সর্বশেষ সংবাদ-
ব্যবসায়ীকে মারধরের ঘটনার ভিডিও করায় সাংবাদিকদের মারপিটের অভিযোগ ডা; ফয়সালের বিরুদ্ধেতাপদাহে রিকশাচালক-পথচারী‌দের‌ মাঝে ড্রিম সাতক্ষীরার পা‌নি ও স্যালাইন বিতরণআন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনাসাতক্ষীরা সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিস চত্বরে মরা শিশু গাছে ঝুঁকি বাড়ছেকলারোয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলতাফ হোসেন লাল্টুর গণ সমাবেশএডভোকেসি নেটওয়ার্ক এবং সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন সদস্যদের ত্রৈমাসিক সমন্বয় সভাশ্যামনগরের কৈখালী পোলের খাল খনন কর্মসূচির উদ্বোধনশ্যামনগরে সালাতুল ইস্তেকার নামাজ আদায়তীব্র তাপদাহে পুড়ছে উপকুলীয় জেলা সাতক্ষীরা, তাপমাত্রা আজ সর্বোচ্চ ৩৯.৩ ডিগ্রিদেবহাটায় উন্নয়ন কার্যক্রমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক মতবিনিময়

খোরদো প্রতিনিধি : সকলকে বিদায় জানিয়ে ঈদ চলে গেছে ১০ থেকে ১২ দিন আগে! তবুও সেই ঈদের আনন্দকে স্মরণ করে জীবনে হাসি আনন্দ নিয়ে একে অপরের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়ানের খোরদো হাইস্কুল মাঠে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা সোমবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খেলাটি পুলিশ ক্যাম্প এবং সাংবাদিক ও ছাত্রলীগ যুবলীগের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন একদিকে খোরদো পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যবৃন্দ এবং অপরদিকে অংশগ্রহণ করেন জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার তারুণ্য উজ্জ্বিবিত প্রাক্তন খেলোয়াররা। দুটি দলই ভিন্ন ভিন্ন জার্সি পরিহিত অবস্থায় প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
নির্ধারিত সময়ে খেলা যৌথ ফুটবল একাডেমী ২ এবং পুলিশ ক্যাম্প ফুটবল একাডেমী ১ গোল করে। তবুও সোহার্দপূর্ণ এবং আনন্দময় খেলাটি সকলের মাঝে ভাগাভাগি করার জন্য সন্তোষজনক পুলিশের অনুরোধে টাইব্রেকারেও ৪-৩ গোলে পুলিশ ক্যাম্প পরাজিত হয় তবুও উভয় দলকেই বিজয়ী ঘোষণা করে বিজয়ের উচ্ছ্বাসকে ভাগ করে দেয়া হয়।
এবং পুলিশ ক্যাম্পের পরাজিত সরুপ ৬০ জন প্লেয়ারসহ অন্যান্য ব্যক্তিদের মধ্যাহ্ন ভোজের ঘোষণা দেন খোরদো ক্যম্প আই সি হাসানুজ্জামান রিপন।
খেলা শুরু হওয়ার পরপরই পাচিলঘেরা স্কুল চত্বরে একে একে ভরে যায় দর্শকদের উপস্থিতিতে। খেলা উপভোগ করতে স্কুলের দুই ভবনেই অবস্থান করেন শিশু থেকে বৃদ্ধ অবধি ফুটবলপ্রেমী দর্শক এবং স্থানীয় বাজার কেন্দ্রিক ব্যবসায়ীগণ।
প্রীতি এ ফুটবল ম্যাচের উভয় দলে অংশ নেন খোরদো পুলিশ ক্যাম্পের আই সি হাসানুজ্জামান রিপন, সাংবাদিক সরদার কালাম, ছাত্রলীগের প্রাক্তন সভাপতি খায়রুল বাসার, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইমরান সরদার, ছাত্রলীগ সভাপতি নাহিদ হোসেন, যুবলীগ সাংগঠনিক রিপন হোসেন, যুবলীগ আহ্বায়ক তন্ময় আহমেদ মেরিন প্রমুখ।
রেফারির দায়িত্ব পালন করেন প্রাক্তন খেলোয়াড় ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাবলু হোসেন এবং ধারাভাষ্যকার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন শ্রী পলাশ পদ ঘোষ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

আসাদুজ্জামান : সাত্ক্ষীরায় ঈদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিজিএফ কার্ডের ৪৫ বস্তা গম বিতরণ না করে গুদামজাত করার অভিযোগে কালিগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউনিয়ন পরিষদের খাদ্যগুদাম ঘর সিলগালা করা হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় কালিগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহারিয়ার মাহমুদ রঞ্জু ও জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন শাখার সহকারি কমিশনার সাফিয়া আফরিন এ সিলগালা করে দেন।
একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ভিজিএফ এর আওতায় ঈদ উল ফিতরের জন্য সরকারি ভাবে ১০ কেজি চাউলের পরিবর্তে ১৩ কেজি করে গম কালিগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউনিয়নের চার হাজার ১০৫ জনকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। যথাসময়ে চম্পাফুল ইউনিয়ন পরষিদে গম পৌঁছানোর পরও তা বিলি না করে ঢাকায় চলে যান ইউপি চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক গাইন। চেয়ারম্যান ঢাকা থেকে ফিরে এসে ওই গম বিক্রি করবেন এমন খবর জানতে পেরে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি জেলা ত্রান ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়। সে অনুযায়ি কালিগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহাররিয়ার মাহমুদ রঞ্জুকে সঙ্গে নিয়ে জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন শাখার সহকারি কমিশনার সাফিয়া আফরিন গতকাল বেলা ১১টার দিকে চম্পাফুল ইউনিয়ন পরিষদে আসেন। পরিষদের গুদামে ভিজিএফ এর ৪৫ বস্তা গম রয়েছে সংশ্লিষ্ট ই্উপি সচীব মনিরুজ্জামনের মারফৎ জানতে পেরে তিনি ওই গুদামের দরজায় তালা লাগিয়ে সিলগালা করে দেন।
চম্পাফুল ইউনিয়নর পরিষদের সচীব মোঃ মনিরুজ্জামান, জানান, ঈদের জন্য বরাদ্দ হলেও গম নির্ধারিত তারিখের কয়েকদিন পর পরিষদে পৌঁছায়। এরপর চেয়াম্যান ও ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে ১০ টাকার সরকারি চাল বিতরণে অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগে দুদকের মামলায় গ্রেফতারের ভয়ে গত ১৪ জুনের পর থেকে তারা নিয়মিত পরিষদে আসতে পারেননি।। ফলে ভিজিএফ এর ওই গম যথাসময়ে বিতরণ করা হয়নি। তারা সোমবার রাতে এলাকায় ফিরে বুধবার ওই গম বিলি করার কথা ছিল।
জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন শাখার সহকারি কমিশনার সাফিয়া আফরিন জানান, চম্পাফুল ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের ভিজিএফ এর বরাদ্দকৃত গম বিতরণ না করার অভিযোগে ৪৫ বস্তা গমভর্তি গুদামে সিলগালা করা হয়েছে। পরবর্তীতে ওইসব জনপ্রতিনিধি সন্তোষজনক জবাব দিলে সিলগালা সরিয়ে নেওয়া হবে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

এম বেলাল হোসাইন : বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু মুক্তামনির সু-চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশ সরকার। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাতক্ষীরার কৃতি সন্তান প্রফেসর ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি ইতিমধ্যেই উচ্চ পর্যায়ে কথা বলে তার চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। সোমবার দুপুরের দিকে মুক্তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর যেকোন মূহুর্তে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে মুক্তামনির চিকিৎসার বিষয়ে সার্বিক খোঁজখবর নিতে সেখানে উপস্থিত হন সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আ ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, জেলা পরিষদ সদস্য এড. শাহানাজ পারভীন মিলিসহ অনেকেই।
সোমবার সকালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. তহিদুর রহমান, ডেইলি সাতক্ষীরা’র সম্পাদক ও দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হাফিজুর রহমান মাসুম, সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবুল হোসেন, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ এর ফরেনসিক মেডিসিনের প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দীন, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসান হাদী, সাংবাদিক আব্দুল জলিল, এম বেলাল হোসাইন, মোস্তফা আলী ও প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা আনছার হাজী। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ নেতৃবৃন্দ আক্রান্ত শিশু মুক্তামনির সার্বিক খোঁজ খবর নেন এবং তার পরিবারকে চিকিৎসার আশ্বস্ত করেন।
এসময় ডা. নাসির সকলকে মুক্তামনির রোগ সম্পর্কে অবহিত করে বলেন, “বিশ্বের মধ্যে ২ জন বৃক্ষ মানব ছিলেন। তাদের মধ্যে ১ জন ইন্দোনেশিয়ায় আরেকজন বাংলাদেশের আবুল বাজানদার। তার চিকিৎসা বাংলাদেশেই হয়েছে। সুতরাং মুক্তা মনির চিকিৎসাও বাংলাদেশে হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ বা বিএসএমএমইউ-তে বিশেষ মেডিকেল বোর্ড গঠন করে মুক্তামনিকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব।” তিনি আরও বলেন, “মুক্তামনির এ রোগটি বিরল। প্রাথমিকভাবে বলা যায় এর নাম হাইপারকেরাটসিস। সর্বশেষ যে টেস্ট রিপোর্ট আমাদের হাতে এসেছে তাতে করে মনে হচ্ছে এটি ক্যান্সার নয়। এটি জটিল হলেও নিরাময়যোগ্য।”
বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামনিকে দেখতে গিয়ে সোমবার সকাল ১১টায় সদর উপজেলার বাঁশদহা ইউনিয়নে কামারবায়সা গ্রামের তার বাড়িতে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু বলেন, “আমার মুক্তামনির বিষয়ে গণমাধ্যমে জানতে পেরেই প্রথমে উপমহাদেশের বিশিষ্ট শল্য চিকিৎসক আমাদের সাতক্ষীরারই মানুষ অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি-কে বিষয়টি জানাই। তিনি রবিবার রাতেই ই-মেইলে মুক্তামনির ছবি এবং রিপোর্ট পাঠাতে বলেন। সবকিছু দেখে তিনি মুক্তামনিকে অবিলম্বে ঢাকায় নেয়ার কথা বলেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমের কল্যঅণে বিষয়টি ইতিমধ্যে সকলের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। নিশ্চয়ই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আনুকূল্যও আমরা পাব। তিনি শিশুদের বিষয়ে অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং মানবিক। ডা. রুহুল হক প্রধানমন্ত্রীর সাথে এ বিষয়ে কথাও বলবেন। মুক্তামনির চিকিৎসার কোন ক্রটি হবে না।” তিনি আরো বলেন, “বিনা চিকিৎসায় তার পিতার কোল শূন্য না হবে না। আমিও সন্তানের পিতা। সন্তানের মুখের হাসি দেখলে যে সুখ যাওয়া যায়। পৃথিবীর আর কোন কিছুতেই সে সুখ পাওয়া যায় না।”
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শিশু মুক্তাকে দ্রুত সদর হাসপালে ভর্তি করে নিয়ম অনুযায়ী ঢাকায় স্থানান্তরের জন্য সাতক্ষীরার সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশনা অনুযায়ী সিভিল সার্জন সদর উপজেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে মুক্তামনিকে করে এ্যাম্বুলেন্স যোগে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
অন্যদিকে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম এ খবর শুনে দ্রুত সদর হাসপাতালে পৌছান শিশু মুক্তাকে দেখতে। সেখানে পৌছে তিনি তার সু-চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের সু-দৃষ্টি কামনা করেন এবং তার পিতা-মাতাকে সান্তনা প্রদান করেন। এসময় সিভিল সার্জনসহ অন্যান্য চিকিৎসকগণ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামের মুদি দোকানী ইব্রাহীম হোসেনের দাম্পত্য জীবনে দুই যমজ কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক। তার দুই যমজ সন্তানের মধ্যে হীরামনি বড় ও মুক্তামনি ছোট। আর ছোট ছেলে আল-আমিনের বয়স এক বছর তিন মাস। জন্মের প্রথম দেড় বছর যাবত ভালোই ছিল হীরা মনি ও মুক্তা মনি। কিছুদিন পর মুক্তা মনির ডানহাতে একটি ছোট মার্বেলের মতো গোটা দেখা দেয়। এর পর থেকে তা বাড়তে থাকে। সাথে চলে স্থানীয় চিকিৎসাও। দেখলে মনে হবে গাছের বাকলের (ছালের) মত ছেয়ে গেছে পুরো হাতটি। আক্রান্ত ডান হাত তার দেহের সব অঙ্গের চেয়েও ভারি হয়ে উঠেছে। ভেতরে পোকা জন্মেছে। বিকট যন্ত্রণায় মুক্তামনি সব সময় অস্থির। ডাক্তার বলছেন এ ব্যাধি তার দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি জানান, মুক্তার সারা দেহে রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। তার শরীর শুকিয়ে যাচ্ছে। শুধু হাতের ভার বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে দেখানো হয়েছে মুক্তামনিকে। কেউ কোনো সঠিক চিকিৎসা দিতে পারেন নি। রোগের মাত্রা শুধু বেড়েই চলেছে। হতাশ বাবা ইব্রাহীম গত ছয় মাস যাবত চিকিৎসাবিহীন অবস্থায় মুক্তাকে বাড়িতে রেখে কেবল ড্রেসিং করছেন।
তিনি আরো জানান, মেয়ের চিকিৎসার জন্য অনেক হাসপাতালে গিয়েছি। এখন সর্বশান্ত হয়ে পড়েছি। সঠিক চিকিৎসা পাইনি। তবে ডাক্তার বলছেন রোগটি বিরল হলেও বাংলাদেশে এর চিকিৎসা রয়েছে। বাংলাদেশে বৃক্ষ মানবের সফল চিকিৎসা হয়েছে বলেও জানান ডাক্তার। তাই তিনি আবেগ জড়িত কন্ঠে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার মেয়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলে আমি কৃতজ্ঞ থাকবো।
যন্ত্রনায় কাতর মুক্তামনি জানায়, শুধু চুলকায় । আর যন্ত্রণা করে । গরমে ঠান্ডায় বাড়ে। সে আক্ষেপ করে আরো বলে, বাইরের দুনিয়া আমি দেখতে পারিনা। স্কুলে যেতে পারিনা । খেলতে পারিনা। আমার জীবনে কোনো আনন্দ নেই।
মুক্তামনির বড় বোন হীরামনি জানায়, বোনের জন্য কষ্ট হয়। ভাল থাকলে এক সাথে খেলতে পড়তে পারতাম। মুক্তার যমজ বোন হীরামনি আরো বলে, এবার ঈদে নতুন জামা নেয়নি। কারণ মুক্তা জামা পরতে পারবে না তাই।
মুক্তামনির দাদা এজাহার আলী গাজী কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, বছর চারেক আগে থেকে মুক্তামনির ব্যাধির মাত্রা বেড়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় তার চলাফেরা, স্কুলে যাওয়া, খেলাধুলা। মুক্তামনি এখন বসতে পারে না। দাঁড়াতে পারে না। হাঁটতেও পারে না সে। দিনরাত কেবল শুয়ে কাটাতে হয় তাকে।
এরই মধ্যে আক্রান্ত হাত ক্রমেই ভারি হয়ে উঠছে। এতে পোকা ধরেছে। মশা ও মাছির উৎপাত বাড়ছে। বাড়িময় বিকট গন্ধ ছুটছে। এ কারণে তাদের বাড়িতে আত্মীয় স্বজনরা আসতে চায় না। গ্রামের লোকজনও শুধু দুর থেকে নজরে দেখে চলে যায়।
মুক্তামনির মা আয়েশা খাতুন জানান, আমার মেয়ের কষ্ট দেখতে পারিনা। সারা দেহে পোকার কামড়ের যন্ত্রণা। ঈদে নতুন জামা পরাতে পারিনি তাকে। মেধাবী মেয়ে। সুরেলা গলায় গজল গায়। গান গায়। মুক্তামনির হাতে পচন ধরায় দুর্গন্ধের কারণে গ্রামের লোকজন এমনকি আত্মীয়স্বজনরাও আমাদের বড়তে আসে না।
এদিকে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর দেশে-বিদেশের বহু ব্যক্তি মুক্তামনির চিকিৎসায় এগিয়ে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

বাঘ আবার সেলফি তুলতে পারে। সেটা আবার কেমনে। ঠিক এমনটাই ঘটেছে বাঘ তুলছে সেলফি। রাশিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিরল প্রজাতির সাইবেরিয়ান টাইগারের দল দিব্বি সেলফি তুলেছে৷ তেমনই কিছু ছবি প্রকাশ করেছে ল্যান্ড অব দ্য লেপার্ড ন্যাশনাল পার্ক।সাইবেরিয়ান টাইগার৷ এরা বিরল প্রজাতির বাঘ৷ চোরা শিকারীদের হাতে প্রায় বিপন্ন তারা৷

এই অভয়ারণ্যে ২২টি বয়স্ক সাইবেরিয়ান বাঘ ও এবং ৭টি বাঘের ছানা আছে৷ ছবিতে বাঘেদের একসঙ্গে খেলতে দেখা যায়৷ এমনকি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ‘পোজ’ দিয়েছে তারা৷ এখানেই চমক৷ সাইবেরিয়ান বাঘদের সেলফিতে মজে গিয়েছে দুনিয়া৷

ল্যান্ড অব দ্য লেপার্ড পার্ক কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, গ্রাউন্ড লেভেলের অটোম্যাটিক ক্যামেরা ব্যবহারের মাধ্যমে তারা বাঘদের কর্মকাণ্ডের ছবি তুলেছে। প্রথমবারের মতো পশুদের পারিবারিক জীবনযাপন এমন বিস্তৃতভাবে ছবিতে রেকর্ড করা হয়েছে বলে দাবি করছেন কর্মকর্তারা।

দ্য সাইবেরিয়ান টাইমস নামে স্থানীয় একটি পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বনকর্মীরা এই ক্যামেরা বসিয়েছিলেন৷ সেই ক্যামেরায় ধরা পড়েছে, বাঘের ছানারা জঙ্গলে খেলা করছে, ডিগবাজি খাচ্ছে৷ একসময় তাদের মা এসে বকুনি দিয়ে শান্ত করে৷

সাইবেরিয়ান টাইগার ৷ এটি আমুর টাইগার নামেও পরিচিত৷ রাশিয়ায় পাওয়া যায়। রাশিয়ায় এই বিরল প্রজাতির বাঘ শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ৷ তবে হানা দিচ্ছে চোরা শিকারীর দল৷ তাদের হাতেই মরছে সাইবেরিয়ান টাইগার৷ বর্তমানে সাইবেরিয়ান বাঘের সংখ্যা প্রায় ৬০০টি৷

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

ব্রাজিলে ফুটবল মাঠে দাঙ্গা-হাঙ্গামা যেন নিত্য ঘটনা। আর এসব দাঙ্গায় দর্শক-সমর্থক নিহত হওয়ার ঘটনাও নতুন নয়। আবারও তেমনই এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কলঙ্কিত হয়েছে সেলেসাওদের ফুটবল। নিহত হয়েছেন একজন সমর্থক।

শনিবার রিও ডি জেনেরিও ডার্বিতে মুখোমুখি হয়েছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভাস্কো ডা গামা এবং ফ্লেমেঙ্গো। অতীতে এই দুই দলের মারামারির ঘটনাকে মনে রেখে পর্যাপ্ত দাঙ্গা পুলিশও মজুদ রাখা হয়েছিল। কিন্তু ম্যাচ শেষ হওয়া মাত্রই শুরু হয় যত বিপত্তি।

এদিন ফ্লেমেঙ্গোর কাছে দীর্ঘ ৪৪ বছর পর নিজেদের মাঠে হার দেখেছে ভাস্কো ডা গামা। স্বভাবতই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে এই হার মানতে পারেনি স্বাগতিক সমর্থকরা। ফ্লেমেঙ্গো ফুটবলার ও সমর্থকদের দিকে বোতল এবং ইট ছোঁড়া শুরু করে তারা।

দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য উগ্র-সমর্থকদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস এবং গুলি ছুঁড়তে বাধ্য হয় পুলিশ। সেই গুলিতে আহত কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে আহতদের একজনকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

পুলিশের ছোঁড়া টিয়ার গ্যাসে আহত হয়েছেন ফুটবলাররাও। আগামী মৌসুম থেকে রিয়াল মাদ্রিদে নাম লেখানো ভিনিসিয়াস জুনিয়রও আহত হয়েছেন এই ঘটনায়। টিয়ার গ্যাসের ঝাঁজে টিকতে না পেরে এক পর্যায়ে মাঠ ছেড়ে পালিয়েছেন ব্রাজিলের এই উদীয়মান ফুটবলার।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

পুরো ওয়ানডে সিরিজে ভারতের বিপক্ষে মাত্র ৬৭ রান করেছিলেন ক্যারিবীয় ওপেনার এভিন লুইস। আর সেই এভিন লুইস একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই ছাড়িয়ে গেলেন ওয়ানডে সিরিজের সংগ্রহকে। তার হার না মানা ৬২ বলে ১২৫ রানের ইনিংসে ৯ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বলতে গেলে ভারতকে সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটে পেলেই কেমন যেন খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসেন। ৬২ বলের ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ১২টি ছয়! আর এই ইনিংস খেলে ক্যারিবীয়দের টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ স্কোরার এখন তিনি!

দীর্ঘ দিন পর ফেরা ওপেনার ক্রিস গেইল সেভাবে আলো ছড়াতে পারেননি। নিজের ঘরের মাঠে মাত্র এক ছয় আর এক চারে বিদায় নেন ১৮ রানে। তার সঙ্গে ৩৬ রানে ক্রিজে থেকে জয় নিশ্চিত করেন মারলন স্যামুয়েলস। ক্যারিবীয়দের জয় আসে ১৮.৩ ওভারে।

এর আগে টস জিতে সফরকারী ভারতকেই ব্যাটিংয়ে পাঠায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে খেলতে নেমে শুরুটাও দারুণ করেছিল ভারত। তাদের সেই শুরু দেখে চরম পরিণতির কথা হয়তো ভাবেননি কেউই! ৫.৩ ওভারেই ৬৪ ছাড়ায় কোহলিরা। যদিও এর পরেই কোহলিকে বিদায় করেন কেসরিক উইলিয়ামস। কোহলি বিদায় নেন ৩৯ রানে। এরপর ধাওয়ান ২৩ রানে ফেরেন রানআউট হয়ে। পরের ব্যাটসম্যান রিশাব পান্ত ৩৮ আর দিনেশ কার্তিক ৪৮ রান ছাড়া আর কেউই উল্লেখযোগ্য রান করতে পারেননি। ধোনি ফেরেন মাত্র ২ রানে। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ১৯০ রান তোলে ভারত। ক্যারিবীয়দের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন জেরোম টেলর ও কেসরিক উইলিয়ামস।

ম্যাচসেরা হন ব্যাট হাতে ঝড় তোলা এভিন লুইস।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায় নিয়ে রবিবার সংসদ উত্তপ্ত  আলোচনা হয়েছে। রায়ের প্রসঙ্গ তুলে বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ সরকার দলের সিনিয়র সংসদ সদস্যরা আদালতের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সিনিয়র মন্ত্রীরাও আলোচনায় অংশ নেন। তারা বলেন, সরকার ও বিচার বিভাগের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। এই রায় অনভিপ্রেত। মামলার শুনানিতে এমিকাস কিউরিদের বক্তব্য নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে কয়েকজন সংসদ সদস্য তাদের সুবিধাভোগী আখ্যা দিয়েছেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা আলোচনার পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে একই ইস্যুতে পরবর্তী সময়ে আলোচনার কথা জানান।

সংসদে মাগরিবের নামাজের বিরতির পর জাসদের সংসদ সদস্য মইন উদ্দিন খান বাদল পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন। সরকারের ৪জন মন্ত্রীসহ সরকারি দল, বিরোধী দলের ১০ জন সদস্য বিষয়টি নিয়ে দুই ঘণ্টা ২৫ মিনিট বক্তব্য রাখেন। তবে, ব্যক্তি জীবনে আইন পেশায় যুক্ত কোনও সংসদ সদস্য এই ইস্যুতে সংসদের আলোচনায় অংশ নেননি। আলোচনার মাঝপথে অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাস হয়। ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয় আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের পাঁচ মে হাইকোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ অভিমতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের ওপর চলতি বছরের ৮ মে শুনানি শুরু হয়, যা ১ জুন শেষ হয়। হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে ৩ জুলাই আপিল বিভাগের রায়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করা হয়।

এর আগে গত ৭ মার্চ আপিল বিভাগ শুনানিতে সিনিয়র ১২ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ  দেন আদালত। যাদের মধ্যে ১০ জন আদালতে অভিমত উপস্থাপন করেন। তাদের মধ্যে সিনিয়র আইনজীবী টি এইচ খান, ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, আবদুল ওয়াদুদ ভুইয়া, ফিদা এম কামাল, ব্যারিস্টার  রোকন উদ্দিন মাহমুদ, এ এফ হাসান আরিফ, এ জে মোহাম্মদ আলী ও এম আই ফারুকী ষোড়শ সংশোধনীর বিপক্ষে মত দেন। অন্য অ্যামিকাস কিউরি আজমালুল হোসেন কিউসি সংশোধনীর পক্ষে মত দেন। অন্য দু’জন মত উপস্থাপন করেননি।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধান উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ সংবিধান। সেই সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদকে আমরা পুনঃস্থাপন করেছিলাম। আদালতের রায় নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। আমার বক্তব্য সংসদের সার্বভৌমত্ব নিয়ে। আদালতের শুনানিতে অংশ নিয়ে অ্যামিকাস কিউরিরা অসত্য বলেছেন। ভুল তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, বাহাত্তরে ভারতকে অনুসরণ করে আমরা সংসদের হাতে বিচারকদের অপসারণ ক্ষমতা দিয়েছিলাম। এখন ভারতে এটা নেই। তার মতো লোক এই ধরনের অসত্য কথা বলছেন।’ তিনি বলেন, ‘আরেক অ্যামিকাস কিউরি ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম বলেছেন, এই ব্যবস্থা কোথাও নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদ্ধতি সংসদের হাতে রয়েছে। তিনি সাউথ আফ্রিকা, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার সংবিধানেরও কথা উল্লেখ করে বলেন, একমাত্র ব্যতিক্রম পাকিস্তান। সেখানে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল আইয়ুব খান চালু করেছেন। এই আইয়ুব খানের পদ্ধতি আমাদের দেশের অ্যামিকাস কিউরিদের পছন্দ। জিয়াউর রহমান আইয়ুব খানকে অনুসরণ করে এই পদ্ধতি আমদানি করেছেন। এই দুই অ্যামিকাস কিউরিকে সুবিধাবাদী।’

বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘সংবিধানের সঙ্গে কোথায় সাংঘর্ষিক, তা পরিষ্কার করা হয়নি। এর পেছনে উদ্দেশ্য সংসদকে তাদের ইচ্ছার অধীনে নিয়ে আসা। বিচারক নিজেরাই নিজেদের বিচার করবেন। এখানে তারা নিজেদের স্বার্থকে দেখেছেন।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু আদালত এই সংশোধনী বাতিল করে বললেন, এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কোথায় সাংঘর্ষিক, সেটা বলেননি।’

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার গুরুতর অসদাচারণের কথাই বলতে হয়। কয়েকমাস আগে প্রধান বিচারপতির আদেশে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার দুর্নীতি দমন কমিশনে আপিল বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত না করার জন্য বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিরা তাদের দায়িত্ব পালনকালে অনেক কষ্ট করে মৃত্যুদণ্ডসহ অনেক বিচারের ব্যবস্থা করেছেন। রায় দিয়েছেন। তদন্ত যদি ওই বিচারপতির বিরুদ্ধে করা হয়, সে বিচারের বিষয়ও প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’’  মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, ‘এর মাধ্যমে বিচারপতি সিনহা ন্যায়বিচারের বাধা দেওয়ার অপরাধ করেছেন। যা দণ্ডবিধির অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তিনি সুপ্রিম কোর্টের নাম শুধু ব্যবহার করেননি, সুপ্রিম কোর্টের প্যাডও ব্যবহার করেছেন। যদিও এটা ছিল তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’

আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘৯৬ ধারা সংবিধানের মূলভিত্তির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বিচারবিভাগই সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধ রায় দিয়েছেন।’ বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে গিয়ে বক্তব্য দিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। আপনারা কি আপনাদের উত্তরসূরিদের মতো অশুভ শক্তির সঙ্গে হাত মেলাতে চান? সেই ইচ্ছা আর পূরণ হবে না। বাংলাদেশে সেই সুযোগ আর আসবে না। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকার সংসদের কাছে জবাবদিহি করেন, অথচ বিচারকদের করা যাবে না? তাহলে কি তারা জবাবদিহিতার উর্ধ্বে। এই ধরনের জাজমেন্ট দিয়ে আপনারা দেশকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন।’

ড.  কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলামের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তারা সুবিধাবাদী। সংসদের সঙ্গে বিচার বিভাগের সংঘর্ষ বাধিয়ে তারা ফল পেতে চান।’ বিচার বিভাগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সংসদের হাতে দায়িত্ব থাকবে। রায় নিয়ে আপানারা বসে থাকুন। সংসদ কার্যকর না করলে হবে না। আপনারা রায় দিতে থাকুন। সংসদ বিচার বিভাগের ন্যায্য বিচার করবে। বহু বিচারপতি এসেছেন, গেছেন।’

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘সংসদ যদি সংবিধানের বাইরে যায়, সেটা দেখার দায়িত্ব বিচার বিভাগের রয়েছে। তারপরও তারা ভুল করতে পারেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রতি আমার আনুগত্য প্রকাশ করছি। বিচারবিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে আমরা একমত। আবার বিচার বিভাগের দায়বদ্ধতা কিভাবে নিশ্চিত করা যায়, সেটা নিয়েও আলোচনা করতে চাই। বাংলাদেশের বিচারকরা যখন রায় দেন, তখন সেটা ভুলও হতে পারে, অজ্ঞতাপ্রসূতও হতে পারে। কিন্তু এ জন্য আমরা কোনও ব্যবস্থা নেব না? শুধু ব্যক্তিগত অসদাচরণ করলেই তার বিরুদ্দে তদন্ত সাপেক্ষে সংসদ রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ পাঠানো হবে।’

জাতীয় পার্টির সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘ড. কামাল কালো টাকা সাদা করেছিলেন। যিনি কালো টাকা সাদা করেন, তিনি কিভাবে অ্যামিকাস কিউরি হতে পারেন। আদালত তাকে কিভাবে ডাকেন? এই সংসদ রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসন করতে পারলে বিচারকদের কেন পারবে না?’ তিনি বলেন, ‘এই আদালত পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করেছিলেন। পঞ্চম সংশোধনীতেই সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।এই সংসদ নতুন কিছু করেনি। আমরা তো কোনও অপরাধ করিনি। আমরা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করতে চাই না। তাদের রায়ের পর কথা থাকে না। কিন্তু এরপরও কথা আছে। কারণ এই সংসদ সার্বভৌম। জনগণ আমাদের ম্যান্ডেট দিয়েছে। তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘রিভিউয়ের মাধ্যমে ৯৬ ধারা বহাল রেখে বিচার বিভাগ সংসদের প্রতি সম্মান দেখাবে। জনগণের প্রতি সম্মান দেখাবে।’

জাসদের মইনউদ্দীন খান বাদল বলেন, ‘সারাজীবন বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করে নির্যাতিত হয়েছি। কিন্তু সম্প্রতি কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, যা অনভিপ্রেত। ৯৬ ধারা সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচারকে কোথায় ধাক্কা দিয়েছে, সেটা বিচার বিভাগকে পরিষ্কার জবাব দিতে হবে। সংবিধানের রক্ষক সেটা ঠিক, মানছি। কিন্তু যেকোনও আইন বাতিল করতে তারা পারেন না। যেটা সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচারের পরিপন্থী, সেটাই বাতিল করার ক্ষমতা তাদের রয়েছে। আমরা বিচার বিভাগের বন্ধু। আশা করি বিষয়টি তারা যথাযথ গুরুত্ব দেবেন। এই রায় জনগণের কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে, তা ইতিহাসের কাছে ছেড়ে দিলাম।’

আলোচনায় আরও অংশ নেন সাবেক ডেপুটি স্পিকার অধ্যাপক আলী আশরাফ, স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তুম আলী ফরাজী ও বিএনএফ-এর আবুল কালাম আজাদ।

সংসদ সদস্যদের আলোচনার পরে স্পিকার শিরীন শারমিন বলেন, ‘আজকের আলোচনায়  বিষয় সম্পর্কে জাতীয় সংসদে পরবর্তী সময়ে আলোচনার সুযোগ দিতে সংসদ সদস্যরা আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। ষোড়শ সংশোধনী বিষয়ক যে রায় সুপ্রিমকোর্ট গত ৩ ‍জুলাই ২০১৭ ঘোষণা করেছেন, তা গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক বিষয় সম্পর্কিত। বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ—নির্বাহী বিভাগ, আইনসভা বা জাতীয় সংসদ ও বিচার বিভাগ। এই তিনটি অঙ্গ স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করেন সংবিধান অনুসারে। এই তিনটি অঙ্গের দায়িত্ব পালনের মধ্যদিয়ে আইনের শাসন নিশ্চিত হয়, মানবাধিকার সমুন্নত থাকে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সমুন্নত হয় ও সুশাসন নিশ্চিত হয়। যা গণতন্ত্রকে সুসংহত করে। পয়েন্ট অব অর্ডারে উত্থাপিত আলোচনায় সাংবিধানিক বিষয় সম্পর্কিত হওয়ায় জাতীয় সংসদে এই বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। এ বিষয়ে পরবর্তী সময়ে নির্ধারিত দিনে জাতীয় সংসদে আলোচনার সুযোগ থাকবে।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest

বাজারে ডিম কিনতে গিয়ে লক্ষ্য করে থাকবেন, দু’ধরণের ডিম দেখতে পাওয়া যায়৷ একটা সাদা রঙের, আরেকটা বাদামি। এই বাদামি ডিম বাজারে ধীরে ধীরে সাদা ডিমের জায়গাকে ঢেকে দিচ্ছে। অনেকেই শুধুমাত্র রং অন্যরকম হওয়ার জন্য, বাদামি ডিমই কিনতে আগ্রহী হচ্ছে। কিন্তু জানেন কি? কোন রঙের ডিমই শরীরের পক্ষে ভালো?

সাধারণ মানুষদের মধ্যে এই বাদামি ডিম কেনার নতুন শখ দেখেই মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা শুরু করল, সেই গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী চিকিৎসকরা বলছেন, বাদামি ডিম এবং সাদা ডিমের পুষ্টিগত তেমন পার্থক্য নেই। বাদামি ডিমে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড একটু বেশি রয়েছে। তবে সেই একটু বেশির পরিমাণ এতই নগণ্য যে সেটা না ধরলেই চলে। ফলে আপনি নির্দ্বিধায় বলতে পারেন সাদা আর বাদামি ডিম দুটোই সমান পুষ্টিগুণ ধারণ করে।

রং আলাদা হওয়ার কারণ লুকিয়ে রয়েছে মুরগির জিনে। সাদা ডিমগুলো আসে সাদা পালকের মুরগি থেকে যাদের রং সাধারণত সাদা বা হালকা। আর বাদামি ডিম পাড়ে বাদামি পালকের মুরগি। মুরগির জিনগত পার্থক্যের কারণেই ডিমগুলোর রং পাল্টে যায়। তবে বিশেষজ্ঞদের মত, ডিম কিনতে গেলে রং নয় গুণগত মান খেয়াল করুন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest