সর্বশেষ সংবাদ-
কালিগঞ্জে পুকুরের পানিতে দুই শিশুর মৃত্যুদেবহাটায় ৪০ জন উপকার ভোগীর মাঝে ছাগল বিতরণদেবহাটার সরকারি কর্মকর্তা-সুধীজনদের সাথে ডিসির মতবিনিময়সাতক্ষীরার ১৮৫টি ভোটকেন্দ্রের স্কুল সংস্কারে বরাদ্দ প্রায় ৬৪ লাখ টাকাসাতক্ষীরা জেলা রোভারের ৪১ তম কোর্স ফর রোভারমেট এর মহাতাঁবু জলসাশ্যামনগরে বুনো শাকের রান্না প্রতিযোগিতাসাতক্ষীরায় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে রাস্তা সংস্কার কার্যক্রমের উদ্বোধনতারেক রহমানের জন্মদিনে সাতক্ষীরায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাত্রদলের শিক্ষা উপকরণ বিতরণদেবহাটায় উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভামহেশ্বরকাটি বাজারে বিএনপির প্রার্থী কাজী আলাউদ্দিনের লিফলেট বিতরণ

কাঁঠালের অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা!

স্বাস্থ্য ডেস্ক: কাঁঠাল পুষ্টি সমৃদ্ধ। এতে আছে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম, জিঙ্ক এবং নায়াসিনসহ বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদান। অন্যদিকে কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় তা মানব দেহের জন্য বিশেষ উপকারী।

কাঁঠাল এর বৈজ্ঞানিক নাম Artocarpus heterophyllus (ইংরেজী নাম: Jackfruit) মোরাসিয়া পরিবারের আর্টোকার্পাস গোত্রের ফল। কাঁঠালের বেশ কিছু জাত রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতে চাষকৃত জাতসমূহ মোটামুটি দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। গালা ও খাজা – এ দুটি জাত ছাড়াও কাঁঠালের আরো জাত আছে। গালা ও খাজা কাঁঠালের মাঝামাঝি বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হিসেবে রয়েছে ‘রসখাজা’। এছাড়া আছে রুদ্রাক্ষি, সিঙ্গাপুর, সিলোন, বারোমাসী, গোলাপগন্ধা, চম্পাগন্ধা, পদ্মরাজ, হাজারী প্রভৃতি। তন্মধ্যে শুধুমাত্র হাজারী কাঁঠাল বাংলাদেশে আছে, বাকীগুলো আছে ভারতে। এবার আসুন জেনে নেয়া যাক কাঁঠালের অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে-

১। ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখা ও বুড়িয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে:

ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে ধীর করে কাঁঠালে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আর এতে থাকা পানি ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং মুখের ত্বকের নমনীয়তা বজায় রাখে। যার ফলে অকালে ত্বকে বলিরেখা পরে না।

২। থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে:

কাঁঠাল হচ্ছে কপারের একটি খুব ভালো উৎস ফলে এটি থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণে ভালো ভূমিকা রাখে। তাই থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে যেকোনো কড়া ঔষধ খাওয়ার আগে কাঁঠাল খেয়ে দেখতে পারেন।

৩। গর্ভবতী নারীদের প্রয়োজনে:

কাঁঠালে থাকা পুষ্টি উপাদান গর্ভধারণ ও স্তন্যদানকালে বেশ উপকারি। এতে থাকা নায়াসিন গর্ভবতী নারীদের শক্তি বৃদ্ধি করে, হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

৪। ক্যান্সার প্রতিরোধ করে:

কাঁঠালে রয়েছে lignans, saponins ও isoflavones নামক ফাইটোনিউট্রিঅ্যান্ট অর্থাৎ এই পদার্থগুলোতে স্বাস্থ্য রক্ষার গুণাবলী রয়েছে। এই পদার্থগুলোর রয়েছে ক্যান্সার প্রতিরোধক এবং বুড়িয়ে যাওয়া প্রতিরোধক ক্ষমতা।

৫। অ্যাজমা প্রতিরোধ করে:

কাঁঠালের স্বাস্থ্য উপকারিতার মাঝে রয়েছে অ্যাজমা প্রতিরোধের গুণাবলী। গবেষণায় বলা হয়ে থাকে যদি কাঁঠালের শিকড় এবং এর নির্যাস ফুটিয়ে পানিটা খাওয়া হয় তাহলে অ্যাজমা প্রতিরোধ সম্ভব।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কাজী আবদুল ওদুদের ‘শাশ্বত বঙ্গ’- কবির রায়হান

কবির রায়হান
কাজী আবদুল ওদুদের ‘শাশ্বত বঙ্গ’

 

সমগ্র বাংলা প্রবন্ধ সাহিত্যে কাজী আবদুল ওদুদ একজন উদার, অসাম্প্রদায়িক ও বিশিস্ট মানবতাবাদী প্রবন্ধকার। তিনি যখন প্রবন্ধ লিখতে শুরু করেন, তখন বাংলার মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রচলন কেবল শুরু হয়েছে। তাই, তৎকালীন সময়ে বাঙালী মুসলমান সম্প্রদায়ের কাছে তিনি ছিলেন একজন অত্যন্ত বিতর্কিত প্রবন্ধকার। যেহেতু মুসলমান ঐতিহ্যের মধ্যেই তাঁর জন্ম, এজন্য বাঙালী মুসলমান সমাজের সংকট ও সম্ভাবনা, গোড়ামী ও ধর্মান্ধতা এবং অশিক্ষা ও অনুদারতা তাঁর প্রবন্ধ সাহিত্যের একটা বিরাট অংশ জুড়ে আছে। তখনকার সময়ে তাঁর মত প্রাগ্রসর, উন্নত ও আধুনিক চিন্তাধারার মুসলমান লেখক কম ছিলেন। প্রখ্যাত ছন্দ বিশেষজ্ঞ ও কবিসমালোচক আবদুল কাদির সাহেব কাজী আবদুল ওদুদকে বাংলার সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলিম ভাবুক ও চিন্তাবিদ হিসেবে অভিহিত করেছেন ।

তিনি অর্থনীতি শাস্ত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর ডিগ্রীধারী হয়েও সরকারী কলেজে বাংলা সাহিত্যের শিক্ষক নিযুক্ত হয়েছিলেন। এটা তাঁর সাহিত্য প্রীতি ও সাহিত্য সাধনার স্বীকৃতি। বাংলার মুসলমান সমাজের জড়তা, অন্ধতা ও গোড়ামীর মুলোৎপাটন করে আধুনিকতা, সভ্যতা ও মানবতার ঝা-াকে উড্ডীন করবার অভিপ্রায়ে ১৯২৬ সালে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’। একদল তরুণ অথচ আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত যুবক ছিলেন এই সমাজের সদস্য। এঁদেরই অগ্রনায়ক ও প্রানপুরুষ ছিলেন কাজী আবদুল ওদুদ। মুসলিম সাহিত্য সমাজের কর্মমন্ত্র ছিল ‘জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব’। তিনি আজীবন এই জ্ঞান, বুদ্ধি ও মুক্তি সাধনায় নিমগ্ন ছিলেন। বিতর্কিত হয়েও তিনি বুদ্ধির মুক্তির মূলমন্ত্র থেকে বিচ্যুত হননি। একজন ভাবযোগী সাধকের মত বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনে দুঃসাহসী নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং উত্তর সুরীদের উপর তাঁর চিন্তাধারার প্রভাব অত্যন্ত প্রত্যক্ষভাবে পড়েছিল।
বাংলা প্রবন্ধ ও সমালোচনা সাহিত্যে তিনি একজন প্রথম শ্রেণীর লেখক। গত শতাব্দীর বিশের দশকের প্রারম্ভেই বাংলা প্রবন্ধ সাহিত্যে কাজী আবদুল ওদুদের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সাহিত্য জীবন ‘মীর পরিবার’ নামক ছোট গল্প গ্রন্থ দিয়ে শুরু হলেও তাঁর আসল ও প্রধান পরিচয় তিনি একজন পরিশ্রমী প্রবন্ধকার ও সমালোচক। তিনি সর্বমোট বাইশ খানা গ্রন্থের রচয়িতা। সাহিত্য, সমাজ, ধর্ম, দর্শন ও রাজনীতি প্রভৃতি বিষয়ে তাঁর অসংখ্য প্রবন্ধ রয়েছে। ‘কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ’ (দুই খ-), ‘কবিগুরু’ গ্যেটে (দুই খ-) ও শাশ্বত বঙ্গ’’- এই তিনখানা তাঁর কালজয়ী গ্রন্থ। এই তিনখানি গ্রন্থের জন্য তিনি বাংলা প্রবন্ধ ও সমালোচনা সাহিত্যে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আমি আমার আলোচনা তাঁর বিখ্যাত প্রবন্ধগ্রন্থ ‘শাশ্বত বঙ্গের’ মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখবো।

কাজী আবদুল ওদুদের ‘শাশ্বত বঙ্গ’ পাঁচশত পৃষ্ঠাব্যাপী এক সুবিশাল প্রবন্ধ গ্রন্থ। তাঁর পূর্বপ্রকাশিত ‘নজরুল প্রতিভা’, ‘আজকার কথা’, ‘হিন্দু মুসলমানের বিরোধ’, ‘সমাজ ও সাহিত্য’, নবপর্যায় এবং ‘রবীন্দ্র কাব্য পাঠ’ নামক ছয়খানা ছোট ছোট প্রবন্ধ গ্রন্থ ‘শাশ্বত বঙ্গ’ প্রবন্ধ গ্রন্থের অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। একারনেই গ্রন্থখানির কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে। জার্মান সাহিত্য, সংস্কৃত সাহিত্য, বাংলা সাহিত্য, সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্ম, দর্শন ও রাজনীতি প্রভৃতি বিষয়ে এই গ্রন্থখানিতে বিচিত্রমুখী আলোচনা লক্ষণীয়। জার্মান সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ প্রতিভা- কবি গ্যেটের সাহিত্য সাধনায় মুগ্ধ, আবার সংস্কৃত সাহিত্যের কালপুরুষ মহাকবি কালিদাশ তাঁর কাছে একজন বিষ্ময়কর প্রতিভা। ব্যক্তিত্ব ও প্রতিভা তাঁর কাছে এক বিষ্ময়।

বাংলাদেশের প্রবন্ধকার আবদুল হক আলোচনা প্রসঙ্গে বলেছেন- ‘শাশ্বত বঙ্গের’ শ্রেষ্ট প্রবন্ধ ‘সম্মেহিত মুসলমান’। বস্তুতপক্ষে ‘সম্মোহিত মুসলমান’ প্রবন্ধের ভাবতম্ময়তা, বিশ্লেষন ধর্মিতা ও ভাষার কাব্যধর্মীতার জন্য বাংলা সাহিত্যে একটি অনত্যম শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ হিসাবে পরিগনিত হয়েছে।’ কাজী আবদুল ওদুদ ‘সম্মোহিত মুসলমান’ নামক প্রবন্ধে বলেছেন-‘যুক্তি বিচার যতই অপুর্ণাঙ্গ হোক, জীবন পথে বাস্তবিকই এ যে মানুষের এক অতি বড় সহায়। এর সাহায্যের অভাব ঘটলে পূর্বানুবর্তিতা পাষানভারের মতই মানুষের জীবনের উপরে চেপে বসে, দেখতে দেখতে তাঁর সমস্ত চিন্তা ও কর্ম প্রবাহ শুষ্ক ও শীর্ন হয়ে আসে’। এই প্রবন্ধের অন্যত্র বলেছন- ‘কোন সাধনার উত্তরাধিকার বংশসূত্রে নির্নীত হয় না, গতানুগতিক শিষ্যত্ব সূত্রেও নির্নীত হয় না, হয় সাধনা সূত্রেই’। যুক্তি, বুদ্ধি ও বিচার বিবেচনা পূর্বক জীবন সমস্যার সমাধানে এগিয়ে যেতে হবে। স্বকীয় কর্মপ্রয়াস ও নিরলস সাধনার ফলশ্রুতি হিসেবেই সাফল্যের জয়মাল্যে ভূষিত হওয়া যায়।

মোস্তফা কামাল পাশা আধুনিক মুসলিম জীবনে একজন প্রবল পরাক্রান্ত কর্মীপুরুষ ও রাষ্ট্রনায়ক। সমগ্র মুসলিম জগতে তুর্কী বীর কামাল পাশা সর্বপ্রথম ধর্মনিরপেক্ষ ইহজাগতিক চেতনায় উদ্দীপ্ত হন এবং তুর্কী জাতিকে একটি আধুনিক, গণতান্ত্রিক ও গোড়ামীমুক্ত রাষ্ট্রে পরিণত করেন। এই কর্মীপুরুষ সম্পর্কে আলোচনা বাংলা ভাষায় তেমন হয়নি। কাজী আবদুল ওদুদ তাঁর ‘মুস্তফা কামাল সম্বন্ধে কয়েকটি কথা’ প্রবন্ধে বলেছেন- ‘মানুষের যে জাগতিক জীবন, এই জাগতিক জীবন যদি সুন্দর না হয়, সুব্যবস্থিত না হয়, তবে সত্যকার নৈতিক জীবন, আধ্যাত্মিক জীবন, তার পক্ষে সুদুরপরাহতই হয়ে থাকে’। একথা দিবালোকের মত স্পস্ট যে, অর্থনৈতিক জীবনই মানবজীবনের স্তম্ভস্বরূপ। মানুষের এই অর্থনৈতিক জীবন যদি নড়বড়ে হয়, অব্যবস্থিত হয়, তবে সেই মানুষ ও জাতির পক্ষে কোনো মহৎ কাজ আশা করা যায় না। তিনি উক্ত প্রবন্ধে আশা প্রকাশ করেন যে, ‘সত্যের আঘাত বড় প্রচন্ড। মুসলমানের সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে গতানুগতিকতাকে ধুলিস্যাৎ করে দিয়ে নব সৃষ্টির প্রয়োজন ও সম্ভাবনা দেখিয়ে, মুসলমান সমাজের বুকে কামাল যে সত্যকার আঘাত দিয়েছেন, আশা করা যায়, এই আঘাতেই আমাদের শতাব্দীর মোহ নিদ্রার অবসান হবে। ধর্মে, কর্মে জাতীয়তা, সাহিত্যে সমস্ত ব্যপারেই আমাদের ভিতরে স্থান পেয়েছে যে জড়তা, দৃষ্টিহীনতা, মনে আশা জাগছে, যেমন করেই হোক এইবার তার অবসান আসন্ন হয়ে এসেছে।’

কাজী আবদুল ওদুদ যে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন, আসলে কি মুসলমানের বিশেষ করে বাঙালী মুসলমানের সেই জড়তা ও দৃষ্টিহীনতার অবসান হয়েছে? বাঙালী মুসলমানদের গতানুগতিক ও নিরানন্দ বন্ধ্যা সাংস্কৃতিক জীবন পর্যবেক্ষন করলে এ কথা স্পস্টতই প্রতীয়মান হয় যে, তার মোহনিদ্রার অবসান তেমন ঘটেনি। পর্যাপ্ত আধুনিক শিক্ষার প্রসার ঘটলেও তার জীবন দর্শনে ও জীবন জিজ্ঞাসায় এখনো পর্যন্ত বৈজ্ঞানিকতা, ইহজাগতিকতা ও আধুনিকতার মেলবন্ধন সৃষ্টি হয়নি। তিনি উক্ত প্রবন্ধের শেষাংশে বলেছেন- ‘জীবন-সমস্যার চরম সমাধান কোনোকালেই শেষ হয়ে যায়নি। নূতন করে সে সমস্ত বিষয়ে সচেতন হওয়া আর তার মীমাংসা করতে চেষ্টা করা- এইই জীবন।’ মানুষের জীবনে সমস্যার অন্ত নেই। একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে এসে মানুষের জীবনে অসংখ্য সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। সমস্যা বিহীন জীবন অকল্পনীয়। তবুও মানুষ জীবন জিজ্ঞাসু মানুষ অগনিত সমস্যার সমাধানকল্পে ক্লান্তিহীনভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এ পরিশ্রম ও সাধনা চলবে অনন্তকাল ধরে। তিনি এই প্রবন্ধের অন্যত্র বলেছেন- ‘হযরত ওমর আর হারুন-অর-রশীদ উভয়েই ছিলেন খলিফা, কিন্তু একজনের এফতারী ছিল চারটি ছোলা আর একজনের বাবুর্চিখানার দৈনিক খরচ ছিল দশ হাজার দিরহাম। অথচ হারুন-অর-রশীদকে মুসলমান ইতিহাস থেকে বাদ দেওয়া চলে না, বাদ দিলে মুসলমানের গৌরব সৌধের এক বিরাট স্তম্ভই ভূমিসাৎ হয়ে যায়। তেমনভাবে ইবনে রুশদ আর ইমাম গাজ্জালী দুজনেই মহাপন্ডিত মুসলমান, কিন্তু একজনের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান চিন্তার স্বাধীনতা, যুক্তি বিচার, আর একজন শাস্ত্র¿ানুগত্যকে শ্রেয়োলাভের এক বড় পথ বলেই জানেন।’ বাঙালী মুসলমান বৈচিত্রহীনতা, সংস্কৃতিহীনতা ও চিন্তাহীনতা থেকে মুক্ত হয়ে সবল, সুস্থ্য ও শক্তিশালী হয়ে উঠুক- কায়মনোবাক্যে কাজী আবদুল ওদুদ আমৃত্যু তাই কামনা করেছিলেন।

তিনি প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন একটা আদর্শ ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই। তিনি সাহিত্যকে কেবল মাত্র ভাবসর্বস্ব, কল্পনা সর্বস্ব ও কলানৈপুন্যের বাহন মনে করেননি। তাঁর আদর্শ ছিল বুদ্ধির মুক্তি। তিনি বলেছেন- ‘সাহিত্যের উদ্দশ্য জীবনের সমস্যার সমাধানের প্রয়াস। এই প্রয়াস জ্ঞাত সারেও হতে পারে, অজ্ঞাত সারেও হতে পারে। সাহিত্য হচ্ছে সৌন্দর্যময় জ্ঞান’। সাহিত্য সাধনাকে তিনি জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। বাঙালী মুসলমান সমাজের সংকট ও সম্ভাবনাই ছিল তার প্রবন্ধ সাহিত্যের প্রধান বিষয়বস্তু। তিনি চেয়েছিলেন- বাঙালী মুসলমান জীবনের সর্বক্ষেত্রে গোড়ামী মুক্ত হোক, মোহমুক্ত হোক, জ্ঞানের সাধনায় দিগি¦জয়ী হোক, সমাজ, ধর্ম ও জীবন জিজ্ঞাসায় বস্তুনিষ্ঠ হোক; বস্তুবাদী ও ইহজাগতিক চিন্তাধারায় উদ্বুদ্ধ হোক; সৌম্য, নিরাসক্তও নিরপেক্ষভাবে জ্ঞান সাধনায় এগিয়ে আসুক, হয়ে উঠুক সর্বসংস্কার মুক্ত, আধুনিক ও মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গীর অধিকারী, চেতনা ও মন-মানসিকতায় হয়ে উঠুক উদার ও অসাম্প্রদায়িক, রাখুক বুদ্ধিকে পরিচ্ছন্ন ও নিষ্কলুষ এবং সর্বোপরি বেড়ে উঠুক একাধারে জাতীয়তাবাদী বাঙালী ও প্রগতিশীল মুসলমান হিসেবে। কাজী ওদুদের চিন্তা বিফলে যায়নি। তার প্রমান আজকের বাংলাদেশে একদল শক্তিশালী, উদার ও প্রগতিশীল শিক্ষিত মানুষ তৈরী হয়েছে।

‘শাশ্বত বঙ্গ’ প্রবন্ধ গ্রন্থের লেখক কাজী আবদুল ওদুদ বাংলাদেশের সমাজ, সংস্কৃতি ও সাহিত্যে একজন মুক্ত বুদ্ধি সম্পন্ন উদার চিন্তাশীল অসাম্প্রদায়িক ও শক্তিমান প্রবন্ধকার এবং ঢাকার মুসলিম সাহিত্য সমাজ তথা বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের একজন অন্যতম প্রধান অগ্রপথিক।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ইমরান এইচ সরকারকে ছেড়ে দিয়েছে র‍্যাব

ন্যাশনাল ডেস্ক: গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারকে বুধবার রাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে বিকেলের দিকে রাজধানীর শাহবাগ থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল র‍্যাব।

র‍্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. এমরানুল হাসান রাত ১১টার দিকে  বলেন, ‘ইমরানকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’ কি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ইমরানের কাছ থেকে তথ্য নিয়েছি। সেগুলো তদন্ত করে দেখব।’ তবে এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি র‍্যাব-৩-এর অধিনায়ক।

ইমরান এইচ সরকার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মুঠোফোনে বলেন, র‍্যাব তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে। তিনি বাসার দিকে যাচ্ছেন। ইমরান বলেন, র‍্যাব তাঁকে নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি তিনি। ইমরান আরও বলেন, ‘সত্য ও ন্যায়ের পথে লড়াই করছি। ভয়ের কি আছে। লড়াই চালিয়ে যাব।’

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারকে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে শাহবাগ থেকে একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় র‍্যাব-৩-এর চারটি গাড়ি শাহবাগে ছিল।

চলমান মাদকবিরোধী কর্মসূচি ঘিরে বিকেল চারটার দিকে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচি ছিল। ইমরান এইচ সরকারকে ওই কর্মসূচি থেকেই আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ঠিক কী কারণে তাঁকে আটক করা হয়েছে, তা নিয়ে পরিষ্কার কিছু জানায়নি র‍্যাব। প্রাথমিকভাবে র‍্যাব জানিয়েছিল, অনুমতি ছাড়া কর্মসূচি পালন করতে যাওয়ায় ইমরানকে আটক করা হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আশাশুনিতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মৎস্য ঘেরে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ

আশাশুনি ব্যুরো: আশাশুনিতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মৎস্য ঘেরে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতের যে কোন সময়ে বিষ প্রয়োগের ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের পাইথালী গ্রামের আব্দুর সাত্তার সরদারের পুত্র আলহাজ্ব মোশাররফ সরদারের মৎস্য ঘেরে। সরেজমিন ঘুরে দেখাগেছে, বিষ প্রয়োগের ফলে ঘেরের প্রায় ৭৫ হাজার টাকার রুই, কাতলা, মৃর্গেল ও সিলভার কার্প মাছ নিধোন করা হয়েছে। ঘের মালিক আলহাজ্ব মোশাররফ সরদার জানান, বিগত দুই বছর থেকে পাশ্ববর্তী ঘের মালিক বৈউলা গ্রামের হাকিম বিশ্বাসের পুত্র লাভলু বিশ্বাসের সাথে ঘেরের বেড়ি বাধ নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বিগত কয়েক দিন থেকে ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে ক্ষতি সাধন করার হুমকিও দিয়ে আসছিল। ঘটনার দিন রাতে তাকে ঘেরের পাশ দিয়ে ঘুরাঘুরি করতে দেখা গেছে। রাতে সেহেরী সেরে নামাজ পড়ে ঘেরে গিয়ে মরা মাছ ভাসতে দেখে বিষ প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারি। বিষ প্রয়োগের ফলে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মাছ মরে গছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এব্যাপারে থানায় কোন অভিযোগ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাঃ মোস্তাফিজুর রহমান।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাংবাদিক ও শুভানুধ্যায়ীদের সম্মানে ‘কলারোয়া নিউজ’র ইফতার

নিজস্ব প্রতিনিধি : সাংবাদিক ও শুভানুধ্যায়ীদের সম্মানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা করলো পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘কলারোয়া নিউজ’।
২০ রমজান, ৬ জুন বুধবার কলারোয়া ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বিপরীতে খুকুর বাড়ি সুপার মার্কেটের ২য় তলায় ওই ইফতার ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
ইফতারপূর্ব আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ‘কলারোয়া নিউজ’র সম্পাদক ও প্রকাশক প্রভাষক আরিফ মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কলারোয়া সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলহাজ্ব প্রফেসর আবু নসর।
কলারোয়া নিউজ’র বার্তা সম্পাদক শেখ শাহাজাহান আলী শাহীনের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন কলারোয়া পাবলিক ইন্সটিটিউটের সাধারণ সম্পাদক এড.শেখ কামাল রেজা, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান খাঁন চৌধুরী, কলারোয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রধান শিক্ষক রাশেদুল হাসান কামরুল ও কলারোয়া নিউজ’র সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার এমএ মাসুদ রানা।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ‘সাতক্ষীরা নিউজ’র বার্তা সম্পাদক একরামুল করিব, ‘কলারোয়া নিউজ’র পৃষ্ঠপোষক আলহাজ্ব বিএম আফজাল হোসেন পলাশ, লক্ষ্মন বিশ্বাস, প্রভাষক শেখ মো.আলকামুন, কামরুল ইসলাম সাজু, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক শেখ জাকির হোসেন, সহ.সম্পাদক আতিক রহমান, ইমানুর রহমান, প্রধান প্রতিবেদক জুলফিকার আলী, ক্রীড়া সম্পাদক অনুপ ঘোষ, স্টাফ রিপোর্টার মিলন দত্ত, হাবিবুর রহমান রনি, রাজিবুল ইসলাম রাজিব, গোপাল ঘোষ বাবু, সরদার কালাম, হোসেন আলী, কলারোয়া নিউজ’র পাঠক ও শুভাকাঙ্খি লাকি, মিল্টন, কবির হোসেন, উমায়ের হোসেন, মনিরুল আলম টিটু, হাসান, শাহিনুল হক, আকবর হোসেন, গাজী হাদিউজ্জামান মন্টু, মোয়াজ হোসেন, খালিদ হাসান মিঠু, বাপ্পি হোসেন প্রমুখ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে ‘কলারোয়া নিউজ’র শতাধিক শুভকাঙ্খি উপস্থিত ছিলেন।
দোয়া পরিচালনা করেন কলারোয়া থানা মসজিদের খতিব সাংবাদিক আসাদুজ্জামান ফারুকী।
‘কলারোয়া নিউজ’র পৃষ্ঠপোষক খায়রুল আলম কাজলের পিতা কলারোয়া প্রেসক্লাবের দীর্ঘদিনের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রয়াত খালেকুজ্জামান পল্টু আত্মার মাগফিরাত কামনা, কলারোয়া নিউজ পরিবারের সকলের সুখ-সমৃদ্ধি এবং দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যান কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কলারোয়া পৌর যুবলীগের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল

নিজস্ব প্রতিনিধি : কলারোয়া পৌর আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার পৌর যুবলীগের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ওই ইফতারের আয়োজন করা হয়।
পৌর যুবলীগের আহবায়ক জুলফিকার আলীর সভাপতিত্বে ইফতার পূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আরাফাত হোসেন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক মন্ময় মনীর, ইউপি চেয়ারম্যান নূরল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ, এসএম মনিরুল ইসলাম, আবহাল হোসেন হাবিল, আসলামুল ইসলাম আসলাম,উপজেলা যুবলীগের একাংশের সভাপতি মাছুমুজ্জমান মাছুম, সাধারণ সম্পাদক,আসাদুজ্জামান তুহিন,স্বেচ্ছাসেবলীগের আহবায়ক আশিকুর রহমান মুন্না, সা, সম্পাদক লিটু, আ’লীগ নেতা মাস্টার আব্দুল আজিজ,মনিরুজ্জামান বুলবুল, শফিকুল ইসলামসহ পৌর সভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কালিগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মানববন্ধন

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি: বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কালিগঞ্জ উপজেলা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাকিমের ছেলে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় কর্মরত সমাজসেবা কর্মকর্তা আখলাকুর রহমানকে দায়িত্বরত অবস্থায় লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে কালিগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। বুধবার বেলা ১১ টায় উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মাঈনউদ্দিন হাসানের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এতিমের নামে টাকা তুলে আত্মসাতের বিষয়ে বিরোধিতা করায় একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে আহত করার প্রতিবাদ জানিয়ে এর সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক কমান্ডার শেখ অজিহার রহমান, অর্থ কমান্ডার আব্দুর রউফ, সহকারী কমান্ডার এসএম শাহাদাত হোসেন, শেখ মনির আহম্মেদ, শেখ নুর মোহাম্মদ প্রমুখ। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মাদকবিরোধী অভিযান চলবে- গণভবনে প্রধানমন্ত্রী

ন্যাশনাল ডেস্ক: মাদকবিরোধী অভিযানে বন্দুকযুদ্ধের নামে ‘বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ ঘটছে অভিযোগ করে তা বন্ধের দাবি উঠলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশকে সমাজবিরোধী উপাদান থেকে মুক্ত করতে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বুধবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় সারা দেশের আইনজীবীদের সম্মানে গণভবনে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত ৪ মে মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকে গুলিতে ১৫০ জনের মতো নিহত হয়েছে বলে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র জানিয়েছে। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শিবির ও মানবাধিকারকর্মীরা শুরু থেকেই এভাবে প্রাণহানির প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।

ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমরা মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। বাংলাদেশের মানুষের জীবনের সব ধরনের শান্তি-নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় সরকার। দেশে অবিচার ও অন্যায়ের কোনো স্থান নেই।’

‘আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে যে কোনো অবস্থা মোকাবিলা করা, আর যে কোনো নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া খুব কঠিন কাজ না।’

‘যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার সরকার সম্পন্ন করেছে’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর পরই বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।’

‘বাংলাদেশকে এখন উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে বিবেচনা করা হয়’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধিশালী ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই আমরা।’

‘যখনই আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে তখনই এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। আমাদের সরকারের নীতি আদর্শই হচ্ছে জনগণের সেবা করা।’

তিনি আরও জানান, ‘কানাডায় অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য জি-৭ গ্রুপের দেশগুলো আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমি কাল সেখানে যাচ্ছি। তারা বাংলাদেশের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চায়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির পেছনে কী জাদু আছে, তা তারা জানতে চায়।’

২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে তাকে গ্রেফতার করার পর আইনজীবীসহ যারা প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘সেই সময় আপনাদের যে সমর্থন পেয়েছি সেটাই ছিল আমার শক্তি। আমি এদেশে আসার পর থেকে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম করেছি।’
‘আল্লাহর রহমতে আমি এটুকু বলতে পারি, সকল বাধা অতিক্রম করে আবার দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে আমরা যে নির্বাচন জয়ী হয়েছিলাম এর ফলে দেশের উন্নতি হয়েছে।’

ইফতারের আগে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী। বিভিন্ন টেবিল ঘুরে অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। ইফতারের আগে দেশ ও জাতির অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার, ব্যারিস্টার ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, আইন সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, সাবেক বিচারপতি মেসবাহ উদ্দিন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস প্রমুখ।

এর আগে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, ঢাকা জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহী জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন, সিলেট জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন, গাজীপুর জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন, দিনাজপুর জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন, শরীয়তপুর জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন ও লালমনিরহাট জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। সূত্র: ইউএনবি, বাসস।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest