ এসব প্ল্যাকার্ডও বহন করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের চোখের সামনে আমাদের সহপাঠীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর স্বামীর সঙ্গে তালাক হয়েছে। আইনত তালাক কার্যকর না হলেও তাঁকে কেউ এভাবে নিয়ে যেতে পারে না। এভাবে হলের সামনে থেকে একটা মেয়েকে তুলে নিয়ে গেল। ক্যাম্পাসে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? আজ তাঁকে নিয়ে গেছে কাল অন্য কাউকে নিয়ে যাবে।

শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবদুস সোবহান বাসভবন থেকে বেরিয়ে আসেন। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের আন্দোলন স্থগিত করার আহ্বান জানান।

উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ‘অযৌক্তিক’ উল্লেখ করে বলেন, ‘এটা তাদের স্বামী-স্ত্রীর ব্যাপার। স্বামী তার স্ত্রীকে নিয়ে গেছে। অন্যায় হলে সেটা আইন দেখবে। এখানে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’

উপাচার্য ওই ছাত্রীকে দ্রুত সময়ের মধ্যে খুঁজে বের করার আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। পরে উপাচার্য ব্যর্থ হয়ে বাসভবনে ফিরে যান।

এ সময় সাংবাদিকদের উপাচার্য বলেন, ‘এটি তাদের পারিবারিক বিষয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তালাক হয়েছে। কিন্তু আইনত সেটা কার্যকর হতে তিন মাস সময় লাগবে। এখনো তিন মাস সময় পূরণ না হওয়ায় তালাক কার্যকর হয়নি। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমস্যা থাকতেই পারে। আমি জানতে পেরেছি, তালাক হওয়ার পরও তাঁর স্বামী ক্যাম্পাসে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করতেন। এটা তাদের পরিবার মীমাংসা করবে। বিষয়টি এরই মধ্যে ওই ছাত্রীর এলাকার পুলিশকেও জানানো হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা, র‌্যাবকে জানিয়েছি। তারা খোঁজ-খবর নিয়ে দেখছে। ওই ছাত্রীকে খুঁজে বের করতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।’

আন্দোলনের একপর্যায়ে ওই ছাত্রীর বাবা ঘটনাস্থলে আসেন। পরে তিনি উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাঁর বাসভবনে প্রবেশ করেন। উপাচার্যের সঙ্গে প্রায় আধঘণ্টা কথা বলে বেরিয়ে এসে প্রশাসনের পদক্ষেপের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তিনি।

ছাত্রীর বাবা শিক্ষার্থীদের বলেন, “আমি এখনো আমার মেয়ের সন্ধান পাইনি। এ জন্য আমি খুবই উদ্বিগ্ন। এখনো জানি না, আমার মেয়েকে কে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। তবে তাঁর স্বামী আমার মেয়েকে ‘উঠিয়ে নিয়ে যাবে’ বিভিন্ন সময় এমন হুমকি দিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমার মেয়েকে উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। প্রশাসনের কাছে দাবি থাকবে আমার মেয়েকে যেন দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়া হয়।”

আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের সামনে থেকে মাইক্রোবাসে করে ওই ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। বাংলা বিভাগের স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত বর্ষের ওই শিক্ষার্থী তাপসী রাবেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার মাতাজি এলাকার।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest