কৃষ্ণ দাস,তালা : বীর মুক্তিযোদ্ধা মোড়ল আব্দুস সালামের ৬ষ্ঠ মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে শোক ও শপথের ষষ্ঠ মৃত্যু বার্ষিকী-১৭ শীর্ষক’ এক স্মরণ সভা শনিবার বিকাল ৩ টায় কপিলমুনি সহচরী ময়দানে(বালুর মাঠ) অনুষ্ঠিত হয়। বিপ্লবী সালাম স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে এ্যাডঃ বিপ্লব কান্তি মন্ডলের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,জাসদের কেন্দ্রিয় নেতা ও সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক দক্ষিণের মশাল পত্রিকার সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক-ই এলাহী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,খুলনা জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রেজাউল করিম,বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তালা জেএসডির সভাপতি ও অধ্যাপক মোড়ল আবু বক্কর সিদ্দীকি,জেএসডি’র কেন্দ্রীয় নেতা মীর জিল্লুর রহমান,তালা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আলউদ্দীন জোয়াদ্দার। বক্তব্য রাখেন খুলনা জেলা ওয়ার্কাস পার্টির সদস্য সরদার জিল্লুর রহমান,তালা মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান,কপিলমুনি মেহেরুন্নেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রহিমা আক্তার শম্পা,মাসুমা বেগম,সাংবাদিক জগদ্বীশ দে, জেএসডি’র তালা উপজেলা সহ-সভাপতি আনন্দ অধিকারী। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন,দিলীপ সরকার। সভায় বক্তারা বলেন, একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র কায়েম এবং সমাজতান্ত্রিক স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে আজীবন রাজপথে ছিলেন আব্দুস সালাম মোড়ল। তার মৃত্যুহীণ শ্লোগান ’যাদের জন্য ঘর ছেড়েছি,যাদের জন্য পথে নেমেছি সেই পথের মানুষের ঘরের ঠিকানা না দিয়ে ঐ ঘরে আর আমি ফিরে যাবনা” এখনো বিপ্লবীদের অনুপ্রেরণা যোগায়। বাংলাদেশ গড়ার প্রথম তহবিল গঠনের লক্ষ্যে সাতক্ষীরা কো-অপারেটিভ ব্যাংক থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তিনি সরকারকে দিয়েছিলেন। সাতক্ষীরায় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন মোড়ল আব্দুস সালাম। তিনি ছিলেন,শ্রমজীবি,কর্মজীবি,পেশাজীবি,নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের প্রতিনিধি। একজন নির্লোভী মানুষ হিসেবে মোড়ল আব্দুস সালামের স্বপ্ন ছিল ভিসামুক্ত পৃথিবী গড়ার।



জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা-০২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। এসময় এমপি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়া বাঙালী জাতির জন্য বিশাল গৌরবের। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বিশ^। বাঙালির বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতার এই ভাষণের দিক-নির্দেশনাই ছিল সে সময়ের বজ্রকঠিন জাতীয় ঐক্যের মূলমন্ত্র। আজ ৪৫ বছর পরেও বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের আবেদন বাঙালির কাছে অটুট আছে। লেখক ও ইতিহাসবিদ জেকব এফ ফিল্ড’-এর বিশ্বসেরা ভাষণ নিয়ে লেখা গ্রন্থে এই ভাষণ স্থান পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ববাসীর কাছে বিশেষ করে বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের কাছে আলোর দিশারীতে পরিণত হয়েছে। তিনি এ ভাষণ দিয়েছিলেন ঔপনিবেশিক পাকিস্থানী দুঃশাসন থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য। ১৯৪৮ সালে ভাষার দাবিতে আন্দোলন শুরু করার সময়ই বঙ্গবন্ধু বুঝে গিয়েছিলেন স্বাধীনতা ব্যতীত এই জাতির চূড়ান্ত মুক্তি মিলবে না। তিনি আরো বলেন, রেসকোর্সের জনসমুদ্রে দেওয়া জাতির পিতার এই কালজয়ী ভাষণে ধ্বনিত হয়েছিল বাংলার গণমানুষের প্রাণের দাবি। এ প্রেক্ষাপটে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে এক জনসভার ডাক দেন। সেদিনের জনসমুদ্রে তিনি বজ্রকন্ঠে ঘোষণা দেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা।’ বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণই ছিল প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা। এই ভাষণে তিনি বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার জন্য ঐক্যবদ্ধ করেন। আবার সশ¯্র সংগ্রামের দিক-নিদের্শনাও দিয়ে যান।’