ঘুষর সৌদি স্টাইল; ৪৮ হাজার কোটি টাকা দিলে মুক্তি মিলবে প্রিন্স ওয়ালিদের!

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র। ত্যাগের ধর্মের নামে রাষ্ট্র চালালেও ভোগ-বিলাসিতায় বিশ্বব্যাপী পরিচিত দেশটির শাসক পরিবার। কথা হচ্ছে সৌদি আরবের। ঘুষ ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও দেশটির ক্রাউন প্রিন্স সালমন মুক্তিপণ বাণিজ্য শুরু করেছেন প্রকাশ্যে। ঘুষ নিয়ে কথিত দুর্নীতির অভিযোগে আটকদের মুক্তি দিচ্ছেন তিনি।
দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি বেশ কয়েকজন প্রিন্স ও মন্ত্রীকে কারাবন্দী করেছেন সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মেদ বিন সালমান। যেখানে রয়েছেন প্রিন্স আল-ওয়ালিদ বিন তালাল বিন আবদুল আজিজ আল সৌদও। আর তার মুক্তির জন্য এবার বিপুল পরিমাণ অর্থ ঘুষ চাইল কর্তৃপক্ষ। এ অর্থের পরিমাণ ৬০০ কোটি ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকা। যদিও এর আগে প্রিন্স মুতয়িব বিন আব্দুল্লাহ ক্রাউন প্রিন্স সালমানের কথা মতো এক বিলিয়ন ডলার ঘুষ দিয়ে মুক্তি পেয়েছেন।

তবে প্রিন্স আল-ওয়ালিদ বিন তালাল বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ এ অর্থ দিতে অস্বীকার করেছেন। ওয়ালিদ বিশ্বজুড়ে যিনি ‘অ্যারাবিয়ান ওয়ারেন বাফেট’ নামে পরিচিত।

গেল নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সৌদি আরব দুর্নীতির অভিযোগে যে কয়জন প্রিন্স ও মন্ত্রীকে আটক করেছে তার মধ্যে ওয়ালিদও রয়েছেন। আটকের পর থেকে বিশ্ব মিডিয়াতে তাকে নিয়ে হচ্ছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা। বর্তমানে দেশটির কারাগার ‘বিলাসবহুল রিজ কার্লটন হোটেলে’ দুই মাস ধরে বন্দি রয়েছেন ওয়ালিদ।

ওয়ালিদের মুক্তির জন্য সৌদি কর্তৃপক্ষের দাবি নিয়ে দেনদরবার এখনও চলছে। যাদের আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে ওয়ালিদের কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি অর্থ দাবি করা হচ্ছে।

জানা গেছে, ওয়ালিদ অর্থের বিনিময়ে মুক্তি নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তার বদলে রিয়াদের শেয়ার মার্কেটের তালিকায় থাকা কিংডোম হোল্ডিংসের একটি গুরুত্বপূর্ণ শেয়ার কর্তৃপক্ষকে দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন।

ওয়ালিদের জন্ম ১৯৫৫ সালের ৭ মার্চ। তিনি একাধারে সৌদি রাজ পরিবারের সদস্য, একজন ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী এবং সমাজকর্মী।

২০০৮ সালে প্রভাবশালী ও ঐতিহ্যবাহী মার্কিন সাময়িকী টাইম বিশ্বের শীর্ষ একশ প্রভাবশালী ব্যক্তিদের যে তালিকা করে তাতে স্থান করে নেন তালাল বিন আবদুল আজিজ।

সৌদি রাজ পরিবারের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তালাল সৌদি আরবের প্রথম রাজা ইবনে সৌদের নাতি এবং তারপর সৌদি আরবের সিংহাসনে বসা সব রাজাদের সৎ ভাইপো। তার আর একটি পরিচয় হচ্ছে তিনি লেবাননের প্রথম প্রধানমন্ত্রী রিয়াদ আল সোলহ’র ও নাতি।

তালাল রাজকীয় পরিবারের বাইরে একজন সফল ব্যবসায়ী। তিনি রিয়াদভিত্তিক বিনিয়োগ বিষয়ক হোল্ডিং প্রতিষ্ঠান ‘কিংডম হোল্ডিং কোম্পানি’র প্রতিষ্ঠাতা, চেয়ারম্যান এবং ৯৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক।

বাণিজ্য সাময়িকী ফোর্বসের তৈরি করা বিশ্বের শীর্ষ ২ হাজার কোম্পানির তালিকাতে থাকা কিংডম হোল্ডিং কোম্পানি বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার বিনিয়োগ করেছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে অর্থনৈতিক সেবা, পর্যটন, গণমাধ্যম, বিনোদন, খুচরা ব্যবসায়, কৃষি, পেট্রোক্যামিকেলস, এভিয়েশন, প্রযুক্তি এবং নির্মাণ শিল্প।

আল-ওয়ালিদ মার্কিন বহুজাতিক আর্থিক, ব্যাংকিং, বিনিয়োগ সেবা প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত শেয়ারের মালিক, মার্কিন গণমাধ্যম কোম্পানি টোয়েনটি ফাস্ট সেঞ্চুরি ফক্সের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শেয়ারের মালিক, প্যারিসে অবস্থিত পাঁচ তারকা হোটেল ‘ফোর সিজনস হোটেল জর্জ ভি’র মালিক এবং নিউইয়র্কে অবস্থিত অপর পাঁচ তারকা হোটেল ‘প্লাজা হোটেল’র আংশিক মালিক। তাছাড়া তালাল বিনিয়োগ করেছেন টুইটার,অ্যাপল, রুপার্টি মার্ডকের নিউজ কর্পোরেশনস এবং রাইড শেয়ারিং কোম্পানি লিফট এ।

২০১৩ সালের এক হিসেবে দেখা গেছে তালালের কোম্পানির মূলধনের বাজার মূল্য ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। তবে বর্তমানে তা আরও অনেক বেশি।

২০১৭ সালের নভেম্বরে ফোর্বস তালাল বিন আবদুল আজিজকে বিশ্বের শীর্ষ ৪৫তম ধনী ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এ সময় তার সম্পত্তির নেট মূল্যমান ছিল ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। টাইম ম্যাগাজিন তালাল বিন আবদুল আজিজকে ‘অ্যারাবিয়ান ওয়ারেন বাফেট’ নামে আখ্যায়িত করে।

গত বছর তালাল বিন আবদুল আজিজ ভবিষৎতে তার সম্পত্তি মানবসেবায় দান করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। একই সাথে তিনি নারী ক্ষমতায়ন ও সাংস্কৃতিক বুদ্ধি বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাওয়ারও অঙ্গীকার করেন। এতকিছুর পর তাকে কেন আটক করা হয়েছে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রিন্স তালালের প্রতিষ্ঠান কিংবা নিকটাত্মীরাও এখনও মুখ খোলেননি।

উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে কথিত দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে সৌদিতে দুই শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে রাজপরিবারের সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও বড় বড় ব্যবসায়ীরা রয়েছেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
কুকুরদের জন্য পিকনিক!

বড়দিনের ছুটি বলে কথা! একটু ধুমধাম করেই করা হোক। ব্যানার টানানো হলো। লিখে দেওয়া হলো ‘আজ আমাদের পিকনিক’। করা হলো বিশাল রান্নার আয়োজন। ১৫০ কেজি চাল আর ৫০ কেজি পনির দিয়ে রান্না হবে বিরিয়ানি। সেই বিরিয়ানি কিন্তু দেওয়া হলো রাস্তায় ঘুরে ঘুরে। এই বিশাল আয়োজন ছিল রাস্তার বেওয়ারিশ কুকুরদের জন্য!

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতে সোমবার ওই ভিন্ন ধর্মী আয়োজন করা হয়। সেখানকার পশুপতি অ্যানিমেল লাভার্স সোসাইটি নামে একটি পশুপ্রেমী সংগঠন বিরিয়ানি রান্না করে শহরের বেওয়ারিশ কুকুরগুলোকে খাওয়ায়।

পাঁচটি ভ্যানে বিশাল বিশাল পাত্রে বিরিয়ানি তোলা হয়। এরপর রাস্তায় ঘুরে ঘুরে কুকুরদের খুঁজে বের করা হয়। ছোট ছোট পাত্রে দেওয়া হয় বিরিয়ানি। এভাবে এক হাজারেরও বেশি কুকুরকে খাওয়ানো হয়। তবে পথচারীদের চোখ আটকে গেছে ব্যানারে ‘আজ আমাদের পিকনিক’ লেখা দেখে।

সকাল থেকে শুরু হয় এই কুকুর খাওয়ানো। তবে বিকেলের মধ্যেই বিরিয়ানি শেষ হয়ে যায়। ফের ২০ কেজি চাল ও ১০ কেজি পনির দিয়ে বিরিয়ানি রান্না করা হয়। এরপর বিতরণ চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
রঙ ফর্সা ক্রিমে বাড়ছে চর্মরোগের ঝুঁকি

বাজারে বিভিন্ন ধরনের রঙ ফর্সাকারী ক্রিম পাওয়া যায়। মূলত নারী ক্রেতাদের টার্গেট করেই এসব ক্রিম বাজারজাত করা। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে প্রচার করা হয় চটকদার সব বিজ্ঞাপন। সেসব বিজ্ঞাপন দেখে অনেকেই এসব ক্রিম ব্যবহার করেন। তবে রঙ ফর্সাকারী এসব ক্রিম ব্যবহারে চর্ম রোগের ঝুঁকি বাড়ে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আর বিশ্লেষকদের দাবি, নারীর ব্যক্তিত্ব প্রকাশে রঙ নয়, গুণই প্রধান হাতিয়ার হওয়া উচিত।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ডা. শহীদুল্লাহ শিকদার বলেন, ‘রঙ ফর্সাকারী ক্রিমের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (সাইড ইফেক্ট) আছে। এগুলো ব্যবহারে অনেকের শরীরে এলার্জি হয়,কারও  আরও লাল দানা ওঠে, চুলকায় এবং ফুলে যায়। অনেক সময় ইনফেকশন হয়ে ক্ষত তৈরি করে।’

তিনি বলেন, ‘বিউটি পার্লারগুলোয় যেসব ভেষজ হারবাল ব্যবহার করা হয় সেগুলোও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এসব ক্রিম তৈরিতে অনেক অবৈজ্ঞানিক উপাদান ব্যবহার করা হয়। এমনকি যারা এসব ক্রিম তৈরি করেন তাদের উপাদানেরপরিমাপ ও কোনটা কোন ত্বকে লাগালে উপকার হবে সে বিষেয়ে কোনও ধারণা থাকে না। সুতরাং এগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া একটু বেশি।’

ডা. শহীদুল্লাহ শিকদার বলেন, ‘ক্রিম বিক্রির জন্য আমরা আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেখি। কিন্তু রঙ ফর্সা করার পরিবর্তে এসব ক্রিম ব্যবহারের পর মুখে আরও বেশি দাগ দেখা যায়। মানুষের ত্বকে কেমিক্যাল লাগানোর পর সেখানে সূর্যের আলো পড়লে বিক্রিয়ার ফলে ত্বকে দাগ পড়ে যায়। এক্ষেত্রে ক্রিমটি দেশি বা বিদেশি হওয়ার বিষয় নয়। আমরা রোগীদের মুখের দাগের কারণ খুঁজতে বলি। তবে অন্তঃসত্ত্বা বা হরমোনজনিত কারণে মুখে দাগ পড়ে। শুধু নারী নয়, পুরুষদের মুখেও বিভিন্ন কারণে দাগ হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহার বা রোগের কারণে মুখে দাগ হতে পারে। তাই রঙ ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহার না করে রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা করলে সহজে সুস্থ হওয়া সম্ভব। আর প্রাকৃতিক রঙই সর্বোৎকৃষ্ট রঙ। তাই ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন ক্রিম ব্যবহার করা উচিত নয়।’

রঙ ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহার প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন বলেন, ‘ফর্সা রঙকে উচ্চতর মর্যাদা দেওয়া একটি আরোপিত ধারণা। আর্যদের আমল থেকে শুরু করে উপনিবেশিক শাসন আমল পর্যন্ত ফর্সা বর্ণের মানুষদের আধিপত্য এই বর্ণের প্রতি অধিক আগ্রহের সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু বর্তমানে সেই আগ্রহকে আরও বাড়িয়েছে বিভিন্ন ত্বক ফর্সাকারী প্রসাধন সামগ্রীর বাণিজ্যিকীকরণ। যাদের বিজ্ঞাপন দেখে মনে হবে গায়ের রঙ ফর্সা না হলে জীবনে কোনও কিছু অর্জন করাই সম্ভব নয়। গায়ের কোনও নির্দিষ্ট রঙ এককভাবে কোনও কিছু অর্জন করতে সক্ষম নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘কৃত্রিমভাবে রঙ নিয়ন্ত্রণ শুধু ত্বকের ক্ষতিই নয়, শারীরের নানা ধরনের ক্ষতি করতে পারে। এই বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্পষ্টভাবে সতর্ক করেছে।’

এ প্রসঙ্গে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের (ঢামেক) চর্ম ও যৌন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাসুদা খাতুন বলেন, ‘বাজারে প্রচলিত রঙ ফর্সাকারী ক্রিমগুলো একেবারেই ব্যবহার করা উচিত নয়। আমরা প্রতিদিন যে রোগী দেখি এরমধ্যে কমপক্ষে ২-৪ জন রোগী থাকে যারা রঙ ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহার করে সমস্যায় পড়েছেন। বিশেষ করে গৌরী ক্রিম, পাকিস্তানি ক্রিমগুলো ব্যবহার করে মেয়েরা বেশি বিপদে পড়ছেন।’

তিনি বলেন, ‘রঙ ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহারে গায়ের রঙ খুব কমই ফর্সা হয়। অনেক সময় এই ক্রিম ব্যবহার বন্ধ করে দিলেও ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়। ত্বকের কোনও অংশ সাদা আবার কোনও অংশ কালো হয়ে যায়। এই ক্রিম ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করে দিলে পরবর্তীতে গায়ের রঙ আরও কালো হয়ে যেতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রোগীকে সুস্থ থাকতে কাউন্সেলিং করি। স্থানীয়ভাবে তৈরি ক্রিম যদি কেউ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে তাহলে তার হাই প্রেসার ও ডায়াবেটিস হতে পারে।’

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের চর্ম ও যৌন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. তুষার কান্তি সিকদার বলেন, ‘রঙ ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহার খুবই পরিচিত একটি বিষয়। কিছু কোম্পানির ক্রিম বিশ্বব্যাপী চলছে। এসব ক্রিম ব্যবহার সব সময় খারাপ হয় বিষয়টি তেমন নয়। যাদের ত্বক সেনসিটিভ তাদের জন্য ক্ষতিকর। ত্বক সেনসিটিভ না হলে অনেকের জন্য উপকারী।’

রঙ ফর্সাকারী ক্রিমের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সংগঠন জেন্ডার ইন মিডিয়া ফোরামের সদস্য নাসিমুন আরা হক (মিনু) বলেন, ‘আমরা মানুষকে বিচার করি রূপ ও রঙ দিয়ে। ফর্সা হলে চাকরি  হবে, বিয়ে হবে, ফেলোশিপ হবে- সবই হবে এমন সব বিজ্ঞাপন আমরা গণমাধ্যমে দেখি। এই ধরনের চিন্তা ভাবনা বর্ণবাদী। রঙ নয়, মানুষের গুণ দিয়ে আমরা তাকে বিচার করবো। রঙয়ের বিষয়টি মাথায় ঢুকিয়ে মেয়েদের মনটাকে ছোট করে ফেলা হয়। এসব কারণে আমরা রঙ ফর্সাকারী ক্রিমের বিরুদ্ধে সচেতন করতে আন্দোলন করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে এই ক্রিম ব্যবহার করে কেউ ফর্সাও হয় না। রঙ ফর্সার এই আচরণটাই ভুল। সব মানুষকে ফর্সা কেন হতে হবে? এই চিন্তাটাই আমাদের সব আগে আসা দরকার।’

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
চেলসি জিতলেও হেরে গেছে লিস্টার

আলভারো মোরাতা ও মার্কোস আলোনসোর লক্ষ্যভেদে বড়দিনের উৎসব মধুর করে তুললো চেলসি। ঘরের মাঠে ২-০ গোলে হারিয়েছে তারা ব্রাইটন এন্ড হোভ অ্যালবিওনকে। লিস্টার সিটি অবশ্য ২-১ গোলে হেরে ফিরেছে ওয়াটফোর্ডের মাঠ থেকে।

স্টামফোর্ড ব্রিজে প্রথমার্ধ শেষ হয়েছিল গোলশূন্যভাবে। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই চেলসিকে এগিয়ে নেন মেরাতা। চেসার অ্যাজপিলিকুয়েতার চমৎকার ক্রস বক্সের ভেতর থেকে হেড করে জালে জড়ান স্প্যানিশ স্ট্রাইকার। ৬০ মিনিটে স্বাগতিকরা ব্যবধান দ্বিগুণ করে মার্কোস আলোনসো জাল খুঁজে পেলে। এই গোলটাও হয়েছে হেডে। সেস্ক ফাব্রেগাসের নেওয়া কর্নার থেকে উড়ে আসা বল মাথা ছুঁইয়ে জালে জড়ান আলোনসো।

এরপর আর কোনও গোল না হলে গুরুত্বপূর্ণ ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে চেলসি। যাতে ২০ ম্যাচ শেষে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানেই থাকলো ব্লুরা। তবে খুশির খবর হলো, ম্যানইউ ড্র করায় দ্বিতীয় স্থান থেকে চেলসির ব্যবধান এখন মাত্র ১ পয়েন্টের।

চেলসির জয়ের দিনে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে লিস্টারকে। শুরুতে এগিয়ে গিয়েও ওয়াটফোর্ডের মাঠ থেকে ফিরতে হয়েছে ২-১ গোলের হার নিয়ে। ৩৭ মিনিটে রিয়াদ মাহরেজের লক্ষ্যভেদে এগিয়ে গিয়েছিল লিস্টার। যদিও বিরতিতে যাওয়ার আগমুহূর্তেই ওয়াটফোর্ড সমতায় ফেরে মোলা ওয়াগির লক্ষ্যভেদে। আর স্বাগতিকরা জয় নিশ্চিত করে লিস্টার গোলরক্ষক কাসপার স্মেইকেল নিজেদের জালে বল জড়ালে। গোল ডটকম

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
গার্ডিয়ানের সেরা টেস্ট একাদশে সাকিব-মুশফিক

বছর শেষে সারা বছরের টেস্ট পারফরম্যান্স নিয়ে সেরা টেস্ট একাদশ তৈরি করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। বিরাট কোহলি, স্টিভেন স্মিথদের মতো একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশের দুই তারকা সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম।

মূলত টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দেশের হয়ে সাকিবের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোরটাকেই প্রাধান্য দিয়েছে গার্ডিয়ান। তাতে বছরের হিসেবে ৪৭.৫ গড়ে সাকিবের রান ছিল ৬৬৫। উইকেট নিয়েছেন ২৯টি। স্কোয়াডে ৬ নম্বরে রাখা হয়েছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে। সাকিবের নৈপুণ্যেই অস্ট্রেলিয়াকে প্রথমবারের মতো হারানোর স্বাদ পায় বাংলাদেশ। আর সেই জয়কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে এই পত্রিকা।

৭ নম্বরে থাকা মুশফিকের পারফরম্যান্স হিসেবে দেখা হয়েছে দলের সর্বোচ্চ রান স্কোরার হিসেবে। ৫৪.৭১ গড়ে তার রান ৭৬৬। আর উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে ১২টি ক্যাচ লুফে নিয়েছেন মুশফিক। স্টাম্পিং ছিল ২টি। জানুয়ারিতে এই সাকিবের সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে রেকর্ড ভাঙা জুটি ছিল তার। তাতে রান করেছিলেন ১৫৯।  ভারতের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে ছিল ১২৭ রানের পারফরম্যান্স। এছাড়া শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফিফটির পসরাতো ছিলই।

গার্ডিয়ানের সেরা একাদশ

১. ডেভিড ওয়ার্নার (৮০৮ রান, গড় ৪৪.৮৮) ২. ডিন এলগার (১০৯৭ রান, গড় ৫৪.৮৫) ৩. চেতেশ্বর পূজারা (১,১৪০ রান, গড় ৬৭.০৫) ৪. স্টিভেন স্মিথ (১১২৭ রান, গড় ৭০.৪৩) ৫. বিরাট কোহলি (১০৫৯ রান, গড় ৭৫.৬৪) ৬. সাকিব আল হাসান (৬৬৫ রান, গড় ৪৭.৫/ ২৯ উইকেট) ৭. মুশফিকুর রহিম (৭৬৬ রান, ১২টি ক্যাচ) ৮. মিচেল স্টার্ক (২৬ উইকেট) ৯. নাথান লায়ন (৬০ উইকেট) ১০. জিমি অ্যান্ডারসন (৫১ উইকেট) ১১. কাগিসো রাবাদা (৫৪ উইকেট)।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ইয়াবা ব্যবসায়ী দুই বোনের শতকোটি টাকা

পুরান ঢাকায় একটি ইলেকট্রনিক পণ্যের গোডাউনের মালিক নাছির উদ্দিন। চীন থেকে পণ্য এনে ঢাকায় বিক্রি করেন তিনি।
আশপাশের ব্যবসায়ীদের কাছে এমনই ছিল পরিচয়। তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) তদন্তে বেরিয়ে এলো তাঁর ভয়ংকর পরিচয়। জানা গেল, এই নাছিরই চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় নিজ এলাকায় ইয়াবা নাছির নামে পরিচিত। তিনি তাঁর কথিত ইলেকট্রনিক পণ্যের গোডাউনটিতে ইয়াবা মজুদ করতেন। সেখান থেকে লাখ লাখ ইয়াবা বড়ি বিক্রি করতেন একটি নারী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। এ চক্রের দুই কোটিপতি নারী সদস্যকে ধরার পর বের হয় আসল তথ্য, যাঁরা পরস্পরের সহোদর বোন।

রাজধানীতে বসবাসকারী কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আসমা আহমেদ ডালিয়া ও স্বপ্না আক্তার নামে এই দুই বোন ইয়াবার কারবার করে এখন শতকোটি টাকার মালিক। ঢাকার হাতিরপুলে ‘রেইন বাথ’ নামে একটি স্যানিটারি পণ্যের দোকানের আড়ালে চলে তাঁদের ইয়াবা কারবার। মালয়েশিয়ায় ‘সেকেন্ড হোম’ গড়ে তোলা এই দুই বোনের ঢাকায় রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট, দামি গাড়ি, রয়েছে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা; যা মাত্র চার-পাঁচ বছরের মাথায় তাঁরা অর্জন করেছেন।
ইয়াবা তাঁদের কাছে রীতিমতো আলাদিনের চেরাগ। তাঁরা ইয়াবা নাছিরের সহায়তায় নিজেদের পুরো পরিবারকেই ইয়াবা কারবারে জড়িয়েছেন, কিন্তু শেষ রক্ষা হচ্ছে না। গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যাওয়ার পর এখন তাঁদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আবেদন জানাতে যাচ্ছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তবে চক্রটির শীর্ষ ইয়াবা কারবারি নাছির এখনো পলাতক।

নিউ মার্কেট থানায় দায়ের করা মামলায় গত ৫ ডিসেম্বর ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছেন ডিএনসির তদন্ত কর্মকর্তা। চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলেন আসমা আহমেদ ডালিয়া, তাঁর স্বামী রবিউল ইসলাম, মা মনোয়ারা বেগম ও ইয়াবা গডফাদার নাছির উদ্দিন। তদন্ত কর্মকর্তা, ডিএনসির পরিদর্শক হেলাল উদ্দিন ভুইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, নাছির শীর্ষ ইয়াবা কারবারি। রাজধানীর বংশালের নবাবপুর রোডের এমএস মার্কেটের তৃতীয় তলায় তাঁর চীন ইলেকট্রনিক পণ্যের গোডাউনের আড়ালে চালিয়েছেন ইয়াবা কারবার। এসএ পরিবহনের কুরিয়ার সার্ভিসে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের ব্রাঞ্চে আসত ইয়াবার চালান। তিনি কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে নিজের নামেই ঢাকায় চালান পাঠাতেন। এরপর হোটেলে বসে সেই চালান গ্রহণ করতেন। পরে ইমোতে ডালিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে ইয়াবা সরবরাহ করা হতো। তিনি জানান, আরেকটি মামলায় ডালিয়ার বোন স্বপ্নাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হবে।

গত ৯ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান, এলিফ্যান্ট রোড ও পশ্চিম রাজাবাজারে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার ইয়াবাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেন ডিএনসি কর্মকর্তারা। এর মধ্যে এলিফ্যান্ট রোডে বাটা সিগন্যালের কাছে ১৭৩ নম্বর সিদ্দিক প্লাজার নবমতলার ৮/বি নম্বর ফ্ল্যাট থেকে ডালিয়া ও রবিউলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছে পাওয়া যায় ৩২ হাজার পিস ইয়াবা ও দেড় লাখ টাকা। আর উত্তর ধানমণ্ডির কলাবাগানের ৪৮ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাট থেকে স্বপ্না, তাঁর স্বামী শামিম আহমেদ ও ফুফু মাহমুদা রানীকে ছয় হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। আর পশ্চিম রাজাবাজারের ৫২/এ নম্বর সাততলা বাড়ির তৃতীয় তলায় ২/বি নম্বর ফ্ল্যাট থেকে আসমা নামের এক নারী ও স্বপ্নার মা মনোয়ারাকে ১২ হাজার পিস ইয়াবা এবং এক লাখ ৩০ হাজার টাকাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় ব্র্যাক ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের তিনটি অ্যাকাউন্টের কাগজপত্রও জব্দ করা হয়। এসব অভিযানের ঘটনায় নিউ মার্কেট ও শেরেবাংলানগর থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তেই উঠে আসে শীর্ষ ইয়াবা কারবারি নাছির উদ্দিন ওরফে ইয়াবা নাছিরের নাম।

সূত্র জানায়, গত ১২ অক্টোবর রাতে বংশালের নবাবপুর রোডের ১৬৭ নম্বর বাড়িতে এমএস মার্কেটের তৃতীয় তলায় নাছিরের গোডাউন থেকে ২০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে ডিএনসি। তবে চতুর নাছির আগেই সটকে পড়েন।

ডিএনসির সহকারী পরিচালক (এডি) মোহাম্মদ খোরশিদ আলম বলেন, নাছির প্রতি চালানে এক থেকে পাঁচ লাখ ইয়াবা আনতেন। ইয়াবা মজুদের জন্যই নাছির বড় গোডাউন ভাড়া নেন। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার দক্ষিণ ছহুদা গ্রামে। তাঁর বাবার নাম ইসমাইল। এলাকায় ইয়াবা নাছির বলে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে সাতকানিয়া, কক্সবাজার, টেকনাফ ও ঢাকায় এক ডজন মামলা আছে।

ডিএনসির সূত্র জানায়, ফ্ল্যাটে ও গুদামে রেখে নারীদের মাধ্যমে ইয়াবা বিক্রি করে পুরো চক্রটি গত চার বছরে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছে। আদালতের নির্দেশে আসামি ডালিয়ার ব্র্যাক ব্যাংকের দুটি ও রবিউলের একটি ব্যাংক হিসাব তল্লাশি করে ডিএনসি। সেখানে কোটি কোটি টাকার লেনদেন এবং স্থির দুই কোটি ২৭ লাখ টাকা পাওয়া যায়। এসব টাকা বাজেয়াপ্ত করার জন্য আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। স্বপ্নার ব্যাংক হিসাবও তল্লাশি করা হবে। এলিফ্যান্ট রোডের সিদ্দিক প্লাজার নবমতলায় এক হাজার ৬৬০ স্কয়ার ফিটের ৮/বি নম্বর ফ্ল্যাটটির মালিক ডালিয়া। কলাবাগানের হাসনাহেনা অ্যাপার্টমেন্টের এক হাজার ৮০০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাটের মালিক স্বপ্না। ডালিয়ার এলিয়ন গাড়িটি ডিএনসি জব্দ করলেও হোন্ডা কম্পানির আরেকটি দামি গাড়ি পড়ে আছে স্বপ্নার বাসার গ্যারেজে। মাদক কারবারি তিনটি পরিবারের অন্যান্য সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার আবেদন করা হবে বলেও জানান তদন্তকারীরা।

সূত্র জানায়, ডালিয়া ও স্বপ্নার বাবা ছিলেন সরকারি কর্মচারী। একসময় ছিল অভাবের সংসার। চার-পাঁচ বছর আগে তাঁরা পারিবারিকভাবে ইয়াবা কারবারে জড়িয়ে পড়ে। ইয়াবা বিক্রির টাকায় মালয়েশিয়ায় কেনা বাড়িতে বসবাস করছে ডালিয়ার বড় ছেলে ও তার খালা শিলা। ডালিয়ার ছোট ছেলে পড়ালেখা করছে ধানমণ্ডির একটি নামিদামি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে। ডালিয়াদের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরের বড় পিপুলিয়া গ্রামে। ডালিয়ার স্বামী রবিউল ইসলামের গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর। ২০০৯ সালে রবিউলের বিরুদ্ধে ধানমণ্ডি থানায় একটি মাদক মামলা হয়। ডালিয়ার বোন স্বপ্নার আগেও একটি বিয়ে হয়েছিল। তবে সেই সংসার বেশি দিন টেকেনি। পরে তিনি শামিমকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ইউরোপে আশ্রয় চেয়েছে ২০ হাজার বাংলাদেশি

এ বছরের শুরু থেকে গত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সাগরপথে অবৈধভাবে ইতালিতে পাড়ি জমানো এক লাখ ১৭ হাজার ৩৬ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর মধ্যে ৮ শতাংশ বাংলাদেশি। ইউরোপে অবৈধভাবে অভিবাসন বিষয়ে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) এ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের তথ্য এটি।
অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) তথ্য-উপাত্ত থেকে জানা যায়, গত এক বছরে অন্তত ২০ হাজার ৫৫ জন বাংলাদেশি ইইউর সদস্য দেশগুলোয় প্রথমবারের মতো আশ্রয়ের আবেদন করেছে।

জানা গেছে, এ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে তিন হাজার ৮২৫ জনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে ৬৭৫ জনের। আবেদনপত্র প্রত্যাখ্যাত হয়েছে তিন হাজার ১৫০ জনের। যাদের আবেদন মঞ্জুর হয়নি বা হবে না, তাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ইইউর জোরালো সিদ্ধান্ত রয়েছে।

২০১৬ সালের তৃতীয় প্রান্তিক (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) থেকে এ বছরের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত ইইউর সদস্য ২৮টি দেশে প্রথমবারের মতো আশ্রয় চেয়েছে ছয় লাখ ৮৭ হাজার জন, যারা ইউরোপীয় নয়। আশ্রয়প্রার্থীদের উৎস দেশের তালিকায় বাংলাদেশ অষ্টম স্থানে আছে। তালিকায় শীর্ষে থাকা সিরিয়ার আবেদনকারীর সংখ্যা এক লাখ পাঁচ হাজার ৭০৫ জন। এরপর আছে যথাক্রমে ইরাক (৪৭ হাজার ৮৮০), আফগানিস্তান (৫৪ হাজার ৪৫৫), নাইজেরিয়া (৪৫ হাজার ৬০০), পাকিস্তান (৩১ হাজার ২৭০), ইরিত্রিয়া (২৮ হাজার ৪৪০) ও আলবেনিয়া (২৪ হাজার ২৯০)।

সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ওই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রায় সবাই লিবিয়া থেকে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে ঢুকেছে। লিবিয়ায় গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে অভিবাসী বাংলাদেশিদের অনেকেই দেশে না ফিরে অবৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার পথ বেছে নিয়েছে। আবার দেশি-বিদেশি মানবপাচারকারীচক্র বড় অঙ্কের অর্থের বিনিময়েও বাংলাদেশ থেকে লিবিয়া হয়ে ইউরোপে পাঠিয়েছে অনেককে। গত মাসে সিএনএন মানবপাচারকারীদের তৎপরতা তুলে ধরেছে।

ইইউর তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর—এ তিন মাসে চার হাজার ৮৩৫ জন বাংলাদেশি ইইউর কোনো না কোনো দেশে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছে। গত বছরের জুলাই থেকে ধারাবাহিক আবেদনের সংখ্যা থেকে জানা যায়, কোনো মাসেই এ সংখ্যা হাজারের নিচে নামেনি। গত বছর সেপ্টেম্বরে আশ্রয়ের জন্য আবেদনকারী বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৯০ জন।

বাংলাদেশিরা সুনির্দিষ্টভাবে ইইউভুক্ত কোন দেশে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করছে তার একটি ধারণা পাওয়া যায় তৃতীয় প্রান্তিকের তথ্য-উপাত্ত থেকে। এ সময়ের মধ্যে আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশিদের ৬৩ শতাংশই ইতালিতে আবেদন করেছে। আশ্রয়প্রত্যাশী বাংলাদেশিদের ইতালির পর পছন্দের দেশগুলো যথাক্রমে ফ্রান্স (১৩%), যুক্তরাজ্য (১০%), গ্রিস (৮%) ও জার্মানি (২%)। বাংলাদেশিদের বাকি ৫% ইইউর অন্য দেশগুলোতে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছে।

জানা গেছে, এ বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীদের আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে ৬৭৫ জনের। এর মধ্যে ১৬০ জন পেয়েছে শরণার্থী মর্যাদা। অর্থাৎ বাংলাদেশি আবেদনকারীদের মাত্র ৫ শতাংশ শরণার্থী মর্যাদা পেয়েছে। ৪৫ জন সম্পূরক সুরক্ষা পেয়েছে। মানবিক কারণে আশ্রয় পেয়েছে ৪৭০ জন। আবেদনপত্র নাকচ হয়েছে তিন হাজার ১৫০ জনের।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, জাতি, বর্ণ, ধর্ম, জাতীয়তা, কোনো বিশেষ সামাজিক গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে নিজ দেশে বা বসবাসরত দেশে সুরক্ষা পাবে না—এমন ব্যক্তিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইইউ দেশগুলো আশ্রয় দেওয়ার কথা বিবেচনা করে থাকে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি সিরিয়া, আফগানিস্তান বা ইরাকের মতো বিপজ্জনক নয়। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছে শরণার্থী মর্যাদার জন্য বাংলাদেশিরা আবেদন করলে তা গৃহীত হওয়ার সম্ভাবনা বেশ কম।

সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত না থাকলেও ইউরোপে ৮০ থেকে ৯০ হাজার বাংলাদেশি অবৈধভাবে অবস্থান করছে বলে ধারণা করা হয়। সরকারি পর্যায়ের আলোচনায় তাদের অভিহিত করা হয় ‘অনিয়মিত বাংলাদেশি’ হিসেবে। মনে করা হয়, তাদের মধ্যে একটি অংশ নানা কারণে ইউরোপে অনিয়মিত অভিবাসী হয়ে পড়েছে। তবে ইইউর মনোভাব হলো, যাদের ইইউয়ে বৈধভাবে থাকার যোগ্যতা নেই তাদের অবশ্যই ফিরে যেতে হবে।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে প্রবল চাপের মুখে বাংলাদেশ এ বছর ইইউর সঙ্গে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) সই করেছে। গত ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে এসওপি-সংক্রান্ত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম সভা হয়েছে। গত নভেম্বর মাসে জার্মানি কর্তৃপক্ষ ওই দেশে অবস্থানরত অনিয়মিত বাংলাদেশিদের একটি তালিকা বাংলাদেশকে দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ইউরোপীয় দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া তালিকার ভিত্তিতে পরিচয় যাচাই করে বাংলাদেশ পর্যায়ক্রমে তাদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেবে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
খুলনায় এসএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা

খুলনার মহানগরীর চানমারি এলাকায় খলিলুর রহমান সিয়াম (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ সন্ধ্যার পর এ ঘটনা ঘটে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সোয়া ৮টার দিকে সে মারা যায়।

নিহত সিয়াম মহানগরীর চানমারি চতুর্থ গলি এলাকার বাসিন্দা আইনাল হকের ছেলে। সে রূপসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মনিরা সুলতানা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটতে পারে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest