সর্বশেষ সংবাদ-
সাতক্ষীরায় পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা: আসামী ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগশ্যামনগরে কোস্টগার্ডের অভিযানে ভারতীয় মদ জব্দআশাশুনিতে জলবায়ু-স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক যুব নেতৃত্বাধীন প্রচারনাসাতক্ষীরা জেলা স্কাউট ভবন এর উর্ধ্বমুখি সম্প্রসারণ কার্যক্রম উদ্বোধনখুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধ: সাতক্ষীরা সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারশ্যামনগরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম ‌দুর্নীতির অভিযোগল স্টুডেন্টস ফোরাম এর নবনির্বাচিত কমিটি নির্বাচন কমিশনের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়তিতাস বহুমুখী সমবায় সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভাঝিনাইদহের জয়দিয়া বাওড়ের অবৈধ বন্দোবস্ত বাতিলের দাবিতে মানববন্ধনশীতের ছুটিতে ঘুরে আসুন দেবহাটার রূপসী ম্যানগ্রোভ

যৌন নিগ্রহের নীরবতা ভেঙে টাইম ম্যাগাজিনের ‘সেরা ব্যক্তিত্ব’

যৌন হয়রানি এবং নিগ্রহের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী যারা নীরবতা ভেঙে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন তাদের সাহসিকতার স্বীকৃতি দিয়ে বছরের সেরা ব্যক্তিত্বের মর্যাদা দিয়েছে মার্কিন প্রভাবশালী ইংরেজি সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিন। খবর বিবিসির।

সাময়িকীটি বলেছে, “যৌন নিগ্রহের বিষয়ে যেসব নারী ও পুরুষ তাদের নীরবতা ভেঙেছেন তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নানা শ্রেণি, বর্ণ ও পেশার মানুষ। কিন্তু তারা সবাই একসাথে মিলে লজ্জাকে ক্রোধে রূপান্তর করেছে পরিবর্তনের জন্য হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন। এবং অত্যন্ত ক্ষমতাধর কিছু মানুষকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করেছেন। ”

হলিউডের শীর্ষ একজন প্রযোজক হার্ভে ওয়েন্সটেইনসহ সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে রাজনীতি, ব্যবসা, শিল্প-সংস্কৃতির জগতের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও নিগ্রহের অভিযোগ তোলেন বেশ কয়েকজন নারী ও পুরুষ। বলিউড অভিনেত্রী অ্যাশলে জুড, পপ তারকা টেইলর সুইফট, মেক্সিকোর ৪২ বছর বয়স্ক খামারকর্মী ইসাবেল পাসকুয়াল (আসল নাম নয়) এবং উবারের সাবেক প্রকৌশলী সুজান ফাউলার অন্যতম।

প্রসঙ্গত, ১৯২৭ সাল থেকে টাইম ম্যাগাজিন বছরের সেরা ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত করছে। তবে প্রথম দিকে শুধু একজন ব্যক্তিকে এই সম্মান দেওয়া হলে সাম্প্রতিক সময়ে মহৎ কোনো কাজের সাথে জড়িত একাধিক ব্যক্তিকে সম্মিলিতভাবে এই সম্মান দেওয়া হচ্ছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
১২ ডিসেম্বর বিরাট আনুশকার বিয়ে!

ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও বলিউড অভিনেত্রী আনুশকা শর্মা বিয়ে করতে যাচ্ছেন। আগামী ১২ ডিসেম্বর ইতালিতে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন এ দুই সেলিব্রেটি এমনটাই জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। এক হচ্ছে ‘বিরুষ্কা’ জুটির চার হাত।

জানা গেছে, এ বছরের ডিসেম্বরের ১২ তারিখই আনুশকাকে বিয়ে করতে চলেছেন বিরাট। আর ভারতের বাইরের ভেন্যুতেই বিয়ে করতে চলেছেন তাঁরা।

ইতালিতে এই বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। ডিসেম্বরের ৯ তারিখ থেকে শুরু হয়ে যাবে এই গ্রান্ড ওয়েডিং -এর অনুষ্ঠান। ইতালিতে খুবই ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নিয়ে এই বিয়ের আয়োজন হতে চলেছে।

উল্লেখ্য, অনেক দিন ধরেই তাঁদের বিয়ে নিয়ে খবর ছিলই। এবার সেই খবরকে সত্যি করে দিতে চলেছেন তারা।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
এমপি হয়েই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ

অষ্টম শ্রেণি পাস লুত্ফুন নেছা, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি হয়ে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। তার স্বামী সুলতান আহমেদ মৃধা ও ছেলে-মেয়ের নামেও রয়েছে সম্পদের পাহাড়। বর্তমানে তারা নিজেদের ‘ধনাঢ্য পরিবার’ বলে দাবি করলেও নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। এসব সম্পদের তেমন কোনো তথ্য নির্বাচনী হলফনামায় দেননি এই এমপি। তিনি তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন মাত্র ১৮ লাখ ৬৪ হাজার ৭০৪ টাকা। নিজের ও স্বামীর নামে নগদ টাকা দেখানো হয়েছে মাত্র ২ লাখ ৫০ হাজার। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এই এমপির নামে জমা দেখানো হয় মাত্র ৩৮ হাজার টাকা। আর এমপি হওয়ার চার বছরের মাথায় পাল্টে গেছে সম্পদের চিত্র। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, পটুয়াখালীর আলোচিত দখলবাজ হচ্ছেন সুলতান আহমেদ মৃধা। তিনি সংরক্ষিত এমপি লুত্ফুন নেছার স্বামী। সুলতান মৃধা তার স্ত্রী-পুত্র, কন্যা-জামাতা ও নিজের নামে-বেনামে গড়ে তুলেছেন পাহাড়সম সম্পদ।

আর এ সম্পদ তিনি করেছেন দখল করে—এমনটাই জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। অভিযোগ রয়েছে, সংখ্যালঘু পরিবার, সরকারি খাসজমি জবরদখল ও অসহায় মানুষের কাছ থেকে জোর করে নিজেদের নামে লিখে নিয়েছেন তিনি অনেক জমি। তার এ লালসা থেকে রেহাই পায়নি নিজ বংশের লোকজনও।হলফনামায় দেখানো সম্পদ : ইসিতে জমা দেওয়া হলফনামায় দেখা গেছে, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি লুত্ফুন নেছা হলফনামায় নিজেকে অষ্টম শ্রেণি পাস দাবি করেছেন। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। কৃষি খাত ও ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ১৮ লাখ ৬৪ হাজার ৭০৪ টাকা। নিজের ও স্বামীর নামে নগদ টাকা দেখানো হয়েছে মাত্র ২ লাখ ৫০ হাজার। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এই এমপির নামে জমা দেখানো হয় মাত্র ৩৮ হাজার টাকা। স্বামীর নামে জমা ১১ লাখ টাকা। নিজের নামে ২০ ভরি স্বর্ণ আর স্বামীর নামে ২ ভরি স্বর্ণ। স্থায়ী আমানত রয়েছে ৩০ লাখ টাকার। স্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন নিজের নামে দুই একর এবং স্বামীর নামে ৭ একর ৫০ শতক। অকৃষি জমি নিজের নামে তিন একর আর স্বামীর নামে সাত শতাংশ। স্বামীর নামে দালান রয়েছে একটি এবং এক লাখ টাকার বাড়ি একটি। অগ্রণী ব্যাংকের পটুয়াখালী শাখায় তার নামে ৪০ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে।

বর্তমানে সম্পদের পাহাড় : পটুয়াখালীর সম্পদ দখলের মহা কারিগর এখন সুলতান মৃধা। পটুয়াখালী শহরের পুরান বাজারের নিজ বাসার আশপাশসহ শহর ছাড়িয়ে সাগরকন্যা কুয়াকাটায় দখলের মহোত্সবে মেতেছেন তিনি। নিজ নামের পাশাপাশি স্ত্রী-মেয়ে ও জামাতার নামে অসংখ্য সাইনবোর্ড ঝুলছে পটুয়াখালীতে। এ ছাড়া একসঙ্গে ৩০০ একর জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় অধিবাসীরা জানান, তাদের জমির পরিমাণ কত তা নিজেরাও জানেন না। সামান্য বিরোধ পেলেই সেখানে নিজের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেন মৃধা। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এক দাগেই রয়েছে তার ৫০ কোটি টাকা মূল্যের ১৬ একর সম্পত্তি। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে কম মূল্যে জমি কিনে পাশের জমিও দখলে নিয়েছেন তিনি। নিজ বাসার পাশে সংখ্যালঘু একাধিক পরিবারের সদস্যদের বাসাবাড়ি দখল করে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করেছেন সুলতান মৃধা। নিজ বাসার পাশে যুধিষ্টির সাহা, পুরান বাজারে চন্দন সাহা, মোশারেফ বিশ্বাসসহ অসংখ্য মানুষের জমি জোরপূর্বক দখলে নিয়ে একাধিক বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন সুলতান, যার বাজারমূল্য শত  কোটি টাকা। আবার অসহায় মানুষের জমি দখল করে শহর-সংলগ্ন জৈনকাঠী এলাকায় অবৈধভাবে ইটভাটা নির্মাণ করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। স্ত্রী সংরক্ষিত নারী এমপি লুত্ফুন নেছা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য হওয়ার সুবাদে কলাপাড়া শহর-সংলগ্ন পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পশ্চিম পাশে একাধিক স্থানের সরকারি জমি দখল করে সাইনবোর্ড টানিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ার কার্যক্রম চালাচ্ছেন মৃধা। দখল প্রক্রিয়া থেকে বাদ যায়নি নিজ বংশের আত্মীয়স্বজনও। অভিযোগ রয়েছে, আত্মীয়স্বজনের জমিও অবৈধভাবে দখল করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন তিনি। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াকাটার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গাজী মো. ইউসুফ আলীর বাড়ির সামনে গাজী মো. ইউসুফ আলী, আলম মীর, শাহাজান বিশ্বাস, আরশেদ আলী ও মিজানুর রহমান গংয়ের ১৬ একর ১ শতক জমি সুলতান মৃধা, মেয়ে শামিমা নাসরিন এবং জামাতা আবুল হাসানাতের নামে লেখা রয়েছে, যার বাজারমূল্য ৫০ কোটি টাকা। এ ছাড়া গঙ্গামতির চরের ধোলাইখাল নামক এলাকায় সাত একর, পায়রা বন্দর লাগোয়া উত্তর পাশে ১০ একর, মহাসড়কের পাশে পলাশ ফিলিং স্টেশনসহ দুটি স্থানে সাত একর জমিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড রয়েছে। এ ছাড়া জৈনকাঠী এলাকায় ২৫ একর ফসলি জমির ওপর পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই ‘এম এল কোং’ নামে ইটভাটা তৈরি করে ব্যবসা চালাচ্ছেন সুলতান মৃধা। সেখানে ওয়ারিশদের প্রায় ১০ একর সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। মৃধার ক্ষমতার দাপটে তারা টু শব্দটি করতে পারেন না। ওই ইটভাটা-সংলগ্ন বেড়িবাঁধের বাইরে নদীর তীর ভরাট করে প্রায় পাঁচ একর খাসজমি দখলে নিয়েছেন এমপি লুত্ফুন নেছা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, শহরের ২ নম্বর বাঁধঘাট ডোনাভান সড়কের পাশে নদীর তীর ভরাট করে দখল করছেন এমপি লুত্ফুন নেছা। এখানেও প্রায় ১০ শতক জমি ভরাট করে গড়ে তুলেছেন চারতলা ভবন। নিচতলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চালালেও অপর তলা ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাদের নামে-বেনামে রয়েছে একরে একরে জমি ও অর্থসম্পদ। এ ছাড়া রাজধানীর উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরে রয়েছে বহুতল ভবন (১৪ তলা)। অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে অরুণিমা হাউজিং রিসোর্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য পটুয়াখালীর অন্তত অর্ধশত ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অংশীদারিত্বের নাম করে মোটা অঙ্কের টাকা তুলেছেন এমপি লুত্ফুন নেছার স্বামী ও মেয়ে। কিন্তু বাস্তবে এখনো ওই প্রকল্প আলোর মুখ দেখেনি। এ বিষয়ে এমপি লুত্ফুন্নেছার স্বামী সুলতান আহমেদ মৃধা বলেন, বাস্তবে যা আছে হলফনামায় তাই দেখানো হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে দখলের অভিযোগ মিথ্যা।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
থামছে না গাইড বই থেকে প্রশ্ন তৈরি

গাইড বই থেকে যাতে শিক্ষকরা কোনো পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়ন না করেন সে ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। অথচ এগুলো আমলে না নিয়ে গাইড বই থেকে প্রশ্ন প্রণয়ন অব্যাহত রয়েছে। স্কুল কলেজের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার অধিকাংশ প্রশ্নই গাইড বই থেকে হুবহু নেয়া হয়। শুধু তাই নয়, পাবলিক পরীক্ষার ক্ষেত্রেও একই চিত্র। বিভিন্ন প্রকাশনীর গাইড বই সংগ্রহ করে সেখান থেকে প্রশ্ন প্রণয়ন করেন শিক্ষকরা। প্রশ্ন প্রণয়ন করতে ব্যর্থতার কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

গাইড বই থেকে প্রশ্ন প্রণয়ন না করতে বিভিন্ন সময় হুঁশিয়ারি ছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। ২০১৫ সাল থেকেই গাইড বই থেকে প্রশ্ন প্রণয়নের চিত্রটি সবার সামনে প্রকাশ পায়। ওই সময় থেকে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের সতর্ক করেন। শিক্ষকদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মশালাও সমাবেশে প্রশ্ন প্রণয়নের বিষয়ে মন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনাও ছিল। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষকদের বলেছেন, ‘গাইড ও নোট বই থেকে কোনোভাবেই প্রশ্ন প্রণয়ন করা যাবে না, যারা এসব করবেন তাদের বিরুদ্ধে মামলাসহ নানা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোচিং নির্ভরশীল শিক্ষকদের প্রশ্ন প্রণয়নে দায়িত্ব দেওয়া হলে সে জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহি করতে হবে। কিন্তু মন্ত্রীর হুঁশিয়ারিতে সাড়া মেলেনি।

গত বছর জেএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়নের প্রমাণ পাওয়া যায়। কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্ন হুবহু গাইড বই থেকে তুলে দেওয়া পাঁচ শিক্ষককে প্রশাসনিক শাস্তি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দুর্গম স্থানে তাদের বদলি করা হয়। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এছাড়া এসএসসি পরীক্ষায় পদার্থ বিজ্ঞানের ইংরেজি ভার্সনের প্রশ্নে একটি গাইড বই থেকে হুবহু প্রশ্ন তুলে দেওয়ার অভিযোগ ছিল। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী-অভিভাবকেরা অভিযোগও করে বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। এবারও এইচএসসি পরীক্ষার ক্ষেত্রে গাইড বই থেকে প্রশ্ন প্রণয়নের প্রমাণ মেলে।

অভিভাবকরা বলছেন, অনেক শিক্ষকই নোট গাইড প্রণয়নের সাথে জড়িত। বিভিন্ন নোট গাইড প্রকাশনা সংস্থায় কাজ করছেন তারা। আরিফুল ইসলাম নামে এক শিক্ষক বলেন, স্কুলের প্রায় প্রতিটি পরীক্ষার প্রশ্ন হয় গাইড বই থেকে। এ কারণে শিক্ষার্থীরা গাইড বই পড়ার প্রতি আগ্রহী। মূল বই পড়ে না শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এ অবস্থা তৈরির জন্য দায়ী শিক্ষকরাই।

সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি প্রণয়নের ৭ বছর চলছে। তবে এখনও এ পদ্ধতি নিয়ে বিপাকে শিক্ষার্থী অভিভাবকরা। শুধু তাই নয়, রীতিমতো শিক্ষকরাও এ পদ্ধতি এখনও আয়ত্ত করতে পারেননি। যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষকরা। শিক্ষকরাও এ পদ্ধতি এখনও আয়ত্ত করতে না পারায় প্রশ্নও প্রণয়ন করতে পারছেন না।

শিক্ষকরা যে এ পদ্ধতি এখনও বুঝছেন না তার প্রমাণ মেলে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত সরকারি এক জরিপে। এই জরিপে দেখা যায়, এখনও দেশের ৫২ ভাগ শিক্ষক নিজে স্কুলের পরীক্ষার জন্য প্রশ্ন করতে পারেন না। এর ৩০ ভাগ শিক্ষক অন্য শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন করেন। আর বাইরে থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ করে পরীক্ষা নেন ২২ ভাগ শিক্ষক।

শিক্ষা ক্যাডারের ৫ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় : গাইড বই থেকে প্রশ্ন এবং প্রশ্নে অপ্রাসঙ্গিক বিষয় যুক্ত করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ৫ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। চলতি বছর অনুষ্ঠিত যশোর শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার গাইড বই থেকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। এছাড়া রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষায় অপ্রাসঙ্গিক বিষয় প্রশ্ন করা হয়।

এইচএসসির প্রশ্ন ত্রুটির জন্য অভিযুক্ত করে এসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসাবে চলতি সপ্তাহে অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষকের স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা, কর্মস্থল, চাকরিতে যোগদানের তারিখ, বেতন স্কেল, আহরিত বেতন ভাতার তথ্য চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গাইড বই থেকে আইসিটি বিষয়ে প্রশ্ন করার কারণে সরকারি নুরুন্নাহার সরকারি কলেজের সহকারি অধ্যাপক আনিছুর রহমান এবং যশোরের সরকারি এম এম কলেজের সহকারি অধ্যাপক এস এম তালেবুল ইসলামকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আর রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্নপত্র প্রণয়নের জড়িত নওগাঁ সরকারি কলেজের অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার সাহা, রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের সহকারি অধ্যাপক আবুল মজন চৌধুরী এবং নাটোরের এন এস সরকারি কলেজের সহকারি অধ্যাপক সাইফুল ইসলামকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

এর আগে সকলকেই কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু কেউ এ বিষয়ে সন্তোষজনক কোনো জবাব দিতে পারনেনি। এসব শিক্ষককে ইতিমধ্যে সকল পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।

গত আগস্ট মাসে অভিযুক্ত শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়েছিল। তার কাছে লেখা চিঠিতে বলা হয়, পৌরনীতি ও সুশাসন প্রথমপত্র বিষয়ে বহুনির্বাচনী অংশে ৮,৯,১০ ও ১১ নং প্রশ্নে ও উদ্দীপকে যে প্রশ্নপত্র সমীক্ষণ করেছেন তার কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এই শিক্ষককে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরীক্ষা সংক্রান্ত কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি মডারেটর ছিলাম। প্রশ্নে কিছু অপ্রাসঙ্গিক বিষয় রয়েছে উল্লেখ করে আমাদের কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়। আমি জবাব দিয়েছি। এরপরও কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে আমি বোধগম্য নই।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
জেরুজালেম ইসরাইলের রাজধানী -ট্রাম্পের ঘোষণা

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহবান অগ্রাহ্য করে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সময় এসেছে। অনেক আগেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত ছিল। স্থানীয় সময় বুধবার দুপুর ১:০০ টায়(বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ১২ টা) বিতর্কিত ও সমালোচিত এ ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। একই সঙ্গে তিনি তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের কাজ শুরু করতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন।
এদিকে, ট্রাম্পের এ ঘোষণার আগ থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে ফিলিস্তিন।

প্রতিবাদে রাজপথে নেমেছে হাজারো ফিলিস্তিনি। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ অঞ্চলটিতে উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি করবে বলে আগে থেকেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এতে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্থ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। হোয়াইট হাউজের ডিপ্লোমেটিক রিসেপশন রুম থেকে দেয়া ভাষণে ট্রাম্প বলেন, আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সময় এসেছে । তিনি বলেন, দুই দশকের বেশি সময় ধরে চেষ্টা করেও আমরা ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কোন স্থায়ী শান্তি চুক্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। উল্লেখ্য, ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণায় জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আজ আমি (আমার প্রতিশ্রুতি) পূরণ করছি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েক দশকের মার্কিন নীতি পাল্টে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিলেন ট্রাম্প। বক্তব্য দেয়ার সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ এবং ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা মাথায় রেখেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প দা্বি করেন, এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। আর এটা বাস্তবতার স্বীকৃতি দেয়া বৈ কিছুই না। সকল পক্ষকে তিনি জেরুজালেমের পবিত্র ভূমিতে স্ট্যাটাস কো বজায় রাখার আহ্বান জানান।
ট্রাম্পের বক্তব্য শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তার ঘোষণার প্রশংসা করে ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত শান্তির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কারণ, জেরুজালেম যদি ইসরাইলের রাজধানী না হয় তাহলে কোন শান্তি আসবে না। তিনি আরো বলেন, যেসব রাষ্ট্র শান্তি চায় আমি সেসব দেশকে আহবান জানাই যে তারা জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগ দিক। পাশাপাশি তাদের দূতাবাস এখানে স্থানান্তর করুক।

এদিকে, ফিলিস্তিনি এক কূটনীতিক বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ সিদ্ধান্ত মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ঘোষণার সামিল। হামাস বলেছে, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে নরকের দরজা খুলে দেবে। দলটির এক মুখপাত্র বলেন, ‘এতে করে এ বাস্তবতা পাল্টাবেনা যে জেরুজালেম আরব মুসলিমদের ভূখণ্ড। উল্লেখ্য, ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে আগে থেকেই সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন অনেক বিশ্বনেতা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার তার সঙ্গে এক ফোনালাপে ওই অঞ্চলের আরব নেতারা ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রন ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ নিয়ে গভীর আশঙ্কা প্রকাশ করেন ও তাকে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহবান জানিয়েছিলেন। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেছিলেন, তার এই পদক্ষেপে অঞ্চলটিতে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ খোমেনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তের কারণ হলো তাদের অযোগ্যতা ও ব্যর্থতা। আর সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, এই পদক্ষেপ হলো ফিলিস্তিনকে জবরদখল করা এবং ফিলিস্তিনি জনগণকে উৎখাত করার অপরাধের চুড়ান্ত অধ্যায়। পোপ ফ্রান্সিসও সতর্ক করে বলেন, জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদে বিদ্যমান স্ট্যাটাস কো’র প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত। কিন্তু, ট্রাম্প সেসব গায়ে মাখেন নি।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
মনোনয়ন যাকে দিক আমরা মনে করবো আমাদের প্রতীক নৌকা – এবিএম মোস্তাকিম

আশাশুনি ব্যুরো : বাংলাদেশের এ উন্নয়নের ধারাকে অব্যহত রাখতে আমাদেরকে আবারও আওয়ামীলীগকে জয়যুক্ত করতে হবে। শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন সম্ভব অন্য কারো হাতে সে উন্নয়ন কল্পনা করাও অসম্ভব। মনোনয়ন কাকে দিল এটা বড় কথা নয়। মনোনয়ন যাকে দিক আমরা মনে করবো আমাদের প্রতিক নৌকা। আমার আহবান থাকবে আওয়ামীলীগ সরকার যদি দেশের তথা আপনার এলাকার উন্নয়ন করে থাকে তাহলে আপনারা আবারও নৌকায় ভোট দিবেন। আশাশুনির বুধহাটায় বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের কর্মী সমাবেশ ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সকল কথা বলেন উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম। বুধবার বিকাল ৩টায় ইউনিয়নের নৈকাটি দাখিল মাদ্রাসা মাঠ প্রাঙ্গণে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের আয়োজনে, ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভায় ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি ডাঃ নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাধারণ সম্পাদক মীর মোস্তাক আলী। এসময় বিশেষ অতিথি ও অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন বুধহাটা ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিঃ আ ব ম মোছাদ্দেক, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি এস এম সাহেব আলী, সহ সভাপতি খোকন মন্ডল, সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা বিল্টু, যুগ্ম সম্পাদক বিকাশ চন্দ্র মন্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম মঞ্জুরুল ইসলাম, সদর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি সমীরণ পাইন, বুধহাটা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি জিএম বাপ্পী, ০৯ ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি আবু তালেব প্রমুখ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
আজ সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস ; উদ্যোগ নেই যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি গ্রেফতারের

নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ ৭ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে সাতক্ষীরার দামাল ছেলেরা থ্রি নট থ্রি আর এসএলআরের ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে সাতক্ষীরা শহরে প্রবেশ করে। ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। সন্তান হারানোর বেদনা ভুলে সেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সাথে রাস্তায় নেমে আসে মুক্তিপাগল আপামর জনতা। দীর্ঘ ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে সেদিনের সাহসী সস্তানরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। পাক হানাদার ও তাদের দোসররা মা-বোনের ইজ্জত হরণ করেছিল। ধ্বংস করতে চেয়েছিল বাঙ্গালীর ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে। শত্রুর বুলেটের এত সব আঘাত সহ্য করেও সাতক্ষীরার সন্তÍানরা অন্ততঃ ৫০টি যুদ্ধের মোকাবেলা করেছিল। সাতক্ষীরার মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সবচেয়ে হিং¯্র বিরোধিতাকারীদের ৪ জনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাবুনালে মামলা হয়েছে। হত্যা, ধর্ষণসহ ৭টি অভিযোগে সাতক্ষীরার কুখ্যাত রাজাকার জেলা জামাতের আমির খালেক ম-ল, আব্দুল্লাহিল বাকী, খান রোকনুজ্জামান ও জহিরুল ওরফে টিক্কার বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে খালেক ম-ল ও বাকিকে আটক করা হয়েছে। অন্য দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এমনকি আদালত কর্তৃক ডেইলি স্টার ও জনকণ্ঠ পত্রিকার আসামি হাজির হওয়ার বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে। জহিরুল ওরফে টিক্কা ২০১৩ সালের নাশকতার পর থেকেই আত্মগোপনে আছে। অন্যদিকে সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল নবজীবন ইন্সটিটিউটের সাবেক নির্বাহী পরিচালক খান রোকনুজ্জামান দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়েছে। তদন্ত চলাকালীন সময়ে এক পর্যায়ে সে আত্মগোপন করে। চার্জশিট প্রদানের পর আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় রোকনকে ধরতে আজ পর্যন্ত কোন পুলিশি অভিযান পরিচালনার খবর সাতক্ষীরাবাসী শোনেনি। কি এক অদৃশ্য কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ এ ব্যাপারে নিরব থেকেছে। জনশ্রুতি আছে রোকনকে তার পরিবার বিদেশে পাঠিয়ে দিতে পেরেছে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই। যুদ্ধাপরাধ মামলার সাক্ষীরাই বরং উদ্বেগের সাথে দিন কাটান। তাদের নিরাপত্তায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের রহস্যময় নিষ্ক্রিয়তা সাক্ষী ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের মনে ক্রমেই আশংকার সৃষ্টি করছে।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ সাতক্ষীরা শহরে পাকিস্তান বিরোধী মিছিলে রাজাকাররা গুলি করে হত্যা করে শহিদ আব্দুর রাজ্জাককে। আর এখান থেকে শুরু হয় সাতক্ষীরার দামাল ছেলেদের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া। মুক্তিযুদ্ধের খরচাদি বহনের জন্য সাতক্ষীরা ট্রেজারি হতে অস্ত্র আর ন্যাশনাল ব্যাংক হতে অলংকার টাকা পয়সা লুটের মধ্য দিয়ে শুরু মুক্তির সংগ্রাম। ৮ম ও ৯ম সেক্টরের অধীনে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ট্রেনিং শেষে ২৭ মে সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয় । এ সময় পাক সেনাদের ২ শতাধিক সৈন্য নিহত হয়। ১৭ ঘণ্টাব্যাপী এ যুদ্ধে শহিদ হয় ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা। আহত হয় আরো ২ জন মুক্তিযোদ্ধা। এরপর থেমে থেমে চলতে থাকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের গুপ্ত হামলা। এসব যুদ্ধের মধ্যে ভোমরার যুদ্ধ, টাউন শ্রীপুর যুদ্ধ, বৈকারী যুদ্ধ, খানজিয়া যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য। এ সব যুদ্ধে শহিদ হয় ৩৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। লাইটের আলোয় অসুবিধা হওয়ায় ৩০ নভেম্বর টাইম বোমা দিয়ে শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত পাওয়ার হাউস উড়িয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ভীত সন্ত্রস্ত করে ফেলে পাক সেনাদের। রাতের আঁধারে বেড়ে যায় গুপ্ত হামলা। পিছু হটতে শুরু করে পাক সেনারা। ৬ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় টিকতে না পেরে বাঁকাল, কদমতলা ও বেনেরপোতা ব্রিজ উড়িয়ে দিয়ে পাক বাহিনী সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে যায়। ৭ ডিসেম্বর জয়ের উন্মাদনায় জ্বলে ওঠে সাতক্ষীরার দামাল ছেলেরা।
যারা শহিদ হন- মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে শত্রুদের গুলিতে সাতক্ষীরার যে সকল বীর সন্তান শহিদ হন- তারা হলেন শহিদ আব্দুর রাজ্জাক, কাজল, খোকন, নাজমুল, হাফিজউদ্দিন, নুর মোহাম্মদ, আবু বকর, ইমদাদুল হক, জাকারিয়া, শাহাদাত হোসেন, আব্দুর রহমান, আমিনউদ্দিন গাজী, আবুল কালাম আজাদ, সুশীল কুমার, লোকমান হোসেন, আব্দুল ওহাব, দাউদ আলী, সামছুদ্দোহা খান, মুনসুর আলী, রুহুল আমীন, জবেদ আলী, শেখ হারুনার রশিদ প্রমুখ।
তবে মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পেরিয়ে গেলেও সাতক্ষীরার বধ্যভূমি ও গণকবরগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি আজও। একই সাথে সাতক্ষীরা কালেক্টরেট চত্বরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মিত শহিদ স্মৃতি স্তম্ভে রাজাকারের নাম উল্লেখ থাকায় তা উদ্বোধন করা হয়নি। সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে যান না মুক্তিযোদ্ধারা। অযতেœ আর অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসেছে বধ্যভূমি ও গণকবরের স্মৃতিচিহ্ন। এগুলো যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। তাই বধ্যভূমি ও গণকবরের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন সাতক্ষীরার মুক্তিযোদ্ধারা।
সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোশারফ হোসেন মশু জানান, প্রতিবছর ৭ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের আয়োজনের যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করা হয়। তিনি সাতক্ষীরার বধ্যভূমি ও গণকবরগুলো সংরক্ষণের দাবি জানান সরকারের কাছে। একই সাথে সাতক্ষীরা কালেক্টরেট চত্বরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মিত শহিদ স্মৃতি স্তম্ভে রাজাকারদের নাম মুছে সেটি উদ্বোধনের জোর দাবি জানান।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন জানান, সাতক্ষীরার বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া হবে। একই সাথে কালেক্টরেট চত্বরের শহিদ স্মৃতিস্মম্ভ নিয়ে বিদ্যমান বির্তক নিরসন করে তা অচিরেই উদ্বোধনের আশ্বাস দিলেন তিনি ।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আটক

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী তেরিজা মেকে হত্যার পরিকল্পনা করার অভিযোগে আটক করা হয়েছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক নাইমুর জাকারিয়া রহমানকে (২০)। আজ বুধবার ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে আদালতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে।

দ্য গার্ডিয়ান বলছে, অভিযোগ আছে, লন্ডনের ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে বোমা ও ছুরি মেরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনার ছক এঁকেছিলেন নাইমুর।

এ ছাড়া পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক মোহাম্মাদ আকিব ইমরানকে (২১) সহযোগিতা করার অভিযোগও উঠেছে নাইমুরের বিরুদ্ধে। ইমরান জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে যুক্তরাজ্য ছাড়তে চেয়েছিল। উভয়কেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিকল্পনা করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে।

গত ২৮ নভেম্বর নাইমুর ও ইমরানকে আটক করে পুলিশ। পরবর্তী শুনানি ২০ ডিসেম্বর ধার্য করা হয়েছে।

0 মন্তব্য
0 FacebookTwitterGoogle +Pinterest