সর্বশেষ সংবাদ-
কলারোয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলতাফ হোসেন লাল্টুর গণ সমাবেশএডভোকেসি নেটওয়ার্ক এবং সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন সদস্যদের ত্রৈমাসিক সমন্বয় সভাশ্যামনগরের কৈখালী পোলের খাল খনন কর্মসূচির উদ্বোধনশ্যামনগরে সালাতুল ইস্তেকার নামাজ আদায়তীব্র তাপদাহে পুড়ছে উপকুলীয় জেলা সাতক্ষীরা, তাপমাত্রা আজ সর্বোচ্চ ৩৯.৩ ডিগ্রিদেবহাটায় উন্নয়ন কার্যক্রমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক মতবিনিময়সাতক্ষীরায় বেসিক ট্রেড স্কীল ডেভেলপমেন্ট ফোরামের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশদেবহাটায় প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ মানুষসাতক্ষীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের শোক জ্ঞাপনদেবহাটা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে-৫: ভাইস চেয়ারম্যান-২ : মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জনের মনোনয়নপত্র জমা

দাঁতের ক্ষতি এড়াতে…

দাঁতের ক্ষতি এড়াতে…

কর্তৃক Daily Satkhira

দাঁতের জন্য কিছু খাবার ও পানীয় অত্যন্ত বিপজ্জনক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব খাবার হয় বাদ দিতে হবে অথবা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

মিষ্টি চা-কফি

বাড়তি দুধ ও চিনি দিয়ে যারা নিয়মিত চা বা কফি পান করেন, তাদের দাঁতের ওপর মারাত্মক চাপ পড়ে। কারণ মুখে দুধ ও চিনির অবশিষ্টাংশ দীর্ঘক্ষণ থেকে যায়, যা দাঁতের ক্যাভিটির জন্য দায়ী। তাই মিষ্টি চা-কফির পর অবশ্যই মুখ পরিষ্কার করতে হবে।

আরো পড়ুন : ইন্টারনেটের গতি কমানোর উদ্যোগ কতটা সফল হবে?

পপকর্ন

পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে পপকর্ন খারাপ নয়। তবে এতে প্রায়ই শক্ত দানা থেকে যায়। এসব দানায় কামড় দিয়ে দাঁত ভেঙে ডেন্টিস্টের শরণাপন্ন হতে হয় অনেককে। এ কারণে পপকর্ন খেতে বাড়তি সতর্ক থাকা উচিত।

লেবুপানি

উষ্ণ লেবুপানি পান করতে অনেকেই পছন্দ করেন। তবে ডেন্টিস্টরা বলেন, এর এসিড দাঁতের এনামেল দ্রুত ক্ষয় করে।

বরফ

বরফ মুখে নেওয়া ও চিবানো দাঁতের জন্য মোটেই ভালো না। এটি দাঁত ভাঙার কিংবা দাঁতের এনামেল নষ্ট করার কারণ হতে পারে।

এনার্জি ও স্পোর্টস ড্রিংকস

এনার্জি ড্রিংকস এসিডিক। এ ছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। নিয়মিত এনার্জি ড্রিংকস পান করলে তা দাঁতে মারাত্মক ক্যাভিটির কারণ হয়।

চকোলেট ও ক্যান্ডি

চকোলেটের চিনি ও অন্যান্য উপাদান দাঁতে আটকে থাকে। এতে দাঁতে ক্যাভিটি তৈরি হয়। একই ধরনের ক্ষতি করে ক্যান্ডি এবং এ ধরনের অন্যান্য খাবার। শিশুদের দাঁতের ক্যাভিটির জন্য এসব খাবারকেই সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয়।

কৌটাজাত ফলমূল

নানা ধরনের ফলমূল শিল্প-কারখানায় প্রক্রিয়াজাত করে কৌটায় ভরে বিক্রি করা হয়। এ ধরনের প্রক্রিয়াজাত ও কৌটাজাত ফলমূলে প্রচুর চিনি ও নানা রাসায়নিক উপাদান ব্যবহৃত হয়, যা দাঁতের জন্য ক্ষতিকর।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে বই খুলে পরীক্ষা নেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে: শিক্ষাসচিব

আগামীতে এসএসসির মত বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র না ছাপিয়ে বই খুলে পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইন। তিনি বলেন, পরীক্ষার বর্তমান পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া রোধ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র না ছাপিয়ে বই খুলে পরীক্ষা নেয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি ) ঢাকায় জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) অডিটোরিয়ামে শিক্ষাথাতে উচ্চতর গবেষণা সহায়তা কর্মসূচি বিষয়ক কর্মশালা ও চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন। বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এসএসসি কিংবা এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের সামনে ছাপানো কোনো প্রশ্ন নেই! বরং পরীক্ষার হলে তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া প্রশ্নে শিক্ষার্থীরা বই খুলেই উত্তর লিখতে পারছে! এমন অপরিচিত পরীক্ষা পদ্ধতি অনেকের কাছে অদ্ভুত শোনালেও আগামীতে এভাবে পরীক্ষা নেওয়া যায় কি না, সেটাই এখন চিন্তা করতে হচ্ছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ভয়াবহ প্রেক্ষাপটে।

এ প্রসঙ্গে সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘ভিন্ন পদ্ধতিতে যাতে প্রশ্ন ছাপানোর প্রয়োজন না হয় সেই রকম কোনো কিছু করা যায় কি না সেজন্য তিন-চারটা কমিটি কাজ করছে এবং মন্ত্রণালয় থেকেও ভিন্নভাবে চিন্তা করা হচ্ছে এমন কিছু করা যায় কি না যে প্রশ্ন ছাপানোর প্রয়োজনীয়তা নেই। প্রশ্ন ওপেন থাকতে পারে, ওপেন বুক এক্সাম হতে পারে বা আরো অনেক কিছু আমরা চিন্তাভাবনা করছি।’

সোহরাব হোসাইন আরো বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় প্রশ্নপত্র আউট বন্ধ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি এবং মনে করি।’

শিক্ষাসচিব আরো বলেন, ‘২০ লাখ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দেয়। একটি প্রশ্ন ছাপাতে চার-পাঁচদিন সময় নেয়। একজন মানুষ যদি অসৎ হয়, সে যদি মনে করে আমি প্রতিদিন একটা বা দুইটা করে মুখস্থ করে যাব, বাইরে গিয়ে লিখেই রাখব। তার পর একসাথে করব, একটি প্রশ্ন হবে। এটি কীভাবে ঠেকাব? আমি ২০১৪ খ্রিস্টাব্দেই বলেছি এ পদ্ধতিতে প্রশ্ন আউট রোধ করা সম্ভব নয়।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাতক্ষীরায় গ্রাম পুলিশ সদস্যদের মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়াধীন ইউনিয়ন পরিষদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্য গ্রাম পুলিশের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারিদের ন্যায় সমস্কেলের বেতন বাস্তাবায়নের দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ কর্মচারি ইউনিয়ন সাতক্ষীরা জেলা শাখার আয়োজনে এ মানববন্ধন কর্মসুচিটি পালিত হয়।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশ কর্মচারি ইউনিয়ন সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান, কালিগঞ্জ শাখার সভাপতি আব্দুল মাজেদ, কলারোয়া শাখার সভাপতি এজাহার আলি, শ্যামনগর শাখার সভাপতি আব্দুল জলিল, তালার সভাপতি জালাল উদ্দিন, পাটকেলঘাটার সভাপতি শীবপদ দাস প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে ৪৬ হাজার ৮’শ ৭০ জন গ্রাম পুলিশ সদস্য স্থানীয় আইন শৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে। বৃটিশ আমল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমরা বিরামহীন ভাবে কাজ করলেও এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে অধিনস্থ কর্মচারি হওয়া স্বত্ত্বেও অদ্যবধি কোন বেতন স্কেল আমাদের বাস্তবায়ন হয়নি। বক্তারা অবিলম্বে গ্রাম পুলিশ সদস্যদের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারিদের ন্যায় বেতন স্কেল বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান।
মানববন্ধন শেষে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি পেশ করা হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
রূপা ধর্ষণ-হত্যার দায়ে চারজনের মৃত্যুদণ্ড

টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে কলেজছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রূপাকে গণধর্ষণের পর হত্যার মামলায় পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডসহ সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়া গতকাল সোমবার এ রায় ঘোষণা করেন। জরিমানার অর্থ থেকে বাদীর মামলা পরিচালনার প্রকৃত ব্যয় বাদে বাকি টাকা রূপার পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অপরাধ সংঘটনের কাজে ব্যবহৃত ‘ছোঁয়া পরিবহন’-এর বাসটির মালিকানা পরিবর্তন করে ক্ষতিপূরণ হিসেবে রূপার পরিবারকে দিতে নির্দেশ দেন আদালত।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহত রূপার পরিবারের সদস্য ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান তাঁরা। অন্যদিকে প্রত্যাশিত রায় না পাওয়ায় উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী।
এই মামলায় অভিযোগ গঠন থেকে রায় পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে মাত্র ১৪ কার্যদিবস। মামলা দায়ের হওয়ার পর থেকে ১৭১ দিনের মধ্যে সেটি নিষ্পত্তি হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ। তিনি বলেছেন, এভাবে মামলা নিষ্পত্তি হলে আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে। এতে করে কেউ আর এমন ঘৃণ্য অপরাধ করার সাহস পাবে না। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সহায়ক হবে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপাকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের পর হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে যাওয়া হয়। ঢাকার আইডিয়াল ল কলেজের ছাত্রী রূপা (২৭) একটি প্রতিষ্ঠানে বিপণন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ নভেম্বর এই মামলার পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এরপর গত ৩ জানুয়ারি মামলার বাদী মধুপুরের অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলামের সাক্ষ্য নেওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব। পরে আট কার্যদিবসে বিচার বিভাগীয় হাকিম, চিকিৎসক, তদন্ত কর্মকর্তাসহ ২৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে চার কর্মদিবসে আসামিদের পরীক্ষা এবং উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো ছোঁয়া পরিবহনের বাসের হেলপার ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার নন্দিবাড়ী গ্রামের শামীম মিয়া, মির্জাপুর গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে আকরাম হোসেন (হেলপার), একই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (হেলপার) এবং বাসের চালক হাবিব মিয়া। বাসের সুপারভাইজার ময়মনসিংহের মির্জাপুর গ্রামের সফর আলী ওরফে গেন্দুকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট নাছিমুল আক্তার জানান, গতকাল সকাল ১১টার দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। পাঁচ আসামি ওই সময় আদালতে উপস্থিত ছিল। এজলাসে বসার পর বিচারক আবুল মনসুর মিয়া ৭৩ পৃষ্ঠার রায়ের সারসংক্ষেপ পড়ে শোনান। চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা শেষ হয় সকাল ১১টা ২০ মিনিটে। রায়ে বাসের চালকসহ চার শ্রমিককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেওয়া হয়। সুপারভাইজারকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত ছোঁয়া পরিবহনের বাসটি ক্ষতিপূরণ হিসেবে নিহত রূপার পরিবারকে দেওয়ার আদেশ দেন আদালত। ক্ষতিপূরণের টাকা আদায় করে ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়ার জন্য টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ছোঁয়া পরিবহনের বাসটির মালিকানা নিহত রূপার পরিবার বরাবর পরিবর্তন করে একই ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর করতে মধুপুর থানা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাছিমুল আক্তার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। ন্যায়বিচারের স্বার্থে আদালতের কাছে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করেছিলাম। আমরা সে রায় পেয়েছি। এ রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছে। এখন এই রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।’
নিহত রূপার বড় ভাই হাফিজুর রহমান বলেন, ‘রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। তবে রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবি এখন আমাদের।’
রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি বলে দাবি করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শামীম চৌধুরী দয়াল। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলাটি প্রমাণ করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তার পরও এমন রায়ে আমরা বিস্মিত। আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। সেখানে অবশ্যই ন্যায়বিচার পাব এবং আসামিরা বেকসুর খালাস পাবে বলে আশা রাখি।’
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তা করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস আকবর খান, সিনিয়র আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট এম এ করিম মিঞা এবং মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ। আসামিপক্ষের আইনজীবীকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাত ১১টার দিকে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুর উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকার বনাঞ্চলের পাশ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে মধুপুর থানার পুলিশ। পরে পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে রূপার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে নিহত নারী তাঁর বোন রূপা বলে শনাক্ত করেন। হাফিজুরের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দেশে ৩১ আগস্ট রূপার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাঁর লাশ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে তাঁর বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কে চলাচলকারী ছোঁয়া পরিবহনের বাসের চালক হাবিবুর, সুপারভাইজার সফর আলী, হেলপার শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীরকে ২৮ আগস্ট গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা প্রত্যেকেই রূপাকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা আদালতে স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
গত ২৯ আগস্ট আসামিরা টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দিতে জানায়, ঘটনার দিন রূপা ছাড়াও পাঁচজন যাত্রী ছিল বাসে। তারা সিরাজগঞ্জ মোড় থেকে কালিহাতী পর্যন্ত রাস্তায় নেমে যায়। এরপর বাসটি কালিহাতী পার হলে চালকের সহকারী শামীম রূপাকে জোর করে পেছনের আসনে নিয়ে যায়। ওই সময় রূপা তার কাছে থাকা পাঁচ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোনসেট শামীমকে দিয়ে তাঁকে নির্যাতন না করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু শামীম কোনো কথাই শোনেনি। পরে শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর তাঁকে ধর্ষণ করে। রূপা কান্নাকাটি ও চিৎকার শুরু করলে তারা মুখ চেপে ধরে। একপর্যায়ে তাঁকে হত্যা করে। পরে মধুপুর উপজেলা সদর অতিক্রম করে বন এলাকায় রাস্তার পাশে লাশ ফেলে তারা চলে যায়।
গত ১৫ অক্টোবর এই পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করে টাঙ্গাইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলার চার্জশিট দেয় পুলিশ। মামলাটি বিচারের জন্য পরদিন ১৬ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হয়। গত ২৫ অক্টোবর আদালত এই অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। মোট ২৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
বিএনপিকে ব্যস্ত রেখেই ভোটে যাবে আওয়ামী লীগ

অনলাইন ডেস্ক: বিএনপিকে ব্যস্ত রেখেই আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের নেতারা সেভাবেই কাজ শুরু করেছেন। বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা এখন দল গোছানোয় মনোযোগী হয়েছেন। জেলায় জেলায় চলছে সাংগঠনিক সফর। একই সঙ্গে বিরোধ কমিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলীয় প্রার্থী তালিকা তৈরির প্রক্রিয়ায়ও কাজ করছে সরকারের একাধিক সংস্থা। বিতর্কিতদের বাদ দেওয়া হবে ভোট থেকে। প্রাধান্য দেওয়া হবে নবীনদের। জানা গেছে, বিএনপিকে মামলায় ব্যস্ত রাখতে চায় সরকারি দল। সিনিয়র নেতাদের অনেকেই মনে করেন, মামলায় ব্যস্ত থাকলে তারা আর ভোটে না-ও আসতে পারেন। এলেও সুবিধা করতে পারবেন না। এ সুযোগই কাজে লাগাতে চায় সরকার। এর মধ্যে ভোটের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ শুরু করেছে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেলগুলো। চলছে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কাজও। আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভোট শেষ করতে চায় আওয়ামী লীগ। সেভাবেই এগিয়ে চলছে সব প্রস্তুতি। দলের একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাসহ বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মামলা মোকাবিলায় ব্যস্ত রয়েছেন। এতে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে জাতীয় সংসদের সাবেক এই বিরোধী দল। আর একেই রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে নিয়েছেন ক্ষমতাসীনরা। অন্যদিকে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাজা হওয়ার পর দলটির ভিত্তি নড়ে গেছে। খালেদা জিয়ার মাথার ওপর ঝুলছে জিয়া চ্যারিটেবলসহ ৩৫ মামলা। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ও শিগগিরই হবে বলে মনে করছেন তারা। ফলে মামলা নিয়ে এমনিতেই চাপের মুখে রয়েছে বিএনপি। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত দলের অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যস্ত সময় পার করতে হবে দলটিকে। কিন্তু বিএনপির জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে না। আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এতে দলীয় নিবন্ধন টিকিয়ে রাখার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও মাঠ গোছানোর মতো সময় তাদের হাতে থাকবে না।

অবশ্য দলগতভাবে আওয়ামী লীগ বা সরকার নয়, বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য সেই দলটিই দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্ল্যাহ। বিএনপির অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে অংশ নেয়নি। বিএনপি নেত্রীকে নির্বাচনে আনার জন্য সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাও অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তিনি আসেননি। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন করে সরকার গঠন করেছি। এ নিয়ে অনেক কথাও হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও সংবিধান মেনে নির্বাচন করেছে। এখন আবার সামনে নির্বাচন। আমরা চাই সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। নির্বাচনে বিএনপি আসবে এটা আমাদের বিশ্বাস।’ তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী জেলে। এখানে আওয়ামী লীগ বা সরকার দায়ী নয়। এ ছাড়া আইনের অনেক ধাপ এখনো সামনে রয়েছে। তারা আইনি পথেই এগোবেন। এখনো নির্বাচনের প্রচুর সময় বাকি। তাই কে নির্বাচনে আসবে কে আসবে না, এ ব্যাপারে আগাম মন্তব্য করা ঠিক নয়। আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক এ ব্যাপারে বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ীই আগামী নির্বাচন হবে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রীর অধীনে সেই নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে। আর আওয়ামী লীগ বা সরকার কোনো রাজনৈতিক কৌশলে বিএনপিকে ব্যস্ত রাখেনি। বিএনপি তাদের অপকর্মের ফল ভোগ করছে।’
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মুন্সীগঞ্জে ক্ষুদ্র কৃষক ও বর্গাচাষীদের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের কৃষিঋণ বিতরণ

আব্দুল্লাহ আল মামুন, মুন্সীগঞ্জ (শ্যামনগর) প্রতিনিধিঃ অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, সুন্দরবন শাখা, সাতক্ষীরা’র উদ্যোগে “প্রকৃত ক্ষুদ্র কৃষক ও বর্গাচাষীদের মধ্যে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় কৃষিঋণ বিতরণ অনুষ্ঠান-২০১৮” অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ১০ টায় শাখা ব্যবস্থাপক মো: হাফিজ আল আসাদ এর সভাপতিত্ত্বে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ৭ নং মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো: আকবর হোসেন পাড়।

সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বনশ্রী শিক্ষানিকেতনের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুল করিম, হরিনগর হাটখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুর রব, ইউপি সদস্য জনাব মোস্তফা শেখ, মো: আনারুল ইসলাম। এছাড়াও উক্ত অনুষ্টানে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ কৃষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিভিন্ন বক্তা তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, সুন্দরবন শাখা, সাতক্ষীরা কর্তৃক বিতরণকৃত কৃষি ঋণের বিষয়ে শাখা কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনার ভূয়ষী প্রশংসা করেন। কৃষকবৃন্দ উল্লেখ করেন যে কৃষি ঋণ পেতে তাদের কোন প্রকার হয়রানির সম্মুক্ষীন হতে হয়নি । সভ্যবৃন্দ কৃষকদের কৃষিঋণ গ্রহনসহ তা নিয়মিত ভাবে পরিচালনা করার উপর গুরুত্তারোপ করেন। শাখা ব্যবস্থাপক মহোদয় কৃষকদের যে কোন প্রয়োজনে তার সাথে সরাসরি যোগাযোগের পরামর্শ দেন। তাছাড়া এ এলাকায় কৃষিঋণের আদায় সন্তোষজনক হওয়ায় তিনি কৃষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শাখার কর্মকর্তা জনাব শিবাশীষ সরদার এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি সভাপতি মহোদয়ের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
তালায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এসি রুমে, ফ্যানগুলো অচল থাকে ৫০ টাকার অভাবে! প্লাস্টার খসে দুর্ঘটনার আশংকা

মীর জাকির হোসেন, তালা: তালা উপজেলার প্রায় ৪ লাখ মানুষ ও পার্শ্ববর্তী পাইকগাছা ও ডুমুরিয়া উপজেলা সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা গ্রহনের অন্যতম মাধ্যম তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। রিপোর্টার্স ক্লাবের পক্ষ থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র নানান সম্ভাবনা, সমস্যা ও দূর্নীতি বিষয়ে সার্বিক অবস্থা সরজমিনে দেখার পর ইতোমধ্যে গনমাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ৩ পর্বের রিপোর্টের আজ দ্বিতীয় পর্ব।
৫০ শয্যা বিশিষ্ট তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারী সংকট রয়েছে অকল্পনীয়! একইসাথে এখানকার অ্যাম্বুলেন্স, এক্সরে, ইসিজি ও আল্ট্রাসনো ম্যাশিন অচল রয়েছে দীর্ঘদিন। তার সাথে অত্যাধুনিক অপারেশন রুম থাকলেও অ্যানেস্থিসিয়া ও সার্জন না থাকায় রোগীদের অপারেশন করানো যাচ্ছেনা।
সরজমিনে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থাকা রোগীদের ওয়ার্ডের ফ্যানগুলো মাসের পর মাস অচল থাকায় রোগীদের চরম ভোগান্তীতে থাকতে হয়। অধিকাংশ ফ্যানগুলো সামান্য ২০ বা ৫০ টাকা ব্যয় করলেই সচল হবে। কিন্তু স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিলাস বহুল এসি রুমে বসে অফিস করায় রোগীদের দুরাবস্থা দেখার সুযোগ তিনি পাননা! পরিচ্ছন্ন কর্মী সংকটের কারনে হাসপাতালের পুরুষ, মহিলা ও কেবিনের বাথরুমগুলো ব্যবহারে সম্পূর্ন অনুপযোগী হয়ে রয়েছে দীর্ঘ বছর ধরে। কোন সুস্থ্য বা অসুস্থ্য মানুষ বাথরুমে গেলে সেখানকার নোংরা ও দূর্গন্ধযুক্ত পরিবেশের কারনে তাকে অধিকতর অসুস্থ্য হতে হয়। হাসপাতালে রোগীদের জন্য সরবারহ করা খাদ্য’র মান ও পরিমান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে সবসময়। হাসপাতালের ভিতরে বিড়াল আর বাহিরে রয়েছে কুকুরের অবাদ বিচরন। পুরাতন ভবনের ভিতরে, বাহিরে, ওয়ার্ডে দেওয়ালের ও ছাদের প্লাষ্টার খসে পড়ছে। নতুন ভবনের একাধিক স্থানেও একই অবস্থা হওয়ায় যে কোনও সময় দূর্ঘটনার আশংকা বিদ্যমান রয়েছে। রোগীদের জন্য অতিগুরুত্বপূর্ন এক্সরে মেশিনটি দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে পড়ায় ভোগান্তীর শেষ নেই আগত সেবা গ্রহিতাদের। মেশিনটি ঠিক করার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার আবেদন করলেও, সমস্যা সমাধানে আজ পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র “স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন” নামের একটি কমিটি থাকলেও তার মিটিং হয়না বছরের পর বছর। ফলে সমস্যাগুলো চিহ্নিত হচ্ছেনা এবং কার্যকরি সমাধান হচ্ছেনা। ফলে তালাবাসীর স্বাস্থ্য সেবা এখন হুমকির মুখে পড়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাজিব সরদার হাসপাতালের নানান সমস্যার কথা স্বীকার করে জানান, রোগী ওয়ার্ডে যে সকল ফ্যান অচল রয়েছে তা’ গরম পড়ার আগেই ঠিক করা হবে। তাছাড়া, পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্ন কর্মীর অভাবে হাসপাতালের বাথরুম ও ওয়ার্ডের পরিবেশ উন্নত করা যাচ্ছেনা। তিনি বলেন, হাসপাতালের জন্য ৫টি পরিচ্ছন্ন কর্মীর পদ থাকলেও মাত্র ১টি পদে কর্মী আছে। ৪টি পদ শূণ্য থাকায় বিল্লাল ও পারভীন নামের দুজনকে অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ দিয়ে কোনও ভাবে কাজ করানো হচ্ছে। আরও এই দুটি পদের কর্মীদের বেতনের টাকা প্রতি মাসে হাসপাতালের কয়েকজন ডাক্তার ও কর্মচারী এবং এখানকার একটি এনজিও এর কাছ থেকে নিয়ে পরিশোধ করা হয়।
ডাক্তার রাজিব সরদার জানান, হাসপাতালে আগত মায়েদের প্রসব পরবর্তী ও পূর্ববর্তী আধুনিক চিকিৎসা সেবা দেওয়ায় এখান থেকে প্রতি সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মায়েরা চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। কিন্তু অন্য রোগীদের জন্য অনেক ক্ষেত্রে যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। প্রাপ্তি কম হওয়ায় হাসপাতালে আগত রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী ওষুদ সরবারহ করা যাচ্ছেনা। তাছাড়া ৫টির মধ্যে ১টি অক্সিজেন ফ্লোমিটার ভাল থাকায় মূমূর্ষ রোগীদের অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব হয়ে উঠছেনা। তাছাড়া এখানে কর্মরত ডেন্টিস্ট সুমাইয়া বিনতে মুছা ও অর্থোপেডিক্স ডাক্তার জাহিদ ফেরদৌস ডেপুটেশনে যথাক্রমে সাতক্ষীরা সদর ও ঢাকার কুর্মীটোলা হাসপাতালে রয়েছে। যেকারনে সংশ্লিষ্ট রোগীদের ভোগান্তি হচ্ছে। হাসপাতালের এক্সরে ও অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করাসহ সকল সংকট সমাধানের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে। অবিলম্বে সকল সমস্যা সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাতক্ষীরায় ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হায় হায় কোম্পানির ৪ প্রতারক আটক

নিজস্ব প্রতিনিধি : প্রতারনার ফাঁদ পেতে সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে জামানত নিয়ে চাকুরী ও গৃহ নির্মান ঋণ, হস্ত শিল্প, স্বাস্থ্য সেবা, পন্য ঋণ ও ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একটি হায় হায় কোম্পানী ১২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় জনতার সহায়তায় গত শনিবার পুলিশ সংঘবদ্ধ চক্রের ৪ প্রতারককে আটক করেছে।
জানা যায়, গত দুই মাস আগে জেলার পারুলিয়া, থানাঘাটা, গাভা, ব্রহ্মরাজপুর বাজার সহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে দি ডার্ক বিজনেস কো-অপারেটিভ লিঃ (গভঃ রেজিঃ নং-২৯৬/১৬) সাইনবোর্ড তুলে অফিসের কার্যক্রম শুরু করে। এরপর বিভিন্ন পদে উচ্চ বেতনে চাকুরীর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাপিয়ে দেয়ালে দেয়ালে সেঁটে দেয়া হয়। এতে করে উচ্চ শিক্ষিত নারী-পুরুষ বেকারত্ব ঘুচাতে লোভনীয় বেতনে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা জামানত দিয়ে প্রতিষ্ঠানে চাকুরী নেয়। নিয়োগকৃত ব্যক্তিরা এলাকায় কোম্পানীর নির্ধারিত ভর্তি ফরমে গৃহ নির্মান, হস্ত শিল্প, স্বাস্থ্য সেবা, পন্য ও ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়ার নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে শুরু করে সঞ্চয় আদায়। বিশেষ করে যাদের এলাকায় গ্রহনযোগ্যতা বা পরিচিতি বেশি এমন ধরনের লোকজনকে টার্গেট করে প্রতিষ্ঠানে বড় বড় পদে নিয়োগ দেয়া হতো। যাতে করে অল্প সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের প্রতি বিশ্বাসটা ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে এভাবেই ধোকা দিয়ে প্রতারণার জাল বিস্তার করতে থাকে। গত ২৮ দিনে ফিংড়ী ইউনিয়নের গাভা গ্রামের বিকাশ ওরফে প্যাচুর অফিস ভাড়া নিয়ে প্রতারকদের নিয়োগকৃত ২৭ জন কর্মী কয়েকটি অঞ্চল থেকে গৃহ নির্মান, হস্ত শিল্প, স্বাস্থ্য সেবা, পন্য ও ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়ার নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকা সঞ্চয় জমা হিসাবে হাতিয়ে নেয়। গত শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারী) ব্রহ্মরাজপুর বাজারের পিন্টু ঘোষের দ্বিতীয় তলায় সদ্য ভাড়া নেয়া দি ডার্ক বিজনেস কো-অপারেটিভ লিঃ এর অফিসে ওই এলাকার কয়েকজন যুবক চাকুরীর জন্য যায়। এ সময় অফিসের লোকজনের কথা-বার্তায় সন্দেহ হলে তারা তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে। একপর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটি বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ভূয়া বলে প্রমানিত হয়। এছাড়া অফিসের লোকজন সবকিছু প্রতারনা বলে স্বীকার করে। এই হায় হায় কোম্পানীর খবর ছড়িয়ে পড়লে গাভা অফিসের লোকজন ও গ্রাহকরা এসে ৪ প্রতারককে ধরে ফেলে। এরা হলেন বগুড়া জেলার গাবতলী থানার সোনারায় গ্রামের মোঃ মোশাররফ হোসেনের পুত্র মীর জুমলা সুজন ওরফে মোঃ সোহাগ চৌধূরী (৩২), খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার পুরাইকাটি (গজারিয়া) গ্রামের মোঃ আনারুল ইসলামের পুত্র মোঃ হাফিজুর রহমান ওরফে মাসুম (৩০), সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানার নলকাছারী বাড়ী গ্রামের মৃত গফুর আলীর পুত্র মোঃ মহরম আলী (৩৫) ও গাইবান্ধা জেলা সদরের বলাবানুনিয়া গ্রামের মতলেবুর রহমানের কন্যা শারমিন সুলতানা (৩০)। আটককৃতদের রাতেই স্থানীয় জনতা ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস,আই অচিন্ত্য কুমার অধিকারীর মাধ্যমে সদর থানায় সোপর্দ করে। আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে নগদ ১ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (১১ ফেব্রয়ারী) সকালে সাতক্ষীরা থানায় প্রতারণার শিকার শ’খানেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গ্রাহক হাজির হয়। এ সময় সাতক্ষীরা থানার ওসি (তদন্ত) শেখ শরিফুল আলম পুরো ঘটনা সম্পর্কে অবগত হন।
এ ঘটনায় ব্যাংদহা গাভা অফিসের টিম লিডার সাতক্ষীরা সদরের বাটকেখালী গ্রামের মোঃ আবুজার রহমানের পুত্র মোঃ ইমরান হোসেন (২৫) বাদী হয়ে আটককৃত ৪জন ও ২/৩ জন অজ্ঞাতনামা আসামী বানিয়ে সাতক্ষীরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। যার মামলা নং-২৩, তাং-১১/০২/১৮ ইং।
আটককৃত মীর জুমলা সুজন জানায়, মাসুমের সাথে পরিচয়ের সুবাদে সেই তাদেরকে সাতক্ষীরায় নিয়ে আসে। মাসুমের চাচাতো দুলাভাই সাতক্ষীরা মাগুরা গ্রামের জনৈক ইসমাইল হোসেন এই চক্রের মূলহোতা। প্রতিদিনের আদায়কৃত প্রায় সব টাকা সেই আমাদের কাছ থেকে গ্রহন করতো। সে নিজেকে পুলিশে চাকুরী করে বলে পরিচয় দিয়ে বেড়ায়। তাকে ধরলে সব টাকা উদ্ধার সম্ভব।
আটক শারমিন সুলতানা জানায়, গত ৬ মাস পূর্বে আগের সংসার ত্যাগ করে সম্পর্কের মাধ্যমে মীর জুমলা সুজনের সাথে সংসার শুরু করি। মাসুম ও তার দুলাভাই ইসমাইল হোসেনের প্রলোভনে পড়ে এই চক্রের সাথে জড়িয়ে পড়ি। তারা ঘটনার সব নায়ক। সব টাকাই তাদের কাছে আছে।
আটককৃত মাসুম এসব ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। ইসমাইলের শ্বশুরের নাম মোঃ রফিকুল ইসলাম। সে সাতক্ষীরা মাগুরা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের পুত্র।
অপর একটি সূত্র জানায়, ইসমাইলের শ্বশুর রফিকুল ইসলাম ৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা পরিশোধের শর্তে ভূক্তভোগীদের কাছে তার নিজ নামীয় ব্যাংক হিসাবের একটি চেক প্রদান করেছে।
কয়েকজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই অচিন্ত্য কুমার অধিকারী মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে মামলার এজাহার কয়েকবার পরিবর্তন করিয়ে জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে ভুল বুঝিয়ে ফিংড়ী এলাকার কয়েকজন নিরীহ ও নিরাপরাধ মানুষকে জড়ানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ফিংড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান শামসুর রহমান এবং ফিংড়ী ইউনিয়নে কর্মরত কয়েকজন সাংবাদিকের বাধাঁর মুখে শেষ পর্যন্ত সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতারণার শিকার অফিস ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা শাহরিয়ার কবির পিন্টু, কালিপদ, ইমরান, সেলিম সহ কয়েকজন জানান, তারা এমনভাবে কার্যক্রম শুরু করে এটা যে এতবড় প্রতারণা তা আমরা কিছুতেই বুঝতে পারিনি। আটক শারমিন সুলতানা একজন স্মাট সুন্দরী হওয়ায় তারা তাকে ঢাকা অফিসের অডিট কর্মকর্তা সাজিয়ে এসি প্রাইভেট গাড়ীতে করে অফিস ভিজিট করাতো। এমন ডিজিটাল প্রতারণার ফাঁদ থেকে অল্পতে বেঁচে গেছেন বলেও তারা মন্তব্য করেন।
অনেক অসহায় ও গরীব ঘরের শিক্ষিত বেকার ছেলে-মেয়ে চাকুরী নিয়ে এখন মস্তবড় বিপদে পড়েছেন বলেও জানান। গ্রাহকদের চাপের মুখে অনেক কর্মী এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলেও জানা গেছে। এছাড়া অনেকে আবার লোকলজ্জার ভয়ে এলাকায় যেতে পারছেন না। ভূক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা তাদের টাকা উদ্ধারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে আটকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারী) সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মেরিনা আক্তার তাঁর কার্যালয়ে প্রতারণার শিকার ও ক্ষতিগ্রস্থ ১৬ জন কর্মীর মাঝে বিতরণ করেছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফিংড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান শামসুর রহমান।
সাতক্ষীরা থানার অফিসার ইনচার্জ মারুফ আহম্মদ জানান, মামলার তদন্তে অপরাধীরা চিহ্নিত হবে। এ সমস্ত প্রতারকরা মানুষকে ঠকিয়ে সর্বশান্ত করছে। তিনি আর্থিক কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরী নেওয়ার আগে চাকুরী প্রার্থীদেরকে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভালভাবে খোঁজ-খবর নেওয়ার কথা বলেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest