সর্বশেষ সংবাদ-

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভায় হট্টগোল

২৯তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভায় নেতাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মোজাফ্ফর আহমদ চোধুরী অডিটরিয়ামে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা আড়াইটার দিকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিলম্বের কারণে তা শুরু হয় বিকেল সাড়ে ৩টায়।

জানা যায়, নির্বাহী সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও গতকালের সভায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অন্যদের কোনো কথাই বলতে দেয়নি ফলে তাদের দাবি-দাওয়াগুলো তারা জানাতে পারেনি। এ নিয়ে নেতাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নেতা বলেন, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজেদের বক্তব্যের মাধ্যমে সভা শেষ করেন। তাঁরা আমাদের কোনোকিছু বলার সুযোগ দেননি। সভায় নতুন নেতাদের বয়স নির্ধারণ নিয়ে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা উত্তর দেননি।

সভায় প্রথম সারির আসনে বসাকে কেন্দ্র করেও বাগবিতণ্ডা হয় সংগঠনের সহসভাপতি ইমতিয়াজ বাপ্পি ও সহসাধারণ সম্পাদক এনামুল হক প্রিন্সের মধ্যে।

জানা যায়, প্রিন্স দুপুর আড়াইটার দিকে সভাস্থলে প্রবেশ করে প্রথম সারির চেয়ারে বসেন। কিন্তু তার ঠিক আধা ঘণ্টা পর সহসভাপতি ইমতিয়াজ বাপ্পি সেখানে প্রবেশ করেন এবং এনামুল হককে তাঁর আসন ছেড়ে দিতে বলেন। এ সময় তাঁদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। পরে অন্য এক জ্যেষ্ঠ নেতার হস্তক্ষেপে বাগবিতণ্ডার সমাপ্তি ঘটে।

সভায় অংশগ্রহণকারী কয়েকজন নেতা জানান, সংগঠনের ২৯তম কাউন্সিলের তারিখ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, আগামী মার্চের ৩১ ও ১ এপ্রিল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির সভা করি। সভা অতি সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে হয়েছিল। এখানে শুধু সম্মেলনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এতে কোনো ধরনের বাগবিতণ্ডা হয়নি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি বহাল রাখলেন ট্রাম্প

পরমাণু চুক্তি ইস্যুতে সম্প্রতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক। চলছে বাকযুদ্ধ ও পাল্টাপাল্টি হুমকি। তবে এরই মধ্যে নিজের অবস্থানে নরম হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানের সঙ্গে বিশ্বের ছয় জাতিগোষ্ঠীর সই হওয়া পরমাণু চুক্তি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন তিনি। তবে এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জুড়ে দিয়েছেন দুটি শর্ত।

এ ব্যাপারে শুক্রবার তিনি বলেছেন, ‘চরম অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমি ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকাকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছি না। বরং সম্ভাব্য দুটি পথ আমি দিচ্ছি; এর একটি হচ্ছে- হয় এ সমঝোতার বিপর্যয়কর ত্রুটি দূর করতে হবে, না হয় আমেরিকা এ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেবে।’

এসময় ট্রাম্প আরও বলেন, ‘এটা হচ্ছে শেষ সুযোগ। আমেরিকা ও ইউরোপের মধ্যে সমঝোতা না হলে আমেরিকা আর ইরানকে নিষেধাজ্ঞা মুক্তির সুবিধা দেবে না।’

হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শেষবারের মতো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা থেকে বিরত থাকলেন। তবে আগামী ১২০ দিনের মধ্যে ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে বৃহত্তর ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে তিনি ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবেন।

প্রসঙ্গত, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইরানের সঙ্গে সই হওয়া পরমাণু চুক্তি বাতিলের হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
এবার বাংলায় হবে বিশ্ব ইজতেমার আখেরী মোনাজাত

এবার বিশ্ব ইজতেমায় আখেরী মোনাজাত হবে বাংলায়। মোনাজাত পরিচালনা করবেন বাংলাদেশী মাওলানা হাফেজ জোবায়ের। বিশ্ব ইজতেমার মুরুব্বী প্রকৌশলী মো. গিয়াস উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার রাতে তাবলীগ জামাতের মুরুব্বীদের নিয়ে এক বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আখেরি মোনাজাতের আগে হেদায়তি বয়ান হয় তা করবেন আরেক বাংলাদেশি মাওলানা আব্দুল মতিন।
বিশ্ব ইজতেমার মুরুব্বী প্রকৌশলী মো. গিয়াস উদ্দিন আরো জানান, রবিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
তবে তাবলীগ জামাতের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক শীর্ষ স্থানীয় মুরুব্বী বলেন, আখেরি মোনাজাত হবে আরবিতে কিংবা উর্দূতে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
রোগ প্রতরোধে কাজু বাদাম

কাজু বাদাম খাওয়া কি স্বাস্থ্যকর? এমন প্রশ্নে জবাবে বলতে হয়, পুষ্টিগুণ এবং শরীরিক উপকারিতার দিক থেকে কাজু বাদামের কোন বিকল্প হয় না বললেই চলে। এতে উপস্থিত প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ এবং ভিটামিন নানা ভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। শুধু তাই নয়, কাজু বাদামে ভিটামিনের মাত্রা এত বেশি থাকে যে চিকিৎসকেরা একে প্রকৃতিক ভিটামিন ট্যাবলেট নামেও ডেকে থাকেন।

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত যদি কাজু বাদাম খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে নান পুষ্টিকর উপাদানের ঘাটতি দূর হয়, সেই সঙ্গে আরও কিছু উপকার পাওয়া যায়।

ক্যান্সার রোগ দূরে থাকে
মারণ রোগটি যদি সাপ হয়, তাহলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হল বেজি। তাই তো যেখানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, সেখানে ক্যান্সার সেলের খোঁজ পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই তো প্রতিদিন এক মুঠো করে কাজু বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। আসলে এই বাদমটির শরীরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সার সেলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার পাশাপাশি টিউমার যাতে দেখা না দেয় সেদিকেও খেয়াল রাখে।

প্রসঙ্গত, কাজু বাদামে থাকা প্রম্যান্থোসায়ানিডিন নামে একটি উপাদান এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

সংক্রমণের আশঙ্কা কমে
প্রাকৃতিক উপাদানটিতে থাকা জিঙ্ক, ভাইরাসের আক্রমণের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। তাই আপনি যদি এই ধরনের ইনফেকশনের শিকার প্রায়শই হয়ে থাকেন, তাহলে রোজের ডায়েটে কাজু বাদামের অন্তর্ভুক্তি ঘটাতেই পারেন।

হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে
কাজু বাদামে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট একদিকে যেমন ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে, তেমনি নানাবিধ হার্টের রোগ থেকে বাঁচাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যাদের পরিবারে হার্ট ডিজিজের ইতিহাস রয়েছে, তারা প্রয়োজন মনে করলে এই প্রকৃতিক উপাদানটির সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতেই পারেন।

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে
মাঝে মধ্যেই কি রক্তচাপ গ্রাফের কাঁটার মতো ওঠা-নামা করে? তাহলে তো চটজলদি কাজু খাওয়া শুরু করতে হবে। কারণ এই বাদামে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, যা ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে
কাজুতে রয়েছে ওলিসিক নামে এক ধরনের মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, যা দেহে বাজে কোলেস্টরলের মাত্রা কমাতে দারুন কাজে আসে। তাই তো নিয়মিত এই বাদমটি খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ফলে হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়
কপার হল সেই খনিজ, যা চুলের ঔজ্জ্বল্য বাড়ানোর পাশাপাশি চুলের গোড়াকে শক্তপোক্ত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর এই উপাদানটি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে কাজুতে। এবার নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন কিভাবে কাজু চুলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে থাকে। তবে এখানেই শেষ নয়, কাজু বাদামে থাকা কপার শরীরের অন্দরে এমন কিছু এনজাইমের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়, যা চুলের কালো রংকে ধরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।

ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে
আমাদের দেশে যে হারে সুগার রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে বাদাম খাওয়ার প্রয়োজন বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে- প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ এই খাবারটি নিয়মিত খেলে রক্তে সুগারের মাত্র নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে শরীরর কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মাংস নয়, গরুর ‘বীর্য’ আমদানি করবে সরকার

চাহিদা মেটাতে হিমায়িত মাংস আমদানি না করে ব্রাহামা জাতের গরুর ‘বীর্য’ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে ‘বিফ ক্যাটল উন্নয়ন’ প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। প্রকল্পের আওতায় ‘ব্রাহামা’ জাতের গবাদি পশুর বীর্য আমদানি করে মাংসল জাতের গরু দেশেই উৎপাদন করা হবে। যা থেকে দেশে মাংসের চাহিদা মেটানো যাবে।

সম্প্রতি চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে হিমায়িত গরুর মাংস আমদানির আবেদন করেন ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। তবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জানিয়েছেন, ‘দেশে লাল মাংসের চাহিদা মেটাতে অধিক মাংস উৎপাদনে সক্ষম ব্রাহামা জাতের মাংসল গরু উৎপাদনে বীর্য আমদানি করা হবে। আর এই জাতের গরু উৎপাদনে যারা খামার প্রতিষ্ঠা করবে তাদের সহায়তা দেবে সরকার। ইতোমধ্যেই সরকারের এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে ফলাফল পাওয়া যাবে।’

প্রসঙ্গত, সঠিক খাদ্য ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদন করা ব্রাহামা জাতের গরুর গড় ওজন এক টন (এক হাজার কেজি) পর্যন্ত হয়। ইতোমধ্যে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর গবাদিপশুর জাত উন্নয়নে ‘ব্রিড আপগ্রেডেশন থ্রু প্রেজেনি টেস্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ‘প্রুভেন বুল’ উৎপাদন করছে। এই ষাঁড়ের মাধ্যমেই গবাদি পশুর বীর্য উৎপাদন করা হচ্ছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮-০৯ অর্থবছর দেশে গরুর বীর্য উৎপাদন হয় ২৫ লাখ ৮৪ হাজার ডোজ। এর মধ্যে হিমায়িত ১৭ লাখ ৯৭ হাজার ও তরল ৭ লাখ ৮৭ হাজার লাখ ডোজ। এই বীর্য ব্যবহারের মাধ্যমে ওই বছর গাভী উৎপাদন হয় ২২ লাখ ৭১ হাজারটি। ওই বছরের পর থেকে প্রতিবছরই গরুর বীর্য উৎপাদন বেড়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছর যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ লাখ ৮২ হাজার ডোজ। এর মধ্যে হিমায়িত ৩০ লাখ ডোজ ও আর তরল বীর্য ১১ লাখ ৮২ হাজার ডোজ। যা ব্যবহার করে দেশে গতবছর গাভী উৎপাদন হয়েছে ৩৬ লাখ ৬৮ হাজারটি।

এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণি সম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, ‘দেশে উৎপাদিত গরুর মাধ্যমে যদি মাংসের চাহিদা মেটানো যায় তাহলে কেন তা আমদানি করতে হবে? গরুর মাংস আমদানির অনুমতি দিলে দেশের খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই সরকার গরুর মাংস আমদানি না করে ব্রাহামা জাতের গরুর বীর্য আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘গরুর মাংস আমদানির সিদ্ধান্ত সরকার নেয়নি। ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে গরুর মাংস আমদানির আবেদন করেছিল। কিন্তু আমরা তা আমলে নেইনি।’

গরুর মাংস আমদানির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রবিউল ইসলাম বলেন, ‘শুধু ভারত কেন, কোনও দেশ থেকেই গরুর মাংস আমদানির অনুমতি দেওয়া ঠিক হবে না। এতে দেশের খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এক সময় ভারতের গরু না এলে কোরবানি হতো না। কিন্তু এখন দেশে উৎপাদিত গরু দিয়েই কোরবানি হচ্ছে। তাই মাংসের চাহিদা মেটাতে সরকারের উন্নত জাতের গরুর বীর্য আমদানির সিদ্ধান্ত প্রশংসার দাবি রাখে।’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রাণীজ আমিষের প্রধান উৎস গরুর মাংস। বছরে দেশে চাহিদা আছে ৭১ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিক টন মাংসের।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন; প্রার্থীদের সবুজ সংকেত দিচ্ছেন শেখ হাসিনা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা দলের মনোনয়ন পেতে পারেন তাঁদের অনেককে আগাম ‘সবুজ সংকেত’ দিচ্ছেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপির অংশগ্রহণে জোর লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এমন উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। কমপক্ষে ১০০ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের সূত্রে জানা গেছে। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় দলীয় আনুষ্ঠানিকতার পর। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে চূড়ান্ত করে চিঠি দেওয়া হবে প্রার্থীদের।

দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সবুজ সংকেত দেওয়া হচ্ছে কি না জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, নিশ্চয়ই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি মনে করেন এঁদের দিয়ে ভালো ফল পাবেন তাই তাঁদের ইঙ্গিত বা গ্রিন সিগন্যাল দিচ্ছেন। যাঁর সম্ভাবনা বেশি আছে, অনেক ক্ষেত্রে তাঁকে ইঙ্গিত দিয়েছেন। সংখ্যাটা কত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সংখ্যাটা বলতে পারব না। তবে ভালো পারসেন্টেজ।’ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেটের সম্ভাব্য প্রার্থীরা যেভাবে ইঙ্গিত পেয়েছেন সেভাবেই সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীদেরও ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, ‘এটি আন-অফিশিয়ালি করা হচ্ছে। যাঁদের আসনে ভালো ফল ছিল, যাঁদের আসন নিয়ে আমরা আশাবাদী, তাঁদের একটা সিগন্যাল দেওয়া হয়েছে। এই সিগন্যাল নেত্রী দিচ্ছেন। বেশ কিছু আসনে নেতাদের নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’ সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে এমন আসনের সংখ্যা কত জানতে চাইলে তিনি বলেন, আনুমানিক ১০০ হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপনির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম আতিক। আসন্ন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্যও দলের সাবেক দুই মেয়রকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন শেখ হাসিনা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখেও অনুরূপ কৌশল অনুসরণ করছে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং পটুয়াখালী-১ (সদর) আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী আফজাল হোসেন গত বুধবার বলেন, ‘সভানেত্রী নৌকা মার্কার বিজয়ের জন্য আমাকে কাজ করতে বলেছেন। আমি নির্বাচন করার ব্যাপারে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

চাঁদপুর-১ আসনে নৌকার জন্য কাজ করতে বলা হয়েছে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম হোসেনকে। তিনি বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের একটি জেলার বাসিন্দা একজন সাবেক ছাত্রনেতাকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে সবুজ সংকেত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সাবেক ছাত্রনেতা নির্বাচনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি শুরু করেছেন।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আরো যাঁরা দলীয় সভাপতির সবুজ সংকেত পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে আছেন এনামুল হক শামীম (শরীয়তপুর-২), অধ্যাপক আবু সাইয়িদ (পাবনা-১), ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১), মতিউর রহমান (রাজশাহী-১), আসাদুজ্জামান আসাদ (রাজশাহী-৩), অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ (নাটোর-১), জলি চৌধুরী (নাটোর-২), সালমান এফ রহমান (ঢাকা-১), ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন (ঢাকা-৭)। এ ছাড়া জোটগতভাবে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে আভাস পেয়েছেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা (ঢাকা-১৭)।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের সর্বশেষ অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের লক্ষ্যে জরিপ কার্যক্রম অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের আগেও এ ধরনের জরিপ করা হয়েছিল। সরকারি সংস্থার বাইরে বেসরকারি একাধিক প্রতিষ্ঠান এ ধরনের জরিপকাজে অংশ নেয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অনেক আগে থেকেই জরিপ চালানো হচ্ছে। এটি নির্বাচনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত চলবে বলে জানা গেছে।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করে থাকে দলের মনোনয়ন বোর্ড। পদাধিকার বলে ওই বোর্ডের প্রধান দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। তবে মনোনয়নের ক্ষেত্রে তৃণমূল আওয়ামী লীগের সুপারিশের বিষয়টিও আমলে নেয় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার আগে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দলীয় ফরম কিনে মনোনয়ন বোর্ডের মুখোমুখি হতে হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বোর্ডের সদস্যরা তাঁদের সাক্ষাৎকার নেন। এরপর মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী চূড়ান্ত করলে শেখ হাসিনার সই করা চিঠি চূড়ান্তভাবে মনোনীত প্রার্থীদের হাতে দেওয়া হয়।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছিলেন দলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সেখানে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল শেখ হাসিনার সই করা আওয়ামী লীগের মনোনয়নের চিঠি।
সূত্র: কালের কণ্ঠ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
সংবিধান অনুযায়ী হবে নির্বাচনকালীন সরকার- জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে। সেই সরকার সর্বোতভাবে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা দিয়ে যাবে। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত সব দল আগামী সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেবে এবং দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে সমুন্নত রাখতে সহায়তা করবে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, কোনো কোনো মহল আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা করতে পারে। দেশবাসীকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। জনগণ অশান্তি চায় না। নির্বাচন বয়কট করে আন্দোলনের নামে জনগণের জানমালের ক্ষতি করবেন— এটা আর এদেশের জনগণ মেনে নেবে না। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার সরাসরি সম্প্রচার করে। এ ছাড়াও বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিও তা সম্প্রচার করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ মিনিটের ভাষণে তার সরকারের সাফল্য, আগামীর করণীয়, বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক রাজনীতিসহ সব কিছু তুলে ধরেন। সরকারের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে দেশবাসীর কাছে সমর্থন চান তিনি।

ভাষণের শুরুতেই দেশবাসীর উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে পেরেছি বলেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পেরেছি। ৯ বছর একটানা জনসেবার সুযোগ পেয়েছি বলেই বাংলাদেশ উন্নত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী মন্দা থাকা সত্ত্বেও আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি। জনগণ এর সুফল ভোগ করছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় কার্যকর করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। বিডিআর হত্যার বিচার হয়েছে। আমরা সফলতার সঙ্গে জঙ্গিবাদ দমন করেছি। জনসচেতনতা সৃষ্টি করে এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী ২০১৮ সালের শেষদিকে একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কীভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তা আমাদের সংবিধানে স্পষ্টভাবে বলা আছে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের আগে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। এ কমিশন ইতিমধ্যে দুটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের বেশ কিছু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করেছে।

দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারাই সব ক্ষমতার মালিক। কাজেই লক্ষ্য আপনাদেরই ঠিক করতে হবে— আপনারা কী চান! আপনারা কি দেশকে সামনে এগিয়ে যাওয়া দেখতে চান, না বাংলাদেশ আবার পেছনের দিকে চলুক তা দেখতে চান। একবার ভাবুন তো মাত্র ১০ বছর আগে দেশের অবস্থানটা কোথায় ছিল? আপনারা কি চান না আপনার সন্তান সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে স্বাবলম্বী হোক? আপনারা কি চান না প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে যাক! আপনারা কি চান না প্রতিটি গ্রামের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হোক! মানুষ দুই বেলা পেটপুরে খেতে পাক! শান্তিতে জীবনযাপন করুক!

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আর দরিদ্র হিসেবে পরিচিত হতে চাই না। আমরা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বাঁচতে চাই। এসব যদি আপনাদের চাওয়া হয়, তাহলে আমরা সব সময়ই আপনাদের পাশে আছি। কারণ, আমরাই লক্ষ্য স্থির করেছি যে, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করব। শুধু লক্ষ্য স্থির করেই কিন্তু আমরা বসে নেই। সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় কর্মসূচি প্রণয়ন করে সেগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমরা অতীতকে আঁকড়ে ধরে থাকতে চাই না; তবে অতীতকে ভুলেও যাব না। অতীতের সফলতা-ব্যর্থতার মূল্যায়ন করে, ভুল-ত্রুটি শুধরে নিয়ে আমরা সামনে এগিয়ে যাব। আমরা উন্নয়নের যে মহাসড়কে যাত্রা শুরু করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি, সেখান থেকে আর পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই। বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সমৃদ্ধি ও প্রগতির পথে সব বাধা দূর করার দায়িত্ব গ্রহণ করবে।

দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত, সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আগামী প্রজন্ম পাবে সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা যেন ব্যাহত না হয়, এ বিষয়ে সচেতন হয়ে দেশবাসীকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলব। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব।

দেশবাসীর উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে যখন আপনাদের কাছে গিয়েছি, পেয়েছি অপার স্নেহ, ভালোবাসা, পেয়েছি আত্মবিশ্বাস। অনেক চড়াই-উত্রাই পেরিয়ে, বন্ধুর পথ অতিক্রম করে ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আমরা সরকার গঠন করে দেশবাসীর সেবা করার সুযোগ পাই। মানুষ সরকারি সেবা পেল। আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নসহ ব্যাপক উন্নতির পথে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। অপার সম্ভাবনা দৃশ্যমান হতে থাকল। বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান, সামাজিক নিরাপত্তা, প্রতিবন্ধীদের সেবাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন জনজীবনে আস্থা সৃষ্টি করেছিল।

বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলের চিত্র তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে গভীর চক্রান্ত করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে দিল না। এরপর দেশবাসী দেখেছেন রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন; অর্থ লুটপাট, হাওয়া ভবনের দৌরাত্ম্য। জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, বাংলা ভাইয়ের উত্থান, আওয়ামী লীগের দুজন সংসদ সদস্যসহ হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা, সংখ্যালঘুদের নির্যাতন ও হত্যা, জমি, ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল, চাঁদাবাজি, মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি। ৬৩ জেলায় একসঙ্গে ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা হয়। ২০০৪ সালে ২১শে আগস্ট আওয়ামী লীগের র‍্যালিতে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা করে ২২ নেতা-কর্মী হত্যা, ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর গ্রেনেড হামলা, দেশব্যাপী নারীদের ওপর পাশবিক অত্যাচার— সমগ্র দেশ যেন জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে পরিণত হয়েছিল। দেশবাসী প্রতিনিয়ত সে যন্ত্রণায় দাহ হচ্ছিল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলতে চায়। এ জন্য আমরা বেশ কয়েকটি মেগা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করে চলেছে। পদ্মা সেতুর কাজ অর্ধেকের বেশি সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকায় মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। সমগ্র বাংলাদেশকে রেল সংযোগের আওতায় আনা হচ্ছে। সারা বিশ্ব আজ বাংলাদেশকে সম্মানের চোখে দেখে। যে বাংলাদেশকে একসময় করুণার চোখে দেখত, সাহায্যের জন্য হাত বাড়ানোয় করুণার পাত্র মনে করত; আজ সে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বসভায় সম্মানিত। তিনি বলেন, নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রশংসা অর্জন করেছে। নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ বৈষম্য নিরসনে আমাদের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে। বাংলাদেশ জেন্ডার সংশ্লিষ্ট এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশ্বে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মচারীদের বেতনভাতা ১২৩ ভাগ বাড়ানো হয়েছে। শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে দেশে কেউ বেকার এবং দরিদ্র থাকবে না।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হেইতি, এল সালভাডর এবং আফ্রিকার কিছু দেশকে খুবই স্থূল ভাষায় বর্ণনা করেছেন বলে অভিযোগের পর তার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ।

হোয়াইট হাউসে কংগ্রেস সদস্যদের সাথে অভিবাসন নীতি নিয়ে এক বৈঠকের সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এসব দেশকে ‘শিটহোল’ বা ‘পায়খানার গর্তে’র সাথে তুলনা করেন বলে খবর প্রকাশ করে মার্কিন গণমাধ্যম।

এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক নিন্দা এবং প্রতিবাদ শুরু হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য এরকম শব্দ ব্যবহারের কথা অস্বীকার করছেন।

কিন্তু ওই বৈঠকে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেট দলীয় একজন সেনেটর ডিক ডারবিন দাবি করছেন, তিনি প্রেসিডেন্টকে বর্ণবাদী শব্দ ব্যবহার করতে শুনেছেন। তিনি শুধু একবার নয়, কয়েকবার এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন। তিনি কিছু আফ্রিকান দেশকে ‘শিটহোল’ বলে বর্ণনা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট এবং ওয়াল স্ট্রীট জার্নালসহ অনেক সংবাদপত্রেই বৃহস্পতিবার এই খবর প্রকাশিত হয়। এর কোন প্রতিবাদ হোয়াইট হাউজ থেকে করা হয়নি।

সেনেটর ডিক ডারবিন বলেন, আমি বিশ্বাস করতে পারছি না যে গতকাল প্রেসিডেন্ট যে শব্দগুলো সেখানে ব্যবহার করেছেন, হোয়াইট হাউসের ইতিহাসে, ওই ওভাল অফিসে বসে এর আগে কখনো কোন প্রেসিডেন্ট তা বলেছেন।

অভিবাসন নিয়ে গতকাল রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেট দলীয় সেনেটরদের একটি দল একটি প্রস্তাব নিয়ে প্রেসিডেন্টের কাছে গিয়েছিলেন।

তখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাকি তাদের বলেছিলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যুদ্ধ বা এরকম বিপর্যয়ের শিকার দেশগুলোর মানুষদের আশ্রয় দেয়ার চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বরং উচিত নরওয়ের মত দেশ থেকে অভিবাসীদের আনা।

ওয়াশিংটন পোস্ট প্রেসিডেন্টকে সরাসরি উদ্ধৃত করে বলছে, এরপর তিনি বলেছেন, এই সব ‘শিটহোল’ দেশ থেকে কেন লোকজনকে আমাদের দেশে আনতে হবে।

সেনেটর ডারবিন বলেন, যখন প্রেসিডেন্টকে জানানো হয় যে ‘টেম্পোরারি প্রটেকটেড স্ট্যাটাস’ (টিপিএস) বা সাময়িক সুরক্ষা পাওয়া অভিবাসীদের বেশিরভাগই এল সালভাডর, হন্ডুরাস এবং হেইতির নাগরিক, তখন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, হেইশিয়ান? আমাদের কি আসলে আরও হেইশিয়ানের কোন দরকার আছে?

তবে শুক্রবার সকাল থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক টুইট করে এরকম কথা বলার কথা অস্বীকার করতে থাকেন। তিনি বলেন, আমি হেইতির মানুষ সম্পর্কে বাজে কিছু বলিনি।

বতসোয়ানা সে দেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, এসব কথাবার্তা চরম দায়িত্বহীন, নিন্দনীয় এবং বর্ণবাদী।

আফ্রিকান ইউনিয়ন বলেছে, তারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্য শুনে শঙ্কিত।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক মুখপাত্র রুপার্ট কোলভিল বলেছেন, যদি প্রেসিডেন্ট এসব কথা সত্যিই বলে থাকেন সেটা স্তম্ভিত হওয়ার মতো এবং লজ্জাজনক। তিনি বলেন, এটাকে ‘বর্ণবাদী’ বলা ছাড়া আর কিছু বলার সুযোগ নেই।

আর যুক্তরাষ্ট্রে অশ্বেতাঙ্গ নাগরিকদের একটি সংগঠন ‘ন্যাশনাল এসোসিয়েশেন ফর দ্য এডভান্সমেন্ট অব কালারড পিপল’ বলেছে, প্রেসিডেন্ট দিনে দিনে আরও বেশি করে বর্ণবাদ আর বিদেশি বিদ্বেষের গর্তের গভীরে ঢুকে যাচ্ছেন।

কংগ্রেসের এক কৃষ্ণাঙ্গ সদস্য সেডরিক রিচমন্ড বলেছেন, প্রেসিডেন্ট যে আমেরিকাকে আবারও সেরা দেশে পরিণত করার নামে আসলে শ্বেতাঙ্গদের দেশে পরিণত করতে চাইছেন, এটা তার আরও একটা প্রমাণ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest