সর্বশেষ সংবাদ-
আলিপুরে জামায়াতের নির্বাচনী পথ সভাআমাকে নমিনি করার পরে নেতাকর্মীরা ভোটের মাঠে ঝাপিয়ে পড়েছে: কাজী আলাউদ্দীনদেবহাটায় ফার্মাসিস্ট ও টেকনোলজিস্টদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নে মানববন্ধনসাতক্ষীরায় জলবায়ু সুবিচারের দাবিতে পদযাত্রা : উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠনের দাবিসাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ভূমিহীন সমিতির কঠোর হুশিয়ারীসাতক্ষীরায় শিশু-যুব ও স্টেকহোল্ডারদের কর্মশালাশ্যামনগরে অস্ত্র-গুলিসহ আটক সুন্দরবনের ত্রাস সাইফুলসাতক্ষীরায় দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিতসাতক্ষীরায় বিএনপি নেতা চিশতি’র মনোনয়নের দাবিতে সড়ক অবরোধগ্রীন কোয়ালিশন সাতক্ষীরা জেলা ইউনিটের কমিটি গঠন

নতুন সবুজে এক অন্যরকম শ্যামনগরের গাবুরা

শ্যামনগর ব্যুরো: সবুজের জন্য নানারকম কর্মসূচি চলছে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ খ্যাত গাবুরা ইউনিয়ন। ভয়ংকর আইলার ছোবলে সবুজ নামক দৃশ্যটি হারিয়ে ফেলেছিল গাবুরার মানুষ। চারিদিকে ছিলো ধু-ধু মরুভূমি।এ থেকে মুক্তি পেতে প্রতিবছর দেশের প্রতিটি উপজেলার বৃক্ষ মেলার আয়োজন হলেও গাবুরা ইউনিয়নে বৃক্ষমেলা থেকে বৃক্ষ ক্রয় করে মানুষ গাছ লাগাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। মানুষ গাছের প্রতি এখন অনেক আন্তরিক। সাধুবাদ জানাই এখানকার স্থানীয় মানুষকে। বিশ্বের আবহাওয়াবিদদের মতে, গত আইলার করাল ছোবল থেকে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট অনেকটা রক্ষা করেছে। ফলে দেশের উপকূলীয় এলাকার ক্ষতি কিছুটা কম হলেও মানুষ সহ জীব বৈচিত্র্য হারা হয়েছিলো গাবুরা। যদি এই অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট না থাকত তাহলে আইলা ও সিডরে যে ক্ষতি হয়েছে তার চেয়ে আরো ২০ গুণ বেশি ক্ষতি হতো। গাছ আমাদের বিপদের বন্ধু, গাছ বিহীন স্বাভাবিক জীবন বিপন্ন। জীবনে-মরণে গাছের প্রয়োজন। ফুল, ফল, কাঠ, জ্বালানি, ছায়া আমরা গাছ হতে পেয়ে থাকি। গাছ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বাড়ায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহায়তা করে। ভারসাম্য বজায় রাখে। আবহমান বাংলার চিরচেনা শস্য-শ্যামল সবুজে ঘেরা ছায়া পথ ছিলো। গত কয়েক দিন আগে গাবুরায় পা দেখে এখানে নতুনভাবে জন্মানো গাছগুলো দেখে মনটা শান্তিতে ভরে উঠল। গাছগুলোতে একটু আলতো ছোঁয়া দেয়ার চেষ্টা করলাম। শরীর আনন্দে নেচে উঠল। অনেক সময় ধরে সবুজের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। মনে হলো- চোখের পাওয়ার খানিকটা বেড়ে গিয়েছে। গাছ-গাছালি পাখ-পাখালির দেশ বাংলাদেশ। গাছ লাগানো এখন অনেক মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।নদী ভাঙন রোধে এখানে রাস্তার ধার বাঁধের পাশে গাছ লাগানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক বাড়ির মালিক তার বাস্তু ভিটার ওপর শাক-সবজি, ফুল-ফল ছাড়াও দেশি-বিদেশি গাছের বাগান গড়ে তুলেছেন। এটা সত্যি আনন্দের বিষয়। দ্বীপ খ্যাত গাবুরায় বৃক্ষরোপণ অনেক বেড়েছে। এতে করে বেড়েছে সবুজায়নের মাত্রাও। যার ফলে তাপমাত্রা হ্রাস ও পরিবেশ রক্ষায় অনেক সহায়ক হচ্ছে। আমরা সকলেই সে জন্য এই সুন্দর কাজের সুদূরপ্রসারী অগ্রযাত্রায় আশাবাদী। সারাদেশের ন্যায় প্রতি বছর এখানে এখন বৃক্ষমেলা হয়। বৃক্ষমেলার মাধ্যমে বৃক্ষরোপন রোপন অনেকাংশে বেড়ে বলে এখানকার স্থানীয়দের কাছঠ থেকে জানা যায়। এখানকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছোট ছেলেমেয়েরাও গাছ কিনে রোপণ করে তাদের অভ্যাসকে প্রতিষ্ঠিত করছে। নিঃসন্দেহে এটা শুভ উদ্যোগ। এখানকার স্থানীয় মুরব্বিদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, মানুষ বেইমানি করলেও গাছ কখনো মানুষের সঙ্গে বেইমানি করে না। সে প্রতিনিয়ত আমাদের সেবা দিয়েই যায়। বাতাস, ফুল, ফল ইত্যাদি আমাদের অনেক উপকার করে থাকে। পরিশেষে আনাচে কানাচে সবুজে ভরে উঠুক। সবুজ বেষ্টনিতে পরিণত হোক গাবুরা ইউনিয়ন এই কামনা করি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
পাটকেলঘাটায় মটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের হোতা গ্রেফতার

পাটকেলঘাটা প্রতিনিধি: পাটকেলঘাটায় মটরসাইকেল চোর সিন্ডিকেটের হোতা রানা ২১কে গ্রেফতার করেছে পাটকেলঘাটা থানা পুলিশ। শুক্রুবার গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাটকেলঘাটা কপোতাক্ষের বেড়িবাধের উপর থেকে পাটকেলঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ মোল্ল্যা জাকির হোসেন ও উজ্জল কুমার মৈত্র সঙ্গীয় ফোস্ নিয়ে বানাতে গ্রেফতার করে। রানা পাটকেলঘাটা গ্রামের আব্দুর রহমানের পুত্র, তার নামে একাধিক মোটর সাইকেল চুরি ও মাদক সি-িকেট পরিচালনার অভিযোগ আছে বলে থানা সূত্রে জানা যায়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সাতক্ষীরায় ৩ দিনব্যাপী ইজতেমা শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরায় আম বয়ানের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী জেলা ইজতেমা। শনিবার বিকালে বাদ আছর সাতক্ষীরা শহরের অদূরে বাঁকাল মার্কাজ মাঠে লক্ষাধিক মুসুল্লীর অংশগ্রহণে এ ইজতেমা শুরু হয়। ইজতেমায় বয়ান করছেন কাকরাইল মসজিদের মুরুব্বী মাওলানা আব্দুর রহিম। সাতক্ষীরার শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের আব্দুল হামিদ জানান, আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য ইজতেমায় এসেছি। এখান থেকে সৃষ্টির সেবা ও ¯্রষ্টার ইবাদতের জন্য জ্ঞান অর্জন করতে পারবো। তাবলীগ জামাতের সাতক্ষীরার প্রধান মুরুব্বী মাওলানা আবু মুছা জানান, ইজতেমায় কোরিয়া, চীন, সিরিয়া, মরোক্কা, মালয়েশিয়াসহ পাঁচটি দেশের জামাতসহ লক্ষাধিক মুসুল্লীর সমাগম ঘটেছে। ইজতেমায় আগতদের থাকার জন্য ৫০ বিঘা জমির উপর প্যান্ডেল করা হয়েছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার জানান, ইজতেমাকে কেন্দ্র করে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রসঙ্গতঃ আগামী সোমবার সকালে আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে এই ইজতেমা শেষ হবে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
এসএসসি পরীক্ষার্থী বাবু আর নেই

চাম্পাফুল প্রতিনিধি: ঘুশুড়ি কাজী আলাউদ্দীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বাবু আর নেই। সে বাবার উপর অভিমান করে বিষ পান করে আতœহত্যা করেছে। পারিবারিক সুত্রে জানা জায় গত রাতে তার বাবা আরশাদ আলী সরদারের সাথে সে দ্রব্য সেবন করা এ নিয়ে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। ছেলে বাবু বাবার উপর অভিমান করে শনিবার সকালে বাড়িতে রাখা কিটনাশক পান করে। সকালে বাড়ির উঠানে চেয়ারে বসে বমি করার এক পর্যায়ে ঢলে পড়লে তৎক্ষনাৎ চিকিৎসার জন্য রওনা হলে তারালী পৌছালে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বাবুর অপমৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাকে এক পলক দেখার জন্য তার সহপাটিসহ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ভিড় জমায়। মৃত্যুর পূর্বে বাবু চিঠিতে লিখে গেছে যে, “আমি কোন নেশা করিনা। আমার মুখ আর কাউকে দেখাবনা। আমি আমার মায়ের কাছে চলে যাচ্ছি।” উল্লেখ্য যে বাবুর মা প্রায় বছর পাঁচেক আগে মৃত্যু বরণ করেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
১৭ মার্চ বাস মালিক সমিতির নির্বাচন; সভা অগঠনতান্ত্রিক দাবি করে পাল্টা সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি: শনিবার বেলা ১১টায় সাতক্ষীরা জেলা বাস মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস মালিক সমিতির বিশেষ সাধারণসভা সমিতির সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালস্থ প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি আশরাফুল ইসলাম এবং সভা পরিচালনা করেন সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন। সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম মোরশেদ স্মাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে সভায় ১৯৩ জন বাস মালিক/সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভায় সমিতির আগামী ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ১৭ মার্চ-২০১৮ নির্ধারণ করা হয়। নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৫ (পাঁচ) সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন হয়। আহবায়ক কমিটির আহবায়ক মো. গোলাম মোরশেদ, সদস্য যথাক্রমে শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন, শেখ আলমগীর হাসান, শাহজাহান কবির ও একেএম মোতাহারুল হক সজল। সভায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কমিটির সদস্য এড. আ. বারী, এড. শেখ সাঈদুর রহমান ও আব্দুল কাদির ময়না।
এদিকে সাতক্ষীরা বাস টার্মিনালে সন্ত্রাসী হামলা ও অগঠনতান্ত্রিকভাবে সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে দাবী করে প্রতিবাদ সভাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় শহরের খুলনা রোড মোড়স্থ এলাকায় এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সাতক্ষীরা বাস মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সমিতির সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রাণ নাথ দাশ, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর রশিদ প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান মহব্বত, সহ-সভাপতি শেখ মিরাজুল ইসলাম, জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, জেলা তাঁতীলীগের সভাপতি মীর আজহার আলী শাহিন, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হাসানসহ বাস মালিক ও শ্রমিকবৃন্দ। এসময় বক্তারা বলেন, ছাইফুল করিম সাবু’র নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে সাতক্ষীরা বাস টার্মিনালের মালিক সমিতিতে একের পর হামলা ও ভাংচুর চালায়। ওই সাবু সমিতির কর্মকর্তাদের জিম্মি করে জোরপূর্বক সাধারণ সভা দিতে বাধ্য করেছে। যা অগঠনতান্ত্রিক ও অনিয়ম। গঠনতন্ত্রের ২৫(খ) ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
বক্তারা আরো বলেন, অগঠনতান্ত্রিকভাবে সাধারণ সভায় ৩০/৩২জন মালিক নিয়ে তারা ওই সভা শেষ করেন। সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মালিক সমিতির দুই তৃতীয়াংশ মালিকদের উপস্থিত রেখে সাধারণ সভার নিয়ম থাকলেও সাবু তা করতে দেয়নি। বক্তারা বলেন, সাধারণ সভা ডাকতে হলে কম করে ১৫দিন আগে আহবান করতে হয়। কিন্তু ওই মোনায়েম খান গত বৃহস্পতিবার সমিতিকে জিম্মি করে জোরপূর্বক সাধারণ সভার আহবান করেছিল। তা সম্পূর্ণ অগঠনতান্ত্রিক বলে বক্তারা জানান। এছাড়াও কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার মামলার এক আসামির ভাইকেও আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে বলে জানান তারা।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
অনীক আজিজ স্বাক্ষরের অবিনাশী স্বাক্ষর

সুভাষ চৌধুরী: স্বাক্ষর একটি নাম, একটি স্বাক্ষর। একটি প্রতিশ্রুতি, একটি সংগ্রাম, একটি উদীয়মান সূর্য, একটি নক্ষত্র। একটি আদর্শ, একটি পথ। একটি অবিরাম চলমান ফটোগ্রাফী, একটি জীবন, একটি প্রকৃতিকে বেঁধে রাখা। মুক্তিযুদ্ধের ফ্রেমে আঁকা, ভাষা সংগ্রামের তুলিতে বুলানো একটি প্রলম্বিত প্রত্যাশা, একটি স্বাক্ষর।
শনিবার বিকালে সাতক্ষীরা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনের উপচে পড়া ভিড়ে রুদ্ধদ্বারে মুক্ত প্রাণের মতো গম্ভীর কন্ঠে ভেসে আসছিল স্বাক্ষর, তার জীবন, তার আদর্শের এসব শব্দগুলি। পিনপতন নীরবতার মধ্যে শতজনের মতো আমিও নীরবে সিক্ত হয়েছি আপন অশ্রুতে। হয়তো তখন ভুলেই গিয়েছিলাম কে আমি, কোথায় আমি। কবিতার ভাষায় চয়িত শব্দে কেঁপে কেঁপে উঠছিল মঞ্চ। কানফাঁটা আওয়াজ আঘাত করছিল হৃদয়ের গভীরে। শুধু শুনেছি, আর দেখেছি, আর শিখেছি । ছবির কলা কৌশলে বার বার স্বাক্ষর রেখে গেছে নিজের স্বাক্ষর। এ যেনো তারই উচ্চারন, এ যেনো তারই প্রতিশ্রুতি, একাত্তরের ঘাতকদের বিচার চাই।
একটি সাধারন পরিবার থেকে উঠে আসা, বিজ্ঞান মনস্ক,রাজনীতি মনস্ক, সংগ্রামী চেতনা ও প্রতিবাদে ভাস্বর। কখনও মিছিলে, কখনও স্লোগানে, কখনও চিত্রায়নে। রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা শিশুটির ভেতর বাহিরও ছিল রাজনীতি মোড়ানো। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ভাস্বর, অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধারক, প্রতিবাদে দৃঢ় কন্ঠস্বর, এক স্পর্ধিত তরুনের নাম অনীক আজিজ স্বাক্ষর। তার হৃদয়ের ভেতর ছিল এক প্রস্ফুটিত পদ্ম। তার বাহির ছিল আরেক প্রস্ফুটিত গোলাপ। তার অকাল প্রয়াণ হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। তার অসময়ের চলে যাওয়া মানুষকে শুন্যতায় ঠেলে দিয়েছে। তার অপ্রত্যাশিত প্রস্থান মাতৃত্বের ফল্গুধারাকে আহত করেছে। যে জীবন সে দেখতে চেয়েছিল, যার ছবি সে বারবার আঁকতো, যে জীবনকে সে আদর্শ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে বারবার সংগ্রাম করেছে, মিছিল করেছে সেই জীবনের প্রতি কেনো এতো তুচ্ছ জ্ঞান সে প্রশ্নের জবাব নেই। সৃজনশীলতা ছিল যার জীবনের গতি তা কেনো মৃত্যুর যুক্ত অক্ষরে বাঁধা পড়লো। এ প্রশ্নেরও জবাব মেলেনি।
অনীকের নাগরিক স্মরণ সভায় কন্ঠশিল্পী আবু আফফান রোজ বাবুর কন্ঠে উচ্চারিত হলো তোমার সমাধি ফুলে ফুলে ঢাকা। স্তব্ধ স্থির একাডেমি মিলনায়তন যেনো আরেক বার ডুকরে কেঁদে উঠলো। শিল্পী মঞ্জুরুল হক গাইলেন যাবার আগে কিছু বলে গেলে না। কবিতার ভাষায় মিনা মিজানুর রহমান বললেন আকাশের অগনিত নক্ষত্রের মেলা থেকে খসে পড়লো একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র, সে তো অনীক আজিজ স্বাক্ষর। কেউ গাইলেন তুমি রবে নীরবে। কবি তৃপ্তি মোহন মল্লিক বললেন পৃথিবীর ধ্রুব সত্য বানী চিরন্তনী, সাম্যবাদ মৃত্যুতে প্রকট। তুমি ছিলে তুমি আছো। সংস্কৃতিকর্মী মুশফিকুর রহমান মিল্টন কবিতার শব্দে বললেন অনীক আজিজ স্বাক্ষর এমন যার নাম। ক্ষনিকের ছোঁয়া পেয়ে মোরা হারিয়ে ফেললাম।
আবৃত্তি ও কন্ঠশিল্পী শামীমা পরভিন রতœার কম্পিত কন্ঠে উচ্চারিত হলো মা নাসরিন খান লিপির লেখা কবিতা ‘কেনো চলে গেলে কিছু বলে গেলে না, কোনো চলে গেলে সূত্রটি বলে গেলে না’। কবি দিলরুবা রুবির ‘সেই ছেলেটা’ কবিতায় ‘সেই ছেলেটা যাকে দেখলে মনে হয় মুঠি ভরা মেঘ ভাঙ্গা সোনা রোদ’। কবি শহীদুর রহমান ‘ঝরে যাওয়া এক উজ্জ্বল জ্যোতিস্ক’ কবিতায় বললেন ‘এভাবেই চলে যাবে তুমি এমন তো কথা ছিল না’।
ফুলে ফুলে ভরে উঠা অনীক আজিজের প্রতিকৃতি ঘিরে শিল্পকলা একাডেমির প্রবেশ পথ যেনো প্রস্ফুটিত বাগানে পরিনত হয়েছিল। অগনিত মানুষের পদচারনায় যেনো জীবন্ত হয়ে উঠেছিল প্রবেশ দ্বার। ২১ জানুয়ারি আত্মহননের অবিশ্বাস্য ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে ওঠা মানুষ কেবলই নীরবে অশ্রু মুছেছেন। হৃদয়ের গভীরে ক্ষত নিয়ে বারবার কেঁেদছেন। বাবা মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন ‘আমার আক্ষেপ আমার ছেলে মিছিলে আন্দোলনে সংগ্রামে মারা যায়নি কেনো। কেনো সে লড়াইয়ের ময়দানে একজন সৈনিক হিসাবে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেনি। মা নাসরিন খান লিপি বলেন আমার ছেলের কোনো চাহিদা ছিল না। ছিল আমার প্রতি পাগলের মতো অফুরান ভালবাসা। বোন অদিতি আদৃতা সৃষ্টি কান্না জড়িত কন্ঠে জানালো আমাদের জীবন ছিল রাখী বন্ধনের মতো। আমাদের জীবন ছিল বন্ধুর মতো। স্মরণ সভায় শামীম পারভেজের ‘অনীক মানে যোদ্ধা’ ডকুমেন্টারিতে ফুটে উঠেছে অনীকের জীবন, তার সংগ্রাম, তার চলার পথ, তার আদর্শ, তার প্রকৃতি ও জীবনবোধ ও মানবপ্রেম। মাসুদুল হকের ছবিতে প্রস্ফুটিত হয়েছে প্রকৃতির প্রতি অনীকের ভালবাসার অন্তরঙ্গ চিত্র। নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে এসে দৈনিক সত্যপাঠ সম্পাদক হারুনার রশীদ বলেন অনীক নিজেই প্রগতির সকল কাজে স্বাক্ষর করে গেছে। অনীক নিজেই একটি শিক্ষা, নিজেই একজন শিক্ষক। সাংবাদিক হাফিজুর রহমান মাসুম বলেন অনীক ছিল গনজগরণ মঞ্চের সম্মুখ সারির সংগঠক ও সার্বক্ষণিক কর্মী। অনীকের নিরহংকার চরিত্র আমাদের তরুণদের জন্য আদর্শ হতে পারে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো.মোসলেমউদ্দিন বলেন অনীকের আদর্শের পথ প্রলম্বিত। অনীক একজন নিবেদিত সৈনিক। তার স্মরণে তৈরি হবে অনীক ট্রাস্ট। অনুভূতি ব্যক্ত করতে এসে কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন বলেন মানুষ মানুষের জন্য,জীবন জীবনের জন্য। তুমি রবে নীরবে। ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য ইকবাল কবির জাহিদ বলেন ‘আমরা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অভিন্ন অঙ্গিকারে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম। অনীকের আদর্শ আমাদের আদর্শ, অনীকের গনজাগরন মঞ্চ আমাদের মঞ্চ, অনীকের সব অঙ্গিকার আমাদের অঙ্গিকার, তা থেকে আমরা যেনো কেউ সরে না যাই। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারন সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন অনীক ছিল আমার নিকট প্রতিবেশি। ঢাকার মিছিলে সংগ্রামে তার পায়ে স্যান্ডেল নেই, হাতে ছিল ক্যামেরা। তাকে দেখে সাহস জাগে, কারণ অনীকরাই তো সমাজ পরিবর্তনের শক্তির সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। তিনি বলেন ‘তোমার স্বপ্ন গুলো পূরন হবে। দেশে বিপ্লব হবে। লাল পতাকার জয় হবে’।
হৃদয়স্পর্শী স্মরণ সভায় ওয়াকার্স পার্টি নেতা মহিবুল্লাহ মোড়ল ও এড. ফাহিমুল হক কিসলুর শোক কম্পিত ও ভারাক্রান্ত কন্ঠে বারবার উঠে এসেছে অনীকের জীবন সংগ্রামের কথা, তার মানবপ্রেম ও আদর্শের কথা।
বাবা মুস্তফা লুৎফুল্লাহর সাম্যবাদী আদর্শের রাজনীতি মোড়ানো পরিবারের বৃন্ত থেকে ছিটকে পড়া অনীক। নিরহংকার, নির্লোভ, সত্যনিষ্ঠ, কর্মঠ, আবেগী তরুন অনীক ছিল এক সরল সহজ হাসিমাখা হৃদয়ের অধিকারী। অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামে যার নিত্য পদচারনা, অন্যায় আর অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে যার নিরন্তর লড়াই, তারই নাম অনীক আজিজ স্বাক্ষর। ছাত্র, সংগঠক, ফটোগ্রাফার, মিষ্ট ও মৃদূু ভাষী, মুক্তমনা, টগবগে দুরন্ত তারুণ্যের দীপ্ত স্বাক্ষর অনীক আজিজ স্বাক্ষরের অকাল প্রয়াণ তাই বারবার রেখে যায় অবিনাশী স্বাক্ষর।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
শপথ নিলেন প্রধান বিচারপতি

দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। আজ শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বঙ্গভবনে তাঁকে শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

প্রধান বিচারপতির শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা।

গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা পদত্যাগ করার পর থেকে প্রধান বিচারপতির পদ খালি ছিল। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন আবদুল ওয়াহহাব মিঞা। গতকাল শুক্রবার সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পর বিচারপতি ওয়াহহাব পদত্যাগ করেন।

গত বছর ১ আগস্ট উচ্চ আদালতের বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে নিয়ে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণ রায় প্রকাশ করা হয়। রায়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা ও আইনজীবীরা। তাঁরা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগেরও দাবি তোলেন। এরই মধ্যে গত ২ অক্টোবর হঠাৎ করেই এক মাসের ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি। তিনি আবেদনে ৩ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে যাওয়ার কথা জানান রাষ্ট্রপতিকে। পরে গত ১৩ অক্টোবর রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে দেশ ছাড়েন সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। এরপর ১০ নভেম্বর ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার দিনই দেশের বাইরে থেকেই পদত্যাগপত্র পাঠান সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের ওপর ন্যস্ত হয়। এ নিয়েই বিচার বিভাগ ও সরকার পরস্পর বিরোধী অবস্থানে চলে গিয়েছিল।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
পাকিস্তানে অভিনেত্রীকে গুলি করে হত্যা

পাকিস্তানের মারদানে বাড়িতে ঢুকে স্থানীয় এক অভিনেত্রীকে গুলি করে হত্যা করেছে তিন বন্দুকধারী। স্থানীয় পুলিশ বলছে, মারদানের শেইখ মালতুন শহরে ওই অভিনেত্রীর বাড়িতে প্রবেশের পর বন্দুকধারীরা গুলি চালিয়ে তাকে হত্যা করেছে।

পাকিস্তানের দৈনিক ডন বলছে, বাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশের পর বন্দুকধারীরা তাদের সঙ্গে মঞ্চ অভিনেত্রী সাম্বুলকে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় বাধা দিলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই অভিনেত্রী।

দেশটির অপর দৈনিক দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, মারদানের ওই অভিনেত্রীকে হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নাইম খাট্টাক, জেহাঙ্গীর খান ও নাসিব খান নামের তিন দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তুলে নেয়ার চেষ্টায় বাধা দেয়ায় তিনি খুন হয়েছেন।

হত্যাকাণ্ডের পর হামলাকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন। পুলিশ অপরাধীদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশের এক সাবেক কনস্টেবলকেও খুঁজছে পুলিশ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest