সর্বশেষ সংবাদ-
দেবহাটার সরকারি কর্মকর্তা-সুধীজনদের সাথে ডিসির মতবিনিময়সাতক্ষীরার ১৮৫টি ভোটকেন্দ্রের স্কুল সংস্কারে বরাদ্দ প্রায় ৬৪ লাখ টাকাসাতক্ষীরা জেলা রোভারের ৪১ তম কোর্স ফর রোভারমেট এর মহাতাঁবু জলসাশ্যামনগরে বুনো শাকের রান্না প্রতিযোগিতাসাতক্ষীরায় দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে রাস্তা সংস্কার কার্যক্রমের উদ্বোধনতারেক রহমানের জন্মদিনে সাতক্ষীরায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাত্রদলের শিক্ষা উপকরণ বিতরণদেবহাটায় উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভামহেশ্বরকাটি বাজারে বিএনপির প্রার্থী কাজী আলাউদ্দিনের লিফলেট বিতরণ৯৪ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে আমরা আড়াই লক্ষ করেছি বলেই মুক্তিযোদ্ধারা যথাযথ সম্মান পান না আলিপুরে জামায়াতের নির্বাচনী পথ সভা

নির্বাচনে প্রতীক পায়খানার ‘প্যান’!

হাত থেকে হাতি, জামা থেকে টুথব্রাশ। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে রয়েছে বহু অদ্ভুত নির্বাচনী প্রতীক। যার যৌক্তিকতা খুঁজতে যাওয়া বৃথা। তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে ‘প্যান’। নজিরবিহীন ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গেরই। পঞ্চায়েত ভোটে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতীক পায়খানা থুড়ি ‘পায়খানার প্যান’।

পঞ্চায়েত ভোট বারাবনির স্বতন্ত্র প্রার্থী বিপ্লব দাস। এলাকার উন্নয়নে একাই বাম, ডান, ঘাসফুলের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি। ঘটা করে প্রচারে নামার পরিকল্পনাও রয়েছে। তবে বাদ সেধেছে ‘প্যান’। নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতীক হিসেবে তাকে দেয়া হয়েছে এই চিহ্নটিই। আর তা নিয়েই বেজায় বিপাকে পড়েছেন বিপ্লব। সকাল সকাল লোকের সামনে পায়খানার ছবি তুলে ধরলে কী যে হবে তা নিয়ে ভাবনায় পড়েছেন তিনি। ‘শেষমেশ পায়খানা’- এমন কটাক্ষ উড়ে আসছে বিভিন্ন দিক থেকে। হাসির খোরাক হয়েও গিয়েছেন ইতোমধ্যে।

তবে প্রার্থীর সমস্যা নিয়ে মোটেও মাথা ঘামাতে রাজি নয় কমিশন বা সংশ্লিষ্ট দপ্তর। বিডিও অফিসের পাল্টা যুক্তি, স্বতন্ত্র প্রার্থীকে স্যানিটারি চিহ্ন দেয়া হয়েছে। এতে সমস্যার কিছু নেই।
বিপ্লব জানান, গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোট। তাই গাঁয়ের লোকদের টয়লেট চিহ্নে ভোট দিন বললে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করলে সবাই কমোডের ছবি ভাবছেন। আবার গ্রামীণ ভাষায় বোঝাতে গেলে ‘পায়খানার প্যান’ শব্দটি ব্যবহার করতে হবে। প্রার্থীর মতে দেয়ালে লিফলেটে ‘পায়খানার প্যান’ কথাটি লিখলে বড্ড বেমানান ও অসম্মানের মনে হচ্ছে। ওই শব্দটি উচ্চারণ করলেই হাসির খোরাক হচ্ছেন তিনি।

বিপ্লব দাস বলেন, ছবি এঁকে দেয়ালে শুধু লিখে দেব এই চিহ্নে ভোট দিন। কিন্তু পাড়ার মা মাসিমাদের কাছে কী বলব? রাস্তায় চায়ের দোকান থেকে সব জায়গায় চর্চা আর বিনোদনের খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই প্রতীক চিহ্নটি। তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে একমাত্র বিরোধী বিপ্লব দাস। ভোটের আবেদন করলেই নাকে মুখে রুমাল চাপা দিয়ে হেসে ফেলছেন শাসকদলের কর্মীরা। আচ্ছা বিড়ম্বনায় পড়েছেন তিনি। ভোট প্রচারে বেরিয়ে মাঝে মাঝে নিজেই হেসে লুটিয়ে পড়ছেন বিপ্লব। তবে পরিস্থিতির মোকাবেলায় তৈরি তিনি।

‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’কেই হাতিয়ার করে নিয়েছেন তিনি। ভোটারদের বোঝাচ্ছেন দেশজুড়ে টয়লেট নিয়ে বিপ্লব শুরু হয়েছে। সেখানে তার প্রতীক উন্নয়নের, সমাজ সচেতনতার।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
পরীমণির ঘরে নতুন মেহমান!

পরীমনির ঘরে নতুন মেহমান কথাটি শুনে হয়তো অনেকেই চমকে উঠেছেন। পরীমনির ভক্ত অনুরাগীরা ভাবছেন এটাও কি সম্ভব। শিরোনাম দেখে অনেকের মনে হচ্ছে পরীমণি কি মা হতে যাচ্ছেন? আসলে তা কিন্তু না। তার ঘরে নতুন এক সদস্য এসেছে ঠিকই, আর তা হলো গাড়ি।

জাপানি কোম্পানি টয়োটা হ্যারিয়ারের ২০১৫ মডেলের একটি গাড়ি বুধবার কিনেছেন পরী।

জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী ২০১৫ সালে ভালোবাসা সীমাহীন চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার বড় পর্দায় অভিষেক হয়। রানা প্লাজা (২০১৫) ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তিনি আলোচনায় আসেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল রোম্যান্টিক আরো ভালোবাসবো তোমায়, লোককাহিনী নির্ভর মহুয়া সুন্দরী, এবং অ্যাকশনধর্মী রক্ত।

পরীমণি বলেন, আমার অনেকগুলো দুর্বলতা রয়েছে। যার মধ্যে গাড়িও একটি দুর্বলতা। বর্তমানে যে গাড়িটি ব্যবহার করছি সেটি প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে চালাচ্ছি। তাই নতুন একটি গাড়ি নিলাম। এছাড়া আমার কাছে জাপানি একটি এন্টিক গাড়িও রয়েছে।

সম্প্রতি পরীমনির ওয়াকিল আহমেদ পরিচালিত ‘কত স্বপ্ন কত আশা’ ছবিটি মুক্তি পায়। এতে অভিনয় করেন পরীমণি ও বাপ্পী। এবার পরবর্তী ছবি তৈরির পরিকল্পনা এঁটেছেন এই গুণী পরিচালক। ইতোমধ্যে কাহিনী ও চিত্রনাট্য বিন্যাসের কাজ শুরু করেছেন তিনি। আর নাম দিয়েছেন ‘বউ’।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
‘আমার সামনেই মুরের সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হন ট্রাম্প’-প্লেবয় মডেলের দাবি

ফের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প খবরের শিরোনাম হলেন। স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে সম্পর্ক সংক্রান্ত খবর এখনো মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর শিরোনামে আসছে। এরই মধ্যে আরো এক নারীর সঙ্গে যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িয়ে পড়লেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্টর্মির পর এবার বোমা ফাটালেন প্লেবয়ের প্রাক্তন মডেল এল কে জেনিসন। সঙ্গে নাম জড়াল তার বন্ধু বারবারা মুরের।

জেনিসনের দাবি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতীতের প্রেমিকা মার্লা মেপলস তখন গর্ভবতী ছিলেন। আর সেই সময়ে প্রেমিকা মার্লাকে লুকিয়ে বারবারা মুরের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন ট্রাম্প। এখানেই শেষ নয়, সেই সব ঘটনার সাক্ষী ছিলেন জেনিসন নিজে বলেও জানান।

প্রাক্তন মডেল এল কে জেনিসন আরো জানাচ্ছেন, ১৯৯৩ সালে তিনি ও মুর একটি শুটের কাজের জন্য নিউ ইয়র্কে এসেছিলেন। ওই সময় নিজের বিলাসবহুল পেন্টহাউসে নিমন্ত্রণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

জেনিসন বলেছেন, ‘সেখানে ট্রাম্পের ঘরে বিছানার ওপরে দীর্ঘক্ষণ মদ্যপানের পরে বসে গল্প করছিলাম।’ তারপরেই যৌনতায় লিপ্ত হন ট্রাম্প ও মুর। তখন পাশে ছিলেন জেনিসন। কিন্তু ঘরে তৃতীয় কারো উপস্থিতি নিয়ে কোনো অসুবিধাই ছিল না ট্রাম্প ও মুরের।

জেনিসন আরো বলছেন, ‘এই ঘটনার আগে পর্যন্ত ট্রাম্পকে আমার খাঁটি ভদ্রলোক বলে মনে হত।’‌ তাদের এ সম্পর্কের পর থেকেই নাকি মুরের আচরণে কিছু পরিবর্তন আসে। ট্রাম্পকে ‘‌বয়ফ্রেন্ড’‌ বলে সম্বোধন করতে শুরু করেন মুর। সে সময় মুরকে সতর্কও করেছিলেন জেনিসন। মুরকে বারেবারে মনেও করিয়ে দিতেন, ট্রাম্পের অন্য প্রেমিকা রয়েছেন, যিনি সন্তানসম্ভবা।

জেনিসন এও বলেন, ‘‌কিন্তু সেসময় মুরের চোখে তখন ট্রাম্পের অর্থের মোহ। প্রায় রোজই মুরকে দামি উপহার দিতেন ট্রাম্প। আমি মুরকে কখনো হিংসা করিনি। কেননা, মুর আমার ভালো বন্ধু ছিল। কিন্তু একজন গর্ভবতী নারীর প্রেমিকের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়াটা আমার কাছে অত্যন্ত অন্যায় বলে মনে হয়েছিল।’

এর কিছু দিন পর ট্রাম্পের প্রেমিকা মার্লা কন্যা সন্তান টিফানির জন্ম দেন। তারপর হঠাৎ করেই কিছু না জানিয়ে বারবারা মুরের সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তবে যৌন কাহিনীর কথা ফাঁস করলেও প্রশাসক ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসাই করেন এই প্লেবয়ের প্রাক্তন মডেল এল কে জেনিসন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মালয়েশিয়ায় মাহাথিরের শপথ স্থগিত!

মালয়েশিয়ার ৭ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার শপথ নেওয়ার কথা ছিল মাহাথির মোহাম্মদের। কিন্তু আজকে সেই শপথ নেওয়া হবে না বলে নিশ্চিত করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। খবর মালয় মেইলের।

কার্যালয়ের যোগাযোগ কর্মকর্তা হুসনি ইউসোফ বলেছেন, কার্যালয় শপথের জন্য এখনও তারিখ ঠিক করেনি। তবে আজ যে শপথ নেওয়া হচ্ছে না তা তিনি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘শপথ নিয়ে এখনও কোনো তথ্য পাইনি…তবে আজকে নয়।’

বুধবার জয়ের পর রাতে মাহাথির মোহাম্মদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি আজ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন।

প্রসঙ্গত, মালয়েশিয়ার ১৪তম সাধারণ নির্বাচনে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ নেতৃত্বাধীন পাকাতান হারাপানকে জয়ী ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।

বিবিসি বলছে, নির্বাচনে ২২২ আসনে মধ্যে মাহাথির মোহাম্মদের পাকাতান হারাপান জয় পেয়েছে ১১৩টি আসনে। অন্যদিকে, দেশটির ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বারিসান ন্যাশনাল ৭৯টি আসনে জয় পেয়েছে। কোনো দল বা জোট ১১২ আসনের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেই শাসনক্ষমতায় আসীন হতে পারে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মাহাথির মুহাম্মদের পূর্বপুরুষ বাংলাদেশের

মাহাথির বিন মুহম্মদ। আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার হিসেবে সমাদৃত। বুধবার দেশটির ১৪তম সাধারণ নির্বাচনে ফের ক্ষমতার মসনদে এসেছেন এ নেতা। ২২২টি সংসদীয় আসনের ১২৬টি জয় পেয়ে হারিয়েছেন তার শিষ্য নাজিব তুন রাজাককে। এই মাহাথির মুহাম্মদের পূর্বপুরুষরা ছিলেন বাংলাদেশের বাসিন্দা।

২০১৪ সালে ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেসের (ইউআইটিএস) এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মাহাথির বলেন, “চট্টগ্রামের কাপ্তাই রাঙ্গুনিয়ার কোন একটি গ্রামে আমার দাদার বাড়ি ছিলো এবং দাদা পরবর্তীতে মালয়েশিয়াতে বসতি স্থাপন করেন” তার এই কথার সূত্রধরেই খোঁজ নিয়ে যানা যায় চট্টগ্রাম জেলার উত্তরাংশে রাঙ্গুনিয়া উপজেলাধীন চন্দ্রঘোনা ও কাপ্তাইগামী সড়কের সামান্য পূর্বে কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত একটি প্রসিদ্ধ গ্রাম মরিয়মনগর।

ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এ গ্রামের এক যুবক ব্রিটিশ শাসিত মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। তিনি ছিলেন জাহাজের নাবিক। মালয়েশিয়ায় এ্যালোর সেটর গিয়ে এক মালয় রমণীর সঙ্গে সম্পর্কে আবদ্ধ হন। তাদের ঘরেই জন্ম নেন মুহম্মদ ইস্কান্দার। আর এই মুহম্মদ ইস্কান্দারের ছেলে সন্তান হিসেবে জন্ম নেন মাহাথির মুহম্মদ। সে হিসেবে চট্টগ্রাম হচ্ছে মাহাথির মুহম্মদ এর পূর্বপুরুষের দেশ এবং সে অনুযায়ী বাংলাদেশী রক্ত তার শরীরে বহমান।

১৯২৫ সালের ১০ জুলাই ব্রিটিশ অধ্যুষিত মালয়ের কেদাহ অঞ্চলের অ্যালোর সেতার নামক স্থানে এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে মাহাথির মুহম্মদ জন্মগ্রহণ করেন। পিতামাতার দশ সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন মাহাথির। তার পিতা মুহম্মদ বিন ইস্কান্দার ছিলেন মালয়ের একটি ইংলিশ স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক।

মাহাথির শৈশবে প্রথমে মালয় ও পরে শহরের একমাত্র ইংরেজি স্কুলে শিক্ষা লাভ করেন। বাসায় তাদের একজন ধর্ম শিক্ষক ছিলেন যিনি প্রতিদিন বাড়িতে এসে পবিত্র কুরআন শরীফ, ইসলাম ধর্মের উপর বিশ্বাস এবং ধর্মীয় বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান শেখাতেন। ইসলাম ধর্মের প্রতি বিশ্বাস মাহাথিরের ভিতর আসে পরিবার থেকে। তার পরিবার তাকে ইসলামের উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখতে শিক্ষা দেয়, কিন্তু তাদের কোন রূপ গোঁড়ামি ছিল না।

ইসলাম সম্পর্কে “এ নিউ ডিল ফর এশিয়া” গ্রন্থে মাহাথির বলেন, ” ইসলাম ধর্ম আমাদের জীবনের অংশ। একে পরিত্যাগ করার কোন কারণ নেই। সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করা হলে ধর্ম কখনই অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য বাধা হতে পারে না। ইসলামের শিক্ষা সমসাময়িক সময়ের দৃষ্টিভঙ্গিতে নিতে হবে। ইসলাম শুধু মাত্র সপ্তম শতাব্দীর ধর্ম নয়। ইসলাম অবশ্যই সর্বকালের ধর্ম।”

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪১সালে জাপান মালয়েশিয়া দখল করে। তারা ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বন্ধ করে দেয় এবং একটি জাপানি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। মাহাথিরের বয়স তখন ষোল। প্রথমে তিনি জাপানি স্কুলে যেতে চান নি। ঐ সময় মাহাথির একটি স্থানীয় ছোট বাজারে কলা বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু পিতার চাপে তিনি পরবর্তীতে ঐ জাপানি স্কুলে ভর্তি হন।

২য় বিশ্বযুদ্ধ শেষে তিনি ডাক্তার হবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ১৯৪৭ সালে সিঙ্গাপুরের কিং এডওয়ার্ড সেভেন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। এসময় মাহাথির মালয় জাতির বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে বিভিন্ন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে নিয়মিত লেখালেখি শুরু করেন।

সিঙ্গাপুরে সিথি হাসমার সাথে সাক্ষাত হয়। সিথি হাসমা তখন দ্বিতীয় মালয় মহিলা হিসেবে সিঙ্গাপুরে বৃত্তি নিয়ে একই কলেজে চিকিৎসাশাস্ত্র পড়ছিলেন। পরবর্তীতে মাহাথির ও সিথি হাসমা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের মোট সাত জন সন্তান আছে, যার মধ্যে তিন জনকে তারা দত্তক নিয়েছিলেন। পরিবার সম্পর্কে মাহাথির বলেন, ” প্রত্যেকের নিজ পরিবার একটি নিরাপদ জায়গা – যা আমাদের এই জটিল সমাজে স্থিরতা আনে।”

১৯৫৩ সালে তিনি সিঙ্গাপুর থেকে মালয়েশিয়া ফিরে আসেন। কিছুদিন সরকারী হাসপাতালে চাকরী করে পরে তা ছেড়ে দিয়ে একটি প্রাইভেট ক্লিনিক স্থাপন করেন। এটি ছিলো এ এলাকায় কোনো মালয়ী পরিচালিত প্রথম ক্লিনিক। মাহাথিরের মতে চিকিৎসক হিসেবে তার প্রশিক্ষণ ও প্রাকটিস তার মধ্যে স্থিরতা এনেছিল ও তাকে যে কোন পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে সক্ষম করেছিল।

তিনি একবার ‘দ্যা ইকোনমিষ্ট, পত্রিকাতে বলেছিলেন, “চিকিৎসা বিদ্যায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকের জন্য রাজনীতি একটি ভাল পেশা। একজন ডাক্তার রোগীকে পর্যবেক্ষণ করেন, স্বাস্থ্যগত ইতিহাস রেকর্ড করেন, স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন, ল্যাব পরীক্ষা করেন এবং চূড়ান্তভাবে রোগ নির্ণয় করেন। এ প্রক্রিয়াটি রাজনীতির মতই।”

সাধারণ মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠা মাহাথির একসময় রাজনীতিতে নিজেকে পুরোপুরি জড়িয়ে ফেলেন। ১৯৬৪ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে এমপি পদে নির্বাচিত হন তিনি। এমপি হওয়ার পরে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেন মালয়ীদের সমস্যার কথা বলতে, কিন্তু বারবার বাধাগ্রস্ত হন।

নিজ দলীয় নীতিও তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। ১৯৬৯ সালে মাহাথির প্রকাশ করেন তার বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত বই ‘The Malay Dilemma’। বইটিতে তিনি মালয়ীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা সোজাসাপ্টা ভাষায় তুলে ধরেন।

দলের ভুল পরিকল্পনা ও অদক্ষতা মাহাথিরকে বিচলিত করে তোলে। এক পর্যায়ে দলের প্রেসিডেন্ট টেংকু আব্দুর রহমানের কাছে তিনি কড়া ভাষায় একটি চিঠি লিখেন। ফলশ্রুতিতে ১৯৬৯ সালে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তিন বছর নিষিদ্ধ থাকার পর তিনি রাজনীতিতে পুনরায় ফিরে আসেন।

১৯৭৪ সালে দল নির্বাচনে জয়ী হবার পর তাকে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। মাত্র দুই বছর পর মাহাথির ১৯৭৬ এ উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন। এতে তিনি সফল হন। উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের জন্য অনেক কিছু করার পরিকল্পনা থাকলেও মাহাথির স্বাধীনভাবে সেগুলো বাস্তবায়ন করতে সক্ষম ছিলেন না।

১৯৮১ সালের ১৬ জুলাই ৫৫ বছর বয়সে মালয়েশিয়ার ৪র্থ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহন করেন মাহাথির মুহম্মদ। এসময় দেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক ছিলো। প্রধানমন্ত্রী হবার পর তিনি তার সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সম্পূর্ণ মুক্ত হন।

সেই থেকে টানা ২২ বছর মাহাথির মুহম্মদ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এর মধ্যে প্রতিবার তিনি ও তার দল নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেন। মাহাথির মোহাম্মদ এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ সময় যাবৎ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

মালয়েশিয়াকে বদলে দেবার ক্ষেত্রে শিক্ষা হচ্ছে তার প্রথম বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। বর্তমানে মালয়েশিয়ায় শিক্ষার হার ৯০%। শিক্ষা ব্যায়ের ৯৫% সরকার বহন করছে।

মালয়েশিয়ার বহু ধর্ম মত আর বিশ্বাসের মানুষকে তিনি গেঁথেছেন একই সুতায়। তবে ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আরোহণের মধ্য দিয়ে আবারও নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন এ নেতা।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আসামির সাথে গোপনে যোগাযোগ: যুদ্ধাপরাধ মামলা থেকে তুরিন আফরোজকে অব্যাহতি

অনলাইন ডেস্ক: যুদ্ধাপরাধ মামলার এক আসামির সঙ্গে গোপন বৈঠক ও মামলার স্বার্থবিরোধী ভূমিকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে ট্রাইব্যুনালের সব মামলা পরিচালনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তার কাছে থাকা যুদ্ধাপরাধ মামলার সব নথিও প্রসিকিউশনে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ২৪ এপ্রিল গ্রেপ্তার পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে তুরিন আফরোজ গোপনে বৈঠক ও টেলিফোনে আলাপ করেছেন বলে অভিযোগ প্রসিকিউশনের। এখন কারাবন্দি ওয়াহিদুল হক (৬৯) জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থারও (এনএসআই) সাবেক মহাপরিচালক।
একাত্তরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে রংপুর ক্যান্টনমেন্টে চালানো গণহত্যায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তুরিন আফরোজ এ মামলা পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর গত বছর নভেম্বরে ওয়াহিদুল হককে ফোন করে কথা বলার পর পরিচয় গোপন করে ঢাকার একটি হোটেলে তার সঙ্গে দেখা করেন বলে অভিযোগ।
তাদের কথোপকথনের রেকর্ড ও বৈঠকের অডিওরেকর্ডসহ যাবতীয় তথ্য-প্রমাণ এরইমধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে একজন প্রসিকিউটর জানিয়েছেন। এ বিষয়ে সরাসরি কোনো জবাব দেননি তুরিন আফরোজ। এক ফেইসবুক পোস্টে নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও ওই গোপন বৈঠকের কথা অস্বীকার করেননি তিনি।
যুদ্ধাপরাধের বিচারে ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের তিন বছরের মাথায় প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন তুরিন আফরোজ। জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযমের মামলাসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মামলা পরিচালনায় ভূমিকা রাখেন তিনি।
সব মামলা থেকে তাকে অব্যাহতির কথা জানিয়ে গত মঙ্গলবার তুরিন আফরোজকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, “আইসিটি বিডি মিস কেস নং ১/২০১৮ এর প্রসিকিউটর হিসেবে আপনার দায়িত্ব পালন থেকে বিরত ও প্রত্যাহারের ধারাবাহিকতায় আজ (৮ মে) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সকল মামলা থেকে বিরত ও প্রত্যাহার এর আদেশসহ আপনার নিকট ট্রাইব্যুনালের বিভিন্ন মামলার সকল ডকুমেন্টস প্রসিকিউটর অফিসে জমা দেওয়ার আদেশ দেওয়া হল।”
চিঠিতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে বলা হয়েছে, “গত বছরের ১৮ নভেম্বর আসামি মেজর (অব.) মোহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের সাথে টেলিফোনে আলাপের এবং ১৯ নভেম্বর গুলশানের অলিভ রেস্টুরেন্টে আপনার সাথে আপনার সহযোগী ফারাবিসহ মেজর (অব.) মোহাম্মদ ওয়াহিদুল হক, তার স্ত্রী ও অন্য একজন মুরুব্বির আলাপের মোবাইলে ধারণকৃত প্রায় পৌনে তিন ঘণ্টার রেকর্ড তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে প্রসিকিউশন অফিসে প্রাপ্তির আলোকে প্রসিকিউশন তথা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়ার ভাবমূর্তি রক্ষা ও স্বচ্ছতার জন্য জনস্বার্থে এ আদেশ দেয়া হল।”
গত বছরের ১১ নভেম্বর এ মামলার দায়িত্ব পেয়েছিলেন তুরিন আফরোজ।
তাকে অব্যাহতির চিঠি পাঠানোর আগের দিন প্রসিকিউশন অফিসের এক আদেশে এই মামলা থেকে তুরিন আফরোজ ও তাপস কান্তি বলকে প্রত্যাহার করে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, মোখলেসুর রহমান বাদল, সুলতান মাহমুদ, মো. সাহিদুর রহমান, মো. জাহিদ ইমাম ও রেজিয়া সুলতানা বেগমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি অর্থাৎ তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দেওয়ার দিন রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বুধবার খবর প্রকাশ করে ‘আমাদের সময় ডটকম’ নামে একটি অনলাইন পোর্টাল। এরপর এ বিষয়ে নিজের বক্তব্য তুলে ধরে ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন তুরিন আফরোজ।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তুরিন আফরোজ বলেন, ফেইসবুকে তিনি এ বিষয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরে বক্তব্য দিয়েছেন। সেটিই আপাতত তার বক্তব্য।
ফেইসবুকে তিনি লিখেছেন, “আমাকে নিয়ে একটি অতি উৎসাহী দৈনিক পত্রিকাতে একটি বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করা হলে সোশ্যাল মিডিয়াতে তা ভাইরাল করে আমাকে নিয়ে নানা কুৎসা রটনা করা হচ্ছে। এটাও বলা হচ্ছে যে আমাকে প্রসিকিউটর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এই বিষয়ে আমার সুস্পষ্ট বক্তব্য:

১। আমি এখনও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদে বহাল আছি। আমাকে কেউ বরখাস্ত করেনি।

২। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে ৮(২) ধারা অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের একজন প্রসিকিউটারের একজন তদন্ত কর্মকর্তা হিসেব কাজ করার এখতিয়ার রয়েছে। সুতরাং যে কোন মামলাতে তদন্ত করার এখতিয়ার আমার আছে। আর তদন্ত করতে গেলে নানা রকম কৌশল অবলম্বন করতে হয়। সুতরাং আমি তদন্তের স্বার্থে যে কোন প্রয়োজনীয় কৌশল গ্রহন করতে পারি।

৩। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমি এই পর্যন্ত প্রসিকিউটর হিসেবে যা কিছুই করেছি তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত ছিলেন।

৪। আমাকে নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সত্য নয়। যেহেতু বিষয়টি এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দেখছেন তাই সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না।

“তদন্ত শেষ হলে আমি আমার বক্তব্য সর্ব সম্মুখে প্রকাশ করবো। আশা করি সেই পর্যন্ত আমার শুভাকাঙ্ক্ষী ও সমালোচকগণ ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করবেন।”

তার কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত ছিলেন বলে তুরিন আফরোজ দাবি করলেও ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক বলেন, এ বিষয়ে কিছু জানতেন না তারা।
প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুমও বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে প্রসিকিউশনের কোনো ধারণাই ছিল না।
তদন্তাধীন মামলার আসামির সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের কোনো আইনজীবীর গোপনে দেখা বা সাক্ষাৎ নৈতিকতাবিরোধী মন্তব্য করে সানাউল বলেন, “প্রথমত কথা হচ্ছে উনি এ মামলা তদন্ত করেন না। তদন্ত করেন তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান। ফেইসবুকে দেখলাম উনি (তুরিন আফরোজ) গোপনে তদন্ত করতে চেয়েছিলেন আমাদের জানিয়েছেন। কিন্তু এ রকম কোনো নিয়ম নেই আমাদের তদন্তে।
“আর তদন্ত যদি উনাকে করতে হয় তাহলে তো আমাদের জানিয়ে তা করতে হবে। কিন্তু তিনি তা করেননি।”
ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে তুরিন আফরোজের কথপোকথনের অডিও রেকর্ড তদন্ত সংস্থা কীভাবে পেয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আসামিকে গ্রেপ্তার করার সময় গুলশান থানার ওসি তার মোবাইল ফোন জব্দ করেছিল। ওই মোবাইলে কথোপকথনের কিছু রেকর্ড ছিল। কথোপকথনের দুটি রেকর্ড আছে সেখানে। একটি কথোপকথন হয়েছে টেলিফোনে। এটা তিন-চার মিনিট হবে। এই কথপোকথনে তুরিন আফরোজ আসামি মোহাম্মদ ওয়াহিদুল হককে দাওয়াত দিয়েছেন দেখা করার অনুমতি চেয়ে। তুরিনই ফোনটা দিয়েছিল।
“তার পরেরটা দুই ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের। এই কথপোকথনে মামলা সংক্রান্ত অনেক কথা রয়েছে এবং মামলার ডকুমেন্ট হস্তান্তরের কথোপকথন রয়েছে। ওসি এটা পাওয়ার পর সে মনে করল যে, আমাদের জানানো দরকার। আমরা এটা হাতে পাওয়ার পর প্রসিকিউশনকে দিয়েছি।”
কথোপকথনে কী আছে- জানতে চাইলে সানাউল হক বলেন, “অন্য একজনকে স্বামী সাজিয়ে বোরকা পরে তিনি আসামির সঙ্গে দেখা করতে গেছেন বলে অডিও রেকর্ডে আছে। ফারাবী নামের একজনকে তিনি স্বামী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। এ রকম কথা আছে রেকর্ডে। এছাড়া এ মামলার বিরুদ্ধে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। বলা হয়েছে এ মামলাটি টোটালি মোটিভেটেড। এমন কথাও বলা হয়েছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে এটা নৈতিকভাবে ঠিক না।”
ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে তুরিন আফরোজের গোপনে বৈঠকের যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত বুধবার সকালে আইন মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে বলে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম জানিয়েছেন।
ফেইসবুকে দেওয়া তুরিন আফরোজের বক্তব্যের বিষয়ে জেয়াদ আল মালুম বলেন, “প্রসিকিউশনের কাছে যেসব তথ্য-উপাত্ত এসেছে তাতে প্রসিকিউটর হিসেবে তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে পেশাগত অসদাচরণের প্রমাণ মেলে।
“কারণ ট্রাইব্যুনালের কোনো মামলা তদন্তে তদন্ত সংস্থা তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে ৮ (২) ধারা অনুযায়ী একজন প্রসিকিউটর কেবল তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করতে পারেন। মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে যদি কোনো কৌশল অবলম্বন করতেই হয় সেটিও চিফ প্রসিকিউটরকে না জানিয়ে করা যাবে না। কিন্তু প্রসিকিউশন এ ব্যপারে কিছুই জানত না।”
অভিযোগ প্রমাণ হলে তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে জানতে চাইলে মালুম বলেন, “এটা সম্পূর্ণ আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। প্রসিকিউটর নিয়োগ দেয় সরকার। অভিযোগ প্রমাণ হলে প্রসিকিউশন থেকে তাকে বরখাস্ত করা হতে পারে। এছাড়া অভিযোগ গুরুতর হলে বার কাউন্সিলের সনদও বাতিল হতে পারে। আবার ফৌজদারি মামলাও হতে পারে। তবে তা ঠিক করবে আইন মন্তওণালয়।”
এ বিষয়ে বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, “এটা সত্যি হলে মন্ত্রণালয় অবশ্যই পদক্ষেপ নেবে। আমিতো আর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যাই না বা তাদের মামলাও পরিচালনা করি না। কাজেই এ বিষয়ে আমার পক্ষে বলা সম্ভব না। এটি মন্ত্রণালয় দেখবে।”
বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকও। তিনি বলেন, তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে অভিযোগ সংক্রান্ত নথি দেখে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ঘরের মাঠে মুম্বাইয়ের কাছে কলকাতার লজ্জাজনক হার

ঘরের মাঠে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে গেল কলকাতা নাইট রাইডার্সের। ২১১ রানের লক্ষ্য দিয়ে স্বাগতিক কেকেআরকে মাত্র ১০৮ রানে অলআউট করে দিয়েছে মুম্বাই। ফলে ১০২ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় তুলে নিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।

কলকাতাকে সমর্থন দিতে এদিন ইডেন ছিল দর্শকদের আনাগোনায় মুখর। নিজ দলের খেলা দেখতে কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছিলেন শাহরুখ খানও। আর সেই কিং খানের সামনেই লজ্জায় ডুবল কলকাতা। এতে করে রোহিত শর্মাদের কাছে লজ্জাজনকভাবে হেরে প্লে-অফের রাস্তা কঠিন করে ফেলল কিং খানের দল।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইশান কিশানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ২১০ রানের বিশাল স্কোর দাঁড় করায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। মাত্র ২১ বল খেলে ৫টি বাউন্ডারি আর ৬টি ছক্কায় ৬২ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন কিশান।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে মুম্বাইয়ের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে কেকেআর। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকে তাদের। শেষ পর্যন্ত ১০২ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে মাঠ ছাড়ে কলকাতা। কলকাতার হয়ে ক্রিস লিন আর নিতিশ রানা- দু’জনই খেলেন সর্বোচ্চ ২১ রান করে দুটি ইনিংস। ১৮ রান করেন টম কুরান।

১১ ম্যাচের মধ্যে পাঁচটি জিতে ১০ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকার চার নম্বরে উঠে এল মুম্বাই। আর বিরাট ব্যবধানে হারায় একই পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে চলে গেল কেকেআর।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ভাষা সংগ্রামী জাতীয় অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম নেই

ভাষা সংগ্রামী জাতীয় অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম মারা গেছেন।

বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় নিজের বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস জানিয়েছেন।

অধ্যাপক নূরউল ইসলামের বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন বলে তার নার্স সাজেদুর রহমান জানিয়েছেন।

তার মৃত্যুতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর শোক জানিয়েছেন।

‘সাহিত্যিক’ ও ‘সুন্দরম’ সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম সাহিত্যে অবদানের জন্য একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন।

নূরউল ইসলামের জন্ম ১৯২৭ সালে ১ মে, বগুড়ায়। পাঁচ বছর বয়সে ১৯৩২-৩৩ সালে কলকাতায় কবি কাজী নজরুল ইসলামের হাতে তার লেখাপড়ায় হাতেখড়ি। পুলিশ কর্মকর্তা বাবার কর্মস্থল পরিবর্তনের কারণে ঘন ঘন স্কুল বদলাতে হয় তার।

কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ কলেজে গ্রাজুয়েশনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন মুস্তাফা নূরউল ইসলাম। পরে লন্ডন ইউনিভার্সিটির প্রাচ্যভাষা ও সংস্কৃতি কেন্দ্র সোয়াস থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নেন তিনি।

করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের যাত্রা শুরু হয়েছিল অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলামের হাতে। এরপর রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন তিনি।

মুস্তাফা নূরউল ইসলামের কর্মজীবনের শুরু সাংবাদিকতা দিয়ে, দৈনিক আজাদ পত্রিকায় প্রতিবেদক হিসেবে। এরপর ১৯৫১ সালে তিনি সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন দৈনিক সংবাদে। দুই বছর পর চলে যান শিক্ষকতায় করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

স্বাধীনতার আগে কয়েক বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন অধ্যাপক নূরউল ইসলাম। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়ে বাংলা বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

১৯৭৪ সালে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক পদে যোদ দেন মুস্তাফা নূরউল ইসলাম। ১৯৭৫ সালে হন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক। তবে সামরিক সরকারের সঙ্গে মতভিন্নতার কারণে বাংলা একাডেমির চাকরি ছেড়ে জাহাঙ্গীরনগরে ফিরে যান। ১৯৯২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার আগে-পরে জাতীয় জাদুঘর পরিচালনা পর্ষদের তিন মেয়াদের চেয়ারম্যান, নজরুল ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের তিন মেয়াদের সদস্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি।

ছাত্রজীবনেই দিনাজপুর-রংপুর অঞ্চলের তেভাগা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন মুস্তাফা নূরউল ইসলাম। বাহান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির প্রায় প্রতিটি আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৭১ সালে লন্ডনে পিএইচডি করার সময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।

৩০টির বেশি প্রবন্ধ সংকলন ও গবেষণা গ্রন্থ রয়েছে অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলামের। তার বইয়ের মধ্যে ‘সমকালে নজরুল ইসলাম’, ‘সাময়িকপত্রে জীবন ও জনমত’, ‘আমার বাংলা’, ‘বাঙালির আত্মপরিচয়’, ‘সেরা সুন্দরম’, ‘পূর্বমেঘ’, ‘আমাদের মাতৃভাষার চেতনা ও ভাষা আন্দোলন’, ‘আবহমান বাংলা’, ‘মুসলিম বাংলা সাহিত্য’, ‘সময়ের মুখ: তাহাদের কথা’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

টেলিভিশনে উপস্থাপনার জন্যও অনেকের পরিচিত মুখ ছিলেন মুস্তাফা নূরউল ইসলাম। বিটিভিতে ‘মুক্তধারা’ অনুষ্ঠানটি একাধারে ১৫ বছর উপস্থাপনা করেন তিনি।

মুস্তাফা নূরউল ইসলামের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। তার মেয়ে আতিয়া ইয়াসমিন ও নন্দিতা ইয়াসমিন এবং ছোট ছেলে রাজন দেশের বাইরে আছেন।

ছেলে-মেয়েরা আলোচনা করে বাবার দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে সাজেদুর রহমান জানান।

মুস্তাফা নূরউল ইসলামের মরদেহ অ্যাপোলো হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest